Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Wednesday, April 27, 2011

http://ganashakti.com/bengali/ ‘মর্যাদা আর স্বনির্ভরতার ঠিকানা বামফ্রন্ট, বদলাতে যাবো কেন?

http://ganashakti.com/bengali/

তৃণমূলের কুপন কেলেঙ্কারি

মিট দ্য প্রেসে ফাঁস করলেন গৌতম দেব

'মর্যাদা আর স্বনির্ভরতার ঠিকানা বামফ্রন্ট, বদলাতে যাবো কেন?'

শাশ্বত পাড়ুই

'সবাই যেন খেতে পায়।' এই গ্যারান্টিটাই চাইলেন ৭৯ বছরের ইয়াদ আলি খান। উলুবেড়িয়ার বাগাণ্ডা পেরিয়ে ধান্দালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভেকুডাল দক্ষিণপাড়ায় দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বললেন, 'দোয়া করছি সকলের খাবারের নিশ্চয়তায় বামফ্রন্ট জিতুক।' — একটু আগেই তো বামফ্রন্ট কর্মীরা এসেছিল আপনার কাছে' . . . শেষ করতে না দিয়েই বৃদ্ধ বললেন, 'ওরা তো সবসময় আসে। ৫৯ সালে খাদ্যের জন্য আন্দোলন ওরাই করেছে। তাই সবাই খেতে পায়।'

ধানের খেতে গরমের ধান তুলছিলেন দীপক অধিকারী ও তার স্ত্রী আরতি অধিকারী। ধান তুলতে তুলতে জানালেন, 'সেচ পাচ্ছি দামোদর ক্যানেল থেকে। আগে সেচ ছিল না। সেচ থাকায় সারা বছর চাষ করে রোজগার করছি। অভাব নেই।' — তবে তৃণমূল যে পরিবর্তনের কথা বলছে? চটজলদি কৃষক দম্পতির জবাব, 'পরিবর্তন তো বামফ্রন্টই করেছে। এই পরিবর্তন ধরে রাখাটাই চাষীর লড়াই।'

স্মৃতিটা আবছা হলেও বেশ মনে আছে ধান্দালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গহলাপোঁতা, শহীদপুর, মাদারিবাড়, গুটিন গরিব মানুষের কাছে। গহলাপোঁতার ৬৭ বছরের কালিচরণ দাস বললেন, 'জোতদার পঞ্চু মালের জমিতে চাষ করতাম। আটের দশকে সেই জমিই আমাদের নামে বর্গা রেকর্ড হয়েছে। বি এল আর ও দপ্তরের অফিসাররা মাঠে নেমে মাদারিবাড় থেকে বোয়ালিয়া পর্যন্ত মেপে বর্গা রেকর্ড করেছিল।'

শহীদপুরের ইন্দ্র মণ্ডলের বয়স ৯০ বছর। এক সময়ের ভাগচাষী ইন্দ্র মণ্ডল এখন নিজেই জমির পাট্টা পেয়ে জমির মালিক। কার্তিক মণ্ডল, পূর্ণ মণ্ডলরাও বামফ্রন্টের কাছ থেকে জমির পাট্টাও পেয়েছেন। আবার চাষের জমিতে সেচের ব্যবস্থা হওয়ায় আলু, ঝিঙে, উচ্ছে, ঢেঁড়শ ইত্যাদি রবিশস্য একই জমিতে ফলাতে পারছেন। চাষীরা মানছেন, 'বামফ্রন্টই পরিবর্তন করেছে কৃষক পরিবারের অবস্থার।'

ধান্দালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কখনও কৃষকের খেতে, কখনও ধান ঝাড়াইয়ের উঠোনে কৃষক পরিবারের কাছে পৌঁছে শেখ কুতুবউদ্দিন আহমেদ বললেন, 'আপনাদের চাষের অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। কেন্দ্রের কংগ্রেস-তৃণমূলের সরকার সারের উপর ভরতুকি তুলে নেওয়ায় সারের দাম বাড়ছে। কোন পরিবর্তনটা চান আপনারা— চাষীর সর্বনাশ নাকি চাষীর অগ্রগতি?' দীপক অধিকারী, কালিচরণ দাসরা বললেন, 'সারের দাম বাড়িয়ে আমাদের চাষের খরচ বাড়িয়েছে কেন্দ্রের কংগ্রেস ও তৃণমূলের সরকার। বামফ্রন্ট তো সেচের উন্নতি করেছে। চাষীর জন্য লড়াই করে। চাষীর অবস্থার পরিবর্তন বামফ্রন্ট করেছে। তাই বামফ্রন্টকে জেতাবো।' চাষীর খেতে গিয়ে যে মানুষটা কৃষকের অগ্রগতি ধরে রাখার কথাটা বললেন সেই শেখ কুতুবউদ্দিন আহমেদই উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী। ৩৬ বছর শিক্ষকতা করেছেন। উলুবেড়িয়া হাইমাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের রাজনৈতিক পরিচয়টাও কম নয়। হাওড়া জেলা বামফ্রন্টের নেতা ও ফরওয়ার্ড ব্লকের হাওড়া জেলা সম্পাদক। রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার গঠনের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাঝে একবারই পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে এই কেন্দ্রে বামফ্রন্টকে। শেখ কুতুবউদ্দিন আহমেদ জানান, 'ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সি পি আই (এম) কর্মীরা শক্তিশালী বামফ্রন্ট গড়ে তুলে ইস্পাতদৃঢ় মনোভাব নিয়ে নির্বাচনী প্রচার করছেন। তৃণমূল পরিবর্তনের কথা বলে কোন লজ্জায়? ওরা যেসব গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালনা করছে সেখানে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, গরিব মানুষকে ভাগ করছে ওরা। আমরা সব মানুষের জন্য সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে আছেন। আমরাই জয়ী হবো।'

বাম প্রার্থীর অভিযোগটা কতটা সত্য তার প্রমাণ পাওয়া গেল হাটগাছা ১নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাহাদুরপুর গ্রামে গিয়ে। নামেই রেগার কাজে রাস্তা হয়েছে। কিন্তু হাল ফেরেনি রাস্তার।' — বলছিলেন বাহাদুরপুরের রঙমিস্ত্রি আব্দুল ওদুদ কাজি।ফুলমতি বেগম বললেন, 'স্বামীকে দূরে কাজে যেতে হয়। রেলমন্ত্রীর ২৫ টাকার মান্থলি পেতে জুতোর শোল উঠে গেছে। হাটুরিয়া থেকে সুলতান আমেদের সার্টিফিকেট পাইনি। সার্টিফিকেটই পেলাম হাল্যানে এক তৃণমূল আত্মীয়ের কাছে। তৃণমূলের আত্মীয় ছাড়া ইজ্জতের মান্থলি পেতে হলে বেইজ্জত হতে হয়। কি জন্য তৃণমূলকে জেতাবো বলুন?' এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী মকসুর রহমান বললেন, 'সততার প্রতীকটা আসলে স্লোগান, কারণ সত্যিকারের তৃণমূল কর্মীরা মর্যাদা পায় না।' তৃণমূল কর্মীরাই উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রে বামফ্রন্ট প্রার্থীর নিবিড় প্রচার দেখে যেখানে পরাজয়ের আতঙ্কে ভুগছেন, সেখানে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বলছেন, 'আমি জিতবো।' উলুবেড়িয়ায় মহেশপুরের একথা বলে যেতেই গ্রামের মানুষ বলনে, 'ওকে জিতিয়ে তো নিজেদের সর্বনাশ করতে পারি না, বীরশিবপুরের নতুন শিল্পাঞ্চল তৈরিতে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। বামফ্রন্ট উদ্যোগ নিয়েছিল বলেই তো এলাকার ছেলেরা কাজ পেয়েছে।'

উলুবেড়িয়া দক্ষিণের শেষপ্রান্ত ধান্দালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ স্বনির্ভরতার স্বাদ পেয়েছেন। বাগান্ডায় যুবতী পল্লবী প্রামাণিকের সাথে দেখা হতেই স্পষ্ট অভিমত জানালেন, 'ভাগ্যলক্ষ্মী গ্রুপের মাধ্যমে আমরা জরিশিল্পীরা সংগঠিত হয়েছি। লোনও পেয়েছি। স্বনির্ভরতার ঠিকানাটা বদলাতে যাবো কেন? তাই বামফ্রন্টকে জয়ী দেখতে চাই।'

৬নং জাতীয় সড়কের ধারে উলুবেড়িয়ার নতুন শিল্পতালুক বীরশিবপুর গ্রোথ সেন্টার, এলানবেরি, ইউনাইটেড কনভেয়র, ভারত গ্যাস, লর্ডস কেমিক্যাল, বিবেকানন্দ ফোর্জিন, ক্যার্নেসন, আলিসন প্লাইউড ইত্যাদি কেমিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং মিলিয়ে ৪৭টি কারখানা বীরশিবপুর গ্রোথ সেন্টারে গড়ে উঠেছে। আশেপা‍‌শে আরও ২০টি কারখানা রয়েছে। আগে যেখানে হোগলা বন ও রাত বাড়লে ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যেত এখন সেখানে শুধুই কর্মচাঞ্চল্য। গত পাঁচ বছরেই মহিষরেষা ব্রিজ পর্যন্ত আরও ৩০টি নতুন কারখানা তৈরি হয়েছে। নতুন শিল্পতালুকে প্রায় ১২০০০ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। নতুন শিল্পতালুকের ভিতর এবং বীরশিবপুর ও কুলগাছিয়ায় শিল্পাঞ্চলকে ঘিরে নতুন বাজার, চায়ের দোকানের মাধ্যমে স্থানীয় পাঁচশত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শিল্পতালুক তৈরিতেই একদিন বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সে বাধা ধোঁপে টেকেনি। কারণ উপলব্ধিতে মানুষ এলাকার অর্থনীতির পরিবর্তন চেয়েছিলেন। হয়েছেও তাই।

ইউনাইটেড কনভেয়র কারখানার সামনে দেখা হলো গোপাল সর্দারের সাথে। গোপাল সর্দার জানালেন, 'আগে মালিক মজুরি ঠিকমত দিতো না। সি আই টি ইউ ইউনিয়ন তৈরি করে আমরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে লড়াই করেছি। বামফ্রন্ট সরকার পাশে দাঁড়িয়েছে। মজুরি বেড়েছে।' ১৩টি কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনের চাপে এবং বামফ্রন্ট সরকারের শ্রমদপ্তরের প্রচেষ্টায় পি এফ, ই এস আই বোনাসও চালু হয়েছে। প্রতি বছরেই ইনক্রিমেন্ট বাড়ছে। কিন্তু, বিবেকানন্দ ফোর্জিনে কর্মরত বলরাম দেশমুখের অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম। বলরাম দেশমুখ বললেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জিতলো। তৃণমূল নেতা পুলক রায় এসে বললেন, 'তোমাদের সব দাবি মিটে যাবে আমাদের ইউনিয়ন করলে।' 'আমরা তৃণমূলের ইউনিয়নে নাম লেখালাম। পুলক রায় নিতাই মালিকের সাথে আলোচনায় বসে নামেই মজুরি বাড়িয়ে শ্রমিকরা টিফিন বাবদ যে খরচ পেতাম তা তুলে দিলেন।' তিক্ত অভিজ্ঞতা বলরাম দেশমুখদের। এই তো 'মালিকের দালাল' তৃণমূল নেতাই উলুবেড়িয়া দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী পুলক রায়। নতুন শিল্পতালুকের শ্রমিকরা তাই জোট বেঁধেছেন 'মালিকের দালাল' তৃণমূলের হাত থেকে নতুন শিল্পতালুকের শ্রমিকস্বার্থ রক্ষা করতে বামফ্রন্টের পক্ষে। তাই সিংহ প্রতীকের লালঝাণ্ডার সমর্থনে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের মানুষ ভোটের লড়াইতে অবতীর্ণ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে বেতবেড়িয়া গ্রামও।

৫৮ গেট থেকে দামোদর ক্যানেলের পাশ দিয়ে বেতবেড়িয়া গ্রামে ঢোকার মুখে থামতে হলো। হেলে যাওয়া ভাঙা কাঠের পোল ডিঙিয়ে যাচ্ছে খুদে পড়ুয়ার দল। স্থানীয় যুবক ইমতিয়াজ মোল্লা ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানালেন, 'লোকসভা ভোটের আগে কাঠের পোল পাকা করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন সি পি আই (এম) সাংসদ হান্নান মোল্লা। কিন্তু তৃণমূল বাধা দিল, সেবার প্রতিবাদ করিনি। কিন্তু, এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছি। তৃণমূলের সাংসদ কি যে করছেন তা জানতেই পারি না। বামফ্রন্টই আমাদের কথা ভাবে।' বেতবেড়িয়া গ্রামের সাইদুর রহমান যেন গোটা গ্রামের প্রতিধ্বনি হয়ে জানালেন, 'তৃণমূলের ধোঁকাবাজি মানবো না।'

টাকা বিলোতে গিয়ে তাড়া খেলেন পরেশ পাল

নিজস্ব প্রতিনিধি

কলকাতা, ২৬শে এপ্রিল — নির্বাচনের আগের দিন টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠলো বেলেঘাটার তৃণমূল প্রার্থী পরেশ পালের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সাত সকালে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বেলেঘাটার ৩৩নম্বর ওয়ার্ডে টাকা বিলির সময় এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করেন। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে আসেন ৩৩নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার রাজীব বিশ্বাস। সাধারণ মানুষ তৃণমূল প্রার্থীকে দীর্ঘক্ষণ ঘিরে রাখেন। বেগতিক দেখে হুড খোলা জিপসি জিপে চেপে পরেশ পাল পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এই ঘটনায় সি পি আই (এম)-র তরফে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বেলেঘাটা থানায় আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবারে কলকাতায় ভোট হওয়ার জন্যই সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রচারের শেষ সময়। এই নির্বাচন বিধি ভাঙ্গার সঙ্গে কালো টাকা ব্যবহার করে ভোট কিনতে চান ঐ তৃণমূলপ্রার্থী। 

স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তৃণমূলের ঝাণ্ডা বেঁধে একটি হুড খোলা জিপে চেপে বেলেঘাটার রামকৃষ্ণ নস্কর লেনে হাজির হন পরেশ পাল। নির্বাচন বিধি ভেঙে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সঙ্গে চলতে থাকে প্রচার। রামকৃষ্ণ নস্কর লেনে এই প্রচার চললেও তাঁর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল লেবুগোলা বস্তির গরিব সাধারণ মানুষকে টাকা দেওয়া। এই কাজ করতে তাঁর সঙ্গে ছিল কয়েকজন দলের কর্মী। দলীয় কর্মীদের হাত দিয়ে লেবুগোলা বস্তির দুই পরিবারকে টাকা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা প্রতিবাদ করেন। তাঁদের চিৎকারে শামিল হন এলাকার সাধারণ মানুষ। তাঁরা বাইরে এসে পরেশ পাল ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গোদের ঘিরে ধরেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ঐ জিপসি গাড়ি 

স্পেকট্রাম : রাজার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতাকে দায়ী করতে চলেছে পি এ সি

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও চেন্নাই, ২৫শে এপ্রিল — স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে টেলিকমমন্ত্রী রাজার কার্যকলাপ এড়িয়ে যাওয়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ব্যর্থতার কথা থাকতে পারে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটি (পি এ সি)-র রিপোর্টে। স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি নিয়ে স্পীকার মীরা কুমারের কাছে রিপোর্ট পেশ করা হবে কি না, তা চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার পি এ সি'র বৈঠক ডেকেছেন কমিটির চেয়ারম্যান মুরলী মনোহর যোশী। তার আগে কমিটির সদস্যদের কাছে যে খসড়া বিলি করা হয়েছে, তাতে অন্তত তেমনই রয়েছে। এর আগে কমিটি প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সচিব টি কে এ নায়ার, মন্ত্রিসভার সচিব কে এম চন্দ্রশেখর এবং অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বানবতীকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, চলতি মাসের ১৫ ও ২২তারিখের দু'টি সভাতেই এনিয়ে তুমুল হই-হট্টগোল করে শাসকদল কংগ্রেস এবং ডি এম কে। শেষে কমিটি ওই তিনজনের কাছে লিখিত প্রশ্ন পাঠায়। কংগ্রেস, ডি এম কে'র দাবি, কমিটির তরফে নতুন করে রিপোর্ট দেওয়ার কোনও মানেই হয় না। কারণ, ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে যৌথ সংসদীয় কমিটি। তাছাড়া সি বি আই তদন্ত করছে। নজর রাখছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্যদিকে, যোশী রিপোর্ট পেশ করার পক্ষে। আইন অনুয়ায়ী তিনি তা করতেও পারেন। এর আগে এন ডি জমানায় কমিটির চেয়ারম্যান বুটা সিং রিপোর্ট পেশ করেছিলেন কমিটির অনুমোদন ছাড়াই। এদিকে স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে সি বি আই তার দ্বিতীয় চার্জশিটে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধির মেয়ে, সাংসদ কানিমোঝিকে অন্যতম ষড়যন্ত্রী বলার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে বুধবার চেন্নাইতে বৈঠকে বসছে ডি এম কে। 

স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে কানিমোঝির 'বিশেষ বন্ধু' আন্দিমুথু রাজা এর মধ্যেই মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন। জেলেও গিয়েছেন। আজ তাঁর সঙ্গে 'সক্রিয় যোগাযোগ' বজায় রাখা এবং তাঁর প্রতি 'অতিরিক্ত সদয়' হওয়ার দায়েই অভিযুক্ত হলেন করুণা-কন্যা। কানিমোঝির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মোকাবিলা আইনের ৭এবং ১১নং ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কানিমোঝির বিরুদ্ধে সি বি আই যে চার্জশিট দাখিল করতে চলেছে, এমন জল্পনা কয়েক মাস ধরেই ছিল। সোমবার সি বি আই শুধু চার্জশিটই পেশ করেনি, সেখানে কানিমোঝিকে স্পেকট্রাম দুর্নীতিতে 'অন্যতম ষড়যন্ত্রী' বলে অভিহিত করেছে। করুণানিধির পরিবারের মালিকানাধীন কালাইনার টিভি সহ দুর্নীতিতে জড়িত অন্যান্য সংস্থার শীর্ষপদস্থ চার ব্যক্তির বিরুদ্ধেও চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু করুণা-কন্যাকে কি এই চার্জশিটের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হবে? সি বি আইয়ের দাবি, যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণই দেওয়া হয়েছে। সবকিছু খতিয়ে দেখতেই বুধবার বৈঠকে বসছে ডি এম কে'র শীর্ষ নেতৃত্ব। 

এদিকে স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির তদন্তে সি বি আই এবং ই ডি'র একটি যৌথ টিম আগামী মাসে যাচ্ছে মরিসাসে। আরেকটি টিম শীঘ্রই যাবে সাইপ্রাসে। কারণ, এই দেশটির মধ্যে দিয়েই স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির ঘটনায় বেশকিছু লেনদেন হয়েছে।চেপে পালাতে বাধ্য হন পরেশ পাল। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি অনুসারে যে তিনটি গাড়ি করে পরেশ পাল প্রচার করেছেন সেটি এটি নয়। সেই বিষয়েও কমিশনকে জানানো হয়েছে।

চিদাম্বরমের মন্তব্য হাস্যকর,বললো পলিট ব্যুরো

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি, ২৬শে এপ্রিল — পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম যে মন্তব্য করেছেন তাকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেছে সি পি আই (এম) পলিট ব্যুরো। চিদাম্বরম সোমবার মেদিনীপুর গিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো বলেছে, চিদাম্বরম যে মন্ত্রিসভার সদস্য সেই সরকারই স্বাধীনোত্তর ভারতে সব থেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁর মুখে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য হাস্যকর। তিনি যেদিন পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে ঐ মন্তব্য করেছেন, কাকতালীয় হলেও সেদিনই কেন্দ্রীয় সরকার গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতী ব্যবস্থার জন্য দেশের সেরার স্বীকৃতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে। চিদাম্বরমের দল কেন্দ্রে যে পদ্ধতিতে সরকার চালাচ্ছে, সেই পথে চললে পশ্চিমবঙ্গও ডুবে যেত। বামফ্রন্ট সরকারই পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করেছে। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী সফরে এসে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। অথচ তাঁরই মন্ত্রকের সর্বশেষ রিপোর্ট বলছে অন্য কথা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন 'ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া'(২০০৯) জানাচ্ছে — দেশের অধিকাংশ রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অনেক ভালো। এমনকি চিদাম্বরমের প্রত্যক্ষ দায়িত্বে থাকা রাজধানী দিল্লি এখন অপরাধের রাজধানী বলে চিহ্নিত।

পলিট ব্যুরো ঐ বিবৃতিতে বলেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে বামফ্রন্ট সরকারের সমালোচনা করলেও মাওবাদীদের সম্পর্কে একটি নিন্দাসূচক কথাও বলেননি। অথচ এই মাওবাদীদের হাতেই গত লোকসভা নির্বাচনের পর সি পি আই (এম)-র ২৬৫জন কর্মী ও সমর্থক খুন হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। বরং সাজানো, মিথ‌্যা তথ্য হাজির করে খুনখারাবির জন্য সি পি আই (এম)-কেই দায়ী করেছেন তিনি। মাওবাদী হিংসা ও তৃণমূলের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগসাজস সম্পর্কেও টুঁ শব্দ ব্যয় না করে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে প্রাথমিক দায়িত্বের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন চিদাম্বরম। স্বাভাবিকভাবেই আজ এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, আদৌ কি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী?

পৌর পরিষেবায় ব্যর্থ, ক্ষুব্ধ মানুষজন 
তবু নেত্রীর মতোই প্রতিশ্রুতির বন্যা কালনার তৃণমূল প্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিনিধি

কালনা, ২৬শে এপ্রিল— বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। কালনা (সংরক্ষিত) বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি তৃণমূলের প্রার্থী হয়েই প্রতিশ্রুতির বান ডেকে ফেলেছেন। একটা বিধায়কের সীমাবদ্ধ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে তিনি বলছেন, ভোটে জিতলে ভাগীরথী নদীর ওপর ব্রিজ করে দেবেন। যাতে নদীয়ার শান্তিপুরের মানুষ পায়ে হেঁটে কালনায় আসতে পারেন। একইভাবে কালনার মানুষও শান্তিপুরের রাসযাত্রা দেখে রাতারাতি কালনা ফিরতে পারেন। ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি থেমে থাকছেন না। কালনায় সকাল বিকাল ক্লাস করার ভালো কলেজ থাকলেও আর একটা মহিলা কলেজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বিলিয়ে বেড়াচ্ছেন। বলছেন— আমার নেত্রী যদি পৃথকভাবে মহিলা ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারেন— তাহলে আমি একটা পৃথক মহিলা কলেজ করতে পারবো না কেন?

কিন্তু বিশ্বজিৎবাবু কতোটা কাজের মানুষ তার প্রমাণ তো পেয়েই গেছেন কালনা পৌরবাসীরা। কারণ পৌর ভোটের আগে এরকম হাজারো প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বজিৎবাবুরা কালনা পৌরসভায় জয়ী হয়েছিলেন। তিনি পৌরপ্রধান হয়ে একটা প্রতিশ্রুতিও পালন করেননি। বরং পূর্বের পরিষেবা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া পৌরকর বাড়িয়ে কালনা পৌরবাসীদের নাভিশ্বাস তুলিয়ে ছেড়েছেন তিনি। তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতির জ্বালা আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন কালনার মানুষ।

তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলী প্রার্থীর মুখে আবার নতুন নতুন প্রতিশ্রুতির কথা শুনে মানুষ শিউরে উঠছেন। প্রশ্ন জাগছে, প্রতিশ্রুতি দেবার মাধ্যমে তিনি আবার মানুষকে কোন গাড্ডায় ফেলবেন। এই নিয়েই চলছে মানুষের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা। নিশ্চিত গাড্ডায় পড়ার হাত থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যেই তে-রঙা ফেলে দিয়ে অনেকে লালঝাণ্ডার তলায় ফিরে এসেছেন। অশুভ শক্তি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। শপথ নিচ্ছেন অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গড়ার।

ধনিয়াখালি হরিপাল খেতমজুরের ভাত কাপড়ের অভাব নেই, প্রসার ঘটেছে ক্ষুদ্রশিল্পেও

সুবোধ চ্যাটার্জি

ধনিয়াখালি বিধানসভা কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের নতুন প্রার্থী শ্রাবণী সরকার, আর হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্রের সি পি আই (এম) প্রার্থী ভারতী মুখার্জির সমর্থনে জোর প্রচার চলছে বাড়ি বাড়ি। মিছিলেও পা মেলাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।

১৮টি পঞ্চায়েত নিয়ে ধনিয়াখালি বিধানসভা কেন্দ্রে তফসিলী ও উপজাতি লোকের বসবাস বেশি। এলাকাবাসীর বক্তব্য, বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই গ্রামের ভিতরে বড় রাস্তা হয়েছে। খেতমজুরের ঘরে ভাত-কাপড়ের অভাব নেই। রেবতী সরেন, কার্তিক মাঝি, ভোঁদা হাঁসদার মতো বয়স্ক মানুষেরা বলছেন, একসময় কাজ পেতে খুবই কষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখন কাজের কোনো অসুবিধা নেই। বামফ্রন্টের আমলে তাঁরা ভালোই আছেন। যমুনা সরেন, সাগরী মাঝি, টগর হেমব্রম, শিবু চ্যাটার্জিরা অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠন হবেই বলে জানালেন।

হরিপাল ব্লকে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪টি তৃণমূলের দখলে। দুর্নীতিতে এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে আছে। সেইসব গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ তৃণমূলের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়েই লালঝাণ্ডার মিছিলে পা মেলাচ্ছেন। প্রচার চলছে জোরকদমে। রাজ্যে সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন। পরিস্রুত পানীয় জল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, বড় বড় রাস্তা নির্মাণ, কৃষি উন্নয়ন, ছোট-বড় খাল সংস্কার, উন্নত সেচব্যবস্থা, আদিবাসীদের বার্ধক্যভাতা, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্কুলসহ নানান উন্নয়ন হয়েছে হরিপালে। হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনবন্ধু কোলের কথায়, উন্নয়ন হয়েছে সমগ্র হরিপাল জুড়েই। বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই কৃষির পাশাপাশি ক্ষুদ্রশিল্পেরও প্রসার ঘটেছে।

সত্তরের পদধ্বনি

রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের দুটি পর্যায়ের ভোটগ্রহণ শেষ। আজ তৃতীয় পর্যায়ের ভোটগ্রহণ। পরবর্তী পর্যায়ের নির্বাচনের জন্য প্রচার চলছে। রাজ্যজুড়ে এই নির্বাচনী লড়াইয়ে বামপন্থীদের পক্ষে বিপুল জনসমর্থন চোখে পড়ছে। বামফ্রন্টের ডাকে প্রাত্যেকটি জনসভা এবং মহামিছিলগুলিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ব্যাপকভাবে জমায়েত হচ্ছেন। গত দুই পর্যায়ের ভোটে বিশাল সংখ্যক মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বামফ্রন্ট-বিরোধী তৃণমূল-কংগ্রেস জোট। নির্বাচনী প্রচারের মধ্য দিয়ে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। এমনকি সত্তর দশকের আধাফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের সময়কে মনে করিয়ে দিয়ে ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি। টালিগঞ্জের এক জনসভায় মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, সি পি এম'-র কত ক্ষমতা আমার জানা আছে। বাহাত্তর-সাতাত্তরে সবাই হেরে গেছিল। ‍‌সব পালিয়ে গিয়েছিল। তারপর আবার জয়প্রকাশ নারায়ণের হাত ধরে ফিরে এসেছে। কত সাহসী সব জানা আছে।' এখানেই শেষ নয়। তৃণমূল নেত্রী প্রকাশ্য জনসভায় বলেন, 'আমায় গুণ্ডা দেখাবেন না। ওই গুণ্ডা ভেতরে ঢুকিয়ে দেব। আমাকে চেনে না। অনেক গুণ্ডা কন্ট্রোল করি আমি।' এই সব মন্তব্য থেকে তৃণমূল নেত্রীর আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে। তিনি আরো বলেছেন ক্ষমতায় এলে একদিনে ট্রেড ইউনিয়ন ভেঙে দেওয়া হবে। সত্তর দশকে জরুরী অবস্থার সময় শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠন ও আন্দোলনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তারই প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে মমতা ব্যানার্জির ভাষণে।

সত্তর দশকের কংগ্রেস গুণ্ডাবাহিনীর নৃশংস আক্রমণে রাজ্যে প্রায় এগারোশ'র বেশি সি পি আই (এম) কর্মী, সমর্থক নেতা শহীদ হয়েছিলেন। কংগ্রেসীদের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসে পাড়াছাড়া হতে হয়েছিল অসংখ্য মানুষকে। ওই কলঙ্কিত অধ্যায়কে কংগ্রেসীরাও মনে করিয়ে দিতে চায় না। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি সেই সন্ত্রাসের সময়কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ১০ বছর আগে ১৯৯৯-২০০০ সালে তৃণমূল কংগ্রেস দুষ্কৃতীদের সাহায্যে পশ্চিম মেদিনীপুর-বাঁকুড়া-হুগলীতে গ্রামছাড়া করেছিলেন অনেক মানুষকে। কিন্তু ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই সন্ত্রাসের বিপরীত জবাবই পেয়েছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট। গত ২ বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে তৃণমূল। প্রাণ দিতে হয়েছে কলেজ ছাত্রকে।লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের জয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে উৎসাহিত হয়ে উঠেছে সমাজবিরোধীরা। তারই পরিণতি হলো বারাসতে দিদিকে বাঁচাতে গিয়ে ভাইয়ের প্রাণ হারানো। এর পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের ব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। এই আক্রমণে সাম্প্রতিক সময়ে তিনশতাধিক সি পি আই (এম) কর্মী সমর্থক প্রাণ হারিয়েছে। এই সন্ত্রাসের ভয় দেখিয়েই ভোট পেতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যেকটি পর্যায়ের ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেকোনো ধরনের চক্রান্তের পথে যেতে পারে তৃণমূল জোট। প্ররোচনা দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হতে পারে। কেননা সাধারণ মানুষের অবাধ গণতান্ত্রিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগকে ভয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। বামবিরোধী জোটের এই গণতন্ত্র-বিরোধী চরিত্রই বেরিয়ে এসেছে মা মাটি মানুষের মুখোশ খুলে।এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়েই জবাব দিতে হবে এই সন্ত্রাসসৃষ্টিকারীদের।

ই-পেপার

এ কার কণ্ঠস্বর!

এতদিন বামপন্থীরা যে অভিযোগ তুলেছিলেন এবার প্রকাশ্যে ঘোষণা করে তৃণমূল নেত্রী নিজেই সেই অভিযোগকে সত্য প্রমাণ করে দিলেন। বামপন্থীদের অভিযোগ, অনেকটা ফ্যাসিস্তসুলভ হিটলারী কায়দায় মা-মাটি-মানুষ তথা গরিব খেটে খাওয়া মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা বলে আসলে গরিব মেহনতী মানুষেরই সর্বনাশের পথ প্রশস্ত করার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী। মুখে শ্রমজীবী মানুষের কথা বললেও তিনি আসলে যে বৃহৎ পুঁজিপতি, শিল্পপতিদের প্রতিনিধি, বৃহৎ পুঁজির মুনাফা সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিই যে তাঁর লক্ষ্য, তারজন্য শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের ওপর শোষণবৃদ্ধি ও তাদের কণ্ঠরুদ্ধ করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের অধিকার হরণ করাই যে তাঁর অগ্রাধিকারের বিষয় এবং এইভাবে শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত শ্রমজীবী মানুষের বিরুদ্ধে শাসকশ্রেণীর অনুকূলে রাজ্য প্রশাসনকে পরিবর্তন করাই যে উদ্দেশ্য তা বামপন্থীরা বার বার বলে আসছেন। বামপন্থী আদর্শ যেহেতু এরাজ্যের মানুষের চেতনার অনেক গভীরে প্রোথিত তাই বামপন্থার বিরুদ্ধাচরণ করে এরাজ্যে বুর্জোয়াদের ক্ষমতা দখল অসম্ভব। অতীতে বার বার তা প্রমাণ হয়ে গেছে। তাই বুর্জোয়ারা নতুন রণকৌশল নিয়ে তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের গায়ে বামপন্থার নামাবলি চাপিয়ে পাঠিয়েছে বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। বামপন্থার ভেক্‌ধারী এই নেতা-নেত্রীরা রাতারাতি মা-মাটি-মানুষের দুঃখে কাতর হয়ে উ‍‌ঠেছেন। কৃষকের জন্য দরদ উথলে উঠছে। কর্মপ্রার্থীদের জন্য চাকরির খোয়াব দেখাচ্ছেন। উন্নয়নের নামে আবেগ-উন্মাদনা ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। অনেকটা এই কায়দাতেই শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ মানুষের কথা বলে ফ্যাসিবাদীদের উত্থান হয়েছিল জার্মানিতে এবং পরে নৃশংসভাবে নিধন করা হয়েছিল কমিউনিস্টদের। ইতিহাসের সেই ঘৃণ্য বর্বরতার প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এখন বাংলার বুকে। অবশ্য হিটলারের নৃশংস বর্বর রূপ প্রকাশ হয়েছিল ক্ষমতা দখলের পর। কিন্তু বাংলায় ফ্যাসিস্তদের নতুন সংস্করণের প্রতিভু তৃণমূল নেত্রীর মধ্যে তাঁর আসল রূপ ফুটে উঠতে শুরু করেছে ক্ষমতা দখলের আগেই। ক্ষমতা দখল করে বামপন্থী নিধন এবং দেশী-বিদেশী বৃহৎ পুঁজির মুনাফা সৃষ্টির যূপকাষ্ঠে শ্রমিকশ্রেণীকে বলি দেবার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নির্বাচনের আগেই বলে দিয়েছেন বন্‌ধ-ধর্মঘট, মিছিল-সমাবেশ, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ এইসব চলবে না। আইন করে সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাঁর ইচ্ছামতো যদি ইউনিয়ন চলে তবে ভালো, অন্যথায় ভেঙে দেওয়া হবে ইউনিয়ন। তাঁর সরকারের ইচ্ছাই হবে শেষ কথা। সরকারের অনুমতি ছাড়া আন্দোলন চলবে না। গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক অধিকার ইত্যাদির ঠাঁই হবে খাতায়-কলমে। মাঠে-ময়দানে গণতন্ত্র নিষিদ্ধ। কারখানায় লক-আউট, ক্লোজার, ছাঁটাই, মজুরি বৃদ্ধির দাবি ইত্যাদি প্রশ্নে আন্দোলন করতে হবে আবেদন নিবেদনের মাধ্যমে। দশ বছরের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যাবে না। দশ বছরের জন্য ‍‌স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্রী সরকার কায়েম থাকবে। সরকার যা-খুশি তাই করবে। সমস্যা-দাবি নিয়ে জনগণের আন্দোলন চলবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বেসরকারী হাতে তুলে দিলে বাধা দেওয়া যাবে না। জিনিসের দাম বাড়লে অসন্তোষ জানানো যাবে না। শ্রমিক-কর্মচারীদের ওপর দমন-পীড়ন হলেও ইউনিয়ন টু-শব্দ করতে পারবে না। অর্থাৎ উদারনৈতিক সংস্কার কর্মসূচী লাগু করতে, ব্যবসায়ীদের শিল্পপতিদের অঢেল মুনাফা করার বাধা-প্রতিবন্ধকতাহীন পরিবেশ তৈরি করতে বর্তমান ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে। সেজন্যই মুম্বাই, চেন্নাই থেকে তাঁকে টাকা দিতে চায় অনেকে। কত শিল্পপতি-পুঁজিপ‍‌তি-ব্যবসায়ী-কালোবাজারীরা তাঁর নির্বাচন তহবিলে উজাড় করে টাকা ঢালছেন। যারা তাদের নিজেদের স্বার্থে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী চান তাদের স্বার্থে তিনি বন্‌ধ-ধর্মঘট, আন্দোলন-সংগ্রাম নিষিদ্ধ করতে চান। বহু জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বিশ্বজুড়ে শ্রমিক‍‌শ্রেণী লড়াই-সংগ্রামের অধিকার অর্জন করেছে। বাংলার বুকে সেই অর্জিত অধিকার কেড়ে নেবার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন নেত্রী। বাংলার শ্রমজীবী মানুষ কোনো মুখোশধারী শয়তানকে কোনদিন ক্ষমা করেনি, করবেও না।




Voters waiting in a queue to cast their votes at polling booth during third phase of West Bengal Assembly Election on Wednesday.Photo:Gopal Das

78.3% turnout in West Bengal phase III polls

A total 78.3 per cent votes were cast on Wednesday in the third phase of the West Bengal Assembly elections in 75 constituencies in three districts. The polling percentage might rise as reports from remote areas of South and North 24-Parganas districts were still awaited, State Chief Electoral Officer Sunil Gupta told reporters in Kolkata. He said polling was 82.6 per cent in South 24-Parganas district, 80 per cent in North 24-Parganas districts, while Kolkata (south) registered 63.5 per cent and Kolkata (north) 61.6 per cent...  » 


Chidambaram's Absurd Charges

New Delhi, April 26: The Polit Bureau of the Communist Party of India (Marxist) has issued the following statement: The Union Home Minister, P Chidambaram, has called West Bengal among the worst governed states in the country, during his election campaign in the state.  This is a ludicrous statement coming from a person who belongs to a government which is presiding over the most corrupt regime in independent India. Mercifully, West Bengal has been saved from the style of governance that Chidambaram's party has been practicing at the Centre... » 


Slipper hurled at Kalmadi inside court complex

New Delhi, Apr 26: A slipper was hurled at former CWG organising committee chairman Suresh Kalmadi in the Patiala House Court complex here today. A man threw the slipper at 66-year-old Kalmadi, who was escorted by a posse of policemen, as he entered the court complex for being produced before a special CBI court. The person, identified as Kapil Thakur, was immediately detained, police said... » 

COMMENT

Their Morals and Ours

The media exhorts onward the Trinamool Congress and its allied spectrum, from the explicitly allied Congress to the tacitly allied Maoists. They wish to use all their might to remove the Left Front from the state government in West Bengal. Excited by the prospect of victory, they nonetheless perspire with the fear that their calculations might have gone horribly wrong.... » 


Why West Bengal Needs a Left Government

Many arguments can be advanced for why West Bengal should have a government headed by a revitalised Left Front government. Several of these reasons relate to the broader necessity for taking forward the struggle for democracy in all its various forms, including both economic justice and broader mass participation... » 

NEWS ANALYSIS

PM and HM Misleading People of Bengal

The discredited leaders of the corrupt and anti-people UPA Government have chosen to descend into West Bengal to add grist to the mill of anti-Left propaganda. It is astounding to see senior leaders like the Prime Minister and the Home Minister making false claims and misleading statements on the eve of the third phase of the assembly polls. This only exposes their lack of integrity and deep seated prejudices against the Left. HM Rants TMC mantra Throwing to winds all norms of objectivity, Home Minister Chidambaram said in Kolkata on 25th April that West Bengal was the "worst-governed" state in the country and blamed the CPI(M) and its cadres for spreading violence and turning the state into a "killing field"... » 


Left Victory in West Bengal and Kerala will Boost Left and Democratic Alternative: Prakash Karat

If we take into account the prospective election result of all these polls in five states, I think both West Bengal and Kerala would be extremely important for the importance of Left in the country. The victory of the Left in Bengal and Kerala will help the Left continue on the path of struggle for a left and democratic alternative at the national level, which is an ongoing process. I think that would get a fillip and a boost. 
[CPI(M) General Secretary spoke to www.cpimwb.org.in/vote on 19th April 2011]Question: What is your assessment about the outcomes of the state assembly elections in Tamil Nadu, Assam and Kerala?Prakash Karat: The polling is already over in Kerala, Tamil Nadu, Assam and Puducherry. I think we can discern a common pattern in all these polls, which is a strong trend against the Congress and its allies... » 

SLIDESHOW

BRIGADE RALLY

The Brigade Parade Ground in Kolkata was full to the brim on February 13, 2011...

more slideshows »

YOUR OPINION

Second UPA Govt. is not taking any effective measure to control Price Rise.

 
 
 

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors