Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Monday, April 30, 2012

উচেছদ- প্রতিবাদে আবার সরব নোনাডাঙা

http://www.thesundayindian.com/bn/story/%E0%A6%89%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A6%A6--%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%AC-%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A6%BE/19/1416/

উচেছদ- প্রতিবাদে আবার সরব নোনাডাঙা

 

স্নেহাংশু অধিকারী | Issue Dated: এপ্রিল 29, 2012
 

 "সবাই দেশ খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে ঠেকল৷ পা রাখার নয়মাথা ঠেকানোর জমির জন্য হন্যে হয়েই খালপাড়ে বসত গড়েছিল৷ তারা ছিল ভূমিপোকা,খালের ঢাল বেয়েঢাল ধরেগড়িয়ে বেঁচেছিল৷ মাথা উঁচুআকাশ নষ্ট করাফুলেফেঁপে ওঠা তাদের সাধ্য তো ছিলই নাস্বপ্নও নয়৷ মাটি চেটে চেটে সরীসৃপের মতো যে দেশযে সভ্যতা তারা গড়ে তুলেছিলবড়ই গোপনে একান্তে বাঁচাই তার ধর্ম৷"

-- (রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় ! 'স্বপ্নের বুলডোজার')

 

স্করহাটআনন্দপুরনারকেলবাগানহোসেনপুরচৌবাগারামকৃষ্ণ খালপাড়টালিগঞ্জ রেল কলোনিপেয়ারাবাগান মিলেমিশে আজ এক জায়গাএক নাম– 'নোনাডাঙা ট্রানজিট ক্যাম্প'৷ সৌজন্যেকলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট (কেইআইপি)৷ বস্তুত টালিগঞ্জ-পঞ্চান্নগ্রাম খাল সংস্কারের কারণে বাম আমলেই এই কেইআইপি-ই রাজনৈতিক ফতোয়া জারি করে এতগুলো মানুষকে এনে বসিয়েছিল এই স্থায়ী হাহাকারের মধ্যে৷ আর খুড়োর কলের মতো ঝুলিয়ে রেখেছিল 'পুনর্বাসনের গপ্পো'৷ কেউ দু'বছরকেউ চার – পুনর্বাসনের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকাটা মোটামুটি অভ্যাস করে ফেলেছিলেন প্রায় সকলেই৷

মাঝখানে ব্যাপক রদবদল হল রাইটার্সে৷ লাল ঝাণ্ডার জায়গায় এল সবুজ৷ ভোটের আগে বস্তি উন্নয়নের একটা ইঙ্গিতও ছিল তৃণমূলের ইস্তেহারে৷ কিন্তু এতদিনে সব উধাও৷ মাথার উপর ইলেকট্রিসিটির হাই এক্সটেনশনআর পেছনের দিকে ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে পর-পর বহুতল৷ অথচ খাটিয়া পাতা-প্লাস্টিক টাঙানো আড়াইশো ঘরে, 'জিরো ওয়াটের বাল্ব'-ও স্বপ্নের মতো – এ-সব নিয়ে নোনাডাঙার ছবিটা আজও একইরকম৷ এরইমাঝে আবার ইয়ার-এন্ডিং তৎপরতায় বস্তি-উচেছদে গত তিরিশে মার্চ নামল অভিযানে নামল সরকারি বুলডোজারগুঁড়িয়ে দেওয়া হল প্রায় 200 ঘরবস্তিবাসীরা বলল ইচেছ করে আগুন লাগানো হয়েছেসেই আগুন নেভাতে আবার সরকারেরই দমকল এল তিনটে৷ উচেছদ-প্রতিবাদ-গ্রেফতার আবার জমজমাট নোনাডাঙা ঠিক2009-এর মে মাসের মতই৷ তিরিশে বস্তি ভাঙার পর থেকেই শুরু হয় উচেছদ-বিরোধী আন্দোলন৷ নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের কয়েকজন নেতানেত্রী৷ গড়ে ওঠে 'উচেছদপ্রতিরোধ কমিটি'৷ 4 এপ্রিল বিক্ষুব্ধ বস্তিবাসীর উপর পুলিশি লাঠিচার্জে উত্তপ্ত রুবি মোড়৷ মিছিলের একেবারে সামনের দিকে মহিলারা ছিলেন৷ তাই পুলিশের হাতে সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছেন তাঁরাই৷ উচেছদবিরোধী এই মিছিলের খবর তিলজলা পুলিশের কাছে আগে থেকেই ছিল  বলে জানা গেছে৷ তাই বাহিনী মোতায়েন করে মিছিল আটকাতে শুরু করেন তাঁরা৷ পুলিশ অবশ্য এই নির্বিচারে লাঠিচার্জের অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে৷ তাঁদের কথায়পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে না যায়সেই কারণেই মামুলি লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হন তাঁরা৷ মিছিলে ছিলেন প্রায় দেড়শো মানুষ৷ পুলিশের কাছে মার খেয়ে ছত্রভঙ্গ হওয়ার পরও বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভ জানায় তাঁরা৷ সেদিনের মত বিক্ষোভকারীরা ফিরে গেলেও 8 এপ্রিল ফের তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন রুবির মোড়ে৷ ঘটনাস্থল থেকেই ন-বছরের এক বালিকাসহ পুলিশ গ্রেফতার করে 69 জনকে৷ মা ও সেই বালিকাকে সেদিন রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়৷ বাকিদের মধ্যে মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতির নেত্রী দেবলীনা চক্রবর্তী-সহ সাতজনের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলাও রজু করা হয়েছে৷ ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন দেবযানী ঘোষডাত্তুার সিদ্ধার্থ গুপ্তবিজ্ঞানী পার্থসারথি রায়সৌমিক চক্রবর্তীবাবুন চট্টোপাধ্যায় এবং অভিজ্ঞান সরকার৷

মামলার প্রসঙ্গে সরকারি তরফের আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বস্তিউচেছদর বিরুদ্ধে এই আন্দোলন সংগঠিত করেছে মূলত মাওবাদী ও নকশালপন্হীরা৷ তারা ওই এলাকায় অস্ত্রও মজুত করছে বলে অভিযোগ৷"

রুবি যেদিন প্রথম রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়ঠিক তার পরের দিনই পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম গিয়েছিলেন নোনাডাঙায়৷ উচেছদ বিরোধী কমিটির এক প্রতিনিধি দল তাঁর কাছে ডেপুটেশনও জমা দেয়৷ কিন্তু মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন – প্রথম ধাপে নোনাডাঙায় যাদের অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছিলতাদের প্রত্যেককেই পুনর্বাসিত করা হয়েছে৷ কিন্তু গত ছ-মাসের মধ্যে যাঁরা ওই জমিতে বসবাস শুরু করেছেনতাঁদের পুনর্বাসনের কোনও প্রশ্নই উঠছে না৷ গোটা ব্যাপারটা নিয়ে সিপিএম এবং নকশালপন্হীরা ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন তিনিও৷

এদিকে আবার সোমবারই ফের ছিয়াশি জন উচেছদ বিরোধীর গ্রেফতারের সংবাদ আসে কলেজ স্কোয়ারের একটি মিছিল থেকে৷ পুলিশের যুত্তিু – আগের থেকে এই মিছিলের ব্যাপারে প্রশাসনকে কিছু জানানো হয়নি৷ তাই শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশকে বাধ্য হয়েই গ্রেফতার করতে হয়েছে৷ আন্দোলনকারীরা জানান রবিবার ধৃত সাত নেতৃত্ব এবং উচেছদ হওয়া বাস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবিতেই প্রশাসনকে জানিয়ে মিছিলে নেমেছিল তাঁরা৷

বস্তিবাসীদের এই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে স্বাভাবিকভাবেই প্রবল অস্বস্তিতে মা-মাটি-মানুষের সরকার৷ সরকারের সবেতেই মাওবাদী ভূত দেখাকেও কটাক্ষ করছেন অনেকেই৷ গত চৌত্রিশ বছরের সরকারের অবিকল ফোটোকপিও বলছেন কেউ-কেউ৷ যেমন একটা মিল – সমস্যার মূলে  যেতে রাজি নয় এ-সরকারও৷ ডেলি প্যাসেঞ্জারির ঝামেলা এড়াতে কিংবা সবোর্পরি নিজের নামে একখানা ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিতে পাড়ার কোন দাদাদের 'দিলখুশ' করে এরা বছরের পর বছর ধরে রেল লাইন অথবা খালপাড়ে বেমালুম বসে পড়ছেতার হিসেব কে রাখেকলকাতা শহরটা আসলে গড়েই উঠেছে একশোটা'পরিকল্পনা' আর পাঁচশোটা 'অ-পরিকল্পনা' নিয়ে৷ ব্রিটিশ আমলে প্রাথমিক ভাবে বলা হয়েছিলএই সমূহ পরিকল্পনা শহরের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই৷ কিন্তু এ উন্নয়ন কখনই এক অংশের মানুষকে তাদের জীবন-জীবিকা থেকে সরিয়ে দিয়ে নয়৷ কাদের উন্নয়নের স্বার্থে এদের উচিছন্ন হতে হচেছ ভেবে দেখতে হবে৷ তার চেয়েও বড় কথা – কারা এনে বসাচেছ এদেরবের করতে হবে! এমন তো নয় যে কলকাতার বুকে এবারই প্রথম উচেছদ হয়েছে! আগেও হয়েছে ভবিষ্যতেও হবে৷ একদা পরিবর্তমকামী বুদ্ধিজীবী মহল ইতিমধ্যেই বড় আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ গায়ক-সাংসদ কবীর সুমন যেমন গানের আখরে লিখলেন – "সিঙ্গুর থেকে নোনাডাঙা!একই দৃশ্য একই মার! উচেছদে সব শাসকই এক ! দাঁড়াও বন্ধু আরেক বার ! বিরুদ্ধে কেউ গেলেই পুলিশ !এ গ্রেফতার ও গ্রেফতার! বাচচাদেরও নিস্তার নেই ! দাঁড়াও বন্ধু আরকেবার...সিঙ্গুরের সাথে এখনই তুলনা হয়ত আসে নাতবু কী আর করার – ঘরপোড়া গরুরা তো ভয়ে মরবেই৷ 

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors