Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Sunday, January 20, 2013

গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ফাঁকা বুলিতে বিভ্রান্ত বহুজন সমাজের মানুষ হাজারো জাতি সম্প্রদায়ে বিভক্ত একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।অন্যদিকে করপোরেট আগ্রাসী রাষ্ট্র করপোরেট স্বার্থে নবধনাঢ্য পয়সাওয়ালা শাসকশ্রেণীর পূর্ম সমর্থনে ধর্মজতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে অক্লান্ত গণসংহার চালিয়ে যাচ্ছে।মোদী বা গান্ধী নেহরু পরিবারের পতাকাতলে শাসকশ্রেণীর স্বার্থে যেভাবে জনগণ নিজেরই সর্বনাশে ইন্ধন যুগিয়ে চলছে, ঠিক একই ভাবে হিংসা ও ঘৃণা অভিযানে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বাংলাদেশী জনগন ও প্রতিনিয়ত মুক্ত বাজারের শিকারন ওদিকে পাকিস্তানে ত ধর্ম ও সৈন্য আধিপাত্যবাদ একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিকেশ করে দিচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের অস্তিত্ব। পলাশ বিশ্বাস

 গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ফাঁকা বুলিতে বিভ্রান্ত বহুজন সমাজের মানুষ হাজারো জাতি সম্প্রদায়ে বিভক্ত একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।অন্যদিকে করপোরেট আগ্রাসী রাষ্ট্র করপোরেট স্বার্থে নবধনাঢ্য পয়সাওয়ালা শাসকশ্রেণীর পূর্ম সমর্থনে ধর্মজতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে অক্লান্ত গণসংহার চালিয়ে যাচ্ছে।মোদী বা গান্ধী নেহরু পরিবারের পতাকাতলে শাসকশ্রেণীর স্বার্থে যেভাবে জনগণ নিজেরই সর্বনাশে ইন্ধন যুগিয়ে চলছে, ঠিক একই ভাবে হিংসা ও ঘৃণা অভিযানে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বাংলাদেশী জনগন ও প্রতিনিয়ত মুক্ত বাজারের শিকারন ওদিকে পাকিস্তানে ত ধর্ম ও সৈন্য আধিপাত্যবাদ একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিকেশ করে দিচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের অস্তিত্ব

পলাশ বিশ্বাস
আরতি

কুম্ভমেলা

আরতি

এভাবেই অগ্নি প্রজ্বলনের মাধ্যমে শুরু হয় উৎসব৷ এবার আবার মহাকুম্ভ৷ ধারণা করা হচ্ছে, চলতি উৎসবের সময় দশ কোটির বেশি মানুষ গঙ্গার জলে স্নান করবেন৷

দুহাজার চোদ্দর লোকসভা নির্বাচনে কার্যত কংগ্রেসের হাল ধরতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। সংগঠনে আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে দলের সহ সভাপতি করা হয়েছে। এই মর্মে  এই মর্মে প্রস্তাব পাশ হয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতেম এবার তাহলে প্রধামমন্ত্রিত্বের লড়াই মুখোমখি ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দুত্ব ও মৌলবাদী হিন্দুত্ব।দুপক্ষই গণসংহার সংস্কার নীতিতে অশ্বমেধ যজ্ঞে পূর্ণহুতি দিতে বদ্ধ্পরিকর।ভারতে ভারত ভাগ করে ধ্বংস  করা হল বহুজনসমাজকে, তাই তৃতীয় বিকল্পের কোনও সম্বাবনাঅদুর ভবিষ্যতে নেই মুক্তবাজারে বিশ্বয়নের আধিপাত্যবাদী জাযনবাদী ধর্মজাতীযতাবাদ নিয়ন্ত্রিত অর্থব্যবস্থায় ক্রমশঃ এই গোটা উপমহাদেশে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার, নাগরিকত্ব ও মানবঅধিকারের কোনও অস্তিত্বই থাকছে না।ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানেও বাজারেরে প্রভূ শ্রেণী পুঁজির একচেটিয়া দাপটে শেষ করে দিচ্ছে মানুষের বেঁচে বর্তে থাকার অধিকার।ক্ষমতার লড়াইয়ে রক্তক্ষয়ী  অভিযান চলছে সর্বত্র, সর্বত্র আড়াআড়ি বিভক্ত জনঘম ক্ষমতার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী সৈন্যবাহিনীতে নাম লিখিয়ে আত্মঘাতী পর্লয় উল্লাসে মেতে মৃত্যর পদধ্বনিও শুনতে অপারগ। গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ফাঁকা বুলিতে বিভ্রান্ত বহুজন সমাজের মানুষ হাজারো জাতি সম্প্রদায়ে বিভক্ত একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।অন্যদিকে করপোরেট আগ্রাসী রাষ্ট্র করপোরেট স্বার্থে নবধনাঢ্য পয়সাওয়ালা শাসকশ্রেণীর পূর্ম সমর্থনে ধর্মজতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে অক্লান্ত গণসংহার চালিয়ে যাচ্ছে।মোদী বা গান্ধী নেহরু পরিবারের পতাকাতলে শাসকশ্রেণীর স্বার্থে যেভাবে জনগণ নিজেরই সর্বনাশে ইন্ধন যুগিয়ে চলছে, ঠিক একই ভাবে হিংসা ও ঘৃণা অভিযানে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বাংলাদেশী জনগন ও প্রতিনিয়ত মুক্ত বাজারের শিকারন ওদিকে পাকিস্তানে ত ধর্ম ও সৈন্য আধিপাত্যবাদ একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিকেশ করে দিচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের অস্তিত্ব

প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গান্ধীকে দেখতে তাঁরা কতটা মরিয়া, চিন্তন শিবিরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তা স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস কর্মীরা। একাধিক অ্যাজেন্ডা সামনে রেখে আলোচনা শুরু হলেও, শনিবার রাহুলকে নিয়ে আলোচনার ছায়ায় বাকি সব কিছু ঢাকা পড়ে যায়। 

ঘটনা হল, দলের মাঝারি বা ছোট মাপের নেতারা এত দিন প্রায়শই বলতেন। কিন্তু বর্ষীয়ান নেতারা সে ভাবে মুখ খোলেননি। জয়পুরে সঞ্জয় নিরুপমের মতো সিনিয়র নেতাকেও শোনা গিয়েছে, '২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেই লড়বে, সে কথা প্রায় ঘোষিত। উনিই আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।' নিরুপমের সুর বীরাপ্পা মইলির গলায়, 'আমাদের দলের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের নেতা হলেন রাহুল।' মণিশংকর আইয়ারের আশ্বাস, রাজীব-তনয় যদি 'বৃহত্তর ভূমিকা' নিতে আগ্রহী হন, তা হলে পুরো দল তাঁর পাশে থাকবে। 

এ ছাড়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, রাজীব শুক্ল, জিতিন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরার মতো তথাকথিত 'ইয়ং ব্রিগেড'-এর দাবি তো রয়েইছে। এদিনই যেমন মিলিন্দ দেওরা বলেছেন, 'চিন্তন শিবিরে একটি বিষয়ে সকলেই একমত, দলের তরুণ-যুবাদের আরও দায়িত্ব দেওয়া হবে।'

দেশে বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আগেও একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এবার মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতা বলে স্বীকার করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তবে চলতি অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে রবিবার কংগ্রেসের চিন্তন বৈঠকের শেষ দিনে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডের মন্তব্য ঘিরে উসকে উঠল বিতর্ক। আরএসএস এবং বিজেপি দেশে হিন্দু সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কংগ্রেসের চিন্তন শিবির চলাকালীন এ মন্তব্য করেন শিন্ডে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল। শিন্ডের এই আপত্তিজনক মন্তব্যের জন্য সনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধির ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করেছে বিজেপি। 

 ডিজেলের দাম কমানোর কোনও প্রশ্নই নেই৷ সাফ জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি৷ একই সঙ্গে মইলি জানিয়েছেন, ডিজেলের পাইকারি ক্রেতাদের নিজস্ব বাজেটেই এই বর্ধিত দামের বন্দোবস্ত করতে হবে৷ 
বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির সঙ্গে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের বৈঠকে স্থির হয়েছে, ডিজেলের পাইকারি ক্রেতারা ভর্তুকি পাবেন না৷ ফলে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৫০ পয়সা বাড়লেও পাইকারি ক্রেতাদের সেক্ষেত্রে প্রায় ১০ টাকা বেশি দিতে হবে৷ ডিজেলের বাড়তি দামের জন্য রেল, ইস্পাত, এবং বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদনকারী সংস্থাগুলিকে অনেক বেশি টাকা দিয়ে ডিজেল কিনতে হবে৷ এই বাড়তি দামের বোঝা যে কেন্দ্র লাঘব করবে না, শনিবার জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের মাঝেই সাংবাদিকদের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মইলি৷ এখন সবচেয়ে বেশি পাইকারি হারে ডিজেল কেনে রেল৷ যদিও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রেলের উপর প্রভাব পড়বে না বলেই মইলির মন্তব্য৷ 
পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাইকারি ক্রেতারা বাণিজ্যিক দামেই জ্বালানি কেনে৷ এই সংস্থাগুলির বাজেটে বর্ধিত দামের বন্দোবস্ত রাখতে হবে৷ মইলি অবশ্য জানাতে ভোলেননি ডিজেল এবং পেট্রোলে বিনিয়ন্ত্রণ ২০০২ সালেই শুরু হয়েছিল৷ সেই সময় কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার৷ ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিজেলে ভর্তুকি জারি রেখেছে৷ আপাতত বর্ধিত দামে ডিজেল কিনতে হলে রেল মন্ত্রককে বাড়তি ২,৭২৭ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে৷ রাজ্য পরিবহণ সংস্থাগুলিকে দিতে হবে বাড়তি ২,৪৬২ কোটি টাকা৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে দিতে হবে বাড়তি ২৯৯ কোটি টাকা৷

সমঝোতা এক্সপ্রেস ও মক্কা মসজিদের সন্ত্রাসবাদী হামলা ও মালেগাঁও বিস্ফোরণের পেছনে হাত রয়েছে আরএসএস-এর। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে রবিবার এই অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে। এর সঙ্গে বিজেপি-ও যুক্ত বলে দাবি তাঁর। বিজেপি ও আরএসএস দেশের মধ্যে হিন্দু সন্ত্রাস ছড়ানোয় সাহায্য করছে বলে এদিন অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট খবর রয়েছে বলেও দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 


শিন্ডের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি মুখপাত্র মুখতার আব্বাস নকভি সুশীল কুমার শিন্ডের মন্তব্যকে 'অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক' আখ্যা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, "এ দেশে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোয় সাহায্য করার জন্য পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার বদলে কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপি-কে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। শিন্ডের এই মন্তব্যের জন্য সনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধির ক্ষমা চাওয়া উচিত।" 

কংগ্রেস অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে এসেই দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা মণশঙ্কর আইয়ার বলেছেন যে শিন্ডে এমন একটা গোপন তথ্যকে তুলে ধরেছেন, যেটা সবারই জানা। শিন্ডে অবশ্য পরে সাংবাদিকদের সামনে নিজের মন্তব্যকে কিছুটা লঘু করার চেষ্টা করেছেন। 'গৌরীয় সন্ত্রাস' সম্পর্কে বিভিন্ন সংবাদপত্রে যে খবর পরিবেশিত হয়, সেটাই তিনি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন।

 পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়াল ভারত৷ সীমান্ত-সমস্যা নিয়ে তো বটেই, সরবজিত্‍ সিং নিয়েও৷ সীমান্ত-সমস্যা এবং ভারতীয় জওয়ানদের হত্যার ব্যাপারে ভারত-পাকিস্তান চাপানউতোর চলছেই৷ তবে অন্য কোনও দেশের প্ররোচনায় ভারত যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ৷ শনিবার এক সাক্ষাত্‍কারে তিনি জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সীমান্ত-সমস্যার ব্যাপারে আলোচনা করলেও পাকিস্তানের ব্যাপারে ভারত ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তান নীতির দ্বারা ভারত কোনও ভাবেই অনুপ্রাণিত নয়৷ ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার প্রশ্নেও এ দিন কোনও সদর্থক বার্তা দেননি তিনি৷ 

অন্য দিকে, পাকিস্তানে বন্দি ভারতীয় নাগরিক সরবজিত্‍ সিংয়ের মুক্তির বিষয়ে এ দিন জোরদার দাবি তুলেছেন তাঁর আইনজীবী আওয়াইস শেখ৷ তিনি দাবি করেন, তাঁর মক্কেল দু'দেশের সীমান্ত রাজনীতির শিকার৷ আওয়াইস বলেন, 'কোনও দোষ না করেও সরবজিত্‍ প্রায় ২২ বছর জেল খাটছেন৷ ১৯৯০-এর পাকিস্তান বিস্ফোরণে অভিযুক্ত মনজিত্‍ সিংয়ের বদলে ভুল করে তাঁকে ধরা হয়েছে৷' পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি চাইলে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরবজিতের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারেন বলেও দাবি করেন তিনি৷ 

পাকিস্তানের তরফে সুর নরম করা হলেও ভারত কোনও ভাবে এখনই নিজেদের অবস্থান থেকে সরছে না৷ খুরশিদের বক্তব্য ও সরবজিতের আইনজীবীর দাবি সেই চিত্রই তুলে ধরল শনিবার৷

গত অর্থবর্ষ থেকেই চড়চড়িয়ে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার। দাম বেড়েছে খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। ভোটের ময়দানে মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুকে যে বিরোধীরা হাতিয়ার করবে, তাও স্পষ্ট। এই অবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মুদ্রাস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল, বাস্তবে তার চেয়ে অনেকটাই বেশি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা একটা ব্যর্থতা।" 

তবে মুদ্রাস্ফীতির এই চড়া হারের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকেই দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত আট বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্যের দাম যে ভাবে চড়চড়িয়ে বেড়েছে, তার প্রভাবেই এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি বলে দাবি করেছেন মনমোহন সিং। এর পাশাপাশি, কৃষকদের আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিতে কৃষিজাত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এই কারণেও শস্যপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে সরকার নির্দিষ্ট ভাবে কয়েকটি পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মূল্যবৃদ্ধি ঘটলেও, জাতীয় আয়ের নিরিখে এনডিএ জমানার চেয়ে ইউপিএ সরকার যে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে তাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, এনডিএ-র আমলে জাতীয় আয়ের গড় ছিল ৫.৮ শতাংশ। ইউপিএ জমানায় তা বেড়ে হয়েছে ৮.২ শতাংশ। 

এদিন দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মহিলাদের পুরুষদের সমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা দিতে এ দেশকে এখনও অনেক পথ যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। পাশাপাশি, সীমান্তে উত্তেজনা নিয়েও এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মনমোহন সিং। নিয়ন্ত্রণরেখায় টহলদারির সময় ভারতীয় জওয়ানের মাথা কেটে খুন করার ঘটনা দু-দেশের সম্পর্কে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের উদ্যোগও এর ফলে ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

২০ হাজার পয়েন্টের গণ্ডি ছাড়িয়ে সন্তাহের শেষ দিন বাজার বন্ধ হল ২০০৩৯.০৪ পয়েন্টে৷ এ দিন ০.৩৮ শতাংশ বা ৭৫.০১ পয়েন্ট উঠেছে শেয়ার বাজার৷ সপ্পাহের শুরুতে জিএএআর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা ও শেষে ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণের পথে সরকার পদক্ষেপ করায় শেয়ার বাজারে এই উত্থান৷ গত শুক্রবার বাজার বন্ধ হয়েছিল ১৯৬৬৩.৬৪ পয়েন্টে৷ অর্থাত্ সাত দিনে শেয়ার সূচক উঠল ৩৭৫.৪০ পয়েন্ট বা ১.৯১ শতাংশ৷ 

শেয়ার সূচক বৃদ্ধির সেরা ছয়ের তালিকায় রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (১০.৪৬ শতাংশ), ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (৯.৯৬), অয়েল ইন্ডিয়া (৮.৯৫), ওএনজিসি (৭.৩১), ইন্দ্রপ্রস্থ গ্যাস (৫.৬০) ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (৪.৯৯ শতাংশ)৷ বৃহস্পতিবার সরকার ডিজেলের বিনিয়ন্ত্রণের পথে পদক্ষেপ করায় ও ভর্তুকি ছাড়া রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করাতেই শুক্রবার সবচেয়ে বেশি উঠেছে তেল ও গ্যাস সংস্থাগুলির সূচক (২৮৭.২৪ পয়েন্ট)৷ বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ক্ষেত্রবিশেষের সূচকে এর পরেই রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা (২১১.৬৩ পয়েন্ট) ও শক্তি ক্ষেত্র (২৮.৩৭ পয়েন্ট)৷ 

সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার জানায় ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বরের আগে জেনারেল অ্যান্টি অ্যাভয়ডেন্স রুল (জিএএআর) লাগু করা হচ্ছে না৷ সোমবার সেনসেক্স সূচক ওঠে ২৪২.৭৭ পয়েন্ট, মঙ্গলবার ৮০.৪১ পয়েন্ট৷ এর আগে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি ২০ হাজার পয়েন্টের উপরে ছিল সেনসেক্স৷ 

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণ নীতিতে বদল ঘটাবে না বলার পরে হতাশ বাজার বুধবার (১৬৯.১৯ পয়েন্ট) পড়েছিল৷ কিন্ত্ত সরকার ডিজেলের দাম বিনিন্ত্রণের পথে চলায় বৃহস্পতি (১৪৬.৪০ পয়েন্ট) ও শুক্রবার (৭৫.০১ পয়েন্ট) ওঠে৷ সরকারের ঘোষণায় এ দিন সকাল থেকে টাকার বাজারও চাঙ্গা ছিল৷ বৃহস্পতিবার ডলার সাপেক্ষে টাকার দাম ছিল ৫৪.৩৯ টাকা৷ বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই টাকার দাম এক ধাক্কায় ৩০ পয়সা বেড়ে যায়৷ একটু বেলার দিকে টাকার দাম ৫৪ থেকে ৫৩-র ঘরে চলে যায়, যা গত আড়াই মাসে রেকর্ড৷ শুক্রবার দিনের শেষে ডলারপিছু টাকার দাম হয় ৫৩.৭১ টাকা৷ ২১ জানুয়ারি জাপানের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাঙ্ক অফ জাপান সুদের হার কমাতে পারে, এই আশঙ্কায় এ দিন ইয়েনের দাম কম ছিল৷ 


সেবির তথ্য অনুযায়ী এ দিন বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হয়েছে ৬২১.৪০ কোটি টাকা৷ এ দিন ক্ষেত্রবিশেষে সূচক বেড়েছে অয়েল অ্যান্ড গ্যাস (৩.০৯), পিএসএইউ (২.৭৭), পাওয়ার (১.৪৪), রিয়েলটি (০.৮৬), ক্যাপিটাল গুডস (০.২১), ব্যাঙ্ক (০.১৪) এবং এফএমসিজির (০.০৩ শতাংশ)৷ সূচক পড়েছে হেলথকেয়ার, কনজিউমার ডিউরেবলস, মেটাল, অটো, টেক ও আইটির৷ 

সেনসেক্স উঠলেও বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে মিডক্যাপ (-০.২৩) ও স্মলক্যাপ (-০.৫২) সংস্থাগুলির সূচক পড়েছে৷ আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজার কুড়ি মাসে সবচেয়ে বেশি চাঙ্গা ছিল৷ ২০১২ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে চিনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য বেশি (৭.৯ শতাংশ) বৃদ্ধি পেয়েছে৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃহস্পতিবার বাজার ছিল চাঙ্গা৷ নিউ ইয়র্কের স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরসের সূচক পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি উঠেছে৷ এমএসসিআই গ্লোবাল ইক্যুইটি ইন্ডেক্স ২০১১ সালের মে মাসের পর রেকর্ড ৫৫১.৯০ পয়েন্ট হয়েছে৷ পয়লা জানুয়ারির আগে শেষ মুহূর্তে কয়েকটি পদক্ষেপ করে 'ফিসক্যাল ক্লিফ' এড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তাতে কর বৃদ্ধি, খরচ কমের মতো ঘটনা ঘটলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সদর্থক ইঙ্গিত দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের দাম ০.১ শতাংশ বেড়েছে৷ মার্কিন বাজারের সদর্থক প্রভাব পড়েছে ইউরোপেও৷ ফ্রাঙ্কফুর্টের স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএএক্স, লন্ডনের এফটিএসই ১০০, প্যারিসের সিএসি-৪০ সহ বেড়েছে ০.২ থেকে ০.৩ শতাংশ৷ 

আগামী মাসে তাদের ডাকা দু'দিনের সাধারণ ধর্মঘট সফল করতে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছে বাম-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন৷ আর সেই ধর্মঘট 'ব্যর্থ' করতে চেষ্টা শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ রাজ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে যে টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে, শনিবার তার বৈঠকেই ধর্মঘট ব্যর্থ করতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে উদ্যোগী হতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বৈঠকে তিনি বলেন, 'ধর্মঘট রোখার দায়িত্ব নিতে হবে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকেও৷ এ বিষয়ে তারা উদ্যোগী হলে সরকার পাশে থাকবে৷' 

সম্প্রতি হলদিয়ায় 'বেঙ্গল লিডস'-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'কথায় কথায় এ রাজ্যকে গুজরাটের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে৷ কিন্তু গুজরাটে উন্নয়নের কাজে রাজনৈতিক বাধা আসে না৷ কথায় কথায় বন্ধ, ধর্মঘট, অবরোধও হয় না৷' বস্ত্তত, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন যে অবস্থানই নিন না কেন, সরকারে এসে রাজ্যে বন্ধ, ধর্মঘট রুখতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২০১২-র ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘট রুখতে সরকারি কর্মচারীদের একদিনের বেতন কাটা এবং চাকরিতে ছেদেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতা সরকার৷ 

তবে সরকারের উপলব্ধি, ভয় দেখিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘটের দিন কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা গেলেও, অন্যান্য ক্ষেত্রে ততটা নিয়ন্ত্রণ থাকছে না প্রশাসনের৷ ফলে, জনজীবনে প্রভাব পড়ছে ধর্মঘটের৷ এই কারণেই বিশেষত দোকানপাট খোলা রাখা এবং বেসরকারি পরিবহণ চালু রাখার ক্ষেত্রে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার৷ যে কারণে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, ধর্মঘটে সামিল হলে অটো বা ট্যাক্সির লাইসেন্স বাতিল করবে পরিবহণ দপ্তর৷ ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট রুখতে এ বার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রীও৷ শনিবারের বৈঠকের পরে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির তরফে রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন--কোনও ভাবেই ধর্মঘট বরদাস্ত করবে না প্রশাসন৷ আপনারাও ব্যবস্থা নিন৷ সরকার পাশে থাকবে৷'
পাকিস্তান প্রশাসনের পর এ বার বিরোধী গোষ্ঠী৷ সুন্নি নেতা কাদরির তোপের মুখ থেকে রেহাই নিয়ে কারওর৷ তেহরিক মিনহাজ-উল-কোরানের প্রধান তাহির-উল-কাদরি শনিবার পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন)-এর প্রধান নাওয়াজ শরিফ ও তাঁর ভাই শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ আনলেন৷ 

পাকিস্তানের রাজনীতিতে হঠাত্ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ কাদরি এ দিন জানান, শরিফ ভ্রাতৃদ্বয় এক সময় তাঁর ধর্মীয় ভাবনাকে সমর্থন করলেও, সম্প্রতি কাদরির বিরুদ্ধে তাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন৷ দু'ভাইয়ের সঙ্গে এক সময় কাদরির সদ্ভাব থাকলেও ১৯৯০ সালের পর থেকে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে৷ শরিফ ভ্রাতৃদ্বয় সৌদি আরবে থাকাকালীনই কাদরির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি শুরু বলে দাবি ওই ধর্মীয় নেতার৷ পরিকল্পিতভাবে কাদরির বিরুদ্ধে কুত্সা রটানোর জন্য তাঁদের দলের তহবিল থেকে কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা খরচ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন কাদরি৷ 

কানাডার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা ধর্মীয় নেতা কাদরি কিছুদিন আগেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংস্কার ও ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে চার দিনের প্রতিবাদ আন্দোলন করেছিলেন৷ তার সমর্থনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিলেন ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সংসদের সামনে৷ বৃহস্পতিবার পাকিস্তান প্রশাসনের সঙ্গে এক চুক্তির পর কাদরি তাঁর আন্দোলন তুলে নেন৷ চুক্তিতে বলা হয়েছে, পাক সরকার ১৬ মার্চের আগেই সংসদ ভেঙে দেবে৷ সেক্ষেত্রে চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তানের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷ 

কাদরির কানাডার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠার ব্যাপারেও তিনি এ দিন শরিফ ভ্রাতৃদ্বয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন৷ তিনি জানান, পকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি থেকে পদত্যাগের পরই তিনি কানাডার নাগরিকত্ব পেয়েছেন৷ উদ্বাস্ত্ত হিসেবে কখনওই কানাডা প্রশাসনের কাছে তিনি আশ্রয় চাননি, বরং এক জন ধর্মীয় নেতা হিসেবে আইনানুযায়ীই তিনি নাগরিকত্ব পেয়েছেন৷ 

অন্য দিকে, পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী কামরান ফৈজলের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাল তাঁর পরিবার৷ পাক সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরফকে গ্রেন্তারের নির্দেশ দেওয়ার পর দিনই ইসলামাবাদের সরকারি আবাসন থেকে ফৈজলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তে ফৈজলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হলেও তাঁর হাতে ও ঘাড়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে দাবি তাঁর পরিবারের৷ প্রধানমন্ত্রীর মামলা থেকে অব্যাহিত চেয়ে তিনি কয়েকদিন অবসাদগ্রস্ত ছিলেন বলেও জানান তাঁরা৷

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন আইন

জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা পুনর্বহাল

বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ৩০-০৬-২০১১


সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন আইন-২০১১ সংসদে পাস হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্রপরিচালনার চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে ফিরে এল।
পঞ্চদশ সংশোধন আইনে বাহাত্তরের সংবিধানের এ অনুচ্ছেদ ফিরে আনা হয়েছে। একই সঙ্গে সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য করে নতুন অনুচ্ছেদ সন্নিবেশ করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ-৮-এর রাষ্ট্রীয় মূলনীতির দফা ১ ও (১ক)-এর পরিবর্তে '(১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এই নীতিসমূহ এবং তত্সহ এ নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত এইভাবে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে'—এর স্থলে প্রতিস্থাপিত হয়েছে, 'সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাত্ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার নীতিসমূহ এবং এসব নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত সকল নীতি রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি বলে পরিগণিত হবে।'
সংবিধানের প্রস্তাবনার প্রথম অনুচ্ছেদে (১ক) 'জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধের' শব্দের পরিবর্তে 'জাতীয় মুক্তির ঐতিহাসিক সংগ্রামের শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হয়েছে। খ) প্রস্তাবনার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে প্রতিস্থাপিত হয়েছে 'আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোত্সর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এ সংবিধানের মূলনীতি হইবে।'
বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিষয়ে অনুচ্ছেদ ৯-এ প্রতিস্থাপিত হয়েছে 'ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।'

http://www.prothom-alo.com/detail/news/166626



পাকিস্তানে আবার সামরিক শাসন শুরু হতে পারে৷ হঠাৎ শুনে আঁতকে উঠতে পারেন, তবে সে দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো খুঁটিয়ে দেখলে মনে হবে, গত ৬৫ বছরে অনেকবার সামরিক শাসন দেখা দেশটির একই অভিজ্ঞতা হতেই পারে৷

মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরি একজন সুফি ধর্মীয় নেতা৷ ক'দিন আগেও এটুকুই ছিল তাঁর পরিচয়৷ পাকিস্তানের গণমাধ্যমে হঠাৎ করেই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন তিনি, যেন তিনি দেশের সবচেয়ে বড় তারকা৷ পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও – সব জায়গাতেই শুধু মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরির খবর৷ খবর হওয়ার মতো একটা কাজেই নেমেছেন তিনি৷ ক্যানাডা থেকে কিছুদিন হলো পাকিস্তানে এসেছেন৷ এসেই দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে সবার আগে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার ডাক৷ তাঁর ডাকে ইসলামাবাদে জড়ো হয়েছে হাজার হাজার মানুষ৷ সংসদ ভবনের সামনে বসে পড়েছেন সবাই দাবি আদায়ের প্রতিজ্ঞা নিয়ে৷ দুর্নীতি নির্মূল এবং রাজনৈতিক সংস্কার – শুনতে খুব ভালো লাগে৷ এই দুই দাবি আদায় হলে, সে অনুযায়ী দেশে পরিবর্তনের জোয়ার এলে দেশের সব সাধারণ মানুষই খুশি হবেন৷ দুর্নীতি তো পাকিস্তানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে৷ প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিকে সবাই চেনে 'মিস্টার টেন পারসেন্ট' হিসেবে৷ কারণ একটাই – দুর্নীতি৷ দুর্নীতির শেঁকড় কতটা গভীরে প্রোথিত হলে এমন হতে পারে ভেবে দেখুন!

epa03536629 (FILE) A file picture dated 18 September 2012 shows Pakistan's Prime Minister Raja Pervez Ashraf leaving the Supreme Court after a hearing, in Islamabad, Pakistan. Pakistan's Supreme Court on 15 January 2013 ordered the arrest of Prime Minister Raja Pervez Ashraf for alleged involvement in corruption during his tenure as minister for water and power. EPA/T. MUGHAL +++(c) dpa - Bildfunk+++প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ

পাকিস্তানের প্রতিটি সাধারণ মানুষই চান  দুর্নীতি নামের 'মহাব্যাধি' থেকে মুক্ত একটি দেশ৷ আর এ সুযোগটাই নিয়েছেন মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরি৷ পাকিস্তানের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই মনে করেন, মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরি আসলে মাঠে নেমেছেন সেনাবাহিনীর ইশারায়৷ সেনাবাহিনী চায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনটা পিছিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসার একটা পথ তৈরি করতে৷ মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরি তো শুধু দুর্নীতি নির্মূল আর নির্বাচন পিছিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের কথাই বলছেন না, সঙ্গে নির্বাচনের আগে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিয়ে দেশ পরিচালনার কথাও বলছেন৷ তাঁকে ঘিরে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং পাকিস্তানের সচেতন সমাজের বিশিষ্ট জনদের মনে জন্ম নেয়া আশঙ্কাকে তাই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না৷ মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছেন, সেখানে বিচারপতিদের সঙ্গে সেনা কর্মকর্তাদেরও থাকার কথা৷

গত সোমবার দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট৷ এর ফলে সন্দেহ আরো দানা বাঁধতে শুরু করেছে৷ সে দেশের মানবাধিকার সংস্থা এইচআরসিপি-র আশঙ্কা এ আদেশের ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে পারে৷ এইচআরসিপি-র চেয়ারপারসন জোহরা ইউসুফ এক বিবৃতিতে বলেন, ''বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পথ হারালে সংহতি বিনষ্ট হতে পারে এবং সেটা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সম্ভাবনার দ্বার অনেক সংকীর্ণ হয়ে যাবে৷''

ভিডিও: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

মানবাধিকারকর্মী এবং পাকিস্তান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসমা জাহাঙ্গীর মনে করেন দেশকে সেই পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে৷ আর তাঁর মতে, সমস্ত পরিকল্পনা সেনাবাহিনীর এবং মুহাম্মদ তাহিরুল কাদরিও সেই পরিকল্পনারই অংশ৷ তাঁকে ব্যবহার করেই সেনাবাহিনী কাজ হাসিল করতে চাইছে – এমন কথা মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সরাসরিই বলেছেন আসমা জাহাঙ্গীর৷

করাচির সিনিয়র সাংবাদিক গাজী সালাউদ্দীনও তাই মনে করেন৷ ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, ''পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষই মনে করে কাদরির পেছনে আছে সেনাবাহিনী৷''

সব মিলিয়ে উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাকে তাই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না৷

এই বিষয়ে অডিও এবং ভিডিও

http://www.dw.de/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8B-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE/a-16529484


রাহুলই সেনাপতি
পরম্পরা মেনেই নেতৃত্বের সিলমোহর
জায় রইল পরম্পরা।
ঠিক যে ভাবে ইন্দিরা গাঁধী প্রথমে সঞ্জয়, পরে রাজীবকে এনেছিলেন শীর্ষ নেতৃত্বে, সে ভাবেই উঠে এলেন গাঁধী পরিবারের নতুন প্রজন্ম রাহুল। ঘরোয়া ভাবে বেশ কিছু দিন ধরেই দলের 'নম্বর-টু' ছিলেন তিনি। 
এ বারের চিন্তন শিবিরে সনিয়া গাঁধী-মনমোহন সিংহের সঙ্গে সমান গুরুত্বে আলোচনা করেছেন নেতাদের সঙ্গে। এর মধ্যে তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বড় দায়িত্বে আনার দাবি তো ছিলই। চিন্তন শিবির শেষে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকে সেটাই মেনে নিল হাইকম্যান্ড। রাহুলকে সহ-সভাপতি করে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর দেওয়া হল দলের এত দিনের সেই দাবিতে। 
বিজেপি এর মধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে লোকসভা ভোটে তাদের সেনাপতি কে হবেন। নিতিন গডকড়ীকে দ্বিতীয় বার সভাপতি করার সঙ্গে সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হয়ে ওঠা অনিবার্য হয়ে পড়েছে বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের। সেই সঙ্গে বিজেপি প্রচার শুরু করে, রাহুল সরাসরি নেতৃত্বে আসতে নারাজ। না হলে দলে কার্যত দ্বিতীয় হয়েও তাঁর পদ নিতে অনীহা কেন? 
আজ রাহুলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট বা সহ-সভাপতি পদে বসিয়ে বিজেপির এই প্রচারের উপযুক্ত জবাব দিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বস্তুত, বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে নবীন প্রজন্মকে নতুন নেতা দিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই চালের জবাব বিজেপি কী ভাবে দেয়, সেটাই দেখার।
আলোচনায় উঠে এসেছে গাঁধী পরিবারের পরম্পরার বিষয়টিও। সঞ্জয় বা রাজীব গাঁধীর বেলাতেও তাঁদের নেতৃত্বে নিয়ে আসার দাবি প্রথমে ওঠে দলের মধ্যে থেকে। বিভিন্ন রাজ্য বা প্রদেশ কমিটি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারাও এই দাবি তুলতে থাকেন। রাহুলের বেলাতেও একই ভাবে দলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাবি উঠছে। শুধু দলের নবীন প্রজন্মই নয়, দাবি তুলতে শুরু করেছেন প্রবীণ নেতারাও। তবে বিষয়টি নিয়ে রাহুল এত দিন চুপ করে ছিলেন। সনিয়ার বক্তব্য ছিল, বিষয়টি রাহুলের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক করে রাহুলকে সাংগঠনিক দায়িত্বে আনা হয়।
ঘরোয়া ভাবে তাঁকে কার্যত দলের দু-নম্বর হিসেবে মেনেও নেওয়া হয় সম্প্রতি। ২০১৪ লোকসভা ভোটে কার্যত সেনাপতির দায়িত্ব রাহুলই পালন করছিলেন। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক সিলমোহরের। 
সনিয়ার পরে রাহুল দলের দায়িত্ব নেবেন এই ঘটনায় অভূতপূর্ব কিছু দেখছে না বিজেপি। বরং তাঁদের কেউ কেউ পরিবারতন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসকে বিঁধতে চেয়েছেন। কংগ্রেস নেতারা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে দীর্ঘদিন ধরে দলের মধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে রাহুলকে নেতৃত্বে চেয়ে দাবি ও চাপ বাড়ছিল, তাতে এই সিদ্ধান্তকে মোটেও 'পরিবারতন্ত্রের শাসন' বলা যাবে না। বরং কংগ্রেস নেতারা বলছেন, যত বারই গাঁধী পরিবারের কেউ দলের হাল ধরেছেন, অন্তর্কলহ ঝেড়ে ফেলে দল একজোট হয়েছে। রাহুল দায়িত্ব নিলেও দল একজোটেই এগোবে।
প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন। জয়পুরে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। ছবি: পি টি আই
এ দিন সকাল থেকেই রাহুলকে নিয়ে চূড়ান্ত উৎসাহ ছিল দলের সর্বস্তরে। সকালে চিন্তন শিবিরে এসে অনেক নেতাকেই এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। 
রাজীব শুক্ল, শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল, মল্লিকার্জুন খারগের মতো নেতারা সকলেই বলেন, তাঁরাও রাহুলকেই নেতৃত্বে চাইছেন।
তবে বিষয়টি যে রাহুলের নিজের উপরেই নির্ভর করছিল, তা স্পষ্ট করে দেন রাহুল-ঘনিষ্ঠ নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় তিনি বলেছিলেন, "রাহুল ইতিমধ্যেই সংগঠনে বৃহত্তর দায়িত্ব পালন করছেন। লোকসভা ভোটের আগে তিনি যে কংগ্রেসের মুখ হবেন, তা নিয়েও সংশয় নেই। তিনি কোনও দায়িত্ব বা পদ নেবেন কি না, সেটা তাঁর ওপরই ছেড়ে দেওয়া হোক।" দিগ্বিজয় যখন মিডিয়া সেন্টারে বসে এ কথা বলছেন, তখন সেখানে বিরাট টিভি স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে, ১০ জনপথের সামনে থিকথিকে ভিড়। 
চিন্তন শিবির শেষ হওয়ার পরে নির্ধারিত সময়েরও এক ঘণ্টা দেরিতে বসে সিডব্লিউসি-র বর্ধিত বৈঠক। সেখানে প্রথমেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি সহ-সভাপতি হিসেবে রাহুলের নাম প্রস্তাব করেন। সঙ্গে সঙ্গে বাকি সদস্যরা টেবিল চাপড়ে তা সমর্থন করেন। রাহুল উঠে বলেন, "আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করছি।" পরে রাহুল ছোট্ট বক্তৃতায় বলেন, "আমি দেশ ঘুরে দেখেছি। দেশকে জেনেছি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একসঙ্গে কাজ করলে আমাদের দল দেশকে বদলে দিতে পারে।" 
তত ক্ষণে ১০ জনপথের বাইরে তো বটেই, জয়পুরেও শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসব। চার দিকে বাজির শব্দে কান পাতা দায়। রথও বের করে যুব কংগ্রেস। উৎসবের খবর আসছে রাহুলের নির্বাচনী কেন্দ্র অমেঠি এবং সনিয়ার নির্বাচনী কেন্দ্র রায়বরেলী থেকে। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, চিন্তন বৈঠক মানেই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। শিমলায় দ্বিতীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জোট রাজনীতিতে পা রাখবে দল। আর এ দিন জয়পুরে রাহুলকে সহ-সভাপতি করার সিদ্ধান্ত। 
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের মধ্যেই রাহুলকে অভিনন্দন জানাতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ফুলের তোড়া এবং মালা নিয়ে একে একে এগিয়ে আসেন দলীয় নেতারা। মনমোহনও এসে জড়িয়ে ধরেন। পরে বৈঠকের শেষে দলের মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী বাইরে এসে সাংবাদিকদের সামনে এই সংক্রান্ত ঘোষণাটি করেন। এই সব ঘটনা দেখেশুনে রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, প্রস্তুতিটা ছিলই। ঠিকই করা ছিল, এ দিন রাহুলকে দলের সহ-সভাপতি পদে আনা হবে। বাকি যা দেখছে সকলে, সেটা হয়েছে চিত্রনাট্য মেনেই। 
কংগ্রেসের গঠনতন্ত্রে সহ-সভাপতি পদটি নেই। তবে কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা বলছেন, দলের সভাপতির ক্ষমতা অসীম। তিনি ইচ্ছে করলে এই পদ তৈরি করে কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেন। রাহুলের আগে দু'জন সহ-সভাপতি হয়েছিলেন। রাজীবের আমলে অর্জুন সিংহ এবং সীতারাম কেসরী যখন সভাপতি ছিলেন তখন জিতেন্দ্র প্রসাদ। এ বারে রাহুলকে পদ দেওয়ার ব্যাপারে একাধিক প্রস্তাব ঘোরাফেরা করছিল দলের মধ্যে। শুধু সহ-সভাপতি নয়, তাঁকে দলের সেক্রেটারি জেনারেল বা মহাসচিব অথবা কার্যকরী সভাপতি করারও প্রস্তাব এসেছিল। অতীতে দলের কার্যকরী সভাপতি হয়েছিলেন কমলাপতি ত্রিপাঠী, সেক্রেটারি জেনারেল হয়েছিলেন হেমবতী নন্দন বহুগুণা। কিন্তু রাহুলকে এর কোনও একটি পদে আনলে সনিয়া গাঁধীর কর্তৃত্বকেই কার্যত চ্যালেঞ্জ জানানো হবে বলে মনে করছিলেন দলীয় নেতৃত্বের বড় একটি অংশ। দলীয় সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত তাই ঠিক হয়, তাঁকে সহ-সভাপতিই করা হবে। 
বস্তুত, এ বারের চিন্তন বৈঠক ছিল রাহুলেরই বৈঠক। দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রস্তাবে তাঁর মতকে গুরুত্ব দিয়ে সংস্কারও করতে চলেছে দল। পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কাজে তিনি মা সনিয়াকে এ বার আরও বেশি করে সাহায্য করবেন বলে জানালেন দিগ্বিজয়। তবে সকলে তাকিয়ে আছেন আগামিকাল রাহুলের বক্তৃতার দিকে। চিন্তন শিবিরের শেষে কাল কংগ্রেসের প্রকাশ্য সমাবেশ। সেখানে সংস্কারপন্থী নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধি রাহুল কী বলেন, তাঁর মায়ের উল্লিখিত 'নবীন ভারত' গড়ার কাজে যে সব চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তা মোকাবিলায় কী পথ দেখান, সে জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন সকলে।
http://www.anandabazar.com/20desh1.html

সরকার ঘোষণা দেওয়ার আগেই দূরপাল্লার পথে বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন মালিকেরা। কোম্পানি ও দূরত্বভেদে বাসের ভাড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে তা আদায় করা হচ্ছে। 
গত মঙ্গলবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে নির্ধারণের আগে বাড়তি ভাড়া আদায় না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মালিকেরাও মন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু মালিকেরা কথা রাখেননি। আর সরকারও যাত্রী সাধারণের স্বার্থে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে কেবল মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে। 
মঙ্গলবারের বৈঠকে আজ রোববার নতুন ভাড়া হার ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সে লক্ষ্যে আজ বেলা তিনটায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক বসছে। এর আগে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর প্রতি কিলোমিটারে বাসের ভাড়া ২৩ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির প্রধান ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান। কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রী ও সচিব—উভয়ই তা কমানোর লক্ষ্যে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠান।
অভিযোগ উঠেছে, ব্যয় বিশ্লেষণের নামে যাত্রীদের ওপর বাড়তি ভাড়ার বোঝা চাপানোর প্রক্রিয়া চলছে। কারণ, এর মধ্যে জ্বালানির বাইরের অন্য সব পরিচালন ব্যয়ও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আর সরকারের ব্যয় বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় বাসমালিকদের বক্তব্যই প্রাধান্য পেয়ে আসছে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, 'ব্যয় পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।' ঘোষণার আগেই ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, 'মালিকদের ধরব কেন, তাঁরা কথা দিয়ে কথা রাখেননি।'
বাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিআরটিএ যে ব্যয় বিশ্লেষণ করে তাতে দেখা গেছে, জ্বালানির মূল্য এক টাকা বৃদ্ধি পেলে ভাড়া বৃদ্ধি পায় এক পয়সা। সে হিসাবে ডিজেলের মূল্য সাত টাকা বৃদ্ধির কারণে বাসভাড়া সাত পয়সা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা।
বর্তমানে কিলোমিটারপ্রতি একজনের ভাড়া এক টাকা ৩৫ পয়সা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব ও ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির মালিক প্রতিনিধি খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ দাবি করেন, প্রতিদিনই টায়ার-টিউবের দাম বাড়ছে। তাই জ্বালানির মূল্য ধরে হিসাব করলে বাসমালিকেরা পথে বসবেন।
বাড়তি ভাড়া আদায়: এসআর পরিবহনে এক সপ্তাহ আগেও ঢাকা-বগুড়া পথে ভাড়া নেওয়া হতো ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। কিন্তু গতকাল কল্যাণপুর কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, এ পথের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৮০ টাকা। নওগাঁ পর্যন্ত আগে নেওয়া হতো ৩৫০ টাকা। গতকাল নেওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা।
বগুড়ার যাত্রী আবদুল মান্নান বলেন, 'ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার। সে হিসাবে কিলোমিটারপ্রতি একেকজন যাত্রীর কাছ থেকে ২৬ থেকে ৩১ পয়সা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অথচ সরকার ভাড়া বৃদ্ধি করেছে বলে শুনিনি।'
এসআর পরিবহনের একজন কর্মকর্তা দাবি করেন, বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। আগে কম নিতেন। এখন সঠিক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এর আগের বার এ প্রক্রিয়ায় ভাড়া বাড়িয়ে এমন বক্তব্যই দিয়েছিলেন বাস মালিক সমিতি ও কাউন্টারগুলোয় কর্মরত তাঁদের কর্মকর্তারা। 
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার রেজাউল আলম বলেন, তিনি গত শুক্রবার রাতে ভেড়ামারা থেকে শ্যামলী পরিবহনে এসেছেন ৪২৫ টাকায়। আজ (গতকাল) ভেড়ামারা যাওয়ার টিকিট কেটেছেন ৪৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এ পথে ভাড়া ছিল ৪০০ টাকা। 
গাবতলী বাস টার্মিনাল, কল্যাণপুর ও শ্যামলী বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, এভাবে প্রায় সব পরিবহন কোম্পানিই নিজেদের মতো করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। 
এমনকি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাসচালিত (সিএনজি) বাসেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমলাপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পথে চলাচলকারী সোহাগ পরিবহনে এত দিন ১৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হতো। গত শুক্রবার থেকে ১৭০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ পথে চলাচলকারী তিশা পরিবহনেরও ভাড়া বৃদ্ধির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোহাগ ও তিশা পরিবহনের চালক এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের বহরের অনেক বাস সিএনজিতে চলে। 
ব্যয় বিশ্লেষণে শুভঙ্করের ফাঁকি: গত বছর জানুয়ারি মাসে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর বাস পরিচালনায় ১৬ ধরনের ব্যয় ও ভাড়া নির্ধারণে ভূমিকা রাখে—এমন অন্তত ১২টি উপাদান বিশ্লেষণ করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—বাসের ক্রয়মূল্য, ব্যাংকঋণের সুদ, কর-ভ্যাট, জ্বালানি খরচ, শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা, বিমার প্রিমিয়াম, গ্যারেজ ভাড়া ও মালিকের ১০ শতাংশ মুনাফা।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, একটি বাসে যাত্রীবোঝাইয়ের হার কত এবং বাসটি দৈনিক কত কিলোমিটার পথ চলে—ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে তা বিবেচনায় আনা হয়। 
গত মঙ্গল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের করা ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি কিলোমিটারপ্রতি ২৩ পয়সা বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেয়, তাতে ৫১ আসনের একটি বাস গড়ে ৩৭ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করে বলে উল্লেখ করা হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাসই পুরো আসন বোঝাই করে চলাচল করে। কমিটি যে ব্যয় বিশ্লেষণ করে, তাতে যাত্রীবোঝাইয়ের পরিমাণ দুজন বৃদ্ধি করলে (গড়ে ৩৯ জন) ভাড়া কমে যায় আট পয়সা, বাড়াতে হবে ১৫ পয়সা। আর যাত্রী পাঁচজন বেশি ধরলে ভাড়া অন্তত ১৮ পয়সা কমে যায়। 
প্রতিদিন বাস ৩৫০ কিলোমিটার চলাচল করে বলে উল্লেখ করা হয়। বাসচালকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট পথে ২৪ ঘণ্টায় ৫০০ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে ৪০০ কিলোমিটার চলে প্রতিটি বাস। বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর উত্তরবঙ্গেও গড়ে ৫০০ কিলোমিটার চলে। দৈনিক গড় চলাচল বেড়ে গেলে ভাড়াও কমে যায়। কিন্তু সেখানেও দেওয়া হচ্ছে ফাঁকি। 
প্রতিটি বাসের ক্রয়মূল্য ৭৫ লাখ টাকা এবং এর জন্য ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদ প্রায় ৩২ লাখ টাকা ধরে তা ভাড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে একটি বাসের পেছনে বিনিয়োগ ধরা হয়েছে এক কোটি সাত লাখ ৪০ হাজার টাকা। একটি বাসের বয়সসীমা ধরা হয়েছে ১০ বছর। কিন্তু রাস্তায় বিশেষ করে মফস্বলে এর চেয়ে কম দামি এবং ২০ বছরের পুরোনো বাস চলে। 
রাজধানীসহ সারা দেশের অধিকাংশ মালিক তাঁদের বাস সড়ক-মহাসড়কে রাখেন। অথচ বছরে গড়ে দুই লাখ টাকা গ্যারেজ ভাড়া দেখিয়ে তা যাত্রীদের কাছ থেকে তোলা হচ্ছে। 
অভিযোগ আছে, একটি বাসে কত যাত্রী হয়, কত কিলোমিটার চলে, যে ব্যয় উল্লেখ করা হয় আসলে এর বাজারমূল্য কত, তা কখনোই কমিটি সরেজমিন যাচাই করে দেখে না। মালিকদের কথায় অঙ্ক বসিয়ে দেওয়া হয়। 
এবারের ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটিতে সাতজন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। মালিক সমিতির নেতা আছেন চারজন। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) একজন সদস্য থাকলেও তাঁর জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ হয় না।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী অভিযোগ করেন, ব্যয় বিশ্লেষণের মাধ্যমে যাত্রীদের নয়, বাসমালিকদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় সরকার বাস্তবের চেয়ে বেশি ভাড়া নির্ধারণ করে। আর বাস্তবে ভাড়া আদায়ের বেলায় মালিকেরা আরেক দফা বাড়িয়ে নেন। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

http://www.prothom-alo.com/detail/news/322853


আর্থিক প্রস্তাবেও গরিব-স্বার্থের কথা
সংস্কারে ধীরে চলো, লক্ষ্য এখন আমআদমি
ংস্কারে আপত্তি নেই, কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে আপাতত তাতে কিছুটা রাশ টেনে আরও বেশি করে গরিব ও মধ্যবিত্তের স্বার্থ সুরক্ষার কথা তুলে ধরতে চাইছে কংগ্রেস। দু'দিন ধরে চিন্তন শিবিরে আলোচনার পর কাল সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে এই মর্মেই অর্থনৈতিক প্রস্তাব গ্রহণ করতে চলেছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। 
গরিব ও মধ্যবিত্তের জন্য আর্থিক সুরাহার ব্যাপারে চিন্তন বৈঠকে যে দাবি উঠবে, সে ব্যাপারে এক রকম নিশ্চিতই ছিলেন কংগ্রেস নেতারা। এবং গত দু'দিন ধরে কার্যত সেটাই হয়েছে। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতার বক্তব্য, আন্তর্জাতিক মন্দার বাতাবরণে সরকার যে এক প্রকার বাধ্য হয়েই কঠিন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন। কিন্তু একই সঙ্গে এ-ও ঠিক যে, সেই সব কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে গরিব ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে বিপুল ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কেন সংস্কার, সে কথা এই আম-আদমিকে বোঝানো সম্ভব নয়। ফলে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমন করতে হলে সরকারকে আর্থ-সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ করতেই হবে বলে মনে করছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ। 
আমজনতার জন্য সুরাহার দাবি তুলে কংগ্রেসের মধ্যে সবথেকে বেশি সরব হয়েছেন কেরলের নেতারা। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি তো চিন্তন বৈঠকে যোগ দিতেই আসেননি। রমেশ চেন্নিথালা বা ভায়ালার রবির মতো যে সব নেতা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা সংস্কার কর্মসূচির বিরুদ্ধে সরব হয়ে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। 
লোকসভা ভোটের আগে দলের মধ্যেও ক্ষোভের মুখে পড়ে সংস্কার ও জনমোহিনী নীতির মধ্যে ভারসাম্য রাখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও। সরকার তথা দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, "চিন্তন শিবিরে এ ধরনের দাবি উঠবে আশঙ্কা করে আগাম ব্যবস্থা নিয়েছে সরকারও। যে সব কঠিন আর্থিক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল, কেন্দ্র তা ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছে।" ওই নেতার ব্যাখ্যা, পেট্রোলের বিনিয়ন্ত্রণ, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি কমানোর মতো কঠিন পদক্ষেপ আগেই করা হয়েছিল। এমনকী ডিজেলের বিনিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তও কৌশলগত ভাবেই চিন্তন বৈঠকের এক দিন আগে নেওয়া হয়েছে। ফলে এখনই আর নতুন করে খুব বেশি কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া পেনশন বা বিমা বিলের মতো যে সব সংস্কারের কর্মসূচি এখনও বকেয়া রয়েছে, সে ব্যাপারে সংসদের সিলমোহর প্রয়োজন। ওই বিলগুলি সংসদে পাশ ও তার রূপায়ণ হলে গরিব-মধ্যবিত্তের ওপর এখনই নেতিবাচক প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা নেই। তা সত্ত্বেও সরকার ভোটের আগে খুব কঠোর কোনও পদক্ষেপ করুক, চান না দলের অনেকেই। কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, বরং কেন্দ্রের সংস্কারের ফলে বাজার চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। আর্থিক বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে লোকসভা ভোটের আগে সামাজিক সুরক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ করার সুযোগ বাড়বে বলেই আশা। 
তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, সংস্কার থেকে জনমোহিনী রাজনীতিতে পদক্ষেপের গোটা ব্যাপারটাই সনিয়া-মনমোহন পূর্ব চিত্রনাট্য মেনে করছেন। লোকসভা ভোটের আর চোদ্দ মাস বাকি। তাই আগেভাগে যাবতীয় কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন কৌশলে আম আদমির স্বার্থ সুরক্ষার জন্য সরব হচ্ছে দল। 
গরিব ও মধ্যবিত্তের সামাজিক সুরক্ষায় কী কী পদক্ষেপ করতে চলেছে কেন্দ্র? 
কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, আর্থিক প্রস্তাবের গোড়াতেই খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ ও তার সুষ্ঠু রূপায়ণের কথা বলা হবে। সেই সঙ্গে একশো দিনের কাজে মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলা হবে। অদক্ষ শ্রমিকের পাশাপাশি যাতে দক্ষ শ্রমিকদের জন্য আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো যায়, সেই মর্মেও প্রস্তাব থাকবে আর্থিক প্রস্তাবে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গ্রামের গরিব মানুষের সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি যাতে শহরের গরিবদের কথাও সরকার চিন্তা করে, সে ব্যাপারে গত দু'দিন ধরে কংগ্রেসের বহু নেতা সওয়াল করেছেন। চিন্তন বৈঠকে দলের সেই দাবির প্রেক্ষাপটে শহর এলাকাতেও কর্মসংস্থান প্রকল্প চালু করার প্রস্তাব রাখা হতে পারে অর্থনৈতিক প্রস্তাবে। সেই সঙ্গে ভর্তুকির প্রশ্নে সরকার আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা জনসংখ্যাকে আরও বেশি সুবিধা দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রস্তাব রাখা হতে পারে অর্থনৈতিক প্রস্তাবে। 
চিন্তন বৈঠক শুরু হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ভর্তুকিমূল্যে বরাদ্দ সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের একটা বড় অংশ তা আরও বাড়িয়ে ১২টি করার দাবি তুলেছেন গত দু'দিন ধরে। তবে সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক প্রস্তাবে কিছু বলা না হলেও লোকসভা ভোটের আগে এ রকম কোনও ঘোষণার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গেই একটা কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন কংগ্রেসের কয়েক জন নেতা। ২০০৩ সালে শিমলায় চিন্তন শিবিরে খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পরের বছর লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে কংগ্রেস বলেছিল, ক্ষমতায় এলে খাদ্য সুরক্ষা বিল আনা হবে। একটি সূত্রের খবর, খাদ্য সুরক্ষা বিলের আদলে এ বারে আশ্রয়ের নিরাপত্তা বিল নিয়ে কথা থাকতে পারে অর্থনৈতিক প্রস্তাবে। এবং সে ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে কংগ্রেস রাখতে পারে বলেও জানিয়েছে এই সূত্রটি।


রাহুলের গুরুত্ব বাড়ায় চাপ বাড়ল বিজেপিতে
ংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে রাহুল গাঁধীর নাম ঘোষণা বিজেপি নেতৃত্বের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করল তাঁদের নির্বাচনী কাণ্ডারি চূড়ান্ত করার বিষয়ে। 
আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের ইচ্ছায় নিতিন গডকড়ীকে দলের সভাপতি পদে আরও এক বার রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিজেপি ঘোষণা করেছে জয়পুরে চিন্তন বৈঠক শুরুর দিনেই। চিন্তন বৈঠক শেষ হওয়ার পর আগামিকাল এআইসিসি-র প্রকাশ্য অধিবেশনের মুখে রাহুলের নাম ঘোষণায় বিজেপি শিবিরে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, এ বার রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি কর্মীরাও কংগ্রেসের ধাঁচে রাস্তায় নামবে নরেন্দ্র মোদীকে দলের কাণ্ডারী করার দাবিতে। মনমোহন সিংহ যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন, তাই কৌশলগত কারণেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম ঘোষণা করবে না কংগ্রেস। কিন্তু সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রাহুল যে প্রচারের মুখ হতে চলেছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
এ ক্ষেত্রে বিজেপি নেতারাও মনে করছেন, এখনই কাউকে প্রচারের মুখ হিসেবে চূড়ান্ত করে ফেলা উচিত দলের। এ ব্যাপারে দেরি করার অর্থ কংগ্রেসকে রাজনৈতিক ভাবে সুযোগ করে দেওয়া। বিজেপি সূত্র বলছে, দল ও সঙ্ঘের নেতারা এখনও নরেন্দ্র মোদীকে নির্বাচনী কমিটির প্রধান করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু মোদীর এই দফার গুজরাত জয়ের পর থেকেই তাঁর সমর্থকরা এ ব্যাপারে দলের নেতাদের উপরে চাপ বাড়িয়ে চলেছেন।
রাহুলের নতুন দায়িত্বের খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস সমর্থকরা। জয়পুরে। ছবি: পি টি আই
কিন্তু দলে মোদী-বিরোধিতারও চাপ কম নয়। ফলে মোদী প্রশ্নে দ্বিধা তো আছেই, তার সঙ্গে রাজ্যে রাজ্যে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে অগোছালো অবস্থা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, আরএসএস বনাম দলের নেতাদের একাংশের লড়াই এ সব নিয়ে হিমসিম খাওয়ার মতো অবস্থা বিজেপি নেতৃত্বের। এ বার রাহুলের দায়িত্ববৃদ্ধি বাড়তি চাপে ফেলল বিজেপিকে। 
কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করছেন, রাহুলের নাম ঘোষণার পর মোদীকেই প্রচারের প্রধান মুখ হিসেবে ঘোষণা করবে বিজেপি। এটিই রাজনৈতিক ভবিতব্য। এবং মোদীর নাম ঘোষণা হলে রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে অনেক বেশি। তখন গোধরা-কলঙ্কিত মোদী হবেন প্রচারের প্রধান বিষয়। মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির মতো আর্থিক বিষয় চলে যাবে পিছনে। সংখ্যালঘু সমাজ কংগ্রেসকেই ভোট দেবে নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে। কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্ল এ-ও বলেন যে, "লালু-মুলায়মদের দলকেও যদি সংখ্যালঘুরা ভোট দেন, তাতেও লাভ কংগ্রেসেরই।" বিজেপি নেতাদের একটা অংশও কংগ্রেসের এই তত্ত্বের সঙ্গে সহমত। এ ছাড়া অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, এমনকী রাজনাথ সিংহও মনে করেন তিনিই প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্যতম দাবিদার। ফলে এঁরা কেউই আন্তরিক ভাবে মোদীকে সমর্থন করেন না। কৌশল হিসেবে লালকৃষ্ণ আডবাণী সুষমা স্বরাজের নাম সামনে আনলেও এই নেত্রীর ব্যাপারে আপত্তি আছে সঙ্ঘে। পাশাপাশি সঙ্ঘ নিতিন গডকড়ীকে যে রকম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, মোদীকে ততটা ঘরের ছেলে বলে মনে করে না। তবু রাহুলের নাম ঘোষণার পরে বিজেপি-কেও এখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুণেতে দলের জাতীয় বৈঠকে গডকড়ীর দ্বিতীয় বারের অভিষেক ও মোদীকে দলের মুখ হিসাবে তুলে ধরা এই যৌথ প্যাকেজ নিয়ে দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএম পলিটব্যুরোও কংগ্রেসের এআইসিসি অধিবেশনের প্রস্তাবগুচ্ছ ও রাহুল গাঁধীর নতুন ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছে। সিপিএম গোটা বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। এক দিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি অন্য দিকে কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতি। এক দিকে রাহুল ও অন্য দিকে মোদী এই পরিস্থিতি তৈরি হলে সিপিএমের ভূমিকা কী হবে? সিপিএম তথা প্রকাশ কারাট চাইছেন, রাজ্য স্তরে মমতা-বিরোধিতা যে রকম চলছে চলুক। কিন্তু কেন্দ্রে কতটা বিরোধিতা করা হবে কিংবা মতাদর্শগত বিরোধিতা যতই করা হোক না কেন, কৌশলগত ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা হতে চলেছে সিপিএমের বৈঠকে।
http://www.anandabazar.com/20desh3.html
নীর জন্য উত্তাল দিল্লি সাক্ষী ৪৫ ধর্ষণের
প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-ধর্না। তবে সে সব ছাপিয়ে খবরের শিরোনামে ক্রমেই উঠে আসছে নারী নিগ্রহের ঘটনা। আর তাতে সবচেয়ে এগিয়ে খাস রাজধানী।
জাতীয় অপরাধ দমন শাখার রেকর্ড বলছে, গত এক বছরে দিল্লিতে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে ২৩.৪৩ শতাংশ। ২০১১ সালে যে সংখ্যাটা ছিল ৫৭২, পরের বছর সেটা ছুঁয়েছে ৭০৬। এমনকী, গত দশ বছরেও এ পরিমাণ নিগ্রহের অভিযোগ পায়নি তারা। বস্তুত, ২০০২-এর প্রায় দ্বিগুণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে দিল্লিতে। 
তবে আরও ভয়াবহ তথ্য দিচ্ছে অপরাধ দমন শাখা। ১৬ ডিসেম্বর দিল্লি ধর্ষণ কাণ্ডের পর, রাজধানী-সহ গোটা দেশ যখন উত্তাল, প্রচণ্ড শীতে জলকামানের সামনে প্রতিবাদে অবিচল মহিলা-পুরুষ-বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, কনকনে ঠান্ডা মোমের আলোয় যখন জেগে রয়েছে যন্তরমন্তর ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানি কিন্তু ঘটেই চলেছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষকের ভূমিকায় রয়েছে কাছের মানুষই। ডিসেম্বরের শেষ পনেরো দিন দিল্লিতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে তিনটি ঘটনা। আর শ্লীলতাহানির ঘটনা, প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি। 
এমনকী, মোমের আলোতেও ছিল যথেষ্ট অন্ধকার। 'চরমতম শাস্তি দিতে হবে ধর্ষকদের' এই দাবিতে শীতের দিল্লি যখন রীতিমতো উত্তপ্ত, শাস্তি নিয়ে শুধু মতভেদ নয়, মনোভাবেও ভেদাভেদ ছিল অনেক। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, বিক্ষোভে সামিল কোনও এক 'প্রতিবাদী' তার বন্ধুদের ফোন করে ডাকছে, "এখানে চলে আয়। দিল্লির সব সুন্দরী মেয়েরাই আজ এখানে।" এমনই এক মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল মিছিলে যোগ দিতে। পথে হেনস্থা হতে হয় বাসের কন্ডাক্টরের হাতে। পরে পুলিশের কাছে ভেঙে পড়ে কিশোরী। জানায় শুধু বাসেই নয়, বাড়িতেও যৌন নিগ্রহের শিকার সে। গত ছ'মাস ধরে, দাদাও তাকে শারীরিক নির্যাতন করে চলেছে। ধর্ষণও করেছে। দিল্লি পুলিশের পরিসংখ্যানও একই কথা বলছে। অভিযুক্তদের ৯৬% পরিচিত, কখনও বা নিকট আত্মীয়। দিল্লিতে যে ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির ঘটনা বাড়ছে, নিজেই সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার। "রাজধানীতে এ ধরনের ঘটনার হার গোটা দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি", বললেন কমিশনার। সমস্যা সামলাতে আরও বেশি করে মহিলা পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 
তবে গোটা দেশেও পাল্লা দিয়ে প্রকাশ্যে আসছে নারী নিগ্রহের ঘটনা। আজও হরিয়ানার ঝিন্দে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা জানা গিয়েছে। গ্রামেরই এক যুবক তার একলা থাকার সুযোগ নেয়। নাগপুরেও ১৮ বছরের এক যুবতীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কিন্তু 'ভারত' সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে 'ইন্ডিয়া'র সঙ্গে। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, বা আধুনিক-প্রাচীনপন্থী, একই সঙ্গে চলছে। ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারপার্সন রঞ্জনা কক্কর জানালেন, এক ছাত্রী তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সহপাঠীর বিরুদ্ধে। মেয়েটির এক পুরুষ সহপাঠী তাঁকে হুমকি দিয়ে ই-মেল করেছে। মেলের বক্তব্য, যুবকের প্রস্তাবে তরুণী রাজি না হলে তাঁর দশাও 'দামিনীর' মতোই হবে। শিক্ষিত ছেলের এমন চিন্তাভাবনা দেখে রঞ্জনা হতবাক। যদিও আগে এমন বহু নজির রয়েছে। 
বয়সেও কিছু আসে যায় না অপরাধীদের। একের পর এক ঘটনায় তা-ও স্পষ্ট। মুম্বইয়ের এমনই এক ঘটনা। ৪ বছরের ছোট্ট মেয়েটি রোজ স্কুলবাসে করেই বাড়ি ফেরে। মঙ্গলবারও সে রমেশকাকুর বাসে করে বাড়ি ফিরছিল। তার বাড়ি সবার শেষে। একে একে টা টা বলে বন্ধুরা সবাই নেমে যায়। ছোট্ট মেয়েটি বাসে একা। তারই রমেশকাকু শারীরিক নির্যাতন করে। পরে সে বাবাকে জানায়। তখনই প্রকাশ্যে আসে। 
মুখ বদলে যাচ্ছে, নাম বদলে যাচ্ছে, জায়গাও বদলে যাচ্ছে শেষ হচ্ছে না অপরাধ, অপরাধী।
http://www.anandabazar.com/20desh4.html

কয়েকদিনের জন্য উধাও হয়ে যাওয়ার পর, আবার শীত ফিরছে রাজ্যে। কাল থেকে রাজ্যের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাবে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, টানা কয়েকদিন ধরে একটি ঘূর্ণাবর্ত বিহারের ওপর অবস্থান করছিল। 

সেকারণে উত্তুরে হাওয়া প্রতিবেশী রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে পারছিল না। কিন্তু এখন সেই ঘূর্ণাবর্ত সরে গেছে। পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে রাজ্যে উত্তুরে হাওয়া ঢোকার রাস্তা। তাই শীত ফিরছে রাজ্যে। 


ফের ফেসবুকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ পেট্রোলের পর ডিজেলের বিনিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটায় কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,'দুর্ভাগ্যজনক৷ আরও একটা জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিল ইউপিএ সরকার৷ হঠাত্ই ডিজেলের দামের বিনিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত৷ তারপরই লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম বাড়ল ৪০ থেকে ৫০ পয়সা৷ যার প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের ওপর৷ আজ থেকেই পাইকারি ক্রেতাদের লিটারে এগারো টাকা কুড়ি পয়সা বেশি দাম দিতে হচ্ছে৷ যার সরাসরি প্রভাব পড়বে গ্রাম ও শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায়৷ 
আমি জানতে পেরেছি, গোপন বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়৷ কখনও এমন 'গোপন মূল্যবৃদ্ধি'র কথা শুনিনি৷' 
আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে৷ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতে হবে৷ আমাদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে৷

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32672-2013-01-18-16-49-05


ওষুধ বিক্রেতাদের সমাবেশের জেরে, কাল রাজ্যের বেশিরভাগ ওষুধের দোকান বন্ধ থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে পারেন অসংখ্য মানুষ। রাজ্য সরকারের ফেয়ার প্রাইস শপের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কাল দুপুর বারোটা থেকে সমাবেশ ডেকেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।  

রানি রাসমণি রোডে ওই সমাবেশ হবে। সমাবেশের ডাক দিয়েছে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। তাদের আওতায় মোট ৩৫,০০০ হাজার ওষুধের দোকান রয়েছে। তার বেশিরভাগই কাল বন্ধ থাকতে পারে।


মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ। সম্ভবত বাড়তে চলেছে মেডিক্লেমের প্রিমিয়াম। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলি মেডিক্লেমের প্রিমিয়াম অন্তত তিরিশ  থেকে চল্লিশ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে আইআরডি-কে। আইআরডি দ্রুত ওই প্রস্তাব কার্যকর করবে বলেই জানা যাচ্ছে।  ক্রমশ বাড়ছে চিকিত্সার খরচ। তার সঙ্গে পাল্লা দিতে মধ্যবিত্তের একটা ঢাল মেডিক্লেম। তাতে অন্তত চিন্তা কিছুটা কমে। 

কিন্তু এবার সেখানেও খাঁড়া নামছে। চারটি সরকারি বিমা সংস্থা  ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্স, জেনারেল ইনসিওরেন্স এবং ওরিয়েন্টাল ইনসিওরেন্স মেডিক্লেমের প্রিমিয়াম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে নীতিনির্ধারক সংস্থা ইনস্যুরেন্স রেগুলেটরি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি সংক্ষেপে আইআরডি-কে।

সরকারি বিমা সংস্থার মত বেসরকারি বিমা সংস্থাগুলিও আইআরডি-কে একই অনুরোধ করেছে। বিমা সংস্থাগুলির আশা, দু-এক মাসের মধ্যেই মেডিক্লেমের প্রিমিয়াম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে আইআরডি।

বিমা সংস্থাগুলির দাবি, ২০০৩-০৪ আর্থিক বর্ষে ক্লেম রেসিও ছিল ৮৫ শতাংশ অর্থাত্‍ ১০০ টাকা আয় হলে গ্রাহকদের দাবি পূরণে বিমা সংস্থাগুলির খরচ হত ৮৫ টাকা। চলতি আর্থিক বছরে ক্লেম রেমিও বেড়ে হয়েছে ১২৫ শতাংশ। বিমা সংস্থাগুলির মতে, বেসরকারি হাসপাতালগুলি বাড়তি মুনাফা করতে চাইছে বলেই এই অবস্থা। টিপিএ ব্যবস্থা চালু করেও পরিস্থিতি বদলানো যায়নি।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে নিয়ন্ত্রণের দাবি না তুলে কেন বিমা সংস্থাগুলি গ্রাহকদের উপর খাঁড়া নামিয়ে আনতে চাইছে।


সাঁইত্রিশতম কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন ২৬ জানুয়ারি। এবার বইমেলার থিম বাংলাদেশ। উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক আনিসুজ্জামান। উদ্বোধনে হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। থাকবেন দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা। 

এবারের বইমেলায় সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার দেওয়া হবে শংকরকে। পুরস্কার মূল্য পাঁচ লক্ষ টাকা। প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মরণে চালু হচ্ছে সুলীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার। এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে কবি ও সাহিত্যিক বীথি চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। সাধারণের জন্য মেলা খুলে দেওয়া হবে ২৭ তারিখ থেকে। মিলনমেলা প্রাঙ্গণে বইমেলা চলবে ষোলো দিন। এই প্রথম মেলার মেয়াদ বাড়ানো হল আরও চার দিন। থাকছে মোট সাড়ে ৭০০ স্টল। 


ঝাড়খণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হল। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্র খবর, আজই ঘোষণাপত্রে সই করেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। 

চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিতে বিজেপি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। এর পরেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদের কাছে ইস্তফা পত্র তুলে দেন তিনি।

বিরাশি আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিধায়ক সংখ্যা ১৮। বিজেপিরও বিধায়কও ১৮ জন। বিজেপির পক্ষে সমর্থন রয়েছে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ৬ বিধায়কের। সংযুক্ত জনতা দলের দুই বিধায়কও রয়েছে বিজেপির সঙ্গে। কিন্তু মুক্তি মোর্চা সমর্থন প্রত্যাহারে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল মুন্ডা সরকার। 


পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আজ দার্জিলিংয়ের চক বাজারে সভা করতে চলেছে গোর্খা জন মুক্তি মোর্চা। তেলেঙ্গানা ইস্যুকে সামনে রেখে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অন্তিম লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন মোর্চা নেতৃত্ব। 

আজকের সভা মঞ্চ থেকে এই হুমকিই ফের শোনা যেতে পারে বলে ধারনা। তবে সভায় সম্ভবত থাকছেন না মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং। বেলা এগারোটা থেকে চকবাজারে সভা শুরু হওয়ার কথা। 


দফায় দফায় পরীক্ষা, ইন্টারভিউ। পেরিয়ে গিয়েছে দুবছর। এগারোশ সংখ্যালঘু আবেদনকারীর মধ্যে চূড়ান্ত বাছাই হয়েছেন ছজন। শূন্যপদের সংখ্যা দুই। এখনও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা দ্বারস্থ হচ্ছেন সংখ্যালঘু কমিশনের।  

বছর দুয়েক আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে পলিটেকনিক কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স এবং টেকনোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের জন্য তিনটি শূন্যপদের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়।

ওবিসি এ ক্যাটাগরিতে তিনটি শূন্যপদের জন্য এগারোশরও বেশি প্রার্থী আবেদন করেন। দুবছরে দফায় দফায় লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা হলেও এখনও পর্যন্ত একজনই চাকরি পেয়েছেন। ফাঁকা পড়ে রয়েছে দুটি পদ। এই টালবাহানার জন্য রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আবেদনকারীরা।

সম্প্রতি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে দলতন্ত্র ও অস্বচ্ছ্বতার অভিযোগ তুলে পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মীরাতুন নাহার। গোটা ঘটনার পিছনে একই কারণ থাকার সম্ভাবনার কথা বলেছেন তিনি।


দফায় দফায় পরীক্ষা, ইন্টারভিউ। পেরিয়ে গিয়েছে দুবছর। এগারোশ সংখ্যালঘু আবেদনকারীর মধ্যে চূড়ান্ত বাছাই হয়েছেন ছজন। শূন্যপদের সংখ্যা দুই। এখনও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা দ্বারস্থ হচ্ছেন সংখ্যালঘু কমিশনের।  

বছর দুয়েক আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে পলিটেকনিক কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স এবং টেকনোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের জন্য তিনটি শূন্যপদের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়।

ওবিসি এ ক্যাটাগরিতে তিনটি শূন্যপদের জন্য এগারোশরও বেশি প্রার্থী আবেদন করেন। দুবছরে দফায় দফায় লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা হলেও এখনও পর্যন্ত একজনই চাকরি পেয়েছেন। ফাঁকা পড়ে রয়েছে দুটি পদ। এই টালবাহানার জন্য রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আবেদনকারীরা।

সম্প্রতি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে দলতন্ত্র ও অস্বচ্ছ্বতার অভিযোগ তুলে পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মীরাতুন নাহার। গোটা ঘটনার পিছনে একই কারণ থাকার সম্ভাবনার কথা বলেছেন তিনি।


কলকাতা: পেট্রোলের পর এবার ডিজেলের বি-নিয়ন্ত্রণের পথে বড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ এবার সমস্ত পাইকারি ক্রেতার ক্ষেত্রে ডিজেলের ওপর ভর্তুকি পুরোপুরি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি৷ এর ফলে সমস্ত রাজ্য পরিবহণ নিগম, রেল, কোল-ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাকে লিটার প্রতি ১০ থেকে সাড়ে ১১ টাকা বেশি দামে ডিজেল কিনতে হচ্ছে৷রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির ঘাড় থেকে বিপুল ভর্তুকির বোঝা কমাতে আরও একবার বড় পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার৷এর প্রভাব পড়বে শেষ পর্যন্ত আমআদমির ওপরই। পরিবহণ নিগম, রেলকে এখনকার চেয়ে বেশি দামে ডিজেল কিনতে হলে তারাও খরচবৃদ্ধির ধাক্কা সামলাতে পরিষেবার দাম বাড়ানোর পথেই হাঁটবে, যার সোজা অর্থ যাত্রীভাড়া ও পণ্য পরিবহণ ভাড়াবৃদ্ধি।রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি মধ্য রাত থেকেই সমস্ত পাইকারি ক্রেতার ক্ষেত্রে ডিজেলের ওপর থেকে ভর্তুকি পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হল৷ এর ফলে প্রত্যেক পাইকারি ক্রেতাকে এবার প্রতি লিটার ডিজেলের জন্য ৯ টাকা ২৫ পয়সা বাড়তি দাম দিতে হবে৷ এর সঙ্গে যুক্ত হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিক্রয়কর৷ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিক্রয়কর যোগ করার পর প্রতি লিটার ডিজেলের জন্য পাইকারি ক্রেতাদের ১১ টাকা ২০ পয়সা বেশি দাম দিতে হবে৷ এর ফলে খুচরো বিক্রেতাদের এ রাজ্যে প্রতি লিটার ডিজেলের জন্য ৫১ টাকা ৫১ পয়সা দাম দিতে হলেও পাইকারি ক্রেতাদের দাম দিতে হবে প্রায় ৬২ টাকা৷ রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সরাসরি পড়ছে সমস্ত রাজ্য পরিবহণ নিগম, রেল, কোল-ইন্ডিয়া, সেল-এর মতো পাইকারি ক্রেতাদের ওপর। যেসব শিল্পে ডিজেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, প্রভাব প্রড়বে তাদের ওপরও। নিয়ম অনুযায়ী, এক হাজার লিটার বা তার বেশি ডিজেল মজুত করার লাইসেন্স রয়েছে যে সমস্ত সংস্থার, এই সিদ্ধান্ত তাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র৷ রাজ্য পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, ডিজেলের দাম এক লাফে এতটা বাড়ায় রাজ্য পরিবহণ নিগমগুলির জ্বালানি খরচ বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বেড়ে যাবে৷ শুধু বিভিন্ন রাজ্য পরিবহণ নিগমগুলিরই নয়, জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ট্রেনভাড়া বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে৷ ইস্পাত উত্পাদনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাড়তে পারে ইস্পাতের দামও৷ তবে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির দাবি, ভর্তুকি প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী বছরে তাদের ১৫ হাজার কোটি টাকা কম লোকসান হবে৷ 

নয়াদিল্লি: গতকাল মধ্যবিত্তকে পরিবারপিছু ভর্তুকিতে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে  ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯ করার সুখবর দিয়েছিল কেন্দ্র। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুঃসংবাদ! ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৪৬ টাকা ৫০ পয়সা বাড়ল। জ্বালানি খাতে বিপুল ভর্তুকির বোঝা ছাঁটতে সংস্কারের অঙ্গ হিসাবেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হল বলে জানা গিয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন সূত্রের খবর, এর ফলে বছরে ভর্তুকি দামে ৯টি সিলিন্ডারের পর দিল্লিতে গ্রাহকদের ১৪.২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডার কেনার জন্য গুনতে হবে ৯৪২ টাকা।

ভর্তুকির বোঝা সামলাতে দাম বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে আগেও। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি গত ১ নভেম্বর ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম ২৬ টাকা ৫০ পয়সা বাড়িয়েছিল। যদিও ভর্তুকিপ্রাপ্ত সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬টিতে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ আমজনতা আরও চাপে পড়বে, একথা মাথায় রেখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে কেলকার কমিটির সুপারিশক্রমে গতকাল ডিজেলের দামের ওপর থেকে অল্প অল্প করে নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করে লিটারে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ফের সংস্কারের পথে নেমেছেন মনমোহন সিংহরা। একবার নয়, এবার থেকে প্রতি মাসেই ডিজেলের দাম লিটারে ৫০ পয়সা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।সেই রেশ ধরেই ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত।

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32649-2013-01-18-11-59-37


ভদ্র আচরণের নীতি নিলে তবেই পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা সম্ভব। আজ কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে পাকিস্তান প্রসঙ্গে এই বার্তাই দিলেন ইউপিএ সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের ঘটনা চলতে থাকলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখা সম্ভব নয়। 

পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের বিদেশমন্ত্রক পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তাবকে খারিজ করে দিয়ে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি বৃহস্পতিবার বলেন, "পাক সেনার বর্বরোচিত আচরণের বিষয়টিই মুখ্য। যাঁরা এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই আলোচনা সম্ভব।" ভারতের আবেগের কারণটিও পাকিস্তানের বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। 

গত ৮ জানুয়ারি জম্মু কাশ্মীরের সীমান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করে ভারতে ঢুকে পড়ে পাক সৈন্য। শুধু তাই নয়, দুই ভারতীয় জওয়ানকে বর্বরোচিত ভাবে হত্যা করে তারা। ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ফলে ভারত সরকারের ওপরও চাপ বাড়ে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার। মৃত ল্যান্স নায়ক হেমরাজ সিংয়ের শিরোচ্ছেদ করে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনা। হেমরাজের শরীরের বাকি অংশ ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে দফায় দফায় দরবার করে তাঁর পরিবার।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তোলে বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। পাকিস্তান সম্পর্কিত সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলিকে গতকাল জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকালই সীমান্ত বৈঠকের আগে সেনাপ্রধান বিক্রম সিং কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, প্রয়োজন পড়লে ভারত প্রত্যুত্তর দিতেও পিছপা হবে না।


দুহাজার চোদ্দর লোকসভা নির্বাচনে কার্যত কংগ্রেসের হাল ধরতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। সংগঠনে আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে দলের সহ সভাপতি করা হয়েছে। এই মর্মে প্রস্তাব পাশ হয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে। 

জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির শেষে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সহসভাপতি পদে রাহুল গান্ধীর নাম প্রস্তাব করেন এ কে অ্যান্টনি। তবে লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের ভূমিকা ঠিক কি হবে সেবিষয়ে পরে ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন দলের মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী।


আনুষ্ঠানিকভাবে দলের দ্বিতীয় নেতা হিসাবে নাম ঘোষিত হওয়ার পর রাহুল গান্ধীর গলায় ধরা পড়ল আক্ষেপ আর আত্মসমালোচনা। চিন্তন শিবিরের শেষদিনে রাহুলের বক্তৃতায় কখনও দলের শৃঙ্খলা ফেরানোর কথা শোনা গেল, কখনও আবার গান্ধীজির কথা। 


নেতৃত্ব তৈরিতে কোনওদিনই জোর দেয়নি কংগ্রেস। আর সেই কারণেই আজ জেলা থেকে ব্লক সবক্ষেত্রেই সামনে চলে আসছে নেতৃত্বহীনতা। জয়পুরে চিন্তন শিবিরের শেষদিনে এমনই আক্ষেপের সুর শোনা গেল রাহুল গান্ধীর গলায়। তাঁর মতে, দলে দ্রুত শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরি।

সঙ্গে পরিবর্তনের আহ্বান রাহুল গান্ধীর গলায়। প্রশাসনিক থেকে রাজনৈতিক- সবস্তরেই আমূল সংস্কার ছাড়া দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়। চিন্তন শিবিরের শেষদিনে এমনটাই বললেন রাহুল গান্ধী।

সংগঠনে গান্ধীজির ডিএন ভরা আছে। হিন্দুস্তানের ডিএনএ। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির থেকে কংগ্রেসকে আলাদা করতে গিয়ে আজ একথা বলেন সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, জাতপাত বা ধর্মের ভিত্তিতে অন্য রাজনৈতিক দল চললেও কংগ্রেস চলে না। কংগ্রেস গোটা দেশকে নিয়ে চলে। কংগ্রেসের ডিএনএ হিন্দুস্তান।


সমঝোতা এক্সপ্রেস, মক্কা মসজিদ এবং মালেগাঁও বিস্ফোরণে হাত রয়েছে আরএসএসের। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের শেষ দিনে রবিবার এই অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আরএসএস এবং বিজেপির বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে হিন্দু সন্ত্রাসবাদের বীজ ছড়ানো হচ্ছে বলেও এদিন দাবি করেন সুশীল কুমার শিন্ডে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি। এই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানায় বিজেপি। তবে পরে চাপে পড়ে নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসেন শিন্ডে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই তাঁর এই মন্তব্য বলে জানান শিন্ডে।


নয়াদিল্লি: নাম না করে মমতাকে আক্রমণের নিশানা করলেন সনিয়া গাঁধী৷  জয়পুরের চিন্তন শিবির থেকে কংগ্রেস সভানেত্রীর অভিযোগ, অকংগ্রেস কয়েকটি রাজ্য কেন্দ্রের প্রকল্পকে নিজেদের প্রকল্প বলে চালানোর চেষ্টা করছে৷ এদের মুখোশ খুলে দিতে হবে৷ 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউপিএ ছাড়ার পর থেকেই কংগ্রেস-তৃণমূল আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক৷ সেই আগুনে এবার কার্যত ঘি ঢাললেন সনিয়া গাঁধী৷ 
রবিবার, জয়পুরে চিন্তন শিবিরের শেষ দিনে সনিয়া দাবি করেন, রাজনীতির রং না দেখেই, বিভিন্ন প্রকল্পে, কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিচ্ছে৷ কিন্তু, কয়েকটি অকংগ্রেসি রাজ্য কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিকে নিজেদের প্রকল্প বলে চালানোর চেষ্টা করছে৷ কংগ্রেস সভানেত্রীর হুঁশিয়ারি, এই সব রাজ্যের মুখোশ খুলে দিতে হবে৷   
এর আগে এই একই অভিযোগ করে প্রদেশ কংগ্রেসও৷ তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার টাকায় পরিচালিত প্রকল্পকে, বিজ্ঞাপনে নিজেদের প্রকল্প বলে চালাচ্ছে রাজ্য সরকার৷ তৃণমূলও অবশ্য কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে৷ শনিবার ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন খোদ মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রয়োজনে লালকেল্লা অভিযানের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের থেকে  করের টাকা তুলে, সেই টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে রাজ্যকে ফেরত দিচ্ছে কেন্দ্র৷ 
তৃণমূল ইউপিএ ছাড়ার পরে, নাম না করেও, মমতার বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণের পথে যাননি সনিয়া৷ তাই, সনিয়ার এ দিনের মন্তব্য যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট৷ সেই ভোটে একদা শরিক কংগ্রেস-তৃণমূল, পরষ্পরের প্রতিপক্ষ৷ এই পরিস্থিতিতে, সনিয়ার এ দিনের মন্তব্যে মমতার বিরুদ্ধে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে আরও বেশি করে আক্রমণাত্মক হওয়ার বার্তাই দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32706-2013-01-20-05-55-09


নয়াদিল্লি: ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগেই মাস্টার স্ট্রোক দিলেন সনিয়া গাঁধী৷ জয়পুরে দলের চিন্তন শিবির থেকেই তাঁর সম্মতিক্রমে কংগ্রেসের সহ সভাপতি করা হল রাহুল গাঁধীকে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এতে যেমন কংগ্রেস নতুন অক্সিজেন পেল, তেমনই নেতৃত্বহীনতায় ভোগা বিজেপিও অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেল৷ এতদিন বেসরকারি ভাবে এই দায়িত্ব সামলালেও চিন্তন শিবিরের মাঝেই শনিবার দলের নাম্বার টু করার সিদ্ধান্তে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর দিল কংগ্রেস হাইকমান্ড৷ এদিন সন্ধ্যায় কংগ্রেস মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী এই সিদ্ধান্ত জানাতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা ১০ জনপথের বাইরে উতসব শুরু হয়ে যায়।
বিহার বা উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটেও রাহুলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে৷ দলের ভেতরেই দীর্ঘদিন ধরে সনিয়া-পুত্রকে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দাবি উঠছিল৷ একাধিকবার দিগ্বিজয় সিংহ, জয়রাম রমেশ, মণীশ তিওয়ারি-সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা এই ইস্যুতে বার বার সরব হয়েছেন৷ গত বছর জুলাইয়ে রাহুলও সাফ বুঝিয়ে দেন, সরকার ও দলে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে তিনি প্রস্তুত৷  এরপর গত নভেম্বরেই ২০১৪-র লোকসভা ভোট সামনে রেখে ইলেকশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি গড়ে দেন কংগ্রেস সভানেত্রী কমিটির প্রধান করা হয় সনিয়া-পুত্রকে৷ সেই থেকে জল্পনার সূত্রপাত, কবে আরও বড় দায়িত্বে অভিষেক হবে তাঁর?

জয়পুরে চিন্তন শিবিরের প্রথম দিনেই সনিয়া বলেছিলেন, দেশকে নতুন ভাবে দেখতে হবে কংগ্রেস নেতৃত্বকে৷ দলকে নতুন প্রজন্মের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে৷ তারপর থেকেই রাহুলকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিয়ে আসার জন্য একের পর এক সওয়াল করতে থাকেন কংগ্রেস নেতারা৷ শনিবারের সিদ্ধান্তে সেই জল্পনারই অবসান ঘটল৷

জয়পুরে চিন্তন শিবিরের প্রথম দিনেই সনিয়া বার্তা দেন, দলকে নতুন প্রজন্মের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে৷ এই মন্তব্যের পরের দিনই রাহুলকে দলের সহ সভাপতি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাত্‍‍পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, নতুন ভারতকে চেনার যে পাঠ চিন্তন শিবিরে সনিয়া দিতে চাইছেন, তার জন্য নতুন প্রজন্মের মন জয় করা জরুরি৷ নতুন প্রজন্মকে কাছে টানতে তাই কমবয়সী রাহুলকেই গুরুদায়িত্ব দেওয়া হল৷ দলে নম্বর টু হওয়ার পর, এবার রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার জন্য জোরদার সওয়াল করতে শুরু করেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জিতিন প্রসাদ, রাজীব শুক্ল, মণিশঙ্কর আইয়াররা৷ তা হলে কি ২০১৪য় মুখোমুখি রাহুল-মোদি? জল্পনা তুঙ্গে৷ 
লোকসভা ভোটের আগে, একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, এই পরিস্থিতিতে, সনিয়া গাঁধীর এ দিনের সিদ্ধান্ত যেমন দলীয় সংগঠনকে নতুন ভাবে চাঙ্গা করবে, ঠিক তেমনই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা বিজেপিকেও অনেকটা ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে৷

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32700-2013-01-19-15-27-55

জয়পুর: ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে জয়পুরে চিন্তনশিবির থেকে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী৷ কংগ্রেসের ট্র্যাডিশনাল ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরেছে, এই চরম সত্য স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা ভোটে ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে কংগ্রেস সভানেত্রীর পরামর্শ, দলের প্রতি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মোহভঙ্গ যেন না হয়৷
শুক্রবার থেকে জয়পুরে শুরু হওয়া কংগ্রেসের দু'দিনের চিন্তন শিবিরের প্রথম দিনেই স্পষ্ট হয়ে গেল, কংগ্রেসের সামনে চিন্তা, উদ্বেগ প্রচুর৷ দলনেত্রী সনিয়া গাঁধীর কথাতেই তা ফুটে ওঠে৷ কংগ্রেস সভানেত্রী স্বীকার করে নিলেন তাঁদের ট্র্যাডিশনাল ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরেছে৷ সেইসঙ্গে উপস্থিত কংগ্রেসকে নেতৃত্বকে তাঁর সতর্কবার্তা, মধ্যবিত্ত শ্রেণির মোহভঙ্গ যেন না হয়৷ 
বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে হার যে দলের মনোবলে ধাক্কা দিয়েছে, তাও স্বীকার করে নিয়েছেন সনিয়া৷ সেইসঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, ওই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব একজোট হয়ে কাজ করতে পারেনি৷ দুর্নীতির অভিযোগ যে কংগ্রেসের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সনিয়ার কথায়৷ জোট রাজনীতি বজায় থাকলেও কংগ্রেসের শক্তিবৃদ্ধির পথে যাতে তা বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই বার্তাও দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী৷
এই প্রেক্ষাপটেই এ রাজ্য থেকে চিন্তন শিবিরে অংশ নেওয়া অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে দলের শক্তিবৃদ্ধির এটাই আদর্শ সময়৷
প্রায় ১৩০জন যুব কংগ্রেস নেতাকে চিন্তন শিবিরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ এদিন তাঁদের মধ্য থেকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট করে লড়াইয়ে নামার দাবি তোলা হয়৷

বিজেন্দ্র সিংহ, এবিপি আনন্, 

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32671-2013-01-18-16-45-43


বিতর্কের বেড়াজাল থাকা সত্ত্বেও, দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপি সভাপতি হতে চলেছেন নীতিন গড়কড়ি। তাও আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আজই ভারতীয় জনতা পার্টি দলীয় সভাপতি নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সভাপতি পদের জন্য বিকল্প প্রার্থী না মেলায়, গড়কড়ির নামেই ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিজেপি। রাজপুতদের শহর থেকে শনিবারই সেনাপতির নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। তারুণ্যের কাঁধে ভর করে দল যখন হাতের জোর বাড়াতে চাইছে, তখন সেনাপতি ঠিক করতে তত্পর হয়েছে বিজেপি শিবিরও। 

রবিবারই দলীয় সভাপতি নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিজেপি। যে নীতিন গড়কড়িকে নিয়ে দলের এত মাথাব্যথা, শেষ পর্যন্ত তিনিই বিজেপি সভাপতি হওয়ার দিকে নিষ্কন্টক ভাবে এগোচ্ছেন। সূত্রের খবর, ২৩ জানুয়ারি গড়কড়ি তাঁর মনোনয়ন দাখিল করতে পারেন। মনোনয়ন দখলের ছাড়পত্র পেয়ে গেলে গড়কড়ির সভাপতি হওয়া একরকম পাকা। কারণ এই নির্বাচনে আর কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই।


লখনৌ হয়ে দিল্লি যেতে চান মোদী


লখনৌ হয়ে দিল্লি যেতে চান মোদী
সনিয়া-মুলায়ম-মায়াবতীকে চ্যালেঞ্জ।
গৌতম হোড় 

নয়াদিল্লি: ইঙ্গিতটা ছিল বেশ কিছু দিন ধরে৷ জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে প্রতিষ্ঠা পেতে এ বার অটলবিহারী বাজপেয়ীর শূন্য আসনেই নিজেকে দেখতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী৷ আগামী লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের লখনৌ আসন থেকেই নির্বাচন লড়তে চান গুজরাটের চতুর্থবারের মুখ্যমন্ত্রী৷ উত্তরপ্রদেশের মাটি থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে হিন্দিভাষী গোবলয়ে নিজের আসন পাকা করার পাশাপাশি সনিয়া-মুলায়ম-মায়াবতীর দুর্গে দাঁড়িয়েই তাঁদের দিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার অঙ্ক কষেছেন মোদী৷ 

ডিসেম্বর মাসে গুজরাটে টানা তৃতীয়বারের জন্য ভোটে জেতার পর থেকেই দিল্লিকে পাখির চোখ করেছেন মোদী৷ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী ঘোষণা করে আগামী লোকসভা ভোটে যাওয়ার জন্য দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি উঠেছে৷ গুজরাটে জয়ের পর সেই দাবি আরও জোরালো করেছেন মোদী ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতারা৷ 

এমনিতে মোদী পা ফেলেন অনেক হিসেব কষে৷ তাই লোকসভা ভোটের দেরি থাকলেও এখন থেকেই নিজস্ব প্রস্ত্ততি সেরে রাখতে চান তিনি৷ বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হতে গেলে অটলবিহারী বাজপেয়ীর উত্তরাধিকার পাওয়াটা জরুরি বুঝে মোদী সে ভাবেই ঘুঁটি সাজাতে চান৷ লখনৌতে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাটা তাঁর সেই কারণেই৷ ১৯৯১ থেকে শুরু করে ২০০৪ পর্যন্ত পর পর পাঁচবার বাজপেয়ী এখানে সাংসদ ছিলেন৷ ২০০৯ সালে বাজপেয়ী সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর সেখানে জয়ী হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সহযোগী লালজি ট্যান্ডন৷ তিনি অবশ্য ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, মোদী লখনৌ থেকে লড়লে তিনি খুশি মনে তাঁর আসন ছেড়ে দিতে রাজি৷ 

তবে মোদীর লখনৌকে বেছে নেওয়ার অন্য আর একটি কারণও আছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, গতবার উত্তরপ্রদেশের অন্তত নটি আসনে বিজেপি হেরেছিল ৮০ হাজার বা তার কম ভোটে৷ লখনৌতে মোদী লড়লে তার একটা প্রভাব গোটা রাজ্যেই পড়বে৷ সেই সুবাদে কম ব্যবধানে হারা এই আসনগুলি দল পেতেই পারে বলে মোদী-শিবিরের হিসেব৷ একই সঙ্গে গোবলয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দলের অন্যান্য নেতাদেরও বার্তা দিতে চান তিনি৷ উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল না করলে ২০১৪ সালে যে বিজেপির সরকার গড়ার কোনও আশা নেই তা-ও জানেন মোদী৷ তাঁর সমর্থকদের বিশ্বাস, বিপক্ষের খাসতালুকে গিয়ে লড়াই করার সুবাদে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করে বিজেপির পক্ষে হাওয়া তুলে দিতে পারবেন মোদী৷ 

তবে গুজরাটের নিরাপদ আসনের বাইরে এসে উত্তরপ্রদেশের রাজধানীতে গিয়ে মোদীর ভোটে লড়ার অন্যতম কারণ সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে তাঁদের জমিতে গিয়েই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া৷ লখনৌ থেকে সনিয়ার নির্বাচনী কেন্দ্র রায়বরেলির দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার আর রাহুলের আমেঠি মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে৷ তবে, শুধু সনিয়া বা রাহুলই নয়, বিরোধী শিবিরের অন্য যে দুই নেতা প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বপ্ন দেখছেন, সেই মুলায়ম সিং যাদব ও মায়াবতীর খাসতালুকে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে লড়তে চান মোদী৷ তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরের এক প্রধান নেতার কথায়, 'সনিয়া বা রাহুল কি গুজরাটে গিয়ে লড়ার সাহস পাবেন? মুলায়ম বা মায়াবতী কি মোদীর খাসতালুকে লড়ার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন? মোদী কিন্ত্ত তাঁদের এলাকায় গিয়ে লড়তে পারেন৷ তফাতটা এখানেই৷' বিজেপিতে মোদীর ঘনিষ্ঠ ওই নেতার দাবি, 'প্রধানমন্ত্রী পদে ম্রিয়মান মনমোহন সিংকে লোকে এত দিন দেখেছে, দায়িত্ব নিতে দ্বিধান্বিত রাহুলকেও লোকে কম দেখেনি৷ এ বার লোকে দেখবে সেনাপতির কেমন হওয়া দরকার৷' 

লখনৌতে জেতার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী হতে পারেন মোদী? বাজপেয়ীর সুবাদে লখনৌ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি৷ ব্রাহ্মণ ও ব্যবসায়ীরা তো বটেই, বাজপেয়ীর ভাবমূর্তির জন্যই সাধারণ মানুষ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও এখানে বিজেপিকে ভোট দেন৷ মোদীর সেখানে বাড়তি সুবিধা হতে পারে অনগ্রসরদের ভোট৷ নিজেকে অনগ্রসর নেতা বলে প্রচার করে এই শ্রেণির ভোটটাও তিনি পাবেন বলে আশা করছেন মোদীর সমর্থকরা৷ 

তবে লোকসভায় জয়ের ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না মোদী শিবির৷ জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা বহাল থাকলে শেষ পর্যন্ত মোদী লখনৌয়ের পাশাপাশি গুজরাটের একটি কেন্দ্রেও দাঁড়াবেন৷ সে ক্ষেত্রে গুজরাটবাসীর কাছে তিনি প্রমাণ করতে পারবেন ক্ষমতার মোহে তিনি রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছেন না৷ তবে লখনৌতে মোদী দাঁড়ালে যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ হবে সে কথা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ মোদীকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার ডাক দেবে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি৷ এই বিভাজন এড়ানোর জন্যই উগ্র হিন্দুত্বের পরিবর্তে উন্নয়নের প্রশ্নেই ভোটে যেতে চাইছেন মোদী৷ ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে, মোদীর গুজরাটেই পুলিশে সবথেকে বেশি মুসলিম কর্মরত, গুজরাটেই সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থান সবথেকে সুরক্ষিত ইত্যাদি৷ গুজরাট দাঙ্গার কলঙ্ক মুছে নিজের যে ধর্মনিরপেক্ষ, প্রশাসক ভাবমূর্তি তৈরি করতে চাইছেন মোদী, এই প্রচার তারই অঙ্গ৷ 

তবে লখনৌতে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে একটাই বাধা আছে মোদীর সামনে৷ তা হল রাজনাথ সিং, কলরাজ মিশ্রের মতো রাজ্য নেতারা৷ আর কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপিতে ফিরবেন কল্যাণ সিং৷ মোদীকে নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই৷ উমা ভারতীর সঙ্গেও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক ভাল৷ এই পরিস্থিতিতে রাজনাথ ও কলরাজদের বোঝানোর চেষ্টা করছে দল৷ তবে দলের সাধারণ কর্মীরা মোদীকে নিয়ে এতটাই উত্সাহী যে, তাঁরাও শেষ পর্যন্ত খুব একটা আপত্তি করতে পারবেন বলে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব৷ 


শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল এবার পরোক্ষে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের বিরুদ্ধে সওয়াল করলেন। শনিবার শিবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেন, ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় জর্জরিত শিবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে নিজের সুনাম ফিরিয়ে এনেছে তা দৃষ্টান্তমূলক। সেক্ষেত্রে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই বেসু মডেল হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাজ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ কখনও আবার  অধ্যক্ষ  নিগ্রহের ঘটনা। এই ঘটনাগুলিতে বারবারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে ব্যাহত হয়েছে শিক্ষার পরিবেশ। শিক্ষাঙ্গনে হিংসার ঘটনায় বারবারই  উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে সম্প্রতি ছাত্রসংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে বেসু কর্তৃপক্ষ। আর তারপর থেকে বেসুতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনাও। শনিবার বেসুর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এবিষয়ে বেসুকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরও বেসুকেই মডেল করা  উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

ছাত্র সংঘর্ষ কমাতে শিবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ  ছাত্রসংসদ নির্বাচনই বন্ধ করে দিয়েছে।  তাই শিবপুরকে মডেল  বিশ্ববিদ্যালয় বলে মন্তব্য করে আসলে রাজ্যপাল পরোক্ষে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিরুদ্ধেই সওয়াল করলেন বলেই  মনে করছেন অনেকে।  


গ্রেফতার তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে টানাপোড়েন চলে। সিপিআইএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে আক্রমণ এবং বামনঘাটায় হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় আরাবুল ইসলামকে। 

শুক্রবার রাতে সোনারপুর থানায় আটক আরাবুল হঠাত্‍ই জানান তাঁর বুকে ব্যথা হচ্ছে। তড়িঘড়ি ধৃত তৃণমূল নেতাকে প্রথমে সুভাষগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিস। সেখান থেকে রাত ১১টা ২০ নাগাদ আরাবুল ইসলামকে নিয়ে যাওয়া হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। দোতলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর চিকিত্‍সা হয়। করা হয় ইসিজি। রাত ১টা নাগাদ এম আর বাঙুর হাসপাতাল থেকে আরাবুলকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিত্‍সার পর আরাবুল ইসলামকে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিত্‍সকরা। এরপর রাত দেড়টা নাগাদ কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয় আরাবুলকে। ফের এক দফা ইসিজিও করা হয়েছে ধৃত তৃণমূল নেতার।

ঠিক কী অসুস্থতার জন্য আরাবুলকে ভর্তি করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ গোটা বিষয়টাই হয়েছে চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে। আরাবুল ইসলামকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


সূর্যাস্তের পড়েও অগ্নিগর্ভ ধনেখালি। সকাল থেকে জনতা-পুলিস খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়েছিল সন্ধে নামার পড়েও একই আছে সেই চিত্র। সন্ধেয় পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে স্থানীয় মানুষ। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিস। পুলিসের আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে পুলিস হানা দিচ্ছে। কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিস। 

লকআপে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু। পুলিসের বিরুদ্ধে পিটিয়ে মারার অভিযোগ। আর এই অভিযোগ ঘিরেই কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হুগলির ধনেখালি। চলল পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর, থানায় হামলা। বিক্ষোভ হঠাতে লাঠি চালাল পুলিস। বিক্ষোভ বদলে গেল সংঘর্ষে। ঘটনাস্থল হুগলির ধনেখালি।

ক্ষোভ দানা বাঁধছিল শুক্রবার রাত থেকেই। অভিযোগ, রাত সাড়ে নটা নাগাদ মারতে মারতে এলাকার পরিচিত তৃণমূল কর্মী কাজী নাসিরুদ্দিনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিস। কিন্তু কেন?

এরপর রাত এগারোটা নাগাদ থানা থেকে ফোন আসে। নাসিরুদ্দিনের বন্ধু সাবেদ আলিকে বলা হয় নাসিরুদ্দিন অসুস্থ, নিয়ে যান। এরপর পুলিসই নাসিরুদ্দিনকে ধনেখালি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্‍সকেরা। তখনই একবার মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তখনকার মত বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয় পুলিস। এরপর শনিবার সকাল সাড়ে আটটা-নটা থেকে শুরু হয় পথ অবরোধ। 

বিক্ষোভকারীদের টার্গেট হয়ে যায় পুলিস। প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর। পরে থানায় হামলা। থানা লক্ষ্য করে নাগাড়ে ইটবৃষ্টি। পাল্টা লাঠি চালায় পুলিসও। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। মুহূর্তেই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। তড়িঘড়ি দোকানবাজার বন্ধ করে বাড়ির পথ ধরেন অনেকে। বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। অঘোষিত বনধের চেহারা নেয় ধনেখালি।


কলকাতা: শনিবার মেট্রো চ্যানেলের সমাবেশ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের বাঁশি বাজিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি দলীয় কর্মীদের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বাতলে দিলেন প্রচার-কৌশলও৷ দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে মমতার প্রচার-বার্তা, ৩৪ বছরের বাম জমানার ব্যর্থতা ও সন্ত্রাসের অভিযোগকে ফের সামনে তুলে ধরতে হবে৷ এফডিআই, রান্নার গ্যাস-পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির মতো কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও বঞ্চনার অভিযোগে সরব হতে হবে৷ তুলে ধরতে হবে রাজ্য সরকারের সাফল্য৷ বিরোধী ও সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগকে অন্যতম হাতিয়ার করতে হবে৷ উন্নয়নকে হাতিয়ার করে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাকে এক নম্বরে নিয়ে যাওয়া তাঁর নতুন চ্যালেঞ্জ বলেও জানান মমতা৷ তাঁর কথায়, উন্নয়ন করব, চক্রান্ত রুখব৷ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ, সব আসন দখল করব৷ 
পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্যে দলীয় কর্মীদের প্রতিদিন মিটিং-মিছিল করার নির্দেশ দিলেও একইসঙ্গে মমতা বলেন, মানুষের অসুবিধা না করে প্রচার-আন্দোলন করতে হবে৷ সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে আঁতাত গড়ে তুলেছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী৷ 
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, ২০১১-র আগে পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনের আগে বাহাত্তরের সন্ত্রাসের অভিযোগ সামনে এনে মানুষের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করত শাসক সিপিএম৷ এবার সেই কৌশলেই ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের অপশাসনের অভিযোগকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে অন্যতম অস্ত্র করতে চাইছে শাসক তৃণমূল৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32701-2013-01-19-15-47-46

কলকাতা: কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের দেনা মেটাতে সিপিএমের পার্টি অফিসগুলি বেচে দেওয়ার দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কেন্দ্রের ইউপিএ-২ সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব তিনি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে রেখে এবার আরও সুর চড়ালেন তিনি৷ শনিবার ধর্মতলায় দলীয় সমাবেশ থেকে মমতা বলেন, সিপিএমের করা দেনার বোঝা তাঁদের বইতে হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার বললেও তিন বছরের জন্য তারা রাজ্যের সুদ মকুব করেনি৷ অথচ কেন্দ্র যেখানে বিভিন্ন কর বাবদ রাজ্যের কাছ থেকে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায়, সেখানে রাজ্যকে ফেরত দেয় মাত্র ১৮ হাজার কোটি টাকা৷ এভাবে সুদ কাটা যাবে না বলে হুমকি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এবার তিনিও সুদ দেওয়া বন্ধ করে দেবেন৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রয়োজনে লালকেল্লা অভিযানেরও ডাক দিয়েছেন তিনি৷ তবে তাঁর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী৷ 
মমতা এদিন এক ধাপ এগিয়ে বলেন, সিপিএমের দেনার দায় কেন রাজ্যবাসী বহন করবে? সিপিএমের পার্টি অফিস বিক্রি করে দেনার টাকা শোধ করা হোক৷ এই মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম৷ 
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এদিন বঞ্চনা নিয়ে সুর চড়িয়ে ও দিল্লি গিয়ে আন্দোলনের কথা বলে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরির চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আবার সিপিএম-কংগ্রেসের বন্ধু, এই অভিযোগকেও ফের সামনে এনে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করলেন৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32696-2013-01-19-14-46-47


প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করা সম্ভব নয়৷ তাই কি উপেক্ষার মধ্যে দিয়েই অসন্তোষ উগড়ে দেওয়া? রবিবার পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দীর্ঘ ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম একবারও উচ্চারিত না হওয়ায়, এই জল্পনাই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে৷ 
রাজ্যপাল ইস্যুতে লালকার্ড-হলুড কার্ড বিতর্কের পরই দলের মধ্যে কিছুটা কোণঠাসা সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তৃণমূলের একাংশের এমনটাই দাবি৷ ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়-ফিরহাদ হাকিমকে মুখপাত্র ঘোষণা করে সুব্রতকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বার্তাও দিয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের৷ যদিও, তৃণমূল সূত্রে খবর, সুব্রত মুখোপাধ্যায় রাজ্যপাল সম্পর্কে যা বলেছিলেন, তার পুরোটাই দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যক্তিগত জায়গা থেকে নয়৷ তারপরও, দলের এই ধরণের ভূমিকায় কি ক্ষুব্ধ এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ? উঠে গেল প্রশ্ন৷ 
রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলায় বিদ্যাসাগর কলেজে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সম্মানে এক অনুষ্ঠান হয়৷ রাষ্ট্রপতির সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ সেখানেই বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে প্রণববাবুর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্কের স্মৃতিচারণায় মাতেন সুব্রত৷ বলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো রসবোধ আর কোনও রাজনীতিবিদের দেখেননি তিনি৷ এমনকি, জানিয়ে দেন, রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর বই লিখলে তারও বিষয় হবে, ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সাহচর্য৷
আর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই দীর্ঘ বর্ক্তৃতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম অনুচ্চারিত থেকে যাওয়াতেই রাজনৈতিক মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তোলা এবং তাঁর সম্পর্কে কিছু বলা তৃণমূলের মধ্যে প্রায় অঘোষিত প্রথার মতো৷ সেখানে সুব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁর ফেলে আসা রাজনৈতিক জীবনের অলিগলিতে বিচরণ করলেন, অথচ একটিবারের জন্যও মমতার নাম উঠে এল না! সেই মমতা, যাঁর হাত ধরেই কলকাতা পুরসভার মেয়রের আসনে বসেছিলেন সুব্রত, যাঁর হাত ধরেই এখন পঞ্চায়েতমন্ত্রী তিনি৷ তাহলে কি রাজ্যপাল ইস্যুতে তাঁর প্রতি দলনেত্রীর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই উপেক্ষার মধ্যে দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন, এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ? উত্তর অধরা৷  

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32715-2013-01-20-11-18-58  


পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত৷ এবার বর্ধমান৷ শনিবার, কালনার সুলতানপুরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়৷ সংঘর্ষের জেরে আহত ৪৷ মঙ্গলকোটে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ৷ গুলিবিদ্ধ ১ তৃণমূল কর্মী৷ সিপিএমের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ৷ অভিযোগ অস্বীকার সিপিএমের৷


তৃণমূলের অভিযোগ, কালনার সুলতানপুরে দলীয় অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সিপিএম৷ যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের পাল্টা দাবি, বুলবুলিতলায় তাদের দলীয় অফিসে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল৷ 
 সিপিএমের পাল্টা দাবি, আগামীকাল সিপিএমের বর্ধমানের জেলা সম্পাদকের একটি সভা করার কথা সেখানে৷ তা বানচাল করতেই নিজেদের পরিত্যক্ত পার্টি অফিস জ্বালিয়ে সিপিএমের নামে দোষ দিচ্ছে তৃণমূল৷ তৃণমূলই সিপিএমের অফিস ভাঙচুর করেছে বলেও সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ৷ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল৷
এদিকে, তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত মঙ্গলকোট৷ পুলিশসূত্রে খবর, এদিন দুই তৃণমূল নেতা কাসেম কাজি ও বাসু শেখের গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷ সংঘর্ষের জেরে গুলিবিদ্ধ ব্রজু মোল্লা৷  যদিও আহতের স্ত্রীর অভিযোগ, ব্রজু মোল্লার উপর হামলা চালিয়েছে সিপিএমই৷ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম৷
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ৷ পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ৷ এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32683-2013-01-19-09-32-16  


কলকাতা: ফের অতি সক্রিয়তার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে৷ কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে লেক থানাকে৷ অংশুমান গুপ্ত নামে এক ট্রাভেল এজেন্টের অভিযোগ, বিমানের টিকিট কাটা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এক গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে লেক থানার পুলিশ গত ৮ জানুয়ারি তাঁর অফিসে এসে তাঁকে ব্যাপক মারধর করে গ্রেফতার করে৷ থানায় বসিয়ে তাঁকে দিয়ে চারটি খালি চেকে সই করিয়ে নেওয়া হয়৷ দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের ওই ট্রাভেল এজেন্সির মালিক অংশুমান গুপ্ত জানিয়েছেন, গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যাবেলা লেক থানার তিন পুলিশ কর্মী তাঁর অফিসে তাঁকে গ্রেফতার করতে আসেন৷ তিনি তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে গ্রেফতারির ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তাঁর আচমকা এক কনস্টেবল তাঁকে সজোরে চড় মারেন৷ ছিটকে পড়ে যায় চশমা৷ তারপর কলার ধরে মারতে মারতে অফিস থেকে বের করে প্রিজন ভ্যানে তুলে তাঁকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ৷ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দেবব্রত দত্ত নামে এক ব্যক্তিও তাঁর বক্তব্য সমর্থন করেছেন।
পুলিশ অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করেন জনৈক গৌতম রায় ও আরও কয়েকজন৷ ১৮ জানুয়ারি আমদাবাদ থেকে কলকাতা আসার ২৫টি বিমানের টিকিট কাটার দায়িত্ব নিয়েও অংশুমান তা করতে পারেননি৷ উপরন্তু গ্রাহকদের দেওয়া টাকাও তিনি ফেরত দিচ্ছিলেন না৷ তাই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে৷ গ্রেফতারের সময় সামান্য টানাটানি হয়েছিল৷ মারধর করা হয়নি৷ দু'পক্ষের আইনজীবীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেকে সই করানো হয়েছিল৷
অংশুমানের দাবি, এয়ারলাইন্সের সঙ্গে ব্যবসাগত সমস্যার কারণেই তিনি টাকা ফেরত দিতে পারেননি৷ তা তিনি জানিয়েওছিলেন থানাকে৷ তাঁর প্রশ্ন, নির্ধারিত যাত্রার দিনের দশদিন আগেই কেন তাঁকে মারধর, গ্রেফতার করা হল? ঘটনার প্রতিবাদে ডিসিকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে কখনও নিষ্ক্রিয়তা ও কখনও অতি সক্রিয়তার অভিযোগ এলেও পরিস্থিতি যে এখনও বদলায়নি, তা আরও একবার প্রমাণ হল এ ঘটনায়৷

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32695-2013-01-19-14-10-17 


১৬ বাই ১০ ফুটের একটা কুঠুরি। সামনে লোহার গরাদ। ভিতরে লুঙ্গি, চেকশার্ট পরে হাঁটু মুড়ে বসে রয়েছেন তিনি। কেউ দেখা করতে এলেই ক্ষিপ্ত হয়ে চিৎকার করছেন। শাপশাপান্ত করছেন দলের নেতাদের। একা হয়ে গেলে মোটা চাদরে মাথা পর্যন্ত ঢেকে চুপ করে বসে থাকছেন। 
পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত হওয়ার পরে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম সোনারপুর থানার লকআপে এ ভাবেই বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সারা দিন কাটালেন। তার পরে রাতে বুকে ব্যথার কথা বলায় তাঁকে প্রথমে এম আর বাঙুর, পরে সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 
বৃহস্পতিবার রাতে লকআপে আনার পরে স্ত্রী জাহানারা বিবি ও ছেলে হাকিবুল তাঁকে দু'টি সাদা চেক লুঙ্গি ও দু'টি জামা দিয়ে গিয়েছিলেন। রাতে নীল জিন্স ও আকাশি চেক-শার্ট খুলে লুঙ্গি ও জামা পরে মাথা মুড়ি দিয়ে লকআপের ভিতরে বসে পড়েন তিনি। লকআপে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছিনতাইয়ের অভিযোগে ধৃত একজন। তৃণমূলের 'উদ্যমী নেতা' ও ভাঙড় কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিকে পেয়ে ওই আসামী তাঁর সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাঁকে পাত্তা দেননি আরাবুল। রাতেই সোনারপুর (পশ্চিম)-এর বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায় থানায় এসে দেখা করেন তাঁর সঙ্গে। আসেন ক্যানিং-১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়িও। গরাদ চেপে ধরে আরাবুল তাঁদের চিৎকার করে বলেন, "সব কিছু-ই দলকে জানিয়ে করেছি। আর আমাকেই এখন পুলিশ হেফাজতে রাখা হল!" এর পরে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বলেন, "দলই আমাকে শেষ করে দিল।" দু'জনেই তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন।


রাতে আরাবুলকে দেওয়া হয় ভাত, মুসুর ডাল, আলু-বিনের তরকারি ও কাতলা মাছের ঝোল। তৃণমূলের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরাই তাঁকে ওই খাবার দেন। লকআপে বসেই খেয়ে চাদর মুড়ি দিয়ে কম্বল পেতে মেঝেতে শুয়ে পড়েন। লক আপের এক ধারে বালতিতে জল রাখা। সেখানে স্নান-নিত্যকর্মের ব্যবস্থা রয়েছে। 
শুক্রবার সকালে লিকার চা ও টোস্ট দেওয়া হয় তাঁকে। সঙ্গে উচ্চ-রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের ওষুধ। দিনে দু'বার তাঁকে ওই ওষুধ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে চিকিৎসকদের। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল। লকআপের গরাদ ধরে উত্তেজিত আরাবুল তাঁকে বলেন, "আমি সবই দলকে জানিয়ে করেছি। তবে আমার এই অবস্থা হবে কেন? আমাকে কেন ফাঁসালেন আপনারা?" শক্তি মণ্ডল আরাবুলের হাত চেপে ধরে বলেন, "দল তোমার সঙ্গে রয়েছে। তুমি শান্ত হও।" কিন্তু শান্ত করা যায়নি আরাবুলকে।
দুপুর দেড়টা নাগাদ আরাবুলের স্ত্রী, শাশুড়ি ও ছেলে আসেন থানায়। জামাইকে লকআপের ভিতরে দেখে কেঁদে ফেলেন শাশুড়ি। আরাবুল তাঁদের বলেন, "দল আমার সঙ্গে চক্রান্ত করেছে। কিছু চিন্তা করবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে।''
দুপুরে আরাবুলকে দেওয়া হয় ডাল-ভাত-আলুসব্জি ও কাতলা মাছের ঝোল। খাওয়ার পর ফের শুয়ে পড়েন তিনি। সন্ধ্যার পর ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ আসেন দেখা করতে। লকআপের ভিতর থেকে ফের গর্জে ওঠেন আরাবুল। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেন, "আমার দল রাজ্য শাসন করছে। দিদি মুখ্যমন্ত্রী। আর আমাকে-ই কি না লকআপে থাকতে হবে! আমি তো সব কিছুই দলকে জানিয়ে করেছি।" মাথা নেড়ে সায় দেন কাইজার। রাতে সোনারপুর ও ভাঙড় এলাকার কয়েক জন নেতা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সবাইকেই একই কথা বলতে থাকেন আরাবুল। তবে পুলিশ কর্তারা এ দিন জেরা করেননি তাঁকে। 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32673-2013-01-19-03-58-14


নদিয়া: রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট নিয়ে ফের কেন্দ্রকে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করলেন, কেন্দ্র রাজ্যকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে! নদিয়ার জাগুলিতে সরকারি মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ করেন সিপিএমকেও৷ এদিন ফের সিপিএম-কংগ্রেস আঁতাঁতের অভিযোগেও সরব হন তিনি৷ প্রশাসনিক সভা থেকে একযোগে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি৷।
এদিন কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গিয়ে রাজ্যকে বঞ্চনা ও সাধারণ মানুষকে শোষণের অভিযোগকে মূলত হাতিয়ার করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতার অভিযোগ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে গরিবকে শোষণ করছে কেন্দ্র৷ অন্যদিকে রাজ্যকে ভাতে মারারও চেষ্টা করছে তারা৷ তিন বছরের ঋণ মকুবের জন্য রাজ্যের দাবিতে কান দিচ্ছে না৷ অন্যদিকে উন্নয়নের জন্য ধারও করতে দিচ্ছে না৷ অথচ সিপিএম আমলে কেন্দ্র ধার করতে দিত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৭ মাসে কেন্দ্র একটুও সাহায্য করেনি৷ সুদের টাকা না দিলেই তৈরি হত ৫ লক্ষ কর্মসংস্থান৷ বারবার বলেছি, এক পয়সাও দেয়নি৷ 
মমতা অভিযোগ করেন, দেড় বছর কাটতে না কাটতেই সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস-বিজেপি একজোট হয়ে সরকারের বিরোধিতায় নেমেছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সিপিএম উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছে৷ তাঁর দাবি, তৃণমূল কখনও উন্নয়নের কাজে বাধা দেয়নি৷ বিরোধীদের উদ্দ্যেশে তাঁর আবেদন, ৩৪ বছরের ব্যর্থতা মেটাতে অন্তত ১০ বছর সময় দিন! তিনি যে বাধা সত্ত্বেও রাজ্যের আর্থিক হাল ফেরাতে ততপর, বোঝাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, গত এক বছরে রাজ্যের আয় ২১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার কোটি টাকা! এদিকে ত্বহা সিদ্দিকির মতো সংখ্যালঘু নেতারা মমতার সমালোচনায় নেমে প্রতিশ্রুতিমতো মুসলিমদের প্রত্যাশিত উন্নয়ন হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ করেছেন, এদিন নাম না করে সে ব্যাপারে ত্বহাদেরও বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ দাবি করেন, ওবিসি সংরক্ষণের মধ্যে সংখ্যালঘুদের আনা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের। জন্য চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, পুলিশের চাকরিতে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ করা হয়েছে৷ 
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, পঞ্চায়েত ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রচারের কাজ সেরে নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বাম জমানার ব্যর্থতা ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ ও হাতিয়ার করতে চান, এদিন সেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু সরকারি সভা থেকে রাজনৈতিক আক্রমণ নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তিনি৷  

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32655-2013-01-18-14-14-41


রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগে বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষের অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ সিমলা স্ট্রিটে বিবেকানন্দের বাড়িতে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন তিনি৷ এরপর যান পূর্ব মেদিনীপুরে৷ সেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন৷ 
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে গতবছরই বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেন্দ্র৷ এবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগে বছরব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হল৷ স্বামীজির জন্মভিটে সিমলা স্ট্রিটে পুষ্পার্ঘ্যের মাধ্যমে সেই অনুষ্ঠানেরই সূচনা করেন রাষ্ট্রপতি৷ 
এদিনের এই অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, ভারত সঞ্চার নিগমের সিইও জহর সরকার, রামকৃষ্ণ মিশনের সহ অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ, স্বামী প্রভানন্দ, স্বামী সুহিতানন্দ৷ এই অনুষ্ঠানে বিবেকানন্দের জীবনি অবলম্বনে একটি তথ্যচিত্রের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল৷ 
এই অনুষ্ঠানের পরই রাষ্ট্রপতি যান পূর্ব মেদিনীপুর৷ তমলুকের নিমতৌড়িতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায় ও তাম্রলিপ্ত সরকারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্ত ও সুশীল ধাড়ার মূর্তি উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি৷ তমলুকে এদিন নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন রাষ্ট্রপতি৷ 
তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে ছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32656-2013-01-18-14-22-30


নিশানায় তৃণমূল, তবু ভিএসে বিড়ম্বিত কারাট


নিশানায় তৃণমূল, তবু ভিএসে বিড়ম্বিত কারাট
প্রসেনজিত্‍ বেরা 
আরাবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে কেন দেরি হল, সে নিয়ে তৃণমূল সরকারকে রোজই কাঠগড়ায় তুলছে সিপিএম৷ ঠিক তখনই সিপিএমের অন্দরে ভিএস অচ্যুতানন্দন প্রশ্ন তুললেন, কেরলে টিপি চন্দ্রশেখরণ হত্যা-মামলায় অভিযুক্ত নেতাদের দল কেন শাস্তি দিচ্ছে না৷ অশীতিপর নেতার প্রশ্নে প্রকাশ কারাট-সহ সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্বকে বিড়ম্বনায় পড়তে হল কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে৷ কারাটকে প্রকাশ্যেও বলতে হল, 'তদন্ত চলছে৷' আবার, ভিএস-র অনড় অবস্থানের কারণেই তাঁর তিন অনুগামীর বিরুদ্ধে নথি-ফাঁস সংক্রান্ত অভিযোগে শাস্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে হল সিপিএম নেতৃত্বকে৷ 
কলকাতায় দলের তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে কারাট যখন এ রাজ্যে বাম নেতা-কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, ঠিক তখনই দলের বৈঠকে টিপি চন্দ্রশেখরণ হত্যার প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন ভিএস৷ ওই হত্যা-মামলায় অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে দল কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কারাট এবং তাঁর অনুগামী বিজয়ন গোষ্ঠীকে কোণঠাসা করার সবরকম চেষ্টাই চালিয়েছেন ভিএস৷ যার জেরে কারাট-কে তাঁর জবাবি ভাষণে বলতে হয়েছে, 'দলীয় তদন্ত এখনও চলছে৷ রিপোর্ট এলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷' 
২০০৯-এ সিপিএম থেকে বেরিয়ে রেভোলিউশনারি মার্ক্সিস্ট পার্টি (আরএমপি) গড়েছিলেন চন্দ্রশেখরণ৷ কোঝিকোড়ে সিপিএমের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয় আরএমপি-র৷ ২০১২-র ৪ মে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে খুন হন দলত্যাগী চন্দ্রশেখরণ৷ টি কে রাজেশ-সহ মূল অভিযুক্তদের গত জুলাইয়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার করে কেরল পুলিশ৷ কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয়স্তরে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি৷ শুধু একটি তদন্ত কমিশন হয়েছে৷ সেই কমিশন এতদিন ধরে কী করছে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন সিপিএমের শেষ জীবিত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভিএস৷ দলীয় তদন্ত কমিশনের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভিএস আবার নথি-ফাঁস কাণ্ডে তাঁর তিন অনুগামীর বিরুদ্ধে দলের শাস্তির সিদ্ধান্তও স্থগিত করিয়ে দিতে পেরেছেন৷ ভিএসের ব্যক্তিগত সহায়ক এ সুরেশ, প্রেস সচিব বালাকৃষ্ণন, ব্যক্তিগত সহসচিব ভি কে শশীধরনের বিরুদ্ধে দলীয় নথি ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় কেরল পার্টি তদন্ত কমিটি গড়েছিল৷ সেই কমিটি তিন জনকে বহিষ্কারের যে সুপারিশ করেছিল, তাতে শিলমোহর লাগানোর কথা ছিল কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই৷ কিন্ত্ত, ভিএসের তোলা প্রশ্নে ফাঁপরে পড়ে সুরেশদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখারই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রকাশ কারাটদের৷

শিল্প-গীতি-নাট্য



ঠিক কী কারণে 'বেঙ্গল লিডস' শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা জানেন না বললে তাঁর মনীষার প্রতি, তাঁর প্রশাসনিক সদিচ্ছার প্রতি অপমান করা হয়৷ অথচ সম্প্রতি 'বেঙ্গল লিডস'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যে ভাবে কার্যত এক ধরনের গীতি-নাট্যের চেহারা নিল, তাতে একটি প্রশ্ন উঠতে বাধ্য৷ 'বেঙ্গল লিডস' কেন? যদি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ঠিক কী পরিমাণ আর্থিক দুরবস্থায় আছে, এই রাজ্যে গত প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম জমানায় কী পরিমাণ অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং বর্তমান সরকারকে কতটা সংকটের মধ্যে পথ চলতে হচ্ছে, সেই সব বিবরণ সবিস্তারে প্রদানই এ অনুষ্ঠানের অভীষ্ট হয়ে থাকে, তা হলে এক ধরনের সফলতার দাবি করা চলে৷ সমস্যা হল, এই বক্তব্যগুলি নতুন নয়৷ এ সবের পক্ষে এবং বিপক্ষে ইতিমধ্যে বহু কথা বলা হয়েছে, ভবিষ্যতেও এই সব বিষয় আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে, সে আশাও অসঙ্গত নয়৷ তাতে শিল্প বিনিয়োগ আকর্ষণে পশ্চিমবঙ্গের আশা কত দূর পূর্ণ হবে, সে তর্কটিও অবশ্য সঙ্গত৷ 

যে সব শিল্পপতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এবং একইসঙ্গে যাঁরা ছিলেন না এই দুই গোত্রের ব্যক্তিরাই একটি কথা শোনার জন্য উন্মুখ ছিলেন নিশ্চিত৷ পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়নের দিশাটি কী হতে চলেছে, সে বিষয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন৷ সেটিই নতুন কথা হতে পারত৷ তাত্পর্যপূর্ণ কথাও হতে পারত৷ আসলে, একমাত্র তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় সেটাই৷ রাজ্যের শিল্পনীতি৷ শিল্প চাই, এমন দাবি অভিনব কিছু নয়৷ শিল্প কী ভাবে চাই, কোন প্রক্রিয়ায় এগোলে জনস্বার্থ এবং শিল্পপতির স্বার্থ কোনও একটি সাধারণ ভূমি খঁুজে পাবে, সেই কথাটি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে অতীব গুরুত্বপূর্ণ৷ 'সিঙ্গুর' নামে একটি ভূমিখণ্ড এই রাজ্যে শিল্পায়নের প্রক্রিয়ায় একটি ক্ষতচিহ্নের মতো এখনও বিদ্যমান৷ এবং এও ঘটনা যে 'সিঙ্গুর' নিছকই একটি উদাহরণ মাত্র নয়, রাজ্যের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে 'সিঙ্গুর কাণ্ড' এমন একটি সংকটের জন্ম দিয়েছে, যার ফলে সম্পূর্ণ শিল্পনীতিটিই একটি বিষম বাঁকের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷ শিল্পের জন্য জমি চাই, তা সত্য৷ সে জমি কী ভাবে পাওয়া যাবে, তা ঝাপসা৷ জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ সরকার যদি জমি অধিগ্রহণে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে, সেক্ষেত্রে শিল্পপতিরা বিনিয়োগে কত দূর আগ্রহী হবেন, সে প্রশ্ন একাধিক বার তোলা হয়েছে৷ প্রশ্নটি বিবেচনার দাবি রাখে৷ 'বেঙ্গল লিডস'-এর উদ্বোধনী মঞ্চ হতেই পারত সেই সব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনার একটি ক্ষেত্র৷ উপস্থিত, এবং অনুপস্থিত শিল্পমহল তাতে একটি সদর্থক বার্তা পেতে পারত৷ অথচ, কার্যকালে হাতে রইল বিচিত্র একটি তামাশা৷ কিছু কথার পুনরাবৃত্তি এবং পরিশেষে কিছু গান৷ 

গানে গানেই রাজ্যের শিল্পায়নের সমস্ত বন্ধন টুটে যাবে, এমন একটি আশা কবিজনোচিত হতে পারে, কিন্ত্ত বাস্তবোচিত নয়৷ শিল্পানুরাগী এবং শিল্পকলানুরাগী একাধারে হওয়া সম্ভব, শুধু ক্ষেত্র দুটিকে গুলিয়ে ফেললে মুশকিল৷ শিল্পপতিরা এমন একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে গানের পরিবর্তে কিছু নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা করলে মুখ্যমন্ত্রী অখুশি হতেন না, নিশ্চিত৷ একইসঙ্গে আরও একটি বিষয় উল্লেখের দাবি রাখে৷ 'ভাইব্র্যান্ট গুজরাট'-এর সঙ্গে 'বেঙ্গল লিডস'-এর তুলনা নানা কারণেই অসম্ভব৷ প্রশ্ন হল, গুজরাটে সেই সম্মেলনে কারা উপস্থিত ছিলেন, সেই তালিকার সঙ্গে বাংলার এই সম্মেলনে উপস্থিতজনদের প্রতিতুলনা নিছকই ছিদ্রান্বেষণ নয়৷ সেই তালিকা প্রমাণ করে বিনিয়োগের মানচিত্রে রাজ্যের স্থান বর্তমানে কোথায়, এবং সর্বোপরি ভবিষ্যতে কোথায় হতে পারে৷ এই প্রতিযোগিতাটি স্বাস্থ্যকর৷ তাতে নাম লেখালে পশ্চিমবঙ্গে লাভের আশাই সমধিক৷ অন্যথায় কিছু চর্বিত চর্বণের পরে দু'একটি সঙ্গীত পরিবেশন 'বেঙ্গল লিডস'কে তামাশার স্তরেই রেখে দেবে৷ 

ছত্তিশগড়ে মাওবাদঃ এক বিহঙ্গম দৃষ্টি -- দ্বিতীয় পর্ব

রঞ্জন রায়

 সত্তরের দশকে কোলকাতার নকশালপন্থী আন্দোলন দমন করে এলিটবর্গের চোখে টাফ  অফিসার হিসেবে খ্যাতিপ্রাপ্ত প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রণ্‌জিৎ গুপ্ত নিজের মেমোয়ার্সে লিখেছেন যে সেই সময়ে মধ্যবর্গীয় নকশালপন্থী নেতারা ছিলেন রোম্যান্টিক স্বপ্নদর্শী। এঁদের সামরিক ব্যাপারে কোন সংগঠিত চিন্তাভাবনা ছিল না। ফলে দু'তিন বছরের মধ্যেই এদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু উনি খেয়াল করেছিলেন যে আশির দশকে অন্ধ্র প্রদেশে কোন্ডাপল্লী সীতারামৈয়ার নেতৃত্বে  ক্ষমতা বিস্তার করা পি ডব্লিউ জি বা পিপল্‌স্‌ ওয়ার গ্রুপ সামরিক ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক হয়ে প্রস্তুত হয়েছে। এরা অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল এলাকা ধরে দক্ষিণবঙ্গে  ছড়িয়ে পড়লে আগের কায়দায় নিয়ন্ত্রণ করা রাষ্ট্র এর পক্ষে কঠিন হবে। আজকে তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথম দশকের শেষে দেখা যাচ্ছে এটা অনেকখানি সত্যি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।  বিশেষ করে সীতারমৈয়ার দলত্যাগ, ধরা পড়া ও মৃত্যুর পরে মুপল্লা লক্ষ্মণ রাও বা গণপতির নেতৃত্বে পুরনো সিপিআই (এম-এল) ও পিপলস্‌ ওয়ার গ্রুপের  সমন্বয়ে আজকের সিপিআই(মাওবাদী) প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কথায় সবচেয়ে বড় আভ্যন্তরীণ বিপদ। অন্ধ্র-উড়িষ্যা-ঝাড়খন্ড-বস্তার-বিহার ও রাঢ়বাংলায় এদের দমন করতে তৈরি হয়েছে সংযুক্ত কম্যান্ড। অপারেশনে লাগানো হয়েছে সিআরপি, ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্‌, ইন্ডো- টিবেটান বর্ডার ফোর্স ইত্যাদির সঙ্গে লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে ভারতের  সামরিক বাহিনী। বস্তারের জঙ্গলে খুলতে হয়েছে জাঙ্গল-ওয়ারফেয়ারের ট্রেনিং কলেজ। আর নকশালপন্থী-থুড়ি আজকের মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ সদস্যের ডাগ আউট হল ছত্তিশগড়ের বস্তার এলাকার অবুঝমাড় । সেখান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে আজকের সংলগ্ন রাজ্যগুলিতে ওদের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের লড়াই। 

        কোন সন্দেহ নেই যে সামরিক প্রশিক্ষণ ও আধুনিক হাতিয়ার ব্যবহার করার ব্যাপারে বর্তমান মাওবাদীরা প্রাক্তন নকশালপন্থীদের থেকে একযুগ এগিয়ে আছে। 'তীব্র শ্রেণীঘৃণা থাকলে আদিম হাতিয়ার দিয়েও লড়াই করা যায়' গোছের চারদশক আগের নীতিতে এদের আস্থা নেই। একে ৪৭ স্তরের আধুনিক স্বয়ংক্রিয় হাতিয়ার, ল্যান্ডমাইন ইত্যাদির প্রয়োগে এরা দক্ষতা  অর্জন করেছে। অ্যামুনিশনের সাপ্লাই এতটাই যে বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকারের সামরিক শক্তির সঙ্গে এনকাউন্টারে এরা কয়েকঘন্টা ধরে গোলাগুলি চালিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি চোখ টানে এদের রণকৌশল। যেভাবে প্রশিক্ষিত কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশের সার্চপার্টিকে এরা প্রলুব্ধ করে নিজেদের পছন্দমত জায়গায় এনে ঘেরাও করে মোক্ষম হামলা করেছে তা শুধু ছত্তিশগড়ের  সরকার ও পুলিশবিভাগকে নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহমন্ত্রালয়কেও চিন্তায় ফেলেছে।

       উপদেষ্টা হিসেবে পাঞ্জাবে খালিস্তানি দমনের সামরিক ব্লু-প্রিন্ট বানানোর জন্যে খ্যাতিপ্রাপ্ত কে এস গিলকে আনা হয়েছিল। একবছর পর তিনি ফিরে গেছেন। হাওয়ায় ভেসে বেড়ায় প্যালেস্তাইনে অ্যান্টি-গেরিলা ওয়ারের অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ইজরায়েলি অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্যে আনা হবে কি না! 

    কোয়লিবেড়া, কোরাবোড় ও  দক্ষিণ বস্তারের বিভিন্ন এলাকায় বুবি ট্র্যাপ দিয়ে সাঁজোয়া গাড়ি উড়িয়ে দেয়া ও তারপর হতভম্ব সরকারি বাহিনীর ওপর সুবিধাজনক অবস্থান থেকে গুলি চালিয়ে শেষ করে দিয়ে হাতিয়ার ও গোলাবারুদ লুঠ করে ফিরে যাওয়া-- মোটামুটি এই হল মাওবাদী আক্রমণের রণকৌশল।একেকটি হামলায় সরকারি বাহিনীর হতাহতের সংখ্যা দশ-বিশ-পঁচিশ-পঁচাশ থেকে পঁচাত্তর অব্দি দাঁড়িয়েছে। বস্তারের সংলগ্ন ওড়িষ্যার কোরাপুটে  কয়েকশ' মাওবাদী গেরিলার শহরে ঢুকে জেল ভেঙে বন্দীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার মত দুঃসাহসিক ঘটনাও ঘটেছে। গত মাসে ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর থেকে প্রায় দেড়শ' কিলোমিটার দূরে মৈনপুরের কাছে কৃষকদের জমির পাট্টা ও লোন বিতরণের জন্যে আয়োজিত জনসভার থেকে ফেরার সময় মন্ত্রীর কনভয়ের ওপর হামলা হয়। অল্পের জন্যে মন্ত্রী বেঁচে যান, মারা যায় ওনার বডিগার্ড ও কিছু সরকারি কর্মচারি। জানা যায় যে হামলার পর মাওবাদী গেরিলারা যখন কাছে এসে দেখে যে পেছনের কিছু জীপে আরোহীরা সাদাপোষাকের পুলিশ নয়, সাধারণ কৃষক মাত্র, তখন ক্ষমা চেয়ে ওদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

      নিঃসন্দেহে এইসব ঘটনার প্রভাব পড়েছে সরকারি বাহিনীর মনোবলের ওপর। রাজ্যপুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব প্রকট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জোয়ানেরা অভিযোগ করেছেন জঙ্গলে ঠিকমত রসদ, মশারি ও অ্যান্টি মসকুইটো ক্রিম না পাওয়া নিয়ে। সরগুজা জেলায় একটি কিশোরীকে গেরিলা সমর্থক অজুহাতে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে মেরে ফেলার পর গ্রামবাসীরা সরকারি বাহিনীর ক্যাম্প ঘিরে বিক্ষোভ জানায়। তদন্তে পুলিশের গল্পটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সরিয়ে দেয়া হয়েছে ছত্তিশগড়ের ডায়রেক্টর জেনারেল অফ পোলিস বিশ্বরঞ্জনকে।

          কিন্তু ছবিটি এতটা একরঙা নয়। ভারত সরকারের গৃহমন্ত্রালয়ের তৈরি ব্লু-প্রিন্টে গত দু'বছর ধরে চলছে অপারেশন গ্রীন হান্ট। 
      
           দন্ডকারণ্যের অন্তর্গত বস্তারের অধিকাংশ এলাকা আদিম ঘন জঙ্গলে ঢাকা। আর আছে কেশকাল ঘাঁটি ইত্যাদি পাহাড়। প্রতি বর্ষায় ইন্দ্রাবতী নদী প্লাবিত হয়ে বস্তারকে কার্যতঃ দুভাগে ভাগ করে। ইতিহাসবিদ ও পুরাতত্ত্ববিদ প্রয়াত ডঃ সংকালিয়া সত্তরের দশকের শুরুতে রামচন্দ্রের লংকা আসলে  দক্ষিণ বস্তার, সমুদ্র মানে বর্ষার ইন্দ্রাবতী নদী, আর রাক্ষস মানে উত্তর ভারতীয়দের চোখে বস্তারের জঙ্গলের আদিবাসী -- এইসব বলে ব্যাপক বিতর্ক শুরু করেছিলেন।
অপারেশন গ্রীন হান্ট মানে এই ঘনসবুজ এলাকাকে মাওবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করা।
       
    তার জন্যে স্ট্র্যাটেজি হল এক, গ্রামগুলো যাতে মাওবাদীদের সাপ্লাই বেস না হয় তার জন্যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে মার্কিন সেনার ব্যবহার করা কায়দায় স্ট্র্যাটেজিক হ্যামলেট বানিয়ে তাতে গ্রামবাসীদের আলাদা করে রেখে স্পেশাল পুলিশ ফোর্স বা স্থানীয় যুবকদের হাতে বন্দুক দিয়ে ওদের দিয়ে নজরদারি করানো। দুই, মাওবাদীদের শহুরে নেটওয়ার্ককে নষ্ট করা; সিমপ্যাথাইজারদের চিহ্নিত করে ব্যাপক জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিষ্ক্রিয় করা। তিন, মাওবাদীদের হিংসা, সন্দেহের বশে আদিবাসীদের নির্বিচারে মেরে ফেলার ঘটনাকে প্রচারের আলোয় এনে মাওবাদীদের 'গরীবের ভগবান' জাতীয় ভাবমূর্তিটিকে মিথ প্রতিপন্ন করা। চার, যে সব ব্যবসায়ীরা বা বড় শিল্পপতিরা মাওবাদী এলাকায় নিজেদের ব্যবসা- বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জন্যে মাওবাদীদের সমানান্তর প্রশাসনকে প্রোটেকশন মানি বা ট্যাক্স দিচ্ছে তাদের কোণঠাসা করে মাওবাদী আন্দোলনের আর্থিক সাহায্য বন্ধ করিয়ে দেয়া।

      অনেক বুদ্ধিজীবি অভিযোগ করেছেন অপারেশন গ্রীন্‌হান্টের আসল উদ্দেশ্য ভারতের একচেটিয়া পুঁজিপতিদের ও বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনালদের জন্যে বস্তারের খনিজ সম্পদ লুঠের দরজা খুলে দেয়া। ওনাদের কথা অনুযায়ী মাওবাদী আন্দোলন আসলে এই মাল্টিন্যাশনালদের রাক্ষসী আগ্রাসন থেকে বস্তারের বনজ ও খনিজ সম্পদ রক্ষার জন্যে আদিবাসী মারিয়া-মুরিয়া জনজাতির প্রতিরোধ। এই অভিযোগপত্রে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন লেখিকা অরুন্ধতী রায়, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখা, অর্থনীতিবিদ অমিত ভাদুড়ি, দিল্লির অধ্যাপক ও মানবাধিকার কর্মী নন্দিনী সুন্দর, পরিবেশবাদী মেধা পাটকর ও অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবি। আপাত দৃষ্টিতে কথাটা সত্যি মনে হয়। বস্তারের জঙ্গলে ইস্পাত শিল্পের জন্যে বিশাল জমি অধিগ্রহণ করেছে টাটা ও পাওয়ার-জায়ান্ট এস্‌সার গ্রুপ। শোনা যায় সলওয়া জুড়ুম , যার স্থানীয় হাল্বী ভাষায় অর্থ 'সার্বজনীন শান্তি', নামের  মাওবাদী-প্রতিরোধী আন্দোলনের পেছনে এদের আর্থিক সাহায্য কাজ করছে।

       টাকার উল্টোপিঠটি দেখা যাক। সিপিআই(মাওবাদী) দলের রাজনৈতিক ম্যানিফেস্টো , যা কি না অন্তরজালের পাতায় সহজলভ্য, বলছে ওরা ক্ষমতায় আসলে পরে ভারতকে শত্তিশালী শিল্পোন্নত দেশ বানাবে। এর সঙ্গে  তৃতীয় বিশ্বের যেকোন ওয়েলফেয়ার স্টেটের পক্ষে সওয়াল করা যেকোন রাজনৈতিক দলের ম্যানিফেস্টোর কিছু পলিটিক্যাল জার্গন ছাড়া মৌলিক তফাৎ কোথায়! আর প্রাকৃতিক সম্পদকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার না করার কথা কোথাও বলা নেই। তাহলে? আবার এদিকে ঘটেছে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এস্‌সার কোম্পানী থেকে মাওবাদীদের নিয়মিত টাকা পৌঁছানোর এজেন্ট ঠিকাদার বি কে লালাকে পুলিশ মাওবাদী প্রতিনিধির হাতে ১৫লাখ দেয়ার সময় বামাল গ্রেফতার করেছে।তারপর পুলিশ দন্তেওয়াড়া জেলার কিরন্দুলে এস্‌সার কোম্পানীর হেডকোয়ার্টারে গিয়ে ওদের জেনারেল ম্যানেজার ডি এস সি বি বর্মাকে ইন্টারোগেট করেছে। বিগতস্থানীয় স্টেট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের লেনদেন পরীক্ষা করে দেখেছে।

 বিগত ১৩ সেপ্টেম্বরে মাওবাদী আন্দোলন প্রভাবিত ৬০ জেলার কলেক্টরদের নিয়ে এক ওয়ার্কশপে কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী চিদাম্বরম জানাচ্ছেন যে মাওবাদী হামলায় মারা গেছে ২৯৭ জন, আর অন্য টেররিস্ট হামলায় ২৭ জন এবং উগ্রবাদী হামলায়  ৪৬ জন। তাই একদিকে চিদাম্বরম মাওবাদীদের অস্ত্রসমর্পণ বা রাজনৈতিক বিচারধারা বর্জনের মত পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনার টেবিলে বসতে আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাজধানী রায়পুরের মানা বিমানবন্দরের কাছে ৪০০ একড় জমি নিয়ে তৈরি হবে এয়ারফোর্সের বেস স্টেশন। আরেকটি হবে ভিলাইয়ের কাছে নন্দিনীতে।  ইতিমধ্যেই লজিস্টিক সাপোর্টের নামে রায়পুরে স্থাপিত হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর  ১) ছত্তিশগড়-ওড়িষ্যা সাব-এরিয়া হেডকোয়ার্টার,২) টেরিটোরিয়াল আর্মি বেস্‌, ৩)ইন্ডিয়ান মিলিটারি স্কুল, ৪) জাঙ্গল ওয়ারফেয়ার ট্রেনিং সেন্টর(নারায়ণপুর, বস্তার), ৫) ২১০০ একর জমি নিয়ে কাউন্টার  ইন্সার্জেন্সি ট্রেনিং সেন্টর, সরাইপালী।

         বর্ষা চলে যাচ্ছে। নতুন ডিজি নবানীর সঙ্গে প্রথম সমীক্ষা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রমণ সিং বলছেন--   জঙ্গল মেঁ ঘুসকর মারো নকসলিয়োঁ কো। রাজ্যের গৃহমন্ত্রী ননকীরাম বলছেন যে সরগুজা জেলায় মাওবাদীদের নিকেশ করার কাজ সম্পূর্ণ। এবার বস্তারের পালা।

          এবার মাওবাদীদের ক্ষয়ক্ষতির দিকটা দেখা যাক। কেন্দ্রীয় কমিটির তাত্ত্বিক নেতা কোবাড গান্ধী জেলে, নাগপুরের দলিত বস্তিতে দীর্ঘদিন কাজ করা ওনার স্ত্রী অরুন্ধতী গান্ধী বস্তারের জঙ্গলে অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে যক্ষ্মায় মারা গেছেন। ভারত সরকারের সঙ্গে  আলোচনায় রাস্তা তৈরি করতে ভারপ্রাপ্ত চেরকুরি রাজকুমার 'আজাদ'কে কথিত এনকাউন্টারে মেরে ফেলা হয়েছে। কোলকাতার নারায়ণ সান্যাল বা 'বিজয়' সত্তর বছর বয়সে ছত্তিশগড়ের জেলে আজীবন কারাবাসের দণ্ডভোগ করছেন। যদিও সুপ্রীম কোর্ট সলওয়া জুড়ুম আন্দোলন এবং নিয়মকানুনের বাইরে আইন শৃংখলা রক্ষার জন্যে আদিবাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়াকে বে-আইনী ঘোষণা করেছে, কিন্তু ছত্তিশগড় সরকার পুরোনো এসপিও দের নতুন বাহিনীর নামে নিয়োগপত্র দিয়ে বৈধতা দিচ্ছে।

    সবচেয়ে লোকসান বোধহয় এই যে ব্যাপক ছত্তিশগড়ের সমতলে জনসাধারণের মধ্যে, বিশেষত: কৃষকদের মধ্যে মাওবাদী আন্দোলনের কোন সমর্থন নেই। বিশ বছর আগে বস্তারের তেন্দুপাতা ঠিকেদারদের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের মজুরি বাড়ানোর আন্দোলন, আদিবাসী মহিলাদের ওপর বহিরাগতদের যৌনশোষণের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ ইত্যাদির মাধ্যমে মাওবাদীরা আপামর জনসাধারণের মনে একটি শ্রদ্ধার আসন পেয়েছিল। আজকে নির্বিচারে গাঁয়ের লোকদের সন্দেহের বশে হত্যা, পুলিশের চর অভিযোগে বিরোধী রাজনীতির লোকদের গলাকাটা সমতলের লোকদের কাছে মাওবাদীদের ভয় ও ঘৃণার পাত্র করে তুলেছে।
 
    সমতলের কৃষকদের জন্যে কোন আন্দোলন মাওবাদীরা করছে না, ওদের কোন সংগঠন নেই। তাই এতদিন গরীবের জন্যে কাজ করেও মানবাধিকার কার্যকর্তা ডঃ বিনায়ক সেন সুপ্রীম কোর্টে জামিন পেলেও রায়পুর শহরে থাকতে পারছেন না। রাজদ্রোহের অপরাধী নকশাল নেতা নারায়ণ সান্যালের চিকিৎসার জন্যে ওনার জেলের মধ্যে তিরিশবার দেখা করা সাধারণ লোক মেনে নিতে পারছে না। ব্যাপারটা এখন দুদিক থেকেই 'আমরা-ওরা'য় দাঁড়িয়ে গেছে। মাওবাদীরা বস্তারে ইন্সট্যান্ট জাস্টিস (খানিকটা দাঁতের বদলে দাঁত, চোখের বদলে চোখ গোছের) দিয়ে জনতার রক্ষক হয়েছিল। আজ ওদের ক্যাঙ্গারু কোর্ট (অরুন্ধতী রায় যাই বলুন) ছত্তিশগড়ে বিবমিষা তৈরি করেছে। ফলশ্রুতি- সমতলে জন আন্দোলনের স্পেস ভীষণভাবে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এখানে এখন মানবাধিকারের কথা বলা অপরাধ। অধিকাংশ এনজিও সন্দেহের তালিকায়।
     
    আর বস্তারের জনগোষ্ঠি মারিয়া-মুরিয়া-বাইসন মারিয়ারা বিস্তীর্ণ ছত্তিশগড়ের ওরাঁও-গোঁড়-কঁওয়র-বিঁঝওয়ার ইত্যাদি আদিবাসীদের থেকে মূলত: আলাদা। বস্তারের উপভাষাও ছত্তিশগড়ি নয়, হল্বী। ওটা অন্ধ্র এলাকার তেলেগু ভাষার সঙ্গে মেলে। তাই শংকর গুহনিয়োগী ও যোগী রায়েরা সত্তরের দশকে বস্তারে ঘাঁটি বানাতে ব্যর্থ। একই কারণে নব্বইয়ের দশকে অন্ধ্র প্রদেশে গ্রে-হাউন্ডের তাড়ায় পুরনো নকশাল আন্দোলনের ঘাঁটি শ্রীকাকুলাম,খাম্মাম আদি থেকে লং মার্চ করে দক্ষিণ বস্তারে ঘাঁটি গড়ে তুলতে পেরেছেন গণপতি-কিষেণজীরা। আজ ওদের সর্বভারতীয় হেডকোয়ার্টার হল বস্তারের অবুঝমাড়, যেখানে কয়েকদশক আগে আদিবাসীদের ঘোটুল প্রথা বা কিশোর-কিশোরীদের একসঙ্গে একধরণের কমিউনে থেকে সাবালক হয়ে ওঠার প্রথা নিয়ে ফিলিম বানাতে বিবিসির লোকজন এসেছিল।
      
    সব মিলিয়ে ছত্তিশগড়ে বর্তমান মাওবাদী আন্দোলনের ছবিটা কী? কিইবা এর ভবিষ্যত?  ব্যাপক ও উচ্চপর্যায়ে নিয়ে গেছে। অন্ধ্র প্রদেশের ভারভারা রাও বা গদ্দারের মত সাংস্কৃতিক আন্দোলনের লোক এখানে সামিল হন নি। ওদের আন্দোলন বস্তারের দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলের টেরেন ছেড়ে সমতলে ছড়াতে পারছে  না। কেমন যেন শ্রীলংকার লিট্টে আন্দোলনের শেষ দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সমুদ্র দিয়ে ঘেরা জাফনা আর সমতল ও শিল্পাঞ্চলের বিস্তার দিয়ে ঘেরা বস্তারের পরিণতি একই। চিদাম্বরমরা ভেতরে তলোয়ার শানাচ্ছেন আর বারবার নিঃশর্ত আলোচনার কথা বলে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য সরকারের তুলনায় মাওবাদীদের একগুঁয়ে, অমানবিক প্রতিপন্ন করা। যাতে আগামী মিলিটারি অপারেশনের সময় মাওবাদীরা কোথাও কোন সহানুভূতি না পায়। আজকের বস্তারে একদিকে সরকারি বাহিনী ও এসপিও, অন্যদিকে মাওবাদী গেরিলারা। মাঝখানে জাঁতা কলে পিষছে আদিবাসীরা।
      স্থানীয় কবি শাকির আলীর ভাষায়ঃ
       তুমি কোন দলে -- মাওবাদীদের?
       -- না।
        তবে কি সরকারের ?
       -- তাও নয়।

       আমি হচ্ছি সেই আদিবাসী বুড়ো,
       যে বসে আছে পুড়ে যাওয়া কুঁড়ে ঘরের সামনে।
       যার একছেলে গেছে পুলিশের গুলিতে, আরেকটি মাওবাদীদের।
       যে ভুলে গেছে নিজের অতীত, 
       যার ছানিপড়া চোখে ধরা দেয় না ভবিষ্যৎ।

 

(পরের পর্বে সমাপ্য)

পূর্বপ্রকাশ ঃ 'আজকের দিন' 


'রাজনৈতিক দল এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক, দলে গণন্ত্রের চর্চা নেই'-১


নতুন বছরটা কি সত্যিই নতুন হবে?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম | তারিখ: ০২-০১-২০১৩


বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে বেঁচে থাকার হিসাবটা প্রতিদিনের। একটা দিন শুরু হয় আর তাদের ভাবনাজুড়ে থাকে দিনটা কীভাবে কাটানো যায়, তা নিয়ে একটা উদ্বেগ। সপ্তাহ অথবা মাসের হিসাবটা করেন ছাপোষা মানুষ, চাকরিজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষ, মাসের বেতন অথবা উপার্জনটা যাঁদের সম্বল। পুরোনো হয়ে যাওয়া বছরের শেষ দিন নিয়ে অথবা নতুন বছরের প্রথম দিন নিয়ে তাঁদের আলাদা চিন্তা থাকার কথা নয়। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখের একটা যা কিছু মহিমা ছিল, এখনো আছে, কিন্তু তার অভিঘাতটা এমন নয় যে অনেক দিন থেকে দিনটা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করতে হবে।
যেদিন থেকে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের রেওয়াজ শুরু হলো, দেখা গেল, দিনটি ঘিরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা নানা ভাবনাচিন্তা করছে, স্বপ্ন দেখছে অথবা আশঙ্কায় দুলছে; কেমন যাবে বছরটা অথবা কেমন ছিল বছরটা—এ রকম প্রশ্ন তুলছে। অনেক বছর ধরেই দেখছি, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই সালতামামির একটা তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়, জীবনের সব ক্ষেত্রে কী ঘটেছে অথবা ঘটতে পারত, তার একটা হিসাব নেওয়ার প্রতিযোগিতা চলে। বিশ্বায়নের যুগে বছরের হিসাবটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কতটা প্রবৃদ্ধি হলো, রপ্তানি হলো, বিদেশি মুদ্রার অর্জন হলো—এসবের বছরওয়ারি পরিসংখ্যানের এখন গুরুত্ব অনেক। পাশাপাশি শিক্ষা থেকে নিয়ে যোগাযোগ, পরিবেশনীতি থেকে নিয়ে রাজনীতি—সবখানেই সর্বাগ্রে চাই বছরের হিসাব। এ জন্যই 'দিন আনি দিন খাই' মানুষের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির মালিকদের, পরিবেশ নিয়ন্ত্রকদের, রাজনীতিবিদদের দূরত্বটা বাড়ছে। উন্নত কৃষি-উপকরণ থেকে এ জন্য বিলাসী গাড়ি আমদানিটা গুরুত্বপূর্ণ, ছোট নদী-খালগুলো বাঁচিয়ে রাখা থেকে ভরাট করে ফেলা অনেক জরুরি অথবা খেটে খাওয়া মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করা থেকে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে ক্ষমতা দখলের জন্য বিরোধীদের হরতাল ও লাগাতার হরতাল ডাকা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে একটা বড় অংশ ব্যবসায়ী, ছাত্রনেতাদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, নানা দলের উচ্চপদের নেতাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশই নানা ব্যবসা নিয়ে আছেন। তাঁরা হিসাব করেন বছরের, অর্থবছরের, সরকারের আনন্দিত পাঁচ বছরের মেয়াদের অথবা বিরোধী দলে থাকায় অসহনীয়, কষ্টকর ও অগ্রহণযোগ্য পাঁচ বছরের মেয়াদের। আমাদের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ এসব মানুষ নানা ছক কাটেন, অঙ্ক করেন, কিন্তু এর সামান্য অংশজুড়েই থাকে ওই খেটে খাওয়া মানুষজন।
একটা নতুন বছরের আগমনে নড়েচড়ে বসে এই নিয়ন্তা সমাজ, যার চোখ থাকে খেটে খাওয়া মানুষজনের জীবনের ছোট ছবিটার বদলে বড় বড় পরিসংখ্যান আর উন্নয়ন-অনুন্নয়নের বড় ছবিটাতে। এ দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি—যত নীতি আর বিধি-প্রবিধি, প্রকল্প আর পরিকল্পনা, বরাদ্দ-বিবেচনা আর রূপরেখা-কর্মযজ্ঞ যেহেতু এই সমাজই নিয়ন্ত্রণ করে, এর ভাবনাজুড়ে থাকে বড় বড় হিসাব। নতুন বছরের শুরুতে তারা খেরো খাতা খুলে পুরোনো-নতুনের হিসাব কষতে থাকে, তা রীতিমতো লজ্জায় ফেলে দেয় গঞ্জের ব্যবসায়ীর সালতামামির হিসাবটা। সেই ব্যবসায়ীর খাতায় লাল কালি পড়লেও তিনি নতুন বছরে খদ্দেরদের একটা বাতাসা, একটুখানি পানি বা চা খাওয়াতে ভোলেন না। কিন্তু নিয়ন্তা সমাজের খেরো খাতায় লাল দাগ পড়লে দেশে আগুন জ্বলে। এই সমাজ লাল কালিতে বিশ্বাস করে না। লাল কালির দাগ পড়তে পারে দেশের খেরো খাতায়, কিন্তু তাদের খাতায় কখনো নয়।
বেশ কয়েক বছর থেকে হয়তো সে জন্যই দেখতে পাই, বছরের হিসাব নেওয়াটা বেশ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সমাজের কাছে এবং আমরা যারা নানা পেশায় আছি, সুশীল সমাজের অংশ হিসেবে নিজেদের কিছুটা উচ্চমার্গীয় ভাবি, আমরাও ক্রমে ক্রমে সেই সমাজে ঢুকে যাচ্ছি, যার হিসাবের খাতায় লাভটাই একমাত্র শর্ত। এ বছরও দেখতে পাচ্ছি, এই সমাজের বড় বড় মহাজন হিসাবের খাতা নিয়ে বসেছেন। এই বছরটা গুরুত্বপূর্ণ নানা কারণে, সে জন্য এসব হিসাবে নিষ্পত্তির ওপর নির্ভর করবে দেশের মানুষের ভাগ্যে কী থাকবে। মোটা দাগে অবশ্য বলে দেওয়া যায়, যা থাকবে তার নাম ভোগান্তি ও বিপর্যয়।
বছরটার প্রধান গুরুত্ব এই, এটি নির্বাচনী বছর। নির্বাচন মানে ক্ষমতার পালাবদল। হয় ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় থেকে যাওয়া অথবা ক্ষমতা থেকে বিদায় হওয়া। এই পালাবদল আমাদের কাছে দূরের অনেক দেশে একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। নির্বাচন হয়, নির্বাচনে জয়-পরাজয় হয়, জয়-পরাজয় মেনে নেওয়া হয় এবং রাষ্ট্রের, জনগণের জীবন নির্বাচনের আগে ও পরে চলে প্রতিদিনের মতো। অনেক দেশে নির্বাচনের জন্য এক মাসও সময় পাওয়া যায় না, কিন্তু তাতে প্রচারণায় উনিশ-বিশ হয় না। '২০১৩ সাল নির্বাচনের বছর'—এ রকম একটা উত্তেজক ভাবনা নিয়ে এক বছর আগে থেকেই রাজপথ-জনপথ গরম করে, সারা দেশে তুলকালাম ঘটিয়ে একটা মহারণের প্রস্তুতি নিয়ে দেশের বারোটা বাজাতে নামে না কোনো দল। এই কাজ করি আমরা, অথচ ২০ বছর ধরে গণতন্ত্রের পথেই তো আছি আমরা। ২০ বছর! অথচ নির্বাচন কার অধীনে হবে, এ বিষয়ের কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। দেশটার অনেক অর্জন, অনেক তার সম্ভাবনা। গত কয়েক মাসে আমাদের চারদিকে তাকিয়ে আমার একটা প্রত্যয় জন্মেছে, এই দেশ চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর আমরা যেখানে ছিলাম, সেখান থেকে কত দূরে এসে গেছি। আরও কত দূরে আমরা যেতে পারি, তার সম্ভাবনাটাও কত উজ্জ্বল। অথচ পাকিস্তানের দিকে তাকান। দেশটা এখন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের লজ্জা নিয়ে কোনো রকম টিকে আছে। সে দেশের বাচ্চাদের যারা টিকা দেয়, তাদের গুলি করে মারা হয়। মেয়েদের স্কুলে বোমা মারা হয়। গণতন্ত্রের জন্মদাতা গ্রিসের দিকে তাকান, দেশটার জনসংখ্যা কত কম, অথচ দেউলিয়া হতে বসেছে। পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতার ধ্বজাধারী মিসরের দিকে তাকান। দেশটা গণতন্ত্র পেয়েছে এক বছরও হয়নি এবং এরই মধ্যে একটা সহিংস ভবিষ্যৎ নিয়ে সে দেশের মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সে তুলনায় অনেক এগিয়ে। এ দেশে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে, স্কুলে যাতে যায়, সে জন্য অনেক দরিদ্র বাবা উদয়াস্ত খাটেন। বাচ্চাদের টিকা দেওয়ার সফলতার জন্য দেশটা পুরস্কৃত হয়েছে। এ দেশে গণমাধ্যম যে ভাষায় সরকারের সমালোচনা করে, তার অর্ধেক তীব্রতা নিয়ে করলে অনেক দেশে, এমনকি প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এর ওপর সরকারের খড়্গ নেমে আসত।
গত ৪১ বছরে লিখে রাখার মতো, বড়াই করার মতো অর্জন বাংলাদেশের অনেক। ২০১২ সালের তালিকাটাও নিতান্ত ছোট নয়। সালতামামি নেওয়া সমাজের অংশ হিসেবে যদি একটা হিসাব আমি নিতে বসি, তাহলে হতাশার অন্ধকারের চেয়ে আশার আলোটাই বেশি করে দেখব। মনে হবে, একটা বছর তো ভালোমন্দে মিশিয়ে নেহাত খারাপ যায়নি এবং সেই সঙ্গে একটা বিশ্বাস জন্মাবে, নতুন বছরেও নিশ্চয় অর্জনের তালিকাটা আরও হবে।
হবে নিশ্চয়। প্রবাসী শ্রমিকেরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আরও বেশি অর্থ পাঠাবেন। মেহনতি মানুষের শ্রমে-ঘামে এবং আগুনে পুড়ে ঝলসে যাওয়ার বিনিময়ে আমাদের আমদানি আয় আরও বাড়বে, আমাদের কৃষক রোদে-বৃষ্টিতে পুড়ে-ভিজে তিন বেলার অন্ন জোগাড় করবেন এবং গত বছরের তুলনায় বেশি হারেই। দেশের উন্নয়নের বড় ছবিটা নিশ্চয় আরও বড় হবে, কিন্তু তা হবে ছোট অনেক ছবিতে অনেক ছোট-বড় উন্নতির যোগফল হিসেবেই। এই ছোট ছবিগুলো আমরা দেখি না। এসএসসি ও এইচএসসির ফল দিলে আমাদের কাগজে ঢাকার বড় বড় স্কুলের কৃতী শিক্ষার্থীদের ছবি ছাপা হয়, কোনো প্রত্যন্ত গ্রামের একটি ছেলে বা মেয়ে, যে পরিবারের জন্য উপার্জন করে, পরিশ্রম করে, পাশাপাশি পড়াশোনা করে কৃতকার্য হলো বা হতে অপারগ হলো, তার ছবি কখনো ছাপা হয় না। আমরা বড় ছবি দেখতেই আগ্রহী এখন, যেহেতু বড় ছবিটা আমাদের বড় বড় হিসাব করতে সাহায্য করে। 
নতুন বছরে এই বড় হিসাবের নানা ছক ছোট ছবিগুলোকে ঢেকে দেবে, এমন আশঙ্কা আমাদের। এখনই হুংকার শুনছি বিশাল এক যুদ্ধের। সরকারি দল বলছে, নির্বাচন হবে দলীয় সরকারের অধীনে; বিরোধী দল বলছে, তা হলে রক্তগঙ্গা বইবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভাষায় এখন আগুন ও বারুদ। এর মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি তুলেছে নতুন সংঘাতের আশঙ্কা। যুদ্ধাপরাধীদের দলটি সব শক্তি নিয়ে নেমেছে বিচারকাজটি ঠেকাতে, একে উল্টে দিতে। বিএনপি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এদের। খালেদা জিয়া বলছেন, আওয়ামী লীগের ভেতরে যেসব যুদ্ধাপরাধী আছে, আগে তাদের বিচার করতে হবে। কেন, আগে কেন? কাদের অপরাধ বেশি? নাকি চারপাশের যুদ্ধাপরাধীদের দিকে তাঁর চোখ পড়ে না? তিনি তো বলতে পারতেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে চলুক, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ভেতরে থাকা যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করতে হবে, তাহলে তাঁকে সাধুবাদ জানাতাম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে গিয়ে, দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে ইতিহাসের সত্যকে অস্বীকার করে নতুন বছরে তাঁর দল দেশবাসীকে কী উপহার দেবে?
নতুন বছরটা প্রকৃতই নতুন হতে পারত, ঝকঝকে নতুন হতে পারত, অর্জনে অর্জনে রঙিন হতে পারত, যদি ক্ষমতার (এবং ক্ষমতার হাত ধরে আখের গোছানো আর অর্থবিত্ত ও মানুষের দণ্ডমুণ্ডের মালিক হওয়ার) মোহ ও জেদটা কমত শ্রদ্ধাভাজন নেতা-নেত্রী এবং তাঁদের সহকর্মীদের। যদি প্রকৃতই ব্যক্তি থেকে দল এবং দল থেকে দেশটা বড় হতো তাঁদের কাছে, তাহলে গণতন্ত্রের চর্চাগুলো সংহত হতো, দেশটাকে নিয়েই সব আয়োজন হতো সব দলের। তাহলে নির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎসাহ ও উদ্দীপনা থাকত, শঙ্কা থাকত না।
বিপরীত চিত্রটাই তো এখন বাস্তব। ২০১৩ সাল হবে আমাদের জন্য একটা মহাবিপর্যয়ের বছর, আমাকে জানিয়েছেন এক রিকশাচালক। তিনি সুশীল সমাজের অংশ নন বলে তাঁর কথাকে আমি ফেলে দিতে পারি না। কিন্তু ভাবি, মহাবিপর্যয়ের দামটি কী দাঁড়াবে শেষ পর্যন্ত? চিরস্থায়ী অস্থিতিশীলতা? হানাহানি? অনুন্নয়ন? ব্যর্থ রাষ্ট্রের দলে ঢুকে পড়া?
নতুন বছরটা তাহলে কি নতুন হবে, না মহাপুরাতন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: কথাসাহিত্যিক। অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-01-02/news/317913

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors