Eminent Bangladeshi writer Ramendu Majumdar writes something different on MUKTIJUDDA.He exposes those who fought for freedom sleeping at home!It is a readable story.This article is a part of his story.
Palash Biswas
ঘরেবসে মুক্তিযুদ্ধ : রামেন্দু মজুমদার
"... কলকাতা পৌঁছার পর থেকে আমি চেষ্টা করতে থাকি কী করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সাথে যুক্ত হতে পারি। আমার পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ আমি সবে ফেরদৌসীকে (মজুমদার) নিয়ে এখানে এসেছি। নতুন পরিবেশে ওকে একা ফেলে যাওয়ার কথা ভাবতে পারছিলাম না। তাছাড়া মা যেভাবে আমার জন্য সবসময় চিন্তা করেন, তার বন্ধন কাটিয়েও যাওয়ার কথা ভাবতে পারছিলাম না। তবে আমি যদি একা থাকতাম, কোনরকম পারিবারিক পিছুটান না থাকত, তবে নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোন না কোনভাবে সরাসরি জড়িত হতাম। মানুষের জীবনে এমন সুযোগ কমই আসে। সেজন্যই হয়তো হেলাল হাফিজ অসাধারণ সেই পঙতিটি রচনা করেছিলেন - এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ট সময়।
আমি ভাবলাম, আমার জন্য আদর্শ কাজ হবে স্বাধীন বাংলা বেতারে যোগ দেয়া। কলকাতা বাংলাদেশ মিশনে বন্ধুবর আমিনুল হক বাদশার সাথে দেখা হতেই আমার আগ্রহের কথা জানালাম। বাদশা চেষ্টা করে দেখবে বলল। তারপর ধরলাম হাসান ভাইকে (সৈয়দ হাসান ইমাম)। হাসান ভাই ইতিমধ্যে অন্য নামে খবর পড়ছেন। আমাকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আমি নিজের নামে খবর পড়তে পারব কিনা। নোয়াখালীতে তখনো আমার কাকা-কাকিমা ছিলেন আর ঢাকাতে ফেরদৌসীর সব ভাইবোন। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি নিজের নামে খবর পড়তে রাজি হলাম না। আমি নিরাপদ জায়গায় এসে পৌছেছি। কিন্তু আমার এখানকার কোন কাজের জন্য আমার স্বজনদের বিপদগ্রস্ত করতে পারি না। আমি বললাম, প্রায় সবাইতো নিজের আসল পরিচয় গোপন করে ভিন্ন নামে অনুষ্ঠান করছে। যাই হোক, স্বাধীন বাংলা বেতারে ঢোকার কোন পথ করা গেল না।
... বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের সাহায্য করার একাধিক সংস্থা কাজ করছে। এমনি এক সূত্রে ফেরদৌসী দিল্লির জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবির লেকচারার পদের জন্য ইন্টারভিউর চিঠি পেল। দিল্লি যাতায়াত বাবদ ২২৫ টাকাও দিলেন একটি সংস্থার সম্পাদক সুশীলবাবু। তারই সুপারিশে অন্য একটি সহায়ক সংস্থা থেকেও আমরা ৫০০ টাকা পেলাম। এত টাকা হাতে পেয়ে আমাদের আনন্দ দেখে কে।
২৯ জুলাই আমি আর ফেরদৌসী ট্রেনে দিল্লি রওনা হলাম। ভারতে দূরপাল্লার ট্রেনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমাদের এই প্রথম। চমৎকার সব ব্যবস্থা, দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা মোটামুটি ভালোই কাটল।
... এরই মধ্যে আমরা প্রণবদার সৌজন্যে একদিন আগ্রা ঘুরে এসেছি। আগ্রা স্টেশনে ওদের এজেন্সীর লোক ট্যাক্সি নিয়ে ছিল। সারাদিন ট্যাক্সিতে সব দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরে দেখেছি। দুপুরে ভালো হোটেলে খেয়েছি। তাজমহল দেখে তো আমরা রীতিমতো বিস্মিত।
... দশ দিন কাটিয়ে আবার কলকাতা ফিরে এলাম। জুন মাসেই আমার বন্ধু আবু তালেব কলকাতা এসে পৌছেছে। ওকে দেখে খুব ভালো লাগল। তালেব তার করাচির স্টাইল বজায় রেখেছে। আমাদের নিয়ে ভালো রেস্তোরায় চা খেতে যায়। তবে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ, যারা কষ্ট করে কলকাতা বা কাছাকাছি থাকছে, একটা অনিশ্চয়তা ও দূর্ভাবনার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কবে দেশ শত্রুমুক্ত হবে, কবে দেশে ফিরে যেতে পারবে - সবার এক চিন্তা।
আগস্টের মাঝামাঝি দিল্লি থেকে টেলিগ্রাম এলো, নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরদৌসীর ফেলোশিপ হয়েছে। আর আমি গেলে তো এএসপিতে চাকরির নিশ্চয়তা আছে। তাই আমরা দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এর মধ্যে আমার সঙ্কলন গ্রন্থের মাল-মসলা সংগ্রহ হয়ে গেছে। এবার সম্পাদনা ও পান্ডুলিপি তৈরির কাজ। সেটা দিল্লিতে বসে করা যাবে। আবার দিল্লি॥"
- রামেন্দু মজুমদার / প্রথম তিরিশ ॥ [ সাহিত্য প্রকাশ - ফেব্রুয়ারী, ২০০৭ । পৃ: ৯৬-৯৯ ]
__._,_.___
Attachment(s) from Raza Mia | View attachments on the web
1 of 1 Photo(s)
Pl see my blogs;
Feel free -- and I request you -- to forward this newsletter to your lists and friends!
No comments:
Post a Comment