Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Tuesday, November 11, 2014

বিতর্কঃভারতীয় সংবিধান ভাল কি মন্দ তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে এর প্রয়োগকারীর উপর:শরদিন্দু উদ্দীপনের প্রতিবেদন

ভারতীয় সংবিধান ভাল কি মন্দ তা সম্পূর্ণ  নির্ভর করে এর প্রয়োগকারীর উপর:শরদিন্দু উদ্দীপনের প্রতিবেদন

 

"এ দেশে সংবিধান না থাকলে আত্তমর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে আমার হয়ত ভীষণ অসুবিধা হত, কিন্তু সংবিধান থেকেও বা কি হচ্ছে?  আত্তরক্ষা বা মর্যাদা রক্ষার জন্য আমাদের সংবিধানে যতটুকু সুবিধা দেওয়া হয়েছে তা পালন করা হচ্ছে কি? ভারতীয় সংবিধান ভাল কি মন্দ তা সম্পূর্ণ  নির্ভর করে এর প্রয়োগকারীর উপর"

                                   .........নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট লেখক ও প্রাক্তন আইপিএস।   

ভারতীয় সংবিধানের ৬৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৬ শে নভেম্বর ২০১৪ সারা দেশব্যাপী যে  "সংবিধান দিবস সমারোহ" পালন করার সঙ্কল্প গ্রহণ করা হয়েছে তার জন্য গত ৯ই নভেম্বর কোলকাতার, ১ বুদ্ধিস্ট টেম্পল রোড, কোলকাতা-১২, বুদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভাগৃহে "ন্যাশনাল সোস্যাল মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া" দ্বারা একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়।  বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সামাজিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গণসংগঠন, কর্মচারী সংগঠন, মহিলা ফেডারেশন ও ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এই সভায় অংশগ্রহণ করে আগামী ২৬শে নভেম্বর কোলকাতায় একটি সমারোহের আয়োজন করার শপথ নেন। নজরুল ইসলাম সহ এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক পলাশ বিশ্বাস, বিশিষ্ট লেখক ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ আনন্দ তেলতুম্বড়ে, কোলকাতা গুরুদোয়ারা কমিটির প্রতিনিধি জগমোহন গিল,  লেঃ কর্নেল সিদ্ধার্থ বার্ভে, কর্নেল মজুমদার, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক কমিশনার প্রকাশ চৌধুরী, দলিত চেম্বার অফ কমার্সের সুরেশ রাম, মূলনিবাসী সমিতির পীযুষ গায়েন, মহিলা ফেডারেশনের সভানেত্রী দুলালী দত্ত প্রভৃতি বিশিষ্ট প্রতিনিধিবর্গ।   

এই মহতি সভায় যোগদান করে বিশিষ্ট লেখক আনন্দ তেলতুম্বড়ে সংবিধান রচনার প্রেক্ষাপট এবং বাবা সাহেব ডঃ বিআর আম্বেদকরের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি এও জানান যে বাবা সাহেব সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারপার্সন থাকলেও সংবিধান রচনায় তিনি যা চেয়েছিলেন তা করতে পারেননি। পরবর্তীকালে রাজ্য সভায় ভাষণ কালে তিনি বলেছিলেন, 
"Now, Sir," the member said, "we have inherited a tradition. People always keep saying to me : 'Oh, you are the maker of 
 the Constitution.' "My answer is I was a hack. What I was asked to do, I did much against my will."......

                                                                                     From Rajya Sabha September 2, 1953
এই কথার সুত্র ধরেই দলিত চেম্বার অফ কমার্সের প্রতিনিধি মাননীয় সুরেশ রাম উল্লেখ করেন যেরাষ্ট্রপতিরাজেন্দ্র প্রসাদের হাতে ভারতীয় সংবিধান অর্পণ করার কিছুদিনের মধ্যেই বাবাসাহেব বুঝতে পারেন যেজহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে বর্তমান ভারত সরকার সংবিধানের বিপ্রতীপ প্রয়োগ শুরু করেছেন এবং যার ফলেসাধারণ মানুষ তাদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি পরিষ্কার করেউল্লেখ করেন যে, সারা বিশ্বের মানুষ সংবিধান রচনার জন্য বাবাসাহেবকে সাধুবাদ জানালেও তিনি বলেছিলেন,  " However good a Constitution may be, it is sure to turn out bad because those who are called to work it, happen to be a bad. However bad aConstitution may be, it may turn out good if those who are called to work it, happen to be  a good lot".  

কোলকাতা গুরুদোয়ারা প্রবন্ধক কমিটির প্রতিনিধি মাননীয় জগমোহন গিল ভারতীয় সংবিধানকে এক মহান সংবিধান হিসেবে বর্ণনা করে বলেন যে, এই সংবিধানের প্রস্তাবনাতেই ডঃ বিআর আম্বেদকর নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন যে আপামর জনসাধারণই হল ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের বুনিয়াদ। কিন্তু স্বাধীনতার ৬৭  বছর কেটে গেলেও কোন জাতীয় সরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে পারেনি। বরং ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর তারা কেবল বিভিন্ন কোম্পানির স্বার্থ পূরণ করেছে এবং জনগণের হাত থেকে দেশের সম্পদ কোম্পানির জিম্মায় গচ্ছিত করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান যে এই মহতি সংবিধান দিবস সমারোহের আয়োজন খুবই সময় উপযোগী।

বিশিষ্ট পত্রকার মাননীয় পলাশ বিশ্বাস সংবিধান দিবস সমারোহের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন যে, জায়নবাদী, কর্পোরেট স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে জনগণের সমবেত কণ্ঠস্বর গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করে তুলতে পারে। এই কারণে এই সমারোহ একটি কালজয়ী পদক্ষেপ।    

আলোচনার সূত্রপাতের সময় লেঃ কর্নেল সিদ্ধার্থ বার্ভে গর্বের সাথে জানান যেবাবাসাহেব ভারতের জনগণের হাতে যে সংবিধান দিয়েগিয়েছেন তা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং বৃহৎ সংবিধান। সংবিধানের মূলবানী  সমতাস্বতন্ত্রতান্যায়  ভ্রাতৃত্বতা  ভারতের সংবিধাননির্মাতাগণ দেশর প্রত্যেক নাগরিককে ধর্মজাতিলিঙ্গভাষা এবং আঞ্চলিক ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে এসে সদ্ভাবনার সাথে জীবনঅতিবাহিত করার মৌলিক অধিকার প্রদান করেছে

কর্মচারী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ বর্তমান ও বিগত সরকারগুলির অর্থনৈতিক সংস্কার ও উদারীকরণের নামে যে বল্গাহীন বিনিয়ন্ত্রন ও পুঁজিবাদের আয়োজন চলছে তার তীব্র সমালোচনা করে উল্লেখ করেন যে, এতে ভারতীয় জনগণের সমাধির উপর পুঁজিপতিদের ভোগ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পাবলিক সেক্টর থেকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা বিলুপ্ত করে প্রাইভেট কোম্পানিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত। অন্যদিকে বর্তমান জাতীয় সরকারের একগুঁয়ে মনোভাবের ফলে জাতীয় শাসন ব্যবস্থায় যে স্বৈরাচারী মনোভাব দেখা যাচ্ছে তা ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষে বিপদ সংকেত বহন করে আনছে।   

 

বাংলার বিশিষ্ট লেখক এবং প্রাক্তন আইপিএস অধিকারী নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ও অনুভবের কথা উল্লেখ করেন যে বর্তমান শাসকেরা সংবিধানের সমস্ত স্তরের লোকতান্ত্রিক ভাবনার চরম উলংঘন করছেন যার ফলে শাসকদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। লোকতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে গেলে ভারতের সংবিধানের সঠিক প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দিতেই হবে। জনসচেতনতা এবং প্রবল জনমতই গণতন্ত্রের ভিত শক্ত করতে পারে। ভারতীয় জনগণের ভাগিদারী আন্দোলনের ভিত্তিকে মজবুত করার জন্য নজরুল সাহেব বাবাসাহেব আম্বেদকরের পথকেই প্রকৃত গণতন্ত্রের পথ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং ভারতীয় সংবিধানের সঠিক প্রয়োগের জন্য ব্যপক জনসচেতনতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গের আলোচনার উপর আলোকপাত করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে আগামী ২৬শে নভেম্বর সারা দেশব্যাপী "সংবিধান দিবস সমারোহের আয়োজন করা হবে। এই উপলক্ষে কোলকাতায় ও একটি র‍্যালি ও অবস্থান কর্মসূচী নেওয়া হবে।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রকাশ চৌধুরী মহাশয় সকল প্রতিনিধিদের ২৬শে নভেম্বর কোলকাতায় র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

                    

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors