Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Sunday, July 28, 2013

কাস্তেতে শান দিয়ে বহু লেখকই প্রমাণ করেছেন নিম্নবর্গ থেকে তাঁরা কতটা দূরে

কাস্তেতে শান দিয়ে বহু লেখকই প্রমাণ করেছেন নিম্নবর্গ থেকে তাঁরা কতটা দূরে

কাস্তেতে শান দিয়ে বহু লেখকই প্রমাণ করেছেন নিম্নবর্গ থেকে তাঁরা কতটা দূরে
আলোচনার জন্য যে গ্রন্থটি হাতে এসেছে তা অতীব সুখপাঠ্য , সাহিত্যের ভিন্ন কৌণিক দিক৷ সুধীর চক্রবর্তীর পাঠকেরা জানেন, চেনেন তাঁর মরমীগভীর গদ্যশৈলী৷ এবং তাঁর জীবনভর অনুসন্ধান , লোকায়ত-জীবন-জরিপ৷ এ কাজে তিনি বিশেষ বড়ো ও দড়৷ তাঁর অর্ধশতাধিক গ্রন্থই লোকায়ত জীবনকে ঘিরে৷ সাহিত্য সম্পর্কিত তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা মাত্র দু'টি,তা -ও কবিতাকে ধরে 

এ বারের গ্রন্থটি কিন্ত্ত গদ্য সাহিত্যকে ঘিরে , এবং এটিই সম্ভবত এ ধরনের প্রথম গ্রন্থ তাঁর৷ তাঁর মূল চিন্তা ভাবনার প্রসারণ লোকায়ত জীবন৷ সেটাই তাঁর যাপিত লেখক- জীবনের নিউক্লিয়াস৷ নয় নয় করে তাঁর এই পথের গভীরে এবং নির্জনে হাঁটা হয়ে গেল প্রায় চার দশকের বেশি৷ 'সাহিত্যের লোকায়ত পাঠ '--- গ্রন্থে আলোচনার জন্যে তিনি বেছে নিয়েছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'আরণ্যক ', তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কবি '৷ কালকূটের একাধিক ভ্রমণ -উপন্যাস এবং সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের 'অলীক মানুষ '৷ পরবর্তী কালের লেখকদের কিছু ছোটগল্পও বেছেছেন আলোচনার জন্যে৷ তাঁরা হলেন --- সৈকত রক্ষিত, কিন্নর রায়, স্বপ্নময় চক্রবর্তী এবং অভিজিত্‍ সেন৷ অবশ্য সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের বিখ্যাত একটি গল্পও এসেছে --- 'গোঘ্ন '৷ গ্রন্থে পুরো একটি অধ্যায় --- বিভূতিভূষণ : ছোটো গল্পের লোকায়ত অনুবিশ্ব৷ 

বাংলা ভাষায় গদ্য চর্চা , অথবা এ ভাবে বলা যেতে পারে , বাংলার লেখকেরা কি উপন্যাস বা ছোটোগল্প লেখার আগে যথেষ্ট ফিল্ড ওয়ার্ক বা হোমওয়ার্ক করে নেন ? উপন্যাস বা গল্প লেখার আগে কি লেখকও তাঁর 'কর্মী -লেখক 'কে নির্মাণ করে নেন ? পুরোপুরি করে নেন তা বোধ হয় বলা যায় না৷ বাংলা ভাষার লেখকেরা তাঁদের হূদয়কে যতটা প্রসারিত করেন মগজকে বোধ হয় ততটা বিষয়মুখী করেন না৷ এ বার সুধীরবাবুর গ্রন্থ, 'সাহিত্যের লোকায়ত পাঠ ' থেকে খণ্ডাংশ৷ বিখ্যাত ও বহুপঠিত ভ্রমণ উপাখ্যান , কালকূটের 'কোথায় পাবো তারে ' থেকে৷ 'সবচেয়ে দুঃখের বিষয় যে , লেখক মামুদ গাজীর কণ্ঠে লালনগীতির বিকৃত বাণী সচেতন ভাবে ব্যবহার করেছেন৷ গানটি হল , 'সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে৷ ' মামুদ গাজীর কণ্ঠে এই গান কালকূট রূপান্তরিত করেছেন এই উচ্চারণে যে 'সর্বলোকে কয় , তুমি কী জাত সংসারে৷ ' অথচ সঠিক অভিজ্ঞতা থাকলে জানা যায় গানের (এ ক্ষেত্রে 'মহতের পদ') একটি শব্দও বদলানো অপরাধ এবং পাপ৷ আবার 'চলো মন রূপনগরে ' ভ্রমণ উপাখ্যানে অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংলাপে , সহজিয়া বৈষ্ণবের কথায় , কালকূট লেখেন , 'শিষ্যা অনেক, আখড়া চলে ভালো৷ তবে নেহাত নেড়ানেড়ির আখড়া নয়৷ ... রাধা কৃষ্ণ গৌর নিতাই৷ বাউলের সঙ্গে বিশেষ -তফাত নেই৷ ' সর্বনাশ ! বাউল -বৈষ্ণবের তফাত আছে বইকি৷ নেড়ানেড়ি সম্প্রদায়ের বিলয় ঘটেছে অনেক আগেই৷ 

তবে এই ত্রুটিতে কালকূটের লেখন বাতিল হয় না হতে পারে না , কারণ তা মহত্ কথাসাহিত্য৷ কিন্ত্ত , এক গামলা দুগ্ধে এক বিন্দু গোচনা৷ মহত্ উপন্যাস বা গল্পে যদি তথ্য বিচ্যুতি না ঘটে তবে তা মহত্তর হতে পারে৷ গভীর পাঠকের তা পরম প্রান্তি হয়৷ সমরেশ বসু কালকূটকে সৃষ্টি করেছিলেন৷ এবং কালকূট নির্মাণ করেছিলেন বাংলা ঘরানায় এমন করে চলমান একাধিক ভ্রমণ আখ্যান৷ প্রচুর পাঠক পেয়েছিলেন এবং সম্মানিতও হয়েছিলেন৷ পাঠককুলের চাহিদা মেনে (হয়তো ) তাঁকে প্রতি বছর লিখতে হয়েছিল এমনই ভ্রমণ উপাখ্যান৷ বিষয়ের জন্য সময় এবং রেফারেন্স দেখে নেওয়া সম্ভব ছিল না৷ দায়িত্ববান লেখকের এমন ত্রুটি অনভিপ্রেত৷ 

গ্রন্থের প্রথম এবং পঞ্চম অধ্যায় , দু'টি দীর্ঘ প্রবন্ধ , বিভূতিভূষণের আরণ্যক ও একাধিক ছোটো গল্প ঘিরে৷ একটি বিষয় খোলসা করে কয়ে নেওয়া যাক৷ এ গ্রন্থে বিভিন্ন লেখকদের লেখায় যে ছোটোখাটো 'বাস্তব ' ত্রুটি তা সুধীরবাবু দেখিয়েছেন এবং সপক্ষে সঠিক যুক্তি রেখেছেন৷ অথচ তা করতে গিয়ে কোনও লেখককেই প্রবন্ধকার আহত করেননি৷ 

বিভূতিভূষণের বহু লেখাতেই অরণ্য এবং অরণ্য আশ্রিত মানুষের জীবন , তাদের ধর্মবোধ ও বিশ্বাস , তাদের বিনোদন কেন্দ্রিক গ্রামীণ মেলার কথা সুন্দর ও স্বাভাবিক ভাবেই এসেছে৷ এসেছে মেয়েলি রিচ্যুয়াল৷ আরণ্যক উপন্যাসের গোষ্ঠীপতি 'রাজা ' দেবারু পান্না , যার জীবন ধন -সম্পদহীন তবুও গোষ্ঠীর মানুষের কাছে তাঁর সম্মান ষোলো আনা৷ এঁর সঙ্গে সত্যচরণের মোলাকাতকে ব্যাখ্যা করেন সুধীরবাবু, 'তাত্পর্যপূর্ণ অর্ধপরিচয়ের এই সন্ধ্যা শেষ পর্যন্ত কোনও মিলনরাত্রিতে পরিণত হয় না আরণ্যক উপন্যাসে৷ অনুতাপ থাকে উচ্চবর্গের তরফে কিন্ত্ত নিম্নবর্গকে আলিঙ্গনে বাঁধতে পারেন না বিভূতিভূষণ৷ বোধ হয় শিক্ষিত ও লোকায়তে মেলানো অসম্ভব৷ ' একটি ভিন্ন খেদোক্তি বিভূতিভূষণ সম্পর্কে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের , ঘরোয়া আড্ডায় , 'বিভূতিভূষণ এত মাঠ , অরণ্য ঘুরলেন অথচ তাঁর লেখায় কোথাও একটিও সাপের দেখা নেই৷ ' সত্যিই তো !বেশির ভাগ বঙ্গলেখককুল মধ্যবর্গ বা উচ্চবর্গ থেকে আসেন অথবা প্রান্তবাস থেকে উত্তীর্ণ জীবন , তার পরে লিখতে আসা৷ বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই কম -বেশি দূরত্ব থেকে যায়৷ বিষয় ক্ষেত্রের বা বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে একাকার হয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না৷ তাই বোধ করি লেখকেরা পাত্রপাত্রীদের কণ্ঠে যে ভাষা বসান তাতে পাঁচমিশেলি , কখনও ধরতাই আঞ্চলিক , শেষ হয় শাহরিক বাক্যবন্ধে৷ এটা ত্রুটি বইকি৷ এ ত্রুটি থেকে উত্তরণ সম্ভব কাঠোর পরিশ্রমে৷ জেনে বুঝে নিতে হয় ধ্বনির বিন্যাস৷ তবেই এ ক্ষেত্রে মহত্ ও ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব৷ কিন্ত্ত , 'দিবেক লিবেক ডায়লগে দিলেই তা মহত্ ও পূর্ণ সাহিত্য না -ও হতে পারে৷ ' এ সাবধানী বাক্য ঘরোয়া আড্ডায় বলেছিলেন রমাপদ চৌধুরী৷ বনপলাশীর পদাবলীর কথা মনে পড়ে৷ 

তারাশঙ্করকে আলাদা করে ক্ষেত্র সমীক্ষা করতে হয়নি৷ রাঢে়র যে অঞ্চল তিনি উপন্যাসে গল্পে এনেছিলেন , তার ভিতরে তিনি দীর্ঘকালের পরিব্রাজক৷ কবি উপন্যাস সম্পর্কে সুধীরবাবু 'শিক্ষিত তারাশঙ্কর (প্রথম জীবনে কবিতাও লিখতেন৷ বেরিয়েছিল 'ত্রিপত্র ' নামে অপটু কাব্য সংকলন ) কী করে গ্রাম্য কবিয়ালের মতো লিখবেন ? কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত যে লিখতে পারলেন তার কারণ তাঁর দীর্ঘদিনের দেখার ও শোনার অভিজ্ঞতাই তাঁকে বাতলে দিল৷ ' কবি উপন্যাসে গ্রামীণ কবিয়াল নিতাইয়ের জন্য তারাশঙ্করের গানের পদ বাঁধা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে৷ 

আবার ফিরে আসা যাক লোকায়ত যাপনের আর এক খ্যাতনামা লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের 'অলীক মানুষ ' প্রসঙ্গে /উদাহরণ অপ্রাসঙ্গিক হবে না , সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের 'রানীরঘাটের বৃত্তান্ত ' গল্পের পঞ্চম বাক্যটি , 'প্রবাদ শোনেন নি 'রানীরঘাটে কে কার বাবা ?'' এমন গল্প লেখকের অলীক মানুষ প্রসঙ্গে সুধীরবাবুর সঠিক মন্তব্য , 'মানুষটি সচল ও পরিপার্শ্ব সচেতন , সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞায় প্যারাম্বুলেটিং কালচারের অংশীভূত৷ ' লেখকের যাপন ক্ষেত্রের প্রতি এত তীব্রতা যে তাঁর প্রয়াণের পরে , তিনি শায়িত ওই মাটিতেই৷ এটি অবশ্য তাঁর পূর্ব ঘোষণা বা আর্তি৷ 

গ্রন্থের শেষ প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যের সমরেশ বসু, মুস্তাফা সিরাজের পরবর্তী প্রজন্মের গল্পলেখকদের নিয়ে আলোচনা৷ এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিকাল কাটিয়েছেন 'স্বভূমি '-তে সৈকত রক্ষিত৷ সৈকতের সমস্ত লেখায় পুরুলিয়া এবং পুরুলিয়া৷ পাত্র -পাত্রীর মুখে নির্ভুল কথ্য , পুরুলিয়ার ভাষা৷ গল্পের নাম 'হাম্বা '৷ গরু ও গরুর মালিক সম্পর্কিত৷ একই বিষয় বলে সিরাজ সাহেবের 'গোঘ্ন ' গল্পটি এসেছে আলোচনায়৷ কিন্নর রায়ের 'আবহমানে ছবি ', স্বপ্নময় চক্রবর্তীর 'দুলালচাঁদ ', অভিজিত্ সেনের 'ঈশানী মেঘ ' গল্প এসেছে৷ একটি করে মাত্র গল্প , ছোটো আসরে খিদে মেটে না৷ যেমন মেটে না এই কারণেও যে বাংলা ভাষায় বেশ ক'জন প্রয়াত ও জীবিত লেখকদের সম্পর্কে আলোচনা ঠাঁই পেল না এই গ্রন্থে৷ হয়তো আরও একটু সময় নিয়ে সুধীরবাবুর এ গ্রন্থ কলেবরে বৃদ্ধি পাবে পরে এবং বৃত্তটি সম্পূর্ণ হবে , 'সাহিত্যের লোকায়ত পাঠ '৷ 

গরু নিয়ে গল্প লিখেছেন এক লেখক৷ বিচালি -খড় চিবানোর বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক গরুর দু'পাটি দাঁতের কথা বললেন৷ এটি ত্রুটি৷ গরু তা সে জার্সি, ভাগলপুরী , হাইব্রিড যাই হোক না কেন গরুর উপরের পাটিতে দাঁত থাকে না৷ কি বলবেন লেখক ?এ বছর বিখ্যাত সাম্যবাদী কবি দিনেশ দাসের জন্মশতবর্ষ৷ তাঁর বিখ্যাত কবিতা 'কাস্তে ' বহুপঠিত৷ বলতে গেলে দিনেশ দাসের সঙ্গে কাস্তে যেন জুড়ে গিয়েছে৷ 'কাস্তেটা ধার দিও বন্ধু,/ কাস্তেটা শান দিও বন্ধু!' শতবর্ষে কবিকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানিয়েই বলি , কাস্তেকে মনোযোগ দিয়ে দেখেননি কবি৷ (এক যদি না পূর্ববঙ্গের কাস্তে অন্যরকম হয় ) কাস্তেকে শান বা ধার দেওয়া যায় না৷ কাস্তের দাঁত হয়৷ ঈষত্ উত্তন্তাবস্থায় ছোটো ছেনি দিয়ে দাঁত তৈরি হয়৷ এ ত্রুটিতে অবশ্য কাব্যকর্মের ঘাটতি ঘটে না৷ আবার শুধু দিনেশ দাসই নন , সলিল চৌধুরী গানেও তো আমরা পাই 'হেই সামালো ধান হো / কাস্তেটা দাও শান হো৷ ' মৃণাল সেনের মতো প্রণম্য চলচ্চিত্রকার গ্রামের প্রেক্ষিতে করা তাঁর ছবিতে সে গান দিব্যি ব্যবহার করেছেন৷ কিন্ত্ত কোনও কামার যদি প্রশ্ন করেন ? কী উত্তর থাকবে আমাদের ?এমনই ছোটো ছোটো ত্রুটি উল্লেখিত হয়েছে মুজতবা আলির রচনাবলির চতুর্থ খণ্ডে৷ করেছেন দীর্ঘ ভূমিকায় আর এক মানী সম্পাদক --- লেখক পরিমল গোস্বামী৷ এই ভুল শোধন হতে পারে প্রকাশকদের সম্পাদকমণ্ডলীর হাতে৷ একটি পাণ্ডুলিপি বই হয়ে প্রকাশের আগে তার বানান পরখ করাই বুঝি শেষ কাজ ! জানি না প্রকাশক পাড়ায় , তাঁদের সংস্থায় সম্পাদকমণ্ডলী থাকেন কি না৷ তাঁরা মনোযোগী হলে এমন সব ছোটো ছোটো ত্রুটি যা লেখকের পাণ্ডুলিপিতে অনবধানবশত থেকে যায় তা সংশোধন হতে পারে৷ তা না হলে এ রকমই চলবে৷ শেষ কথা , লেখককে মনোযোগী এবং উদার হতে হবে এই ভেবে যে তাঁর সাহিত্যকর্মে বিষয়বস্ত্তর বাস্তব ত্রুটি কাম্য নয় , প্রয়োজনে সংশোধন দরকার৷ 

বিনা মন্তব্যে : 'তার কারণ এই নয় যে আমাদের দেশে শক্তিমান লেখকের অভাব , বেদনাটা সেখানে নয় , আসল বেদনা হচ্ছে আমাদের লেখকেরা খাটতে রাজী নয়৷ ... যখন শাগরেদ মোপাসাঁর ভিতরে ফ্লবের গুণের সন্ধান পেলেন তখন মোপাসাঁর লেখার উপর নির্মম র্যাঁদা চালাতে আরম্ভ করলেন৷ ... দশ লাইনে বর্ণনা লেখো , পনেরো লাইনে বীররস বাত্লাও , এটা ছিঁড়ে ফেলে দাও , ওটা ছাপিও না ...' (সৈয়দ মুস্তাফা আলি রচনাবলি , সংখ্যা -এক৷ পৃষ্ঠা -২৬৷ 

'মোপাসাঁ-চেখফ্-রবীন্দ্রনাথ৷ ')সুমুদ্রিত গ্রন্থ৷ বানান ভুল খুব কম৷ প্রচ্ছদ সাদা -কালো৷ হয়তো লোকালয় বলেই , ইছামতীর মজা খালের কচুরিপানা সহ ফোটো৷ ভাগ্যিস চার কালারের নয়৷ গ্রন্থ ছাপাইয়ের ক্ষেত্রে এখন এত রং ! যা অনেক ক্ষেত্রেই বিরক্তিকর এবং বিষয়বস্ত্তর সঙ্গে বেমানান৷ তবে এ ক্ষেত্রে গ্রন্থের মলাট জমেনি৷ মগজ আর মাউসের দাপট যতটা , ততটা নেই হূদয়ের সঙ্গে চোখের সঙ্গত৷ 

সাহিত্যের লোকায়ত পাঠসুধীর চক্রবর্তীপত্রলেখা ৷ ১৫০ টাকাযথেষ্ট দরদ সত্ত্বেও নিম্নবর্গের জীবনকে খুঁটিয়ে জানার পরিশ্রম করেননি বাংলার বহু বিখ্যাত সাহিত্যিকই৷ সুধীর চক্রবর্তীর একটি বইয়ের পাঠ প্রসঙ্গে অনুসন্ধান করলেন অশোককুমার কুণ্ডুবেশির ভাগ বঙ্গলেখককুল মধ্যবর্গ বা উচ্চবর্গ থেকে আসেন অথবা প্রান্তবাস থেকে উত্তীর্ণ জীবন , তার পরে লিখতে আসা৷ তাই বোধ করি লেখকেরা পাত্রপাত্রীদের কণ্ঠে যে ভাষা বসান তাতে পাঁচমিশেলি , কখনও ধরতাই আঞ্চলিক , শেষ হয় শাহরিক বাক্যবন্ধে৷ এটা ত্রুটি বইকি৷

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors