অবশেষে ছন্দা গায়েনকে মৃত ঘোষণা!শেষ পর্যন্ত অলৌকিক কিছু ঘটল না।
‘নিখোঁজ’ ছন্দার ডেথ সার্টিফিকেট দিল নেপাল
শেষ পর্যন্ত অলৌকিক কিছু ঘটল না। আশায় বুক বেঁধে থাকা বাঙালির চোখ থেকে ঝরে পড়ল জল। আর বাড়ি ফেরা হল না সাহসিনী বাঙালি ছন্দা গায়েনের। পাহাড়ের বুকেই চির বিদায় নিলেন তিনি।
এভারেস্ট জয়ী ছন্দা গায়েনের ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ তার দাদা জ্যোতির্ময় গায়েনের হাতে তুলে দিয়েছে নেপাল সরকার। ২০ মে এই ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ছন্দা গায়েনের দাদা। ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে ছন্দা নিখোঁজ অথবা মৃত।
২১শে মে ছন্দা গায়েনের নিখোঁজ হবার খবর প্রথম প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে প্রাথমিকভাবে যে শেরপাদের সংগঠনের সঙ্গে ছন্দা অভিযানে গিয়েছিলেন তাদের পক্ষ থেকে এবং পরবর্তী সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে অভিযান চালান হয়।
কিন্তু এই সমস্ত অভিযানে ছন্দা গায়েন বা তার সঙ্গে নিখোঁজ দুই শেরপার খবর পাওয়া যায় নি। নেপাল সরকারের নিয়ম অনুযায়ী নিখোঁজ হয়ে যাবার ৩ দিনের মধ্যে অভিযাত্রী এবং শেরপাদের “ডেথ সার্টিফিকেট” প্রকাশ করা হয়।
যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আবহাওয়া অনুকূল হলে যদি কেউ ছন্দা গায়েনের খোঁজ চালাতে চান তবে সব রকমভাবে সাহায্য করবে সরকার।
এই খবর কলকাতাতে আসার পরেই পর্বত অভিযাত্রীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। যদিও অনেকে আগেই জানিয়েছিলেন চন্দার বেঁচে থাকার আশা “অলৌকিক” ঘটনার আশা করার মতোই। কিন্তু মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর ভীষণভাবেই মর্মাহত গোটা পশ্চিমবঙ্গ । -
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে নিখোঁজ অভিযাত্রী ছন্দা গায়েনের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করল নেপাল সরকার। ছন্দার দাদা জ্যোতির্ময় এ দিন নবান্ন-তে জানান, নেপালের নিয়ম অনুযায়ী পাহাড়ে যদি কেউ তিন বা তার বেশির দিন নিখোঁজ থাকেন সে ক্ষেত্রে তাকে মৃত ধরে নিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট দেয় নেপাল সরকার। ২০ তারিখে দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা রয়েছে, মৃত অথবা নিঁখোজ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট দিতে অনেকটাই দেরি করা হয়। কারণ খারাপ আবহাওয়ার জন্য বার বার উদ্ধার কাজ চালিয়েও ছন্দা গায়েন-সহ কোনও অভিযাত্রীর দেহ উদ্ধার করা যায়নি। উদ্ধার কাজ চালাতে বেশ কিছু দিন কেটে যায়।
যদিও অনেক আগেই নেপালি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিল, তুষারধসের কবলে পড়ার দু' দিন পর সদ্য কাঞ্চনজঙ্ঘা শিখর জয়ী পর্বতারোহী ছন্দা গায়েনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে নেপাল পুলিশ। নেপালের সাঙ্খুয়াসভা জেলা পুলিশের ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ দেব চৌধুরী জানিয়েছেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা পশ্চিম শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশে বেরিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হন ছন্দা এবং তাঁর সঙ্গী টেম্বা শেরপা (২৪) ও দাওয়া ওয়াংজু শেরপা (২৮)। ইয়ালুং কাং শিখরের পথ ছেড়ে সামিট ক্যাম্পে ফেরার পথে ৫৫০০ মিটার উচ্চতার এক গিরিশিরার উপরে তাঁদের উপর ভেঙে পড়ে বিশাল তুষার ধস। বরফের চাঙড়ের সঙ্গেই অতল গিরিখাতে ছিটকে পড়েন তিনজন। গভীর তুষার স্তূপের নীচে চাপা পড়ে সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
সহ পর্বতারোহী টুসি দাসের সঙ্গে প্রথম মহিলা অভিযাত্রী হিসেবে কাঞ্চলজঙ্ঘার শীর্ষতম শিখর জয় করেন ছন্দা। এরপর সহযাত্রীরা শিখর শিবির ছেড়ে নীচে নেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি পশ্চিম শিখর আরোহনের পরিকল্পনা করেন। সেই মতো পরদিনই দুই সঙ্গীকে নিয়ে ৮৫০৮ মিটার উচ্চতার ইয়ালুং কাং শিখরের দুর্গম পথে রওনা হন। কিছু দূর যাওয়ার পর ৭৩০০ মিটার উচ্চতায় শুরু হয় প্রবল তুষারপাত। খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাঁরা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয় না। সকাল ১১টা নাগাদ সাড়ে পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার সঙ্কীর্ণ গিরিশিরা অতিক্রম করার সময় তাঁদের উপর আছড়ে পড়ে ভয়ঙ্কর তুষার ধস। তারই ধাক্কায় অতল খাদে তলিয়ে যান তিন পর্বতারোহী।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নিখোঁজ অভিযাত্রীদের উদ্ধারে নামতে পারে না সেনা ও পুলিশ। পাঠানো যায়নি উদ্ধারকারী কপ্টারও। বার বার খারাপ আবহাওয়ার কারণে তল্লাশি অভিযান ব্যাহত হয়। ইন্সপেক্টর দেব চৌধুরীর তখনই ধারণা করেছিলেন, গভীর তুষার স্তূপের নীচে চাপা পড়া পর্বতারোহীরা কেউই আর জীবিত নেই।
ছন্দা গায়েন মৃত, ডেথ সার্টিফিকেট দাদার হাতে
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক, বিসিসি নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬/০৬/১৪ ০৭:৩০:২৫ অপরাহ্ন | সম্পাদিত: শুক্রবার, ৬/০৬/১৪ ০৮:১৭:১৮ অপরাহ্ন
সব বিতর্কের অবসান। শেষ পর্যন্ত, ছন্দা গায়েনের ডেথ সার্টিফিকেট তাঁর দাদার হাতে তুলে দেওয়া হল।
আজ (শুক্রবার) ছন্দা গায়েনের দাদা জ্যোতির্ময় গায়েনের হাতে এই ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয় যুবকল্যান দফতরের পক্ষ থেকে। নেপাল সরকার এই ডেথ সার্টিফিকেট রাজ্য সরকারকে পাঠিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নেপাল সরকার জানিয়েছে, পাহাড়ে তিনদিন ধরে নিখোঁজ থাকলেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জ্যোতির্ময় গায়েনকে সব বিষয় জানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে।
গত, ১৮ মে কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় করেন ছন্দা। এরপরই দ্বিতীয় একটি আভিযানে যাওয়ার সময়ই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। তুষার ঝড়ের কবলে পড়ার আশঙ্কা করছিলেন পর্বতারোহীরা। এরপর শুরু হয় উদ্ধারকাজ। দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে বারবার ব্যর্থতার মুখে পড়তে হয় সেই উদ্ধার অভিযানকে। ছন্দার দাদা নিজে যান নেপাল সরকারের সঙ্গে কথা বলতে। তিনি কলকাতায় ফেরার পরই তাঁর হাতে এই ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়েছে। এভারেস্টজয়ী ছন্দার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়ামহলে। ছন্দা গায়েনের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে তাঁর সহযাত্রী টুসি দাস। তিনি বলেন এই মৃত্যু দেশের ক্ষতি।
No comments:
Post a Comment