আওয়ামী লীগ বিএনপিকে এক কাতারে বসালেন মমতা
গান, কবিতা আর আড্ডায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের এক কাতারে বসিয়ে আসর জমালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণের গুলশানের বাড়ির লনে এ আসর জমে ওঠে। এ সময় দুই দেশের শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মমতার সঙ্গে একই সারিতে বসা ছিলেন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ও ড. আবদুল মঈন খান।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ড. মশিউর রহমান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. দীপু মনি, মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রমুখ। অনুষ্ঠান শুরু হয় পঙ্কজ শরণের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তিনি সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মাইক তুলে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হাতে। মাইক হাতে নিয়েই আসর জমিয়ে তোলেন মমতা। অনেকটা সঞ্চালকের দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক শিল্পী-সাংবাদিকদের ডেকে কাউকে গান আবার কাউকে অনুরোধ করেন কবিতা আবৃত্তি করতে।
এ সময় তাকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে হয়নি। চিরচেনা রাগী ভাব নিয়ে থাকা মমতা হয়ে ওঠেন আড্ডার মধ্যমণি। কখনো ডাকছেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক রজত রায়কে গান করার জন্য, আবার আবৃতির জন্য ডেকে আনছেন আসাদুজ্জামান নূর কিংবা সৈয়দ হাসান ইমামকে। একপর্যায়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকেও বললেন একটা কবিতা আবৃতি করতে। লজ্জামুখ নিয়ে বসা ছিলেন এরশাদ। বার বার এড়াতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু মমতা ছাড়লেন না। বাধ্য হয়ে মাইক নিতে হলো এরশাদকে। কবিতাও আবৃত্তি করলেন এক লাইন। ‘এক পৃথিবী আগামী কালের জন্য’। তারপর এরশাদের হাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আনা একটি উপহার সামগ্রীও তুলে দেন মমতা। বললেন, ‘আপনার জন্যই আনা’।
মমতার দুই পাশে বসে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতারা ছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। মনে হচ্ছিল, মঞ্চমাতানো কোনো পেশাদার উপস্থাপিকা অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে তুলছেন। কখনো তিনি ডাকছেন কবিতা আবৃত্তি করতে, আবার কখনো গানের দুই লাইন নিজেই বলে দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই বললেন, এভাবে দুটি দলকে একসঙ্গে বসানো গেলে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট বলে কিছুই থাকত না। সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও দেখতে হতো না জনগণকে। সংলাপটা এখান থেকে শুরু করলেই পারতেন মমতা। আবার কেউ বললেন, যে যাত্রা শুরু করলেন মমতা দুই দলকে আড্ডায় গানে আর কবিতায়, তা যেন আগামীতেও ইতিবাচকভাবে অব্যাহত থাকে।
‘ঢাকা এলে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব না?’ : যতবার বাংলাদেশে আসবেন, ততবারই ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিতে আসবেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পঙ্কজ শরণের বাড়িতে যাওয়ার আগে গতকাল বিকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন তিনি। বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই দেশে আসব আর মুক্তি আন্দোলনের সবচেয়ে বড় পথিকৃৎ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব না- সেটা কী করে হয়?’ এ সময় আবেগপ্রবণ মমতা বলেন, ‘এ বাড়ি দেখে বার বার মন খারাপ হয়ে যায়। একদিকে গুলির দাগ, রক্তের দাগ। এতগুলো খুনের নিশানা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়।’পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ৩২ নম্বর সড়কে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ৩২ নম্বরের পাশাপাশি উল্টো দিকে লেকের পাড়েও কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। বিকাল ৫টা ৩৬ মিনিটে মমতা ও তার সফরসঙ্গীরা বঙ্গবন্ধু ভবনে এসে পৌঁছানোর পর প্রায় ২০ মিনিট ঘুরে ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র রেদওয়ান সিদ্দিক ববি এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ সফরের কথা মনে করে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ১৯৯৮ সালে এখানে এসেছিলাম আওয়ামী লীগের একটি কনফারেন্সে। তখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৭ বছর আগে। তখনও এখানে এসেছিলাম। এর সঙ্গে মুক্তি আন্দোলন, গণতন্ত্রের আন্দোলন- সব কিছু জড়িয়ে আছে।’মমতা বলেন, ‘এই বাড়িটি একটি আবেগ প্লাবিত জায়গা। এখানেই বঙ্গবন্ধু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন তার পরিবারের অনেকেই খুন হয়েছিলেন। তাদের রক্তমাখা চেহারা, রক্তমাখা ফটোগুলো দেখা বিভীষিকাময়। এগুলো দেখে আমাদের গা শিউরে ওঠে।’ নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরার কথাও বলেন মমতা।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা- এখানে যখন মুক্তি আন্দোলন চলছিল, তখন তাদের প্রত্যেক কথা, গান, স্লোগান, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগ জুড়ে ছিল।’
http://www.bd-pratidin.com/ lead-news/2015/02/21/64171
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ড. মশিউর রহমান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. দীপু মনি, মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রমুখ। অনুষ্ঠান শুরু হয় পঙ্কজ শরণের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তিনি সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মাইক তুলে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হাতে। মাইক হাতে নিয়েই আসর জমিয়ে তোলেন মমতা। অনেকটা সঞ্চালকের দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক শিল্পী-সাংবাদিকদের ডেকে কাউকে গান আবার কাউকে অনুরোধ করেন কবিতা আবৃত্তি করতে।
এ সময় তাকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে হয়নি। চিরচেনা রাগী ভাব নিয়ে থাকা মমতা হয়ে ওঠেন আড্ডার মধ্যমণি। কখনো ডাকছেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক রজত রায়কে গান করার জন্য, আবার আবৃতির জন্য ডেকে আনছেন আসাদুজ্জামান নূর কিংবা সৈয়দ হাসান ইমামকে। একপর্যায়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকেও বললেন একটা কবিতা আবৃতি করতে। লজ্জামুখ নিয়ে বসা ছিলেন এরশাদ। বার বার এড়াতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু মমতা ছাড়লেন না। বাধ্য হয়ে মাইক নিতে হলো এরশাদকে। কবিতাও আবৃত্তি করলেন এক লাইন। ‘এক পৃথিবী আগামী কালের জন্য’। তারপর এরশাদের হাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আনা একটি উপহার সামগ্রীও তুলে দেন মমতা। বললেন, ‘আপনার জন্যই আনা’।
মমতার দুই পাশে বসে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতারা ছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। মনে হচ্ছিল, মঞ্চমাতানো কোনো পেশাদার উপস্থাপিকা অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে তুলছেন। কখনো তিনি ডাকছেন কবিতা আবৃত্তি করতে, আবার কখনো গানের দুই লাইন নিজেই বলে দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই বললেন, এভাবে দুটি দলকে একসঙ্গে বসানো গেলে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট বলে কিছুই থাকত না। সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও দেখতে হতো না জনগণকে। সংলাপটা এখান থেকে শুরু করলেই পারতেন মমতা। আবার কেউ বললেন, যে যাত্রা শুরু করলেন মমতা দুই দলকে আড্ডায় গানে আর কবিতায়, তা যেন আগামীতেও ইতিবাচকভাবে অব্যাহত থাকে।
‘ঢাকা এলে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব না?’ : যতবার বাংলাদেশে আসবেন, ততবারই ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিতে আসবেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পঙ্কজ শরণের বাড়িতে যাওয়ার আগে গতকাল বিকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন তিনি। বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই দেশে আসব আর মুক্তি আন্দোলনের সবচেয়ে বড় পথিকৃৎ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব না- সেটা কী করে হয়?’ এ সময় আবেগপ্রবণ মমতা বলেন, ‘এ বাড়ি দেখে বার বার মন খারাপ হয়ে যায়। একদিকে গুলির দাগ, রক্তের দাগ। এতগুলো খুনের নিশানা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়।’পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ৩২ নম্বর সড়কে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ৩২ নম্বরের পাশাপাশি উল্টো দিকে লেকের পাড়েও কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। বিকাল ৫টা ৩৬ মিনিটে মমতা ও তার সফরসঙ্গীরা বঙ্গবন্ধু ভবনে এসে পৌঁছানোর পর প্রায় ২০ মিনিট ঘুরে ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র রেদওয়ান সিদ্দিক ববি এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ সফরের কথা মনে করে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ১৯৯৮ সালে এখানে এসেছিলাম আওয়ামী লীগের একটি কনফারেন্সে। তখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৭ বছর আগে। তখনও এখানে এসেছিলাম। এর সঙ্গে মুক্তি আন্দোলন, গণতন্ত্রের আন্দোলন- সব কিছু জড়িয়ে আছে।’মমতা বলেন, ‘এই বাড়িটি একটি আবেগ প্লাবিত জায়গা। এখানেই বঙ্গবন্ধু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন তার পরিবারের অনেকেই খুন হয়েছিলেন। তাদের রক্তমাখা চেহারা, রক্তমাখা ফটোগুলো দেখা বিভীষিকাময়। এগুলো দেখে আমাদের গা শিউরে ওঠে।’ নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরার কথাও বলেন মমতা।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা- এখানে যখন মুক্তি আন্দোলন চলছিল, তখন তাদের প্রত্যেক কথা, গান, স্লোগান, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগ জুড়ে ছিল।’
http://www.bd-pratidin.com/
No comments:
Post a Comment