Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Monday, February 23, 2015

বেড়েই চলেছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড

বেড়েই চলেছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড








ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। একের পর এক মিলছে গুলিবিদ্ধ লাশ। বাসা-বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা রাস্তা থেকে তোলে নেয়ার পর মিলছে গুলিবিদ্ধ লাশ। গতকালও রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে ৪ যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ এবং ঝিনাইদহ থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে বিচারবর্হিভূত হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন অন্তত ৮৫ জন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন সহস্রাধিক ব্যক্তি। এ অভিযোগ নিখোঁজ ব্যক্তি ও ক্রসফায়ারে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের।

রোববার দিবাগত রাতে ঢাকায় উদ্ধার করা ৪ লাশের এক একজনের শরীরে ১৬ থেকে ২২টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধ চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় মিলেছে। তিনি শ্রমিক দলের নেতা আবদুল ওয়াদুদ। বাকি তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। নিহত আবদুল ওয়াদুদের লাশ বিকালে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। ওয়াদুদের চাচা চান মিয়া এবং মামা হারুনুর রশীদ সন্ধ্যায় লাশ নিয়ে চাঁদপুরের গ্রামের বাড়ি উদ্দেশে রওনা হন। তাকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করার কথা রয়েছে।

পুলিশ বলছে, নিহত  আবদুল ওয়াদুদ মিরপুর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি। তবে ওয়াদুদের চাচা চান মিয়া জানান, সে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্ত্বর এলাকায় জুট কাপড়ের ব্যবসা করত। তার পিতার নাম আবদুল আলী। চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের সর্দারকান্দি গ্রামে তাদের বাড়ি। মিরপুর কাজীপাড়া এলাকায় বাবার সাথে থাকত ওয়াদুদ। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে সবার বড়। তার বুকে ৩টি, হাতে ১টি এবং মাথার ডান পাশে ২টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। একই ঘটনায় নিহত অন্য তিনজনকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকাসী ও হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। তবে পুলিশ দাবি করছে, মিরপুর থেকে একসঙ্গে উদ্ধারকৃত তিনজন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। অপরজন পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।
এদিকে, ওয়াদুদের মামা হারুনুর রশীদ জানান, ওয়াদুদ গত রোববার সকাল ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্ত্বর থেকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে মিরপুর মডেল থানায় যাওয়ার পর পুলিশ ওয়াদুদকে আটকের কথা অস্বীকার করে। তিনি আরো জানান, ওয়াদুদের মোটরসাইকেলটি থানায় দেখার পর এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে পুলিশ থানা থেকে বের করে দেয়। তিনি বলেন, সে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়। 
এদিকে, পুলিশ দাবি করেছে, রোববার দিবাগত রাতে মিরপুরের কাজীপাড়ার বাইশবাড়ি এলাকায় অজ্ঞাত তিন যুবককে নাশকতাকারী সন্দেহে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় কিছু যুবক। খবর পেয়ে মিরপুর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই তিন যুবককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তিন যুবককে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে, মিরপুরের টেকনিক্যাল ব্রিজের নিচে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির ওয়াদুদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ আরো জানায়, ওয়াদুদ মিরপুর ১০ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি। তাকে রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে ককটেল হামলার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তাদের মৃত্যু সম্পর্কে এসআই মাসুদ পারভেজ জানান, গণপিটুনিতে মারা যাওয়া তিনজনের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে কিনা তা সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এদিকে, হাসপাতাল সূত্র জানায়, তিন যুবকের বুকে, মাথায় একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তাদের সারা শরীরে জখমের চিহ্নও রয়েছে।
এদিকে, কাজীপাড়ার বাইশবাড়ির যেই স্থানে এই তিন যুবককে স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ, সেখানকার অধিবাসীদের কেউ গণপিটুনির কোনো ঘটনার কথা জানাতে পারেননি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা কোনো গণপিটুনির ঘটনা দেখেননি। তবে রাতে দুই দফায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ তারা শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ তারা বাসা থেকে বের হননি।
ঘটনাস্থল থেকে একটি প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগে দুই লিটারের বোতল ভরা পেট্রোল, দুটি ককটেল, তিনটি পেট্রোলবোমা উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। গতকাল মিরপুর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ বাদি হয়ে এঘটনায় একটি মামলা (নং ৬১) দায়ের করেছে।
এদিকে, নিহত তিন যুবকের একজনের সুরতহাল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অজ্ঞাত (২০) এই যুবক মুসলিম। তার মুখের বাম পাশের থুতনিতে বুলেটের আঘাত। ডান হাতের কজ্বির উপরে ৮টি বুলেটের আঘাত এবং হাতের পাতায় একটি বুলেটের আঘাত। এছাড়া বাম কাঁধে দুটি, বুকে ৪টি বুলেটের আঘাত রয়েছে। পেটে নাভির নিচে ছেঁচা জখম। পিঠ স্বাভাবিক তবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত এই যুবকের পরনে কালো-সাদা চেকশার্ট, কালো গেঞ্জি ও হলুদ রঙের গ্যাবার্ডিন ফুলপ্যান্ট ছিল। অজ্ঞাত অপর যুবকের সুরতহালে বলা হয়েছে, একই উচ্চতার অজ্ঞাত (১৯) এই যুবক সনাতন ধর্মালম্বী। গালের বাম পাশে একটি বুলেটের চিহ্ন, কান স্বাভাবিক। তবে নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। গলার বাম পাশে দুটি বুলেটের চিহ্ন আছে। ডান হাতের কনুইয়ের উপরে দুটি বুলেটের চিহ্ন। বাম পাশের বোগলে দুটি বুলেটের চিহ্ন। এছাড়া বুকে দুটি, নাভীর উপরে ১টি বুলেটের চিহ্ন আছে। পিঠে ৫টি, বাম পাশের পাঁজরে দুটি, কোমরের বাম পাশে ১টি বুলেটের চিহ্ন আছে। এছাড়া তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পরনে ছিল একটি হলুদ রঙের হাফহাতা গেঞ্জি ও কালো ফুলপ্যান্ট। নিহত অপর যুবক লম্বায় ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি ও মুসলিম। তার বাম হাতের কব্জির ওপরের অংশ ভাঙ্গা এবং ৪টি গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও শাহাদত আঙ্গুলে কাটা জখম। বুকের মধ্যে ৮টি গুলির চিহ্ন এবং পেটে একটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। পিঠে ৯টি গুলির চিহ্ন আছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পরনে একটি খয়েরী রঙের হাফহাতা শার্ট ও নীল রঙের গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ছিল।
অপরদিকে, কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ওয়াদুদ আলীর বাবা আব্দুল আলী জানান, ওয়াদুদ তার সঙ্গে মিরপুরের ঝুটপট্টির দোকানে বসতো। রোববার সকালে ৯টার পর সে বাসা থেকে বের হয়। এরপর দুপুরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে ওয়াদুদকে মিরপুর থানা পুলিশ আটক করেছে বলে জানায়। এরপর তিনি দ্রুত মিরপুর থানায় ছুটে যান। থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে তিনি ছেলের সিবিজেড ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলটিও দেখতে পান। কিন্তু সেসময় দায়িত্বরত কর্মকতা ওয়াদুদ নামে কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানায়। আব্দুল আলী ব্যাপারী জানান, তিনি থানায় বসেই কৌশলে হাজতখানায় খোঁজ নেন। কিন্তু সেখানে ওয়াদুদ ছিল না। পরে জানতে  পারেন ওয়াদুদকে থানার দোতালার একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। তবে পুলিশ তাকে দোতালায় উঠতে দেয়নি। আব্দুল আলী জানান, তিনি থানা থেকে বের হয়ে তার পরিচিত যুবলীগ নেতা ১৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সেক্রেটারি মোফাজ্জলের কাছে ছুটে যান। মোফাজ্জল থানার সেকেন্ড অফিসার তানভীর হাসানের কাছে ফোন করলে তানভীর ওয়াদুদকে আটকের কথা স্বীকার করে। এসময় অর্থের বিনিময়ে ছাড়ার বিষয়ে কথা হলে এসআই তানভীর বলে, দশ লাখ টাকা দিলেও ওয়াদুদকে ছাড়া যাবে না। তিনি বলেন, তার ছেলেকে পুলিশ বিনা কারণে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। হত্যার পর এখন ক্রসফায়ারের গল্প বানাচ্ছে। এদিকে গতকাল সকাল থেকে নিহত ওয়াদুদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে ভিড় করে। বাবা আব্দুল আলী ব্যাপারী মর্গের সামনে বসে মাথা চাপড়িয়ে কাঁদছিলেন। স্বজনরা তাকে কেউ শান্ত করতে পারছিল না। ওয়াদুদের মা শানু ও বোন মিরপুর কমার্স কলেজে পড়–য়া তানিয়াকে প্রাইভেটকারে বসিয়ে সান্তনা দিচ্ছিলেন অন্য স্বজনরা। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএন পড়–য়া ছোট ভাই আলামীনকে ধরে রেখেছিলেন তার বন্ধুরা।
গত  ৪ জানুয়ারি থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে খুন হয়েছেন ৮৫ জন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন সহস্রাধিক ব্যক্তি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট থেকে ধরে নেয়ার পর কারো কারো লাশ মিলছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান পাচ্ছেন না তাদের আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা। এ অভিযোগ নিখোঁজ ব্যক্তি ও ক্রসফায়ারে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মীরা বলছেন, ‘দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নামে ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে। বেড়ে গেছে খুন গুমের ঘটনা, বাড়ছে ক্রসফায়ার। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের হলেও এব্যাপারে সরকারের যেন মাথাব্যথা নেই। বরং বিভিন্নভাবে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ক্রসফায়ারকে উসকে দিচ্ছেন।
ইতোপূর্বে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে শিবিরের উপজেলা সভাপতি সাহাব পাটওয়ারী (২৪), বৃহস্পতিবার  দিবাগত রাতে সাতক্ষীরায় পুলিশের গুলিতে শাহাব উদ্দিন সাহাব নামে এক জামায়াত নেতা নিহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে। এছাড়া রাজশাহীতে এক শিবির নেতাকে গুলি করে হত্য করেছে পুলিশ। এ অভিযোগ নিহতের পরিবারের। গত মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে যাত্রাবাড়ীতে ২ যুবক নিহত হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি রামপুরায় কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে কালাম ও সুলতান নামের ২ জনকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তাদের পরিবার। নিহত সুলতানের স্ত্রী সাবিনার অভিযোগ, তার স্বামী সুলতানকে হত্যা করা হয়েছে। গত ২১ ডিসেম্বর সুলতানকে ধরে নিয়ে যায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মিলেনি। তিনি বলেন, তাকে (স্বামীকে) পাওয়ার জন্য স্থানীয় থানায় বিভিন্নভাবে র‌্যাব-পুলিশের কাছে ধরনা দিলেও কোনো ধরনের সহযোগিতা মিলেনি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কেউ তাকে আটক করার বিষয় স্বীকার করেনি। পরে তার সন্ধান যখন পাওয়া গেল তখন তিনি মৃত। তার শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। এর আগে গত ২০ জানুয়ারি খিলগাঁও থানা ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান ওরফে জনিকে ডিবি পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। জনির শরীরে ১৫/১৬টি গুলির চিহ্ন ছিল। নিহত জনির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পারভীন জানান, হত্যার আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকের সামনে থেকে ডিবি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ১ দিন আগে মতিঝিল এজিবি কলোনির কাছে নড়াইল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইমরুল কায়েস ক্রসফায়ারে নিহত হন। পরিবারের সদস্যরা জানান, নড়াইল শহর থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে ঢাকার মতিঝিল এজিবি কলোনিতে লাশ পাওয়া যায়। গত ২৭ জানুয়ারি সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় নোওয়াকাটি গ্রামের রফিকুল (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে বন্দুকযুদ্ধের নামে তাকে হত্যা করা হয় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, ডাকাত সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করে অন্য ডাকাতদের গ্রেফতার অভিযানে গেলে ডাকাতের গুলিতে রফিকুল নিহত হন।
রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা বিনোদপুর থেকে ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম শাহীনকে ধরে নিয়ে যায় গত মঙ্গলবার। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম শাহীন ওই কলেজের ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন। তার পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন শাহীন। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশে পুলিশ ক্রসফায়ারের নামে অধ্যাপক নুরুল ইসলাম শাহীনকে হত্যা করেছে। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিবির নেতা আসাদুজ্জামান তুহিনকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, র‌্যাব ধরে নিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়া গত ২৩ জানুয়ারি দাউদকান্দিতে সোলাইমান উদ্দিন জিসান (২৮) নামের এক ছাত্রদল নেতাকে বন্দুকযুদ্ধের নামে খুন করা হয়েছে ফলে তার পরিবারের অভিযোগ রয়েছে।
মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, ওই তিন যুবককে কারা গুলি করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া রোবববার সকালে মিরপুরের সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নামে একটি বাসে ককটেল হামলা চালানোর সময় হাতেনাতে ওয়াদুদকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে মিরপুর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি পারভেজ ওরফে পিস্তল পারভেজ ও রুবেল নামে একজনের নির্দেশে বাসে ককটেল হামলা চালিয়েছিল। পরে ওয়াদুদকে নিয়ে রাতে পারভেজ ও তার সহযোগীদের ধরতে অভিযান চালানো হয়।  টেকনিক্যাল মোড় কল্যাণপুর হাউজিংয়ের কাছে গেলে ওয়াদুদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে বন্দুকযুদ্ধে ওয়াদুদ তার সহযোগীদের গুলিতেই মারা যায় বলে পুলিশ দাবি করছে।
এদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বিএনপির ২ কর্মীকে গুলি করে হত্যা  করা হয়েছে। উপজেলার ঢেপলবাড়িয়া গ্রামের মাঠে তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গ্রামবাসী লাশ দেখতে পায়। নিহতদের নাম দুলাল (২৭) ও পলাশ (২৮)। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামে। 
নিহত পলাশের পিতার নাম মোস্তফা, তিনি স্থানীয় বিএনপি কর্মী। দুলালের পিতার নাম মোলাম হোসেন। দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের কারণে  বিএনপি কর্মী দুলাল ও  পলাশ রাতে বাড়ি থাকত না বলে জানা গেছে। তাই কখন কিভাবে কারা তাদের ধরে নিয়ে হত্যা করছে তা পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। নিহতরা বিএনপির নেতাকর্মী ছিল বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহবুদ্দিন আজাদ এ হত্যাকা-ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। কেউ আটক বা গ্রেফতার হয়নি। নিহতদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কেও পুলিশ কিছু বলেনি।

http://www.amadershomoys.com/newsite/2015/02/24/222212.htm#.VOwkiCxGTkc
http://www.dailyinqilab.com/2015/02/24/242276.php
__._,_.___

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors