শুধু তা-ই নয়, রেল প্রতিমন্ত্রীর দাবি, স্রেফ রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে এই কমিটিগুলিতে কিছু বাছাই করা লোককে বসানো হয়েছিল। অথচ, রেলের কাজের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্কই নেই। তিনি বলেছেন, 'যাঁদের আনা হয়েছিল, তাঁদের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন আছে। রেল কাউকে খাতির করার জায়গা নয়। অথচ, রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে খাতির করে কয়েকজনকে আনা হয়েছিল। আমরা আরও ভালো মানুষ, যোগ্য মানুষদের নিয়ে আসব।'
তা হলে কি যাঁরা ছিলেন তাঁরা সকলেই অযোগ্য? সে কথা অবশ্য বলছেন না রেল প্রতিমন্ত্রী। তাঁর ব্যাখ্যা, 'যাঁদের আনা হয়েছিল, তাঁরা খারাপ বা অযোগ্য বলছি না। কিন্তু আরও ভালো এবং যোগ্য লোক আছেন। দেখতে হবে, রেলের কাজটা কারা ভালো ভাবে বোঝেন। তাঁদেরই নিয়ে আসা হবে। কয়েকজন গায়ক, শিল্পীকে দিয়ে এ কাজটা হয় না। কমিটিগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেলমন্ত্রকের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কমিটিগুলিকে কাজ করতে হবে। ভেঙে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।'
ঘটনার সূত্রপাত চিটফান্ডের বাড়বনাড়ন্ত নিয়ে বামেদের মুলতুবি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। বিরোধীদের মুলতুবি প্রস্তাবের দাবি সরাসরি খারিজ করে দেন অধ্যক্ষ। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সভা। প্রতিবাদে সভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন বাম বিধায়করা। এই পরিস্থিতিতে আচমকাই বিরোধীদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় শাসকদলের বিধায়কদের। শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। এই পরিস্থিতিতে তখনকার মত সভা মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ।
বামেদের অভিযোগ, শাসকদলের বিধায়করা বাম সদস্য দেবলীনা হেমব্রমকে কটূক্তি করে। পরে সভায় হাতাহাতির ঘটনায় এই অধিবেশনের জন্য তিন বাম বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। তাঁরা হলেন, নাজিমুল হক, শেখ আমজাদ হুসেন এবং সুশান্ত দেওরা।
অধ্যক্ষের ঘোষণার পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সভা। ফের শুরু হয় তুমুল মারপিট। অভিযোগ, মাটিতে ফেলে শাসকদলের কয়েকজন বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রমকে মারধর করে। সিপিআইএম বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কেও ব্যাপক মারধর করা হয়। তাঁর মাথা ফেটে যায়। আহত বিধায়ককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরই মাঝে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস। গোটা ঘটনায় তাঁরাও রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ।
মানুষের কাছে প্রত্যাখাত হয়ে এখন বিধানসভায় তাণ্ডব চালাচ্ছে সিপিআইএম। বিধানসভা কাণ্ডের পর এভাষাতেই বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "মানুষের কাছে কলকে না পাওয়ায় এখন বিধানসভায় তাণ্ডব চালাচ্ছে সিপিআইএম।" বাম বিধায়কদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে শিল্পমন্ত্রীর পাল্টা অভিযোগ, আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের বিধায়করাই। এমনকী বিধানসভার অধ্যক্ষকেও শারিরীকভাবে নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
বাম বিধায়করা ওয়াকআউট করার পর ঘটনায় নিন্দাপ্রস্তাব গৃহীত হয় বিধানসভায়। এরপরেই স্পিকারের ঘরে জরুরি বৈঠকে বসেন সরকারপক্ষের বিধায়করা। যদিও সেই বৈঠকে ডাকা হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। বিধানসভা কাণ্ডে শাসক-বিরোধী চাপান উতোরে সরকারপক্ষের বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্য সচেতকের অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিধানসভার ভিতরে এই বাদানুবাদ চলাকালীন আচমকাই বাম বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রমকে শারীরিক নিগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীদলের নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর আরও অভিযোগ, ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বাম বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে এই হাতাহাতির ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তৃণমূল বিধয়ক মামুদা বেগম। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । এদিন সভায় তুমুল হাতাহাতির ঘটনায় জড়িত শাসকদলের বিধায়ক পুলক রায়, তপন চট্টোপাধ্যায়, অমিয় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই নজিরবিহীন ঘটনার পর স্বভাবতই সভা মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ। বামেদের অভিযোগ, সভায় তাদের কথা বলতে দিচ্ছিলেন না শাসক দল। অন্যদিকে অধ্যক্ষ খারিজ করে দেন বামেদের আনা প্রস্তাব। আর তাতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে বিধানসভার অধিবেশন। এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে বিধানসভার লবিতে অবস্থান বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ বাম বিধায়কেরা। বিধানসভায় এই ঘটনার প্রতিবাদে ওয়াকআউট করে বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের। অন্যদিকে, বামেদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে এই ঘটনাকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে ব্যাখ্যা করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পাঁচটি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি এস পি গর্গ সোমবার এই নির্দেশ দেন৷ চার মাসের মধ্যে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে বন্ধ খামে আদালতে তাদের রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই৷
বিচারপতিরা তাঁদের রায়ে বলেছেন, ''এই মামলায় অদ্ভুত সব তথ্য সামনে এসেছে৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে অল্পবয়সী মেয়েদের গৃহসহায়িকার কাজ দেওয়া হবে বলে দিল্লি নিয়ে আসা হচ্ছে, তারপর তারা উধাও হয়ে যাচ্ছে৷ পরিবারের কাছেও কোনও সূত্র থাকছে না৷ কতজন এই ভাবে দিল্লি আসছে ও উধাও হয়ে যাচ্ছে সেই সংখ্যা যাচাই করা যায়নি, তবে মনে হয় সংখ্যাটা রীতিমতো বড়৷''
আবেদনকারী অজিত মোহালি তাঁর গ্রামের এরকম পাঁচটি মেয়ের কথা জানিয়েছেন৷ মোহালির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়া এলাকার তিতুলতি গ্রামে৷ হাইকোর্ট মনে করছে, একটি গ্রাম থেকেই যদি এতজন মেয়ে নিখোঁজ হয়, তা হলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে উধাও হয়ে যাওয়া মেয়েদের সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে বিশাল৷
বিচারপতিরা বলেছেন নিখোঁজ হওয়া মেয়েদের মা-বাবার অসহায়তা ও তাঁদের আর্থিক অবস্থার কথাও মাথায় রেখেই এরকম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হল৷ এটি একটি আন্তঃরাজ্য সমস্যা এবং বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর৷ সে কারণেই সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশকেও বলা হয়েছে, তারা যেন যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ সিবিআই-এর হাতে তুলে দেয়৷
ছ' বছর আগে অজিত মোহালির মেয়ে অপর্ণাকে আগে কাজ দেওয়ার নাম করে দিল্লি নিয়ে এসেছিল জয়া নামের এক মহিলা৷ তারপর থেকেই অপর্ণার কোনও খোঁজ নেই৷ জয়াও বছর দু-তিন ধরে আর গ্রামে আসে না৷ জয়দেব দাস নামে একজনের প্লেসমেন্ট এজেন্সি জয়াকে ও একই গ্রামের মিনতি মুন্ডাকে দিল্লির জনকপুরীতে একটি বাড়িতে গৃহসহায়িকার চাকরি দেয়৷ ২০০৭ সালে জয়দেব পুলিশকে জানায় যে, তারা যে বাড়িতে কাজ করত, সেখান থেকে পালিয়ে গেছে অপর্ণা আর মিনতি৷ জয়দেবই অজিতকে মামলা করতে বলে এবং দিল্লি আসার খরচ দেয়৷ পুলিশি তদন্ত শুরু হওয়ার পর অবশ্য জয়দেব গা ঢাকা দেয়৷ অপর্ণা ও মিনতির মাইনের টাকাও প্লেসমেন্ট এজেন্সিই নিত৷ অপর্ণা বা মিনতির পরিবার অবশ্য কখনও সে টাকা পায়নি৷ অজিত আদালতকে জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রাম থেকে আরও তিনটি মেয়ে এ ভাবেই নিখোঁজ হয়ে গেছে৷
আদালত প্রথমে দিল্লি পুলিশকে ঘটনাটি তদন্ত করতে বলে৷ দিল্লি পুলিশ তদন্ত করে যাবতীয় তথ্য হাইকোর্টকে জানায় এবং বলে, তাদের পক্ষে এই মেয়েদের খুঁজে বার করা সম্ভব নয়৷ এরপরই হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়৷ সিবিআই-এর কৌঁসুলিকে আদালতে ডেকে পুরো বিষয়টি বুঝিয়েও দেন বিচারপতিরা৷
২০১৪-এ কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় এলে রাহুল গান্ধী কি প্রধানমন্ত্রী হবেন? জাতীয় রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই ঘুরে ফিরে আসছে এই প্রশ্ন। কংগ্রেসের নেতারাও প্রকাশ্যে সোনিয়া পুত্রের পক্ষে সওয়াল করছেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে জোর করে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। দলীয় নেতা-কর্মীদের দাবিতেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করা হচ্ছে - এমনটাই দেখাতে চান সোনিয়া গান্ধী। আর দলনেত্রীর মনোভাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই রাহুলের পক্ষে মুখ খুলছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। এমনিতে, কংগ্রেসে রাহুল গান্ধী অঘোষিত নাম্বার টু। বিহার, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে ভরাডুবির দায় তাঁর ওপর অনেকটাই বর্তালেও দলে রাহুল গান্ধীর গুরুত্ব ক্রমশ বেড়েছে। রামলীলা ময়দানে প্রকাশ্য জনসভাই হোক বা সুরজকুণ্ডের অধিবেশন, সংবাদ বৈঠক - গত কয়েকমাসে রাহুল গান্ধীকে কংগ্রসের বিভিন্ন কর্মসূচিতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে। খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগ ইস্যুতে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির সাহায্য পেয়েছিল কংগ্রেস। রাজ্যসভায় সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই সাহায্যের বিনিময়ে কংগ্রেসকে সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তফশিলি জাতি-উপজাতিদের সংরক্ষণের জন্য আইন চালুর শর্ত দিয়েছেন মায়াবতী। এর আগে উত্তরপ্রদেশে তিনি এই আইন চালুর উদ্যোগ নিলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা খারিজ হয়ে যায়। ফলে, এ বার সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষণ আইন চালুর দাবিতে সরব বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী।
সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ চালু হয়ে গেলে রাজনৈতিক সুবিধা পাবেন মায়াবতী। ফলে, সমাজবাদী পার্টির পক্ষে এই পদক্ষেপকে সমর্থন করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া উচ্চবর্ণের ভোটব্যাঙ্কে ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে মুলায়ম সিং যাদবের। এই পরিস্থিতিতে সমাজবাদী পার্টি নেতারা জানিয়েছেন, সংরক্ষণ বিল পাশের চেষ্টা হলে তাঁরা সংসদ চালাতে দেবেন না।
মায়াবতীর চাপে সরকার নতুন সংরক্ষণ আইন চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে মানতে নারাজ কংগ্রেস। তাদের দাবি, সংসদের বাদল অধিবেশনেই এই বিল উত্থাপিত হয়েছিল। সংখ্যাতত্বের হিসাবে সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন যুগিয়ে চলা মায়া-মুলায়ম দুজনকেই দরকার কংগ্রেসের। উত্তরপ্রদেশের যুযুধান দুই দলকেই এখন বোঝানোর চেষ্টায় দলের শীর্ষ নেতারা।
অন্যদিকে, গোটা বিষয়টিতে এখনও পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি বিজেপি। সংসদ চালানোর দায় তারা ঠেলেছে কংগ্রেসের ঘাড়ে।
সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তফশিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ চালু করতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। একশো সতেরো তম এই সংশোধনের জন্য দরকার সংসদের দুই কক্ষেই দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন।ফলে, কংগ্রেসের পক্ষে কাজটা মোটেই সহজ নয়।
সুষ্ঠুভাবে অধিবেশন চালাতে সোমবার, সপা, বসপা, কংগ্রেস, বিজেপি নেতাদের সর্বদল বৈঠকে ডাকেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি। যদিও, তারপরও সমস্যা সমাধানের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সর্বশেষ রদবদলেও গুরুত্ব পেয়েছে রাহুল ব্রিগেড। এই অবস্থায় তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে জল্পনা উস্কে দিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র পিসি চাকো। সোমবার, তিনি জানান, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেই ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবে কংগ্রেস। খুব তাড়াতাড়িই সোনিয়া পুত্র দলে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। সোনিয়া গান্ধীর পরিবর্তে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বও রাহুল গান্ধী নিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন পিসি চাকো।
যদিও, এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বাধ সেধেছে নির্বাচন কমিশন। মইলির ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, গুজরাট নির্বাচনের মধ্যে এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। কোনও পরিকল্পনা থাকলে তা আপাতত স্থগিত করতে হবে। কেননা, সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে, তা হলে তা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে, যা আদর্শ আচরণবিধির পরিপন্থী।
মইলি জানিয়েছেন, এই সংখ্যা খুব শিগগিরই বাড়ানো হবে। কবে, সে সম্পর্কে সবিস্তারে কিছু না জানালেও তিনি বলেছেন, 'যত দ্রুত সম্ভব।' এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদাম্বরমের সঙ্গে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মইলি। তাঁর কথায়, 'ভর্তুকিপ্রাপ্ত সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬টি করে দেওয়ায় কী কী অসুবিধা হচ্ছে, তা নিয়ে আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দু'ফায় আলোচনা করেছি।' মইলি জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা যদি বাড়ানো হয়, তা হলে সরকারের বাড়তি ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এ প্রসঙ্গে মইলি জানিয়েছেন, 'আমরা এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।' গত সেপ্টেম্বরে ভর্তুকিপ্রাপ্ত সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬টিতে বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্র।
এর আগে এদিন সকালে ফের ওয়ালমার্ট ইস্যুতে লোকসভা ও রাজ্যসভা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অধিবেশনের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। 'লবি' সংক্রান্ত অভিযোগে আলোচনার জন্য প্রশ্নপর্ব মুলতুবি রাখার দাবিতে সরব হয় বিজেপি। রাজ্যসভাতেও বিজেপি সাংসদরা দাঁড়িয়ে 'লবি' নিয়ে আলোচনা দাবি করতে থাকেন। সেই সঙ্গে সমাজবাদী পার্টি সাংসদরা সরকারি চাকরিতে তফশিলি জাতি/উপজাতিদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিলটির বিরোধিতায় সরব হন।
এই পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি বলেন, এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেখানে তাঁকে 'দফায় দফায় কাজ পণ্ড হওয়া' তাঁকে 'বসে বসে দেখতে হচ্ছে'। এর পর তিনি ৩০ মিনিটের জন্য রাজ্যসভার কাজ মুলতুবি করে দেন। অধিবেশন ফের চালু হলে বিজেপি সাংসদ বেঙ্কাইয়া নাইডু অবিলম্বে আলোচনার দাবি তোলেন।
অন্য দিকে, লোকসভায় প্রশ্নপর্ব শুরু হওয়া মাত্রই ওয়েলে নেমে যান তৃণমূল কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি এবং বাম সাংসদরা। ওয়ালমার্ট সংক্রান্ত অভিযোগ তো বটেই, কয়লা-কেলঙ্কারির তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা-ও জানতে চান তাঁরা। বিজেপি প্রশ্নপর্ব মুলতুবি করার দাবি জানায়। সংসদে ছন্দ ফেরাতে অধ্যক্ষ মীরা কুমার কথা দেন, প্রশ্নপর্বে ওয়ালমার্টের বিষয়টি উত্থাপন করতে দেওয়া হবে। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। এর পর মুলতুবি করে দেওয়া হয় লোকসভাও।
বিজেপি-র দাবি, ওয়ালমার্টের ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তাদের তরফে আগেভাগেই প্রশ্নপর্ব মুলতুবি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের পারদ চড়িয়ে বিজেপি বিষয়টিতে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছে। দলের নেতা রবিশংকর প্রসাদ বলেছেন, 'কে টাকা পেল, সেটা জানা দরকার। সরকার হয়তো আমেরিকাকে সাফাই দিয়েছে। কিন্তু তাতে কিছু যায়-আসে না। কেননা, ওই টাকা ভারতে খাটানো হয়েছে।' বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি বলেছেন, বিজেপি সংসদকে অচল করে দিচ্ছে।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ইতিমধ্যেই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছে কংগ্রেস। জানুয়ারি মাসে জয়পুরে বসছে দলের চিন্তন বৈঠক। সেই বৈঠকে জোট রাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে রাহুল গান্ধী কী ভূমিকা নেন, এখন সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।
ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে গোটা গুজরাতকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। চারশো নব্বই কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। চল্লিশ হাজার পুলিসকর্মীও বিভিন্ন বুথে পাঠানো হচ্ছে।
গুজরাতের `আম আদমি`-র উদ্দেশ্যে সোনিয়া পুত্র জানিয়েছেন, `তাঁদের কন্ঠস্বর সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কান অবধি পৌঁছয় না।` কেন্দ্রের ইউপিএ-২ সরকারকে এ প্রসঙ্গে তুলনায় টেনে আনেন তিনি। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘোষিত নেতা জানান তাঁদের সরকার প্রকৃত অর্থেই সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরে।
নিজের প্রচারে গুজরাতের তীব্র জল সঙ্কটের প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন রাহুল গান্ধী।
গুজরাটে গণতন্ত্র বিপন্ন, একথা বোঝাতে গিয়ে রাহুল বলেছেন, 'এখানে মানুষের আওয়াজ শোনা যায় না। কারণ সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের কথা শুনতে চান না। ওঁরা শুধু নিজেদের কথাই শুনতে চান। ওঁর (মোদির) নিজস্ব কিছু স্বপ্ন আছে। উনি সেই স্বপ্ন দেখতেই ব্যস্ত। একজন প্রকৃত নেতার কাছে তো জনগণের স্বপ্নই নিজের স্বপ্ন হওয়া উচিত।'
জামনগর হল সেই জায়গা যেখানে সিঙ্গুর থেকে সরে যাওয়ার পর ন্যানো কারখানা খুলেছে টাটা গোষ্ঠী। টাটাকে গুজরাটে নিয়ে গিয়ে শিল্পায়নের হাত ধরে সার্বিক উন্নয়নের প্রচার চালিয়েছেন মোদি। মোদিকে 'বিপণক' বলে মন্তব্য করে রাহুল বলেন, 'বিপণক বলছেন উজ্জ্বল গুজরাটের কথা। আমাকে বলুন, দিনে কত ঘণ্টা জল পান আপনারা? প্রতি তিন দিন অন্তর মাত্র ২৫ মিনিটের জন্য। গুজরাটে ১০ লক্ষের বেশি বেকার যুবক-যুবতী আছেন। অথচ বলা হচ্ছে উজ্জ্বল গুজরাটের কথা।'
গান্ধিজির প্রসঙ্গ টেনে রাহুল তুলে আনেন অতীতের কথা, 'গান্ধিজি আমাদের এলাহাবাদের বাড়িতে এসেছিলেন...তখন জওহরলাল নেহরুকে গ্রেফতার করা হয়েছে...এক রাতে মোতিলাল নেহরু দেখেন, গান্ধিজি তাঁর ঘরে নেই। আলো জ্বালতেই দেখা যায়, গান্ধিজি মাটিতে শুয়ে। বলেন, জওহরলাল এখন জেলের মাটিতে শুয়ে, তাই আমিও একই কাজ করলাম...এটাই আপনাদের ইতিহাস, গুজরাটের ইতিহাস।'
গুজরাতে ভোটের প্রচারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। গান্ধীনগরের স্টুডিওয়ে বসে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছেন। আর, থ্রিডি প্রযুক্তির সাহায্যে ৫৩টি জায়গায় প্রচারিত হচ্ছে তাঁর বক্তব্য। ভোটাররা দেখছেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্ব। প্রযুক্তির কল্যাণে এই নকল মোদী একেবারে আসলের মতোই। নির্বাচনী জনসভা। বাঁদিকে, সশরীরে উপস্থিত নরেন্দ্র মোদী। ডানদিকে, তাঁর ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্ব। গুজরাট থেকে রজতশুভ্র মুখোটির বিশেষ প্রতিবেদন।
পোশাকি নাম থ্রিডি হলোগ্রাফিক প্রোজেকশন টেকনোলজি। প্রযুক্তির দৌলতে একইসময়ে একাধিক জায়গায় হাজির গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিটি জনসভাতেই মানুষের ঢল।
অনেকে বলেন প্রচারই মোদীর সাফল্যের একটা বড় কারণ। সেই প্রচারকেই এ বার অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। প্রযুক্তির চমক চাক্ষুষ করতে জনসভায় হাজির হাজারো মানুষ। মোদী ম্যানিয়ায় আক্রান্ত প্রবীণ ভোটাররাও। কম সময়ে বহু মানুষের কাছে পৌঁছতেই এই থ্রিডি প্রচার। বলছে বিজেপি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, জনগণের টাকায় ভোটের প্রচার করছেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও, বিজেপি এ সবে পাত্তা দিতে নারাজ। পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ২৪ বছরের মৌলিক ভগত নরেন্দ্র মোদীর এই থ্রিডি প্রচারের দায়িত্বে রয়েছেন। নিজের ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও ভোটারদের কাছে পৌঁছতে চেষ্টার খামতি রাখছেন না গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
অবশেষে বিরোধীদের দাবি মেনে ওয়ালমার্ট ইস্যুতে তদন্তে রাজি হল কেন্দ্র। আজ সংসদের উভয়কক্ষেই সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কমলনাথ এবিষয়ে বিবৃতি দেন। তিনি পরিষ্কার করে দেন তদন্তে সরকারের কোন আপত্তি নেই। বরং তাঁরাও চান সত্যিটা সামনে আসুক।
সংরক্ষণ বিল নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যেই গতকালের পর আজও ওয়ালমার্ট নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে লোকসভা অধিবেশন। আগেই কমলনাথ জানিয়েছিলেন সরকার বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিতে প্রস্তুত। সংসদের অধিবেশন শান্তিপূর্ণ ভাবে চালানোর অনুরোধ করেন তিনি।
অন্যদিকে, ওয়ালমার্ট লবিং কাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে প্রথম থেকেই অনড় ছিল বিজেপি। আজ এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা এবিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। এই ইস্যুতে সংসদের দলের অবস্থান ঠিক করতে আজ সকালেই বৈঠকে বসেছিল বিজেপির সংসদীয় দল। ভারতের বাজারে প্রবেশ করার জন্য রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে গত চার বছরে ১২৫ কোটি টাকা খরচ করেছে ওয়ালমার্ট। গতকাল মার্কিন সেনেটের এই রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পর থেকেই বিরোধীদের তীব্র আক্রমণের মুখে কংগ্রেস। এফডিআই চালু করতে ওয়ালমার্টের থেকে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে গতকাল থেকেই সরব বিজেপি।
মানবাধিকারে নারাজ শাসক, স্বীকার কবীরের
মানবাধিকার কমিশন শাসকদলের বিরুদ্ধে কোনও সুপারিশ করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শাসকদল সেই সুপারিশ মানতে চায় না। গতকাল এ কথা স্বীকার করে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গতকাল কলকাতায় এসেছিলেন প্রধান বিচারপতি। তবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বর্তমান শাসক দলের সংঘাত যে কোন জায়গায় পৌঁছেছে তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে যায় এদিনের অনুষ্ঠানকে ঘিরে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও আসেননি মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, হাজির ছিলেন না রাজ্য সরকারের তরফে কোনও প্রতিনিধিও।
সংগ্রামপুর বিষমদকাণ্ডে এক্সসাইজ কমিশনারের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছিল মানবাধিকার কমিশন। সেই সুপারিশ মানেনি রাজ্য সরকার। অম্বিকেশ মহাপাত্রের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও জরিমানা দেওয়ার সুপারিশ করে কমিশন। তাও মানেনি রাজ্য সরকার। অন্য একটি ঘটনার ক্ষেত্রে সরকার জানিয়ে দেয়, তাঁদের পক্ষে কমিশনের সুপারিশ মানা সম্ভব নয়। মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অনেক ক্ষেত্রেই মানতে চাইছে না রাজ্য সরকার বা শাসকদল। সোমবার কার্যত একথাই স্বীকার করে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর। তাঁর মতে, সরকার কোনও পরামর্শ না মানলে আদালতের কাছে আবেদন করা উচিত। প্রধানবিচারপতির মতে যে কোনও রাজ্যেই মানবাধিকার কমিশন ও রাজ্য সরকারের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপরার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় থাকা দরকার।
এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো সত্বেও উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। ফলে মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের কোনও প্রতিনিধিরও অনুপস্থিতি নিয়ে ছিল জোর জল্পনা। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৫১জন বন্দিকে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মুক্তি দেওয়া হবে।
বন্দিমুক্তির সঙ্গে যুক্ত গণসংগঠন গুলি অবশ্য রাজ্য সরকারের দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের মতে এপর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক বন্দিকেই পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়নি। প্রত্যেককেই জামিনে মুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে সুশীল রায়ের কোনও মামলা এরাজ্যের আদালতে নেই। ফলে তাঁর মুক্তির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই বলে দাবি গণসংগঠন গুলির।
দাঙ্গা, কংগ্রেস নয়, প্রাক্তন বন্ধুরাই অন্তরায় মোদীর
রাজ্যে মোদীর উত্থানের পর থেকেই গুজরাত বিজেপিতে কেশুভাইয়ের গুরুত্ব কমতে থাকে। ২০০২-এর নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে মোদীর সমর্থনে প্রচার করেছিলেন কেশুভাই। ২০০৭-এ নিজেকে ভোটের প্রচার থেকে দূরে রাখেন । এবার সরাসরি মোদীর বিরুদ্ধে কেশুভাই ময়দানে নেমেছেন। আর মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেশুভাই পাশে পেয়েছেন মোদীরই এক প্রাক্তন সেনাপতিকে। গোবর্ধন জারাপিয়া।
গোবর্ধন জারাপিয়া মোদীর প্রাক্তন সেনাপতি। গোধরা কাণ্ড ও পরবর্তী হিংসার সময় গোবর্ধন জারাপিয়া ছিলেন গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মোদীর রণকৌশল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল জারাপিয়া। এখন যোগ দিয়েছেন কেশুভাইয়ের দলে। অনুগামীরা বলছেন, গুজরাতে কেশুভাইয়ের জনভিত্তি এখনও অটুট।
যদিও কেশুভাইয়ের বিদ্রোহকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ বিজেপি শিবির। মোদীর উন্নয়নের স্লোগান এবারের নির্বাচনে কতটা কাজে লাগবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গিয়েছে। কারণ সৌরাষ্ট্র। রাজ্য রাজনীতিতে চালু প্রবাদ, সৌরাষ্ট্রর পথ পেরিয়েই পৌঁছতে হয় গান্ধীনগরে।
সাতটি জেলা নিয়ে গঠিত সৌরাষ্ট্রে বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৫৪। কেশুভাই প্যাটেলের জন্যেই ২০০২ ও ২০০৭-এ মোদীর পক্ষেই মত দিয়েছিলেন সৌরাষ্ট্রের মানুষ। এবার পরিস্থিতি বদলাতেও পারে।
ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ প্রথম দফার ভোটেই সৌরাষ্ট্র চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন মোদী। দুই মরশুমের অনাবৃষ্টিতে সৌরাষ্ট্রে জলের সঙ্কট প্রকট। খারাপ ফলনের জন্য আত্মঘাতী হয়েছেন বহু কৃষক। স্বাভাবিকভাবেই রয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। কেশুভাইয়ের টানে সৌরাষ্ট্র সঙ্গ ছাড়লে মোদীর গদি টলতে পারে বলেই ধারনা বিশেষজ্ঞদের।
http://zeenews.india.com/bengali/nation/keshu-bhai-factor-in-gujarat_9883.html
পুলিশ ইউনিয়ন নিয়ে হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্যের
সোমবার আদালত জানিয়ে দিয়েছে, পুলিশের ইউনিয়ন করা বেআইনি বলে রাজ্য সরকার যে নির্দেশিকা জারি করেছিল, সেটিই বেআইনি। পুলিশের ইউনিয়নকে বৈধতা দিয়ে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেছেন, পুলিশের সংগঠন করার যে স্বীকৃতি রয়েছে, সেটি বহাল থাকবে৷ রাজ্য তা বাতিল করতে পারবে না।তবে সরকার চাইলে আইন মেনে পুলিশের জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করতে পারে। সেই বোর্ডে ইউনিয়নগুলির প্রতিনিধিদের নেওয়া যেতে পারে। প্রতিনিধিরা তাঁদের পরামর্শ দেবেন। সরকার প্রয়োজনে সে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে। এদিনের রায়ে বিচারপতি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, সরকার সংগঠনগুলির যে সব অফিস ঘর এবং সেই ঘরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, সেগুলি সাত দিনের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে সংগঠনগুলির হাতে৷ এদিনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিচারপতি দত্তর রায়ের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের জন্য আবেদন করা হয়৷ বিচারপতি অবশ্য ওই আবেদনে সাড়া দেননি৷
এদিকে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য সরকার। সোমবার স্বরাষ্ট্র দফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেছেন, 'যে বিষয়টা নিয়ে ভাবা দরকার তা হল, বিশ্বের কোন দেশে পুলিশ বাহিনীকে সংগঠন করার অধিকার দেওয়া হয়৷ যতটা আমরা জানি উর্দিবাহিনী কোথাও এই সুযোগ পায় না৷ ফলে, সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে হবে৷ কলকাতা হাইকোর্ট কোন প্রেক্ষিতে এই রায় দিল, তা আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব৷ তার পর আমরা পরবর্তী পর্যায়ে আইনি আবেদনের পথেই যাব৷' আনুষ্ঠানিক ভাবে অবশ্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'আদালতের রায় এখনও হাতে পাইনি৷ রায় দেখেই মন্তব্য করতে পারব৷'
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে নয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে পুলিশের সংগঠন করার স্বীকৃতি বাতিল করে দেয়৷ এর পর রাজ্যের সংগঠনগুলির অফিস ঘরগুলিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুলিশের অভাব-অভিযোগ মেটানোর জন্য সরকার পুলিশের ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করবে৷
রাজ্য সরকারের ওই নির্দেশিকাটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন প্রথমে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে৷ পরবর্তী সময়ে মামলাটিতে পক্ষ হয় নিচুতলার পুলিশের আরও দু'টি সংগঠন কলকাতা পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন এবং নন গেজেটেড পুলিশ কর্মচারি সমিতি৷ তাদের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, ১৯২০ সাল থেকে নিচুতলার পুলিশরা সংগঠন করে আসছেন৷ পুলিশের ও তাঁদের পরিবারের অভাব-অভিযোগ তুলে ধরাই ছিল প্রধান কাজ৷ ষাটের দশকে চুড়ান্ত ভাবে সংগঠনগুলি কাজ শুরু করে৷ পরে ১৯৭০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন রাজ্যপাল নিচুতলার পুলিশের সংগঠন করার স্বীকৃতি দেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের সন্মতি দেয়৷ সেই থেকে সারা রাজ্যে পুলিশের ৪৮টি জেলা সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে৷ যেখানে রাজ্যপালের স্বীকৃতি রয়েছে, সেখানে হঠাত্ করে একটি নির্দেশিকা জারি করে সেই সংগঠগুলিকে অবৈধ ঘোষণা করা যায় না৷
রায় ঘোষণার পরেই উল্লসিত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজিতাশ্ব রাউত সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, এই রায়কে তাঁরা যুদ্ধজয়ের ঘটনা বলে মনে করছে না৷ তাঁর দাবি, 'যাতে সংগঠন করার অধিকার আমরা ফিরে পাই, সে জন্যই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম৷ আমরা রাজ্য সরকারের সহযোগিতা আশা করেই সংগঠনগুলি চালাতে চাই৷ সংগঠনগুলির সারা রাজ্যের অফিসঘরগুলির প্রায় অর্ধেকে সরকার তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে৷ আমরা রায়ের কপি নিয়ে সেগুলি পুনরায় দখল নেব৷'
রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে: বিমান
রাজ্যে শিল্পায়নের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। গতকাল রায়গঞ্জে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। সরকারি অর্থে সভা করে দলীয় প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিমান বসু। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে শিল্প থেকে সংস্কৃতি, পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে রায়গঞ্জে এইমস বিতর্কের মতো একাধিক ইস্যু।
বিমানবাবু আরও জানান, আসন ভাগাভাগি নিয়ে বামফ্রন্টের দলগুলির মধ্যে যে কোনওরকম মতপার্থক্য প্রথমে জেলাস্তরে মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা সম্ভব না হলে রাজ্যস্তরে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত দুই জেলা
তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল হাওড়ার শিবপুর ও বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর এলাকা। সোমবার সকালে হাওড়া জেলার শিবপুরে বাইক চুরি অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা সংঘর্ষের চেহারা নেয়। শুরু হয় ব্যাপক বোমাবাজি। ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় দুপক্ষই। লুঠপাট চালানো হয় ওই এলাকার দোকানপাটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ ধরে শিবপুর ট্রামডিপোর মতো জনবহুল এলাকায় লুঠপাট চললেও পুলিস পৌঁছয় অনেক পর।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের খোট্টাডিহি কোলিয়ারি এলাকাতেও। এদিন সকালে ওই কোলিয়ারিতে কাজ করতে যাচ্ছিলেন তৃণমূল কর্মী সঞ্জীব মণ্ডল। অভিযোগ সেই সময় দলের অন্য গোষ্ঠীর বেশকিছু সমর্থক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। গাছে বেঁধে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। শূন্যে গুলিও চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিস ও র্যাফ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লোকসভায় অনাদায়ী ঋণ বিল পাশ
ব্যাঙ্কগুলি যাতে সহজে ঋণের টাকা আদায় করতে পারে সে জন্য লোকসভায় আনা বিশ পাশ হয়ে গেল বিরোধীদের অনুপস্থিতিতেই৷ ২০১১ সালের ডিসেম্বরে পেশ করা বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি করে বিজেপি, বাম ও অন্য বিরোধীরা৷
দি এনফোর্সমেন্ট অফ সিকিউরিটি ইন্টারেস্ট অ্যান্ড রিকভারি অফ ডেট লজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১১ লোকসভায় ধ্বনি ভোটে গৃহীত হয়েছিল৷ বিলে বলা হয়েছে, কোনও সংস্থা যদি ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তা হলে সেই ঋণের যে কোনও অংশ শেয়ারে পরিণত করতে পারবে অ্যাসেট রিকভারি সংস্থা (এআরসি)৷
বিরোধীরা চেয়েছিল বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হোক, সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হোক৷ অর্থমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, লোকসভায় বিলটি পেশ করার সময়ই অধ্যক্ষ সেটিকে সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর পক্ষপাতী ছিলেন না৷ তা ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট দেরিও হবে৷ অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদম্বরম বলেন, 'এমনিতেই যথেষ্ট দেরি হয়ে গিয়েছে৷ ২০১২ সালের মধ্যেই বিলটি পাশ হওয়া প্রয়োজন৷ প্রয়োজনে পরেও আইন সংশোধন করা যাবে৷ তত্কালীন অর্থমন্ত্রী (প্রণব মুখোপাধ্যায়) চেয়েছিলেন বিলটি দ্রুত পাশ করাতে৷ ব্যাঙ্কের জন্য বিল আশু পাশ হওয়া দরকারও৷'
অর্থমন্ত্রী লোকসভায় বলেন, 'বিলটি ২০১১ সালে পেশ করা হয়েছিল এবং সেটিকে (স্থায়ী কমিটিতে) পাঠানোর কথা হয়নি৷ এখন বারো মাস পরে যদি পাঠানো হয় তা হলে বিলের উদ্দেশ্যই সফল হবে না৷ ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের স্বার্থেই বিলটি ২০১২ সালেই পাশ হওয়া জরুরি৷' তিনি বলেন এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত হওয়া জরুরি৷
ব্যাঙ্কগুলিতে অনাদায়ী ঋণের (নন-পারফর্মিং অ্যাসেট বা এনপিএ) পরিমাণ বাড়ছে৷ চিদম্বরম বলেন, ব্যাঙিকেং ক্ষেত্র সুনিয়ন্ত্রিত এবং সেথানে এনপিএর পরিমাণ মোট ঋণের ৩.৫ শতাংশ৷ এই পরিমাণ এখনও মাত্রা ছাড়ায়নি এবং অর্থনৈতিক নীতি বদলে পরিস্থিতি ভালো হবে৷ এনপিএ প্রসঙ্গে কয়েকদিন আগে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (ইউবিআই) এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর দীপক নারাঙ্গ উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ উড়ান সংস্থা কিংফিশার বিপুল টাকা ঋণ নেওয়ার পরে ধীরে ধীরে বিপুল লোকসান ও শেষে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঋণ আদান নিয়ে ব্যাঙ্কগুলি চিন্তায়৷ ইউবিআইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জন রায় বলেন, 'সরকারের উচিত নীতি বদল করা৷'
শিক্ষাঋণ নিয়ে ছাত্রদের তা শোধ না করার প্রবণতা প্রসঙ্গে ইউনাইটেড কমার্শিয়োল ব্যাঙ্কের (প্রধান কার্যালয়) রিটেল অ্যাসেট বিভাগের ম্যানেজার দীপক বিশ্বাস বলেন, 'সরকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করলে ব্যাঙ্কগুলির সুবিধা হয়৷' কানাড়া ব্যাঙ্কের মোট এনপিএ ১.৭৫ শতাংশ থেকে এক বছরে বেড়ে ২.৫৮ শতাংশ হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের পক্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল৷
চিদম্বরম বলেন, 'অর্থনীতিতে চাপ থাকায় বিভিন্ন ক্ষেত্র ভালো ফল করছে না৷ তাই মোট এনপিএ বাড়ছে৷ আমাদের লক্ষ্য হল এই সব ক্ষেত্রগুলো যাতে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে সেই চেষ্টা করা৷ আমাদের এমনকিছু করা উচিত যাতে সংস্থাগুলো চাপমুক্ত হতে পারে৷
বিরোধীরা এই বিল কৃষক ও ক্ষুদ্র ঋণগ্রাহকদের স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ করেন৷ অর্থমন্ত্রী তা খারিজ করে জানিয়ে দেন, ডেট রিকভারি ট্রাইবুনাল (ডিআরটি) আইনে দশ লক্ষ টাকার বেশি ঋণ গ্রহীতাদের কথাই বলা হয়েছে৷
ভারতে প্রবেশ করতে চায় চিনের গ্রেট ওয়াল মোটর
প্রতিযোগী বেইকি ফোটন ঢুকে পড়েছে ভারতে৷ তাই এ বাজারে নিজেদের অধরা করে রাখতে চাইছে না চিনের অন্যতম স্পোটর্স ইউটিলিটি ভেহিকল প্রস্ত্ততকারক গ্রেট ওয়াল মোটর৷
গত সপ্তাহেই দিল্লিতে এসেছিলেন গ্রেট ওয়াল মোটর কর্তৃপক্ষ৷ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফাকচারার্স (সিয়াম)-এর ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর জানিয়েছেন, ভারতে কারখানার সন্ধান করছে গ্রেট ওয়াল মোটর৷ ভারতে ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য একটি আলাদা টিমও গড়েছে গ্রেট ওয়াল মোটর৷ তবে কোনও যৌথ উদ্যোগের হাত ধরে নয়, বরং এ দেশে স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চায় গ্রেট ওয়াল মোটর৷ মূলত এই সংস্থা স্পোটর্স ইউটিলিটি ভেহিকল বা এসইউভি গাড়ির জন্যই পরিচিত৷ কিন্ত্ত এই সংস্থার হ্যাচব্যাক ও সেডাল শ্রেণির গাড়িরও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে৷ সেডান গ্রেট ওয়াল সি৫০, গ্রেট ওয়াল সি৩০ ও হ্যাচাব্যাকের মধ্যে গ্রেট ওয়াল সি২০আর ও সি১০ যথেষ্ট জনপ্রিয়৷ তা ছাড়া এসইউভি শ্রেণি হাভল এইচ৬, এইচ৫ ও এইচ৪ খুবই বিখ্যাত৷ আপাতত এই সংস্থাটি বছরে ৮ লক্ষ গাড়ি তৈরি করে৷ রন্তানি করে ১০০টিরও বেশি দেশে৷ ২০১৫-র মধ্যে বার্ষিক ১৫ লক্ষ গাড়ি তৈরি লক্ষ্য রেখেছে সংস্থাটি৷
মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে চিনের বাণিজ্যিক গাড়ি তৈরি সংস্থা বেইকি ফোটন৷ চাকানের কাছে কারখানা গড়ে তুলতে চাইছে এই সংস্থা৷ বিনিয়োগ করেছে ১৬৭০ কোটি টাকা৷ পাঁচ বছর ভারতে বাণিজ্যিক গাড়ি তৈরির পাশাপাশি যাত্রীবাহী গাড়িও তৈরি করবে বেইকি ফোটন৷ সে কারণে ভারতের বাজারে ঢোকার পরিকল্পনা নিয়েছে গ্রেট ওয়াল মোটরও৷
জমি ও কয়লা জট নিয়ে সমস্যার সমাধান মিলল না
এই সময়: ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশনের (এনটিপিসি) সঙ্গে শনিবার বৈঠকে জমি ও কয়লার জোগান নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য সরকার৷ তাই বর্ধমানের কাটোয়ায় এনটিপিসির ষোলোশো মেগাওয়াট বিদ্যুত্ প্রকল্পের কাজ থমকে আছে৷
কলকাতায় প্যানআইআইটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে এনটিপিসির সিএমডি অরূপ রায়চৌধুরী বলেন, 'রাজ্য সরকার ধেমাগড়িয়া কয়লা ব্লক কেন্দ্রকে ফিরিয়ে দিয়েছে৷ কাটোয়া বিদ্যুত্ প্রকল্পের জন্য আমাদের কয়লা ব্লক দরকার৷ আমরা ওই ব্লক থেকেই কয়লা নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম৷' প্রস্তাবিত ওই বিদুত্ প্রকল্পে বছরে ৭৫ লক্ষ টন কয়লা দরকার৷
এই প্রকল্পের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৫৫০ একর জমি হস্তান্তর করেছে৷ কিন্ত্ত, ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য কমপক্ষে ১০০০ একর জমির দরকার৷ 'প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য ০.৭ একর জমি প্রয়োজন৷ প্ল্যান লে-আউট বদলালেও আমাদের কমপক্ষে ১০০০ একর জমি দরকার,' অরূপবাবু বলেন৷
এনটিপিসি এ বছর গোড়ার দিকে আরও ২৫০ একর জমি দিতে বলে অনুরোধ করে সরকারকে৷ কিন্ত্ত ওই প্রকল্পের জন্য কোনও জমি অধিগ্রহণ সরকার করবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়৷ এদিকে, এনটিপিসিও নিজে জমি কিনতে নারাজ৷ তবে, সরকার ও প্রশাসন সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক ব্যবস্থায় জমি কিনতে রাজি এনটিপিসি৷
'কাটোয়া প্রকল্পে এই জমি দরকার হত না যদি এখানে পুরো বিদ্যুত্ আমদামিকৃত কয়লায় তৈরি হত৷ কিন্ত্ত, দেশিয় কয়লায় ছাইয়ের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ৷ ওই ছাই ফেলার জন্য অন্তত ২৫০ একর জমির অ্যাশ পন্ড তৈরি করতে হবে নাহলে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অনুমোদন পাওয়া যাবে না,' অরূপবাবু ব্যাখ্যা করেন৷
তা হলে প্রকল্পের ভবিষ্যত্ কী? উত্তরে তিনি বলেন, 'দু'টি উপায় রয়েছে৷ প্রকল্পটি কমিয়ে আটশো মেগাওয়াট করা অথবা দু'টি পৃথক জায়গায় প্রকল্প গড়া৷'
এনটিপিসির সিএমডি বলেছেন, 'ছাই রাখার জন্য (অ্যাশ পন্ড) আমাদের আরও আড়াইশো একর জমি দরকার৷ এ ছাড়া কর্মীদের বসবাসের জন্য কলোনি গড়তেও জমি দরকার৷'
তবে প্রকল্প রাজ্যের বাইরে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তাঁরা খারিজ করে দিয়েছেন৷ রায়চৌধুরী বলেছেন, 'যদি সমস্যা থেকেই যায় তা হলে আরেকটি উপায় হল প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, তবে এ নিয়ে আমরা এখনই ভাবছি না৷ আমরা চাই ওখানেই প্রকল্প হোক৷ রাজ্য সরকার এবং এনটিপিসি উভয়েই একান্ত ভাবে আগ্রহী৷'
তবে একই ধরনের জমি সমস্যার কারণে ওড়িশা থেকে একটি প্রকল্প মধ্যপ্রদেশে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এনটিপিসি৷ অরূপবাবু বলেন, '১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ প্রকল্পে দু'হাজার একর জমি দিয়েছিল বলে আমরা ওড়িশা থেকে একটি প্রকল্প মধ্যপ্রদেশে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম৷
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নতুন জমি নীতি অনুযায়ী শিল্পস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি মালিকের থেকে সরাসরি কিনতে হবে শিল্পসংস্থাকে৷ এ ছাড়া জোর করে কোনও জমি নেওয়া যাবে না৷ কাটোয়া থেকে প্রকল্প গুটিয়ে না নিলেও পুরুলিয়ার সাঁওতালডিহিতে ৬৬০ মেগাওয়াট করে দু'টি বিদ্যুত্ প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব থেকেও সরে এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ব বিদুত্ সংস্থাটি৷
প্রথম দিকে এই প্রকল্পের জন্য আরেক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা ভেলের সঙ্গেও কথা বলেছিল এনটিপিসি৷ কিন্ত্ত ভেল উচ্চবাচ্য না করায় তারা একাই ৯,৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় এনটিপিসি৷ প্রাথমিক পর্যায়ে ঠিক হয়, এই প্রকল্পে উত্পাদিত ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ পাবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাকিটা পাবে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি৷
দশ সংস্থায় এক লক্ষ ছাঁটাই ঘোষণা এই বছরেই
অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব এখনও কাটেনি আমেরিকা, ইউরোপে৷ তারই মধ্যে এক লক্ষ লোক ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে ১০টি সংস্থা৷ এই লোক ছাঁটাই করা হবে চলতি বছরেই৷
এইচপি, গুগল, সিটি গ্রুপের মতো সংস্থাগুলি মূলত খরচ কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ করছে৷ ফলে, যে সমস্ত দেশে কর্মীদের জন্য খরচ বেশি সেখানেই বেশি লোক ছাঁটাই হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই করা কথা ঘোষণা করেছে এএমআর কর্পোরেশন, পেপসিকো, মেটলাইফ, হস্টেস ব্র্যান্ডস, জেসি পেনে কোম্পানি, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল ও মরগ্যান অ্যান্ড স্ট্যানলি৷ এই সব বহুজাতিক সংস্থাগুলি সারা বিশ্বে ৯৫,৫০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করার কথা জানিয়েছে৷
এ বছরের গোড়ায় জেপি পেনি তাদের সংস্থা 'পুনর্গঠন' করার কথা বলে ৪,৭০০ জন কর্মী কমানোর কথা ঘোষণা করেছিল৷ আমেরিকার টেক্সাসে তাদের গৃহঋণের ইউনিট বন্ধ করে দেয় মেটলাইফ৷ একই সঙ্গে তারা ৪,৩০০ কর্মী ছাঁটাই করার কথাও ঘোষণা করে৷
স্পেন, পোর্তুগাল ইতালি আর গ্রিসের মতো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলিতে বেকারত্বের হার দিন দিন বাড়ছে৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাতাশটি দেশে এ বছর অগস্টে বেকারত্বের হার ছিল ১০.৫ শতাংশ৷ গত বছরে ওই হার ছিল ৯.৭ শতাংশ৷ তুলনায়, মার্কিন মুলুকের অবস্থা অনেকটা ভালো৷ সে দেশে গত বছর অগস্টে বেকারের হার ছিল ৯.১ শতাংশ, এ বছর ৮.১ শতাংশ৷ আমেরিকা ইউরোপিয় দেশগুলির সবচেয়ে বড় বাজার আমেরিকা৷ এখন আমেরিকাতেই যদি 'ব্যয় সঙ্কোচ' করে কর্মী ছাঁটাই হয় তাহলে তাদের কী হবে? চিন্তায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷
এ বছর যে সব সংস্থা কর্মী সঙ্কোচের কথা ঘোষণা করেছে সেই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে টেকনোলজি সংস্থা হিউলেট-প্যাকার্ড (এইচপি)৷ ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয় সঙ্কোচের জন্য মে মাসেই তারা ২৭ হাজার কর্মী সঙ্কোচের কথা ঘোষণা করে৷
এর পরেই রয়েছে হস্টেস ব্র্যান্ডস৷ তাদের অধীনস্থ সংস্থা ওয়ান্ডার ব্রেড ও টুইঙ্কি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় ব্র্যান্ড ও অ্যাসেট দুই-ই বিক্রি করতে হচ্ছে৷ গত মাসেই তারা জানিয়ে দিয়েছে যে এর ফলে ১৮,৫০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে৷
আমেরিকান এয়ারলাইনসের সংস্থা এএমআর কর্পোরেশন ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা করেছিল যে, তারা চোদ্দো হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করবে৷
বিজ্ঞাপন বাবদ আগের চেয়ে খরচ অনেক বেড়েছে, কাঁচামালের দামও বেড়েছে৷ পেপসিকো জানিয়েছে ১৫০ কোটি টাকা বাঁচাতে ২০১৪ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে তারা তিন শতাংশ কর্মী সংকোচন করবে, যার অর্থ সংস্থার কর্মীর সংখ্যা ৮৭০০ জন কমে যাওয়া৷
দশ হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে প্রথম ধাপে ২০১৩ সালে ৪১০০ জন কর্মী ছাঁটাই করার কথা ঘোষণা করেছে প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল (পি অ্যান্ড জি)৷ প্রক্রিয়া চলবে চার বছর ধরে৷
এ মাসে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছে সিটি গ্রুপ৷ ১০০ কোটি টাকা ব্যয় সঙ্কোচের জন্য ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে তারা৷
বছরের গোড়ায় মোটরোলা সংস্থা কিনে নিয়েছিল ইন্টারনেট সংস্থা গুগল, অগস্টে তারা ঘোষণা করে মোটরোলার ২০ হাজার কর্মীর মধ্যে চার হাজার জনকে ছাঁটাই করা হবে৷ একটি নিয়ামক সংস্থা জানিয়েছে এই সংস্থার দুই-তৃতীয়াংশই ছাঁটাই করা হবে আমেকিার বাইরে অন্য দেশে৷
মরগ্যান স্ট্যানলি ঘোষণা করেছে, ২০১১ সালের পর এ বছর তারা সন্তম বারের জন্য কর্মী ছাঁটাই করছে৷
বেকারের সংখ্যা এই মুহূর্তে ভয়াবহ আকার নিয়েছে গ্রিসে৷ গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনিস সামারাস জানিয়েছেন, তাঁর দেশে বেকারের সংখ্যা রেকর্ড ২৬ শতাংশ হয়েছে, অর্থাত্ সে দেশে কর্মহীনের সংখ্যা ১২ লক্ষ ৯৫ হাজার৷
অগস্ট মাসের ২৫.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে সেপ্টেম্বর মাসে বেকারত্বের হার ছিল ৩৮ শতাংশ৷ এখন অবশ্য তা ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ তার পরেই রয়েছে স্পেন, বেকারত্ব ২২ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫.৮ শতাংশ৷ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পরিসংখ্যান নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠান এলস্ট্যাট এ কথা জানিয়েছে৷ তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবরে স্পেনে বেকারত্বের সংখ্যা ছিল ২৬.২ শতাংশ৷
ইউরো জোনে সবচেয়ে ভাল অবস্থা অস্ট্রিয়ার, সেখানে বেকারের হার ৪.৩ শতাংশ৷ ইংল্যান্ডে এই হার ৭.৯ শতাংশ৷
No comments:
Post a Comment