প্রধান বিচারপতি আলতমাস কবীর, বিচারপতি পি সদাশিবম এবং বিচারপতি এসএস নিজ্জর জানিয়ে দেন, এই মামলায় নিয়মিত শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই। আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, 'নিয়মিত শুনানির প্রয়োজন এই আবেদনে নেই। আবেদনটি খারিজ করা হল।'
বিচারপতি জে চামলেশ্বর এবং বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের অবশ্য ভিন্নমত ছিল। বিচারপতি গগৈ বলেন, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) চেয়ারম্যান হিসেবে লাভজনক পদে থাকার অভিযোগ এসেছে। সে কারণেই এই আবেদনের নিয়মিত শুনানি প্রয়োজন।
পিএ সাংমার আইনজীবী সত্যপাল জৈন বলেন, এই মামলায় বিভিন্ন দিক রয়েছে যেগুলি নিয়ে শুনানি প্রয়োজন। এমনকী দু'জন বিচারপতিও একই কথা মনে করেন। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ার পর রিভিউ পিটিশন দাখিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, অর্থমন্ত্রী হিসেবে ইস্তফা দেওয়ার পর এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মনোনয়ন পেশের আগে প্রণববাবু দু'টি পদ থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলেন।
তিনটে ১৫ মিনিট নাগাদ লোকসভা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর, পুনরায় শুরু হয় অধিবেশকের কাজ। ভারতীয় জনতা পার্টি নেতা মুরলী মনোহর জোশী প্রশ্ন তোলেন, "এফডিআই যদি দেশের পক্ষে লাভজনক হয়, তবে সরকার তা রাজ্যগুলির ইচ্ছাধীন করে রাখছে কেন?" অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় জনতা দল নেতা লালু প্রসাদ যাদব খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে বিজেপিকে কড়া সমালোচনায় বিঁধেছেন। তিনি বলেন, "এফডিআই ব্যবহারে কোনও বাধ্যাবাধ্যকতা নেই।" আরজেডি নেতার কথায়, প্রত্যেকের স্বাধীনতা রয়েছে তাঁরা কী কিনবেন, কী কিনবেন না, তা সিদ্ধান্ত করার। ২০০২-এ বিজেপির তরফে এফডিআই আনার চেষ্টা করা হয়েছিল বলেন তর্কও শুরু করেন লালু।
খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি বিতর্কে আজ সংসদে ১৮৪ ধারায় আলোচনা এবং ভোটাভুটি হবে। লোকসভায় এফডিআই ইস্যুতে জিততে হলে ইউপিএর ২৭৩ জন সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। এই মুহূর্তে ইউপিএর পক্ষে রয়েছেন ২৬১ জন সাংসদ। এফডিআইয়ের সমর্থনে কংগ্রেসের পাশে রয়েছে ডিএমকে, আরজেডি এবং জেডিএস। এফডিআই বিরোধী শিবিরে রয়েছে এনডিএ, বাম, তৃণমূল কংগ্রেস, এআইএডিএমকে এবং বিজেডি। এই দলগুলির মোট দুশো আঠেরোজন সাংসদ এফডিআইয়ের বিরোধিতা করছেন। এফডিআই নিয়ে ভোটদানে বিরত থাকতে পারে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি। লোকসভায় ভোটাভুটির দৌড়ে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও, রাজ্যসভায় পাল্লা দুদিকেই প্রায় সমান ভারী। খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি আজ বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি ধারার সংশোধন নিয়েও ভোটাভুটি হবে।
এক নজরে দেখে নেব কে কোথায় দাঁডিয়ে।
পক্ষে
কংগ্রেসের রয়েছে ২০৬ জন সাংসদ
ডিএমকের রয়েছে ১৮ জন সাংসদ
আরজেডির রয়েছে ৪ জন সাংসদ
জেডিএসের রয়েছে ৩ জন সাংসদ
অন্যান্য রয়েছেন ৩০ জন সাংসদ
বিপক্ষে
এফডিআই বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ২১৮ জন সাংসদ। তার মধ্যে
এনডিএর সাংসদ সংখ্যা ১৫২
বামেদের সাংসদ সংখ্যা ২৪
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা ১৯
এআইএডিএমকের সাংসদ সংখ্যা ৯
বিজেডির সাংসদ সংখ্যা ১৪
সমাজবাদী পার্টির ২২ জন সাংসদ এবং বহুজন সমাজ পার্টির ২১ জন সাংসদ ভোটদানে বিরত থাকতে পারেন। লোকসভায় দু'দলের মোট সাংসদ সংখ্যা ৪৩। এই ৪৩ জন ভোটদানে বিরত থাকলে লোকসভার মোট ৫০১ জন সাংসদ এফডিআই নিয়ে ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন।
লোকসভায় মিথ্যাচারের আশ্রয়
নিলেন কপিল সিবাল
নিজস্ব প্রতিনিধি: নয়াদিল্লি, ৪ঠা ডিসেম্বর- খুচরো বাণিজ্যে বিদেশী বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে মিথ্যাচারেরও আশ্রয় নিলেন কপিল সিবাল। লোকসভায় নিজের ভাষণে সি পি আই (এম)-র অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সিবাল সীতারাম ইয়েচুরিকে 'উদ্ধৃত' করেন। তিনি 'বিজনেস লাইন' পত্রিকাকে দেওয়া ইয়েচুরির এক 'সাক্ষাৎকারের' উল্লেখ করেন। বাস্তবে ২০০৪-র ১৬ই মে বিজনেস লাইনে ইয়েচুরির কোনো সাক্ষাৎকারই প্রকাশিত হয়নি। একটি সংবাদ বেরিয়েছিল যার শিরোনাম ছিলো :' সেনসেক্স পতনের জন্য বিয়ার কার্টেলকে দায়ী করলো সি পি আই (এম), লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রিরও বিরোধিতা করলো'। মঙ্গলবার অধিবেশনের পরে সি পি আই (এম) সূত্রে বলা হয় এই শিরোনাম দেখলেই তো বোঝা যাচ্ছে ইয়েচুরি সাংবাদিকদের কী বলেছিলেন। খুচরো বাণিজ্যের প্রসঙ্গই ছিলো না। সিবাল কীসের ঘাড়ে কী চাপিয়েছেন, তা-ও বোঝা যাচ্ছে।
সি পি আই (এম) সূত্রে বলা হয়, যখন ইউ পি এ- বামপন্থীদের সমন্বয় কমিটি ছিলো তখন ইয়েচুরি তার সদস্য থাকলেও সিবাল ছিলেন না। সুতরাং সি পি আই (এম) বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে কী অবস্থান নিয়েছিল তা তাঁর জানা নেই, এমন অজুহাত তিনি দিলেও দিতে পারেন। তবে তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা তাঁকে বলে দিলে ভালো করবেন। গত আট বছর ধরে সি পি আই (এম) এবং বামপন্থীদের ধারাবাহিক বিরোধিতার জন্যই খুচরো বাণিজ্যে বিদেশী বিনিয়োগ হয়নি, দেশের অর্থনীতি বেঁচেছে বিপর্যয়ের হাত থেকে।
প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ সম্পর্কে সি পি আই (এম)-র নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট। এফ ডি আই তখনই অনুমোদিত হওয়া উচিত যখন (১) সম্পদ অধিগ্রহণের বদলে উৎপাদিকা শক্তির বৃদ্ধি ঘটবে; (২) প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটবে; (৩) কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। খুচরোয় বিদেশী বিনিয়োগে এই তিন শর্তের কোনোটিই পালিত হবে না। উৎপাদিকা শক্তির বৃদ্ধি ঘটবে না কেননা এই লগ্নি মূলত ব্যবসায়িক চরিত্রের। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বদলে হাজার হাজার মানুষের কর্মচ্যুতির আশঙ্কা তৈরি হবে। এই কারণেই এন ডি এ আমলে এবং এখন সি পি আই (এম) খুচরোয় বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধী। সিবাল সংসদ কক্ষে ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়ে অনৈতিক কাজ করেছেন।
লোকসভায় মিথ্যাচারের আশ্রয়
নিলেন কপিল সিবাল
নিজস্ব প্রতিনিধি: নয়াদিল্লি, ৪ঠা ডিসেম্বর- খুচরো বাণিজ্যে বিদেশী বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে মিথ্যাচারেরও আশ্রয় নিলেন কপিল সিবাল। লোকসভায় নিজের ভাষণে সি পি আই (এম)-র অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সিবাল সীতারাম ইয়েচুরিকে 'উদ্ধৃত' করেন। তিনি 'বিজনেস লাইন' পত্রিকাকে দেওয়া ইয়েচুরির এক 'সাক্ষাৎকারের' উল্লেখ করেন। বাস্তবে ২০০৪-র ১৬ই মে বিজনেস লাইনে ইয়েচুরির কোনো সাক্ষাৎকারই প্রকাশিত হয়নি। একটি সংবাদ বেরিয়েছিল যার শিরোনাম ছিলো :' সেনসেক্স পতনের জন্য বিয়ার কার্টেলকে দায়ী করলো সি পি আই (এম), লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রিরও বিরোধিতা করলো'। মঙ্গলবার অধিবেশনের পরে সি পি আই (এম) সূত্রে বলা হয় এই শিরোনাম দেখলেই তো বোঝা যাচ্ছে ইয়েচুরি সাংবাদিকদের কী বলেছিলেন। খুচরো বাণিজ্যের প্রসঙ্গই ছিলো না। সিবাল কীসের ঘাড়ে কী চাপিয়েছেন, তা-ও বোঝা যাচ্ছে।
সি পি আই (এম) সূত্রে বলা হয়, যখন ইউ পি এ- বামপন্থীদের সমন্বয় কমিটি ছিলো তখন ইয়েচুরি তার সদস্য থাকলেও সিবাল ছিলেন না। সুতরাং সি পি আই (এম) বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে কী অবস্থান নিয়েছিল তা তাঁর জানা নেই, এমন অজুহাত তিনি দিলেও দিতে পারেন। তবে তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা তাঁকে বলে দিলে ভালো করবেন। গত আট বছর ধরে সি পি আই (এম) এবং বামপন্থীদের ধারাবাহিক বিরোধিতার জন্যই খুচরো বাণিজ্যে বিদেশী বিনিয়োগ হয়নি, দেশের অর্থনীতি বেঁচেছে বিপর্যয়ের হাত থেকে।
প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ সম্পর্কে সি পি আই (এম)-র নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট। এফ ডি আই তখনই অনুমোদিত হওয়া উচিত যখন (১) সম্পদ অধিগ্রহণের বদলে উৎপাদিকা শক্তির বৃদ্ধি ঘটবে; (২) প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটবে; (৩) কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। খুচরোয় বিদেশী বিনিয়োগে এই তিন শর্তের কোনোটিই পালিত হবে না। উৎপাদিকা শক্তির বৃদ্ধি ঘটবে না কেননা এই লগ্নি মূলত ব্যবসায়িক চরিত্রের। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বদলে হাজার হাজার মানুষের কর্মচ্যুতির আশঙ্কা তৈরি হবে। এই কারণেই এন ডি এ আমলে এবং এখন সি পি আই (এম) খুচরোয় বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধী। সিবাল সংসদ কক্ষে ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়ে অনৈতিক কাজ করেছেন।
http://ganashakti.com/bengali/breaking_news_details.php?newsid=969
দুর্নীতিকে মদত দিয়ে মুখ পুড়লো দেশের
ভারতকে সাসপেন্ড করলো ওলিম্পিক সংস্থা
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি ও লুসান, ৪ঠা ডিসেম্বর— দুর্নীতিগ্রস্তদের পিঠ চাপড়াতে গিয়ে এবার দুনিয়ার সামনে ভারতের মুখে চুন-কালি লাগলো। বারবার সতর্ক করার পর মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ওলিম্পিক কমিটি (আই ও সি) ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আই ও এ)-কে সাসপেন্ড করে দিলো। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত জানানো না হলেও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আই ও সি'র দুই কর্তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এ পি এই খবর প্রকাশ করে দেয় ভারতীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলেই। আই ও সি'র দুই দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে সাসপেন্ড করার কথা বৈঠক শেষে জানানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে ঐ দুই কর্তা জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তে ভারতের ক্রীড়া মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। অভিনব বিন্দ্রাসহ বেশ কিছু ক্রীড়াবিদ তুলোধোনা করেছেন ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে। অনেকেই আবার এই বিষয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যাবে না জেনে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক ওলিম্পিক কমিটির সঙ্গে সংঘাত চরমে পৌঁছায়। কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার এই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ ওঠে। কমনওয়েলথ গেমসের দুর্নীতিতে জড়িত, প্রায় এক বছর সেই কারণে জেল কাটানো ললিত ভানোতকে আই ও এ'র মহাসচিব পদে বসানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সরকার পক্ষ। অভিযোগ খোদ ক্রীড়ামন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ভানোতের হয়ে আসরে নেমে পড়েন। শীর্ষ কংগ্রেস নেতা এবং সাংসদ সুরেশ কালমাদি কমনওয়েলথ গেমসের দুর্নীতিতে ফেঁসে জেলে গিয়েছিলেন। তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই ললিত ভানোতও প্রায় এক বছর জেল খেটেছেন। এখনও বিচার চলছে। কমনওয়েলথ গেমসের দুর্নীতি সামনে আসার পর প্রধানমন্ত্রী- সোনিয়া গান্ধীরা দেখাতে চেয়েছিলেন তাঁরা দুর্নীতিকে বরদাস্ত করবেন না। সারা দুনিয়ার সামনে মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার পর কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা 'সাধু' সাজার চেষ্টা করেছিলেন বটে, কিন্তু সেই দুর্নীতির রেশ কাটার আগেই দুই বছরের মধ্যে ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মতো মর্যাদাপূর্ণ সংস্থার মাথায় ললিত ভানোতের মতো দুর্নীতিগ্রস্তকে বসাতে নেতা-মন্ত্রীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কংগ্রেসের আসল চেহারাই সামনে চলে এসেছে। আই ও সি'র সিদ্ধান্তে নতুন করে কংগ্রেস এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ পুড়লো।
সরকার পক্ষের সরাসরি ওকালতির ফলে সভাপতি, সহসভাপতি (সিনিয়র), মহাসচিব, কর্মাধ্যক্ষ এবং আই ও সি সদস্যের পদগুলিতে কোনো নির্বাচনই হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান সকলেই। রিটার্নিং অফিসার ভি কে বালির ২৯শে নভেম্বরের স্বাক্ষরিত সেই তালিকা দেখা যাচ্ছে আই ও এ'র ওয়েব সাইটেও। শুধুমাত্র সহসভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির মতো গুরুত্বহীন পদে বুধবার লোকদেখানো নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনও অনিশ্চিত হয়ে পড়লো।
গত প্রায় একমাস ধরে আন্তর্জাতিক ওলিম্পিক কমিটি বার বার এই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করেছে ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে। সর্বশেষ গত ২৮শে নভেম্বরেও আই ও সি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, নির্বাচনে তাদের নির্দেশাবলী অগ্রাহ্য করে ভারত সরকারের মতামতকে প্রাধান্য দিলে প্রয়োজনে ভারতীয় ওলিম্পিক সংস্থাকে তারা আন্তর্জাতিক আঙিনা থেকে নির্বাসিত করবে। তার আগেও গত ২৩শে নভেম্বর আই ও এ'র দুই কর্তা রণধীর সিং এবং বিজয় কুমার মালহোত্রার কাছে চিঠি পাঠিয়ে একই বিষয়ে সতর্ক করেছিল আই ও সি। সর্বশেষ চিঠিটি পাঠিয়ে ছিলেন আই ও সি'র ডিরেক্টর ক্রিস্টোফে ডি কেপার নিজেই। তাতে বলা হয়েছিল আই ও সি'র নির্দেশিকা মান্য করতে হবে। তা না হলে ওলিম্পিক সনদ এবং স্বায়ত্তশাসনকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে বলে ধরা হবে। জানা গেছে আই ও সি ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে জানায় যে ওলিম্পিক পরিবারের মতো মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় দুর্নীতিগ্রস্ত কারোকে না রাখার জন্য। কিন্তু ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাব্যক্তিরা পাল্টা বলেন, ভারতের আইনে কোনো ব্যক্তি দোষী প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। ফলে ললিত ভানোতও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। 'প্রতিদ্বন্দ্বিতা' যদিও হয়নি, বিনা লড়াইয়েই মহাসচিব হয়ে গেছেন ভানোত।
আই ও সি'র এই সিদ্ধান্তকে সালিশী আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে ভারত। তবে এখনই সেই সংঘাতের পথে যাবে বলে কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। এদিনের সিদ্ধান্তের কথা প্রচার হওয়ার পরেই ক্রীড়ামন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছেন, ভারতের ক্রীড়া জগতের কাছে এটা একটা দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে বুঝে তিনি বলেন, এটা পারস্পরিক দোষারোপের সময় নয়। প্রয়োজনে আই ও সি এবং আই ও এ'র কর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসতেও সরকার প্রস্তুত বলে তিনি জানান। তবে আই ও এ'র কার্যকরী প্রধান ভি কে মালহোত্রা এদিন সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন গত দুই বছর ধরে সরকারকে বলা হচ্ছে আই ও এ'র ওপর ক্রীড়া নিয়মাবলী না চাপানোর জন্য। কিন্তু সরকার তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তই নেয়নি। প্রধানমন্ত্রীকেও এই বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। যথারীতি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
উদ্বিগ্ন ভারতের ক্রীড়াবিদরা। একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে তারা কেউ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, কেউ বা হতাশা। ভারতের ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েনশনকে তীব্র কটাক্ষ করে বেজিঙ ওলিম্পিকের সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রা বলেছেন, 'বাই বাই আই ও এ। আশাকরি শীঘ্রই দেখা হবে। আশা করি এবার কলঙ্কমুক্ত দেখবো।' অপর শ্যুটার গগন নারাঙ এই সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলেছেন। বক্সার বিজেন্দ্র সিংও নারাঙের মতোই বলেছেন দ্রুত সমাধান হোক। বক্সার মেরি কমও দ্রুত সমাধান চেয়েছেন, যাতে ক্রীড়াবিদদের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব না পড়ে।
এফডিআই, সংস্কার সওয়াল রঙ্গরাজনের
কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আর্থিক সংস্কার ও এফডিআই ইস্যুতে মনমোহন সিংহের সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য তেড়েফুঁড়ে নেমেছিলেন, তার সমর্থনে কলকাতায় দাঁড়িয়ে জোর সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজন৷সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুর দিনই ইউপিএ-২ সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল একদা শরিক তৃণমূল কংগ্রেস৷বামপন্থী শিবির ও বিজেপির সমর্থন চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু কেউই তাঁদের পাশে না দাঁড়ানোয় সেই প্রস্তাব ধোপে টেকেনি। তা সত্ত্বেও চলতি অধিবেশনে পেনশন বিল, ব্যাঙ্কিং সহ একাধিক সংস্কারমূলক বিল পেশ করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথেষ্ট বিরোধিতার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ৷কেননা তৃণমূলের অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ হলেও খুচরোয় এফডিআই ইস্যুতে কোন ধারায় বিতর্ক হবে. তা নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে৷ বাম ও বিজেপি ১৮৪ ধারায় বিতর্ক ও ভোটাভুটির দাবিতে অনড় থাকলেও ভোটাভুটি চায় না কংগ্রেস৷
এই প্রেক্ষাপটে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ঝড় ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।তার আগেই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সহমত গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করলেন রঙ্গরাজন৷ তিনি বলেছেন, সংস্কার হলে অর্থনীতি চাঙ্গা হতে বাধ্য৷ সংস্কার না হলে অর্থনীতি এগোতে পারে না৷ আর সংস্কার কর্মসূচী সফল করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এফডিআইয়ের পক্ষেও মুখ খোলেন তিনি৷তাঁর দাবি, এফডিআই এলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ওপর তার কোনও প্রভাব পড়বে না৷
কলকাতায় এসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা যেভাবে জাতীয় রাজনীতির জোড়া ইস্যুতে সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট করে দিলেন, তা যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/30574-2012-11-24-10-41-34
কেন্দ্র-রাজ্য 'এফডিআই' যুদ্ধ অব্যাহত
কলকাতা:কেন্দ্র-রাজ্যের মাঝে এফডিআই যুদ্ধ অব্যাহত৷ ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফেসবুকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এর আগেও দেশে কর ফাঁকি দিয়ে ঘুরপথে বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে৷শুধু তাই নয়, ফেসবুকে ছক এঁকে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কীভাবে ওয়ালমার্ট ঘুরপথে বিনিয়োগ করেছে৷ অন্যদিকে এফডিআই যুদ্ধের মাঝে কেন্দ্র আজ ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এফডিআইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
এদিকে পেনশনেও বিদেশি বিনিয়োগে অনুমতি দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনছে ইউপিএ সরকার, বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসকারী এক ভারতীয়ের উদাহরণ টেনে তিনি লিখেছেন, আমেরিকায় পেনশনে বিদেশি বিনিয়োগ চালু রয়েছে৷ ২০০৮ সালে যখন সেখানে শেয়ারবাজারে ধস নামে তখন, নিজের জীবনব্যাপী সঞ্চয়ের প্রায় অর্ধেক হারিয়েছিলেন ওই ভারতীয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, এদেশেও পেনশনে বিদেশি বিনিয়োগ চালু হওয়ায় একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/29056-2012-10-07-12-34-24
No comments:
Post a Comment