Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Tuesday, May 6, 2014

স্বজন রক্তে আর কত রাঙাবে মাটি? পলাশ বিশ্বাস

স্বজন রক্তে আর কত রাঙাবে মাটি?

পলাশ বিশ্বাস


vote

বাঙালি ভুলে গেছে নিজের ভূগোল,যে ভূগোল শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ্ নয়

বাঙালি ভুলে গেছে বাঙালি জাতিসত্তার ইতিহাস

বাঙালি ভুলে গেছে বৌদ্ধময় বাংলা,জনপদের ইতিহাস

কলকাতা কেন্দ্রিক নগরসভ্যতা ও ক্ষমতার অন্ধ অলিন্দে বাঙালির জীবনে রবি ঠাকুরের গান আছে,ছবি আছে,সুর আছে,ছন্দ আছে,ভাষা আছে,প্রাণ নেই

আলো নেই বাতাস নেই

পিলসুজের আলো নেই,ত্রিফলা আছে


রং আছে মনমাতানো,মহুয়াগন্ধ নেই

কাশফুল নেই,উত্সব আছে

মন নেই,সম্পর্কের অটোমেশন আছে

আর আছে ভোট

চতুর্থ দফা ভোট হবে অবাধ এবং সুষ্ঠ৷‌ সোমবার এ কথা বললেন বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ৷‌ জঙ্গলমহলে ভোটে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও থাকছে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড, ল্যান্ডমাইন নিরোধক গাড়ি, রোড ওপেনিং পার্টি৷‌ যে-সব ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাচ্ছে না সেখানে নজরদারির জন্য থাকছে মাইক্রো অবজার্ভার, ভিডিওগ্রাফি, ওয়েবকাস্টিং এবং ডিজিটাল ক্যামেরা৷‌ দুর্গম এলাকায় যোগাযোগের জন্য থাকছে ১০টি স্যাটেলাইট ফোন৷‌ এরমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে থাকছে ৬টি এবং পুরুলিয়ায় থাকছে ৪টি স্যাটেলাইট ফোন৷‌ কালকের ভোটে ১৭৭টি বুথ থেকে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্হা করা হয়েছে৷‌ বাঁকুড়ার ২১টি, পুরুলিয়ায় ২০, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৬ এবং আসানসোলের ১১০টি বুথ থেকে ওয়েবকাস্টিং করা হবে৷‌ পুরো এলাকার ওপর নজর রাখার জন্য থাকছে দুটি হেলিকপ্টার৷‌ সুধীরকুমার রাকেশ জানান, আজ থেকে ওই হেলিকপ্টার দুটি মেডিক্যাল টিম, প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে আকাশপথে নজর রাখবে৷‌ ভোট মিটে যাওয়ার পরও পরিস্হিতির ওপর নজর রাখতে হেলিকপ্টার টহল দেবে৷‌ জঙ্গলমহলে হেলিকপ্টার থাকবে ৮ মে পর্যম্ত৷‌ নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনেই সবরকম ব্যবস্হা নেওয়া হয়েছে৷‌ জেলাশাসক, পুলিস সুপার ও সাধারণ পর্যবেক্ষকরা প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে স্পর্শকাতর বুথগুলি চিহ্নিত করার কাজ করছে৷‌ রাজ্যস্তরে এগুলি দেখাশোনার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে৷‌ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীলকুমার গুপ্তা, বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ এবং রাজ্য পুলিসের এ ডি জি (আইনশৃঙ্খলা)-কে নিয়ে তৈরি হয়েছে এই কমিটি৷‌ জঙ্গলমহল পরিদর্শনে যাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক বলেন, না, এখানে বসেই অপারেট করব৷‌ তৃতীয় দফা ভোটে ৪৩টি বুথে পুনর্নির্বাচনের বিষয়ে তিনি জানান, স্ক্রুটিনি চলছে৷‌ ওই বিষয়ে চূড়াম্ত সিদ্ধাম্ত নেবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷‌ আসানসোলে নরেন্দ্র মোদির ভাষণের সিডি দিল্লিতে জাতীয় কমিশনে পাঠানো হয়েছে৷‌ কাল রাজ্যের ৬ লোকসভা কেন্দ্র ও কোতুলপুর বিধানসভার উপনির্বাচন৷‌ ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর এবং আসানসোল– এই ৬ কেন্দ্র থেকে ৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷‌ এর মধ্যে ১১ জন রয়েছেন মহিলা প্রার্থী৷‌ পুরুষ প্রার্থী রয়েছেন ৬১ জন৷‌ ৬ কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছেন ৮৮,৭৭,০৭১ জন৷‌ এরমধ্যে পুরুষ ৪৬,০৮,৮৩৮ এবং মহিলা ৪২,৬৮,১৯১ জন ভোটার রয়েছেন৷‌ একই দিনে রয়েছে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, বান্দোয়ান, বলরামপুর, বাঘমুন্ডি এবং জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হবে৷‌ এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলির ভোট হবে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যম্ত৷‌ তবে লোকসভা ভোট হবে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যম্ত৷‌

ভোট রাজনীতি ছাড়া কিচ্ছুই নেই আর

জোড়া ঘাসফুল,পদ্মফুল,হাত ও কাস্তে হাতুড়ির কালবৈশাখিতে ধানের ক্ষেত রক্তাক্ত

ভারতভাগের 67 বছর পর আবার আমরা ভারত ভাগের মুখোমুখি

বাঙাল খেদাও রণহুন্কারে চাপা উল্লাসে সাত দশকের জমা যাবতীয ঘৃণা আধিপাত্যের উত্সবের অশ্লীল ফিলিম এখন

সীমান্তরেখা ছাপিয়ে যে রক্তনদীর স্রোত বঙ্গীয় জীবনযাত্রার অনিবার্য নিয়তি তার অশনিসংকেত বার বার বারম্বার দাঙগা সংস্কৃতিতে অভিব্যাক্ত,অথচ স্বজন রক্তের নেশায় রাজনৈতিক ক্ষমতাদখলে মনুষত্বের পরিচযটুকু ভুলতে বসেছে বাঙালি

গণতন্ত্র পেশিবহুল ধনশক্তির সর্বশক্তিমান উত্কর্ষে নিশ্চিন্হ এই বাংলায় এবং অবশ্যই ঔ বাংলাতেও

অথচ ভোট পড়বে এখানে,লাশ পড়বে ওখানে

এখানে পতপতকরে উড়বে গৌরিক পতাকা আর ওখানে জ্বলবে সংখ্যালঘুদের ঘর বাড়ি দোকানপাট ক্ষেত খামার মান ইজ্জত

আমাদের জনাদেশে দাঙ্গাবাজ উস্কানির ফসল হয়ে আবার সীমান্ত বয়ে আসতে চলেছে উদ্বাস্তুর ঢল,অথচ যারা ভারত ভাগের বলি,1947 সা঳ থেকে এসে চলেছেন তাঁদের সব্বাইকে তল্পি তল্পা গুছিয়ে চলে যেতে হবে 16ই মে র পর

সাফাইয়ে শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারি ভেদাভেদ নিয়ে যতই আসুক না আশ্বস্তি,আসল কথা হল যে 1971 এর পর কেউই ইন্দিরা মুজিব চুক্তি অনুযায়ী আর শরণার্থী নন

সত্যি কথা হল,নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন অনুযায়ী যারা 14 মে ,1947 এর পর অর্থাত ভারত ভাগেরও আগে এরপার চলে এসেছেন এবং নাগরিকত্ব অর্জন করেননি,তাঁরা সবাই বিদেশী অনুপ্রবেশকারি

সুদিনের আশায় আশায় দিল্লীর মুদিখানা খুলতে মরিয়া সময়ে যে নির্বাচন এবার,তার তুলনা অন্যবারের সঙ্গে নয়বাঙালি জাতির এই চরম বিপর্যয়ের মুখে সারা দেশে বাঙালির বাংলাদেশি পরিচিতি অসমের দাঙ্গা ও ষাটের দশক থেকে অবিরাম জারি বাঙাল খেদাও কে সর্বভারতীয় করতে চলেছে এবং একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করার বদলে বাঙালি আবার ক্ষমতার লড়াইয়ে স্বজন রক্তের সন্ধানে


কাল সকালেই ভোট


রাজনৈতিক চাপানউতোরের জেরে রাজ্যে চতুর্থ পর্যায়ের ভোটে নজরদারি বাড়াতে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে পারতপক্ষে মাইক্রো অবজারভার কিংবা ওয়েব-ব্যবস্থা বা ভিডিও ক্যামেরা রাখা বাধ্যতামূলক করল নির্বাচন কমিশন৷ এই ব্যবস্থাই মোটামুটি জারি থাকবে পঞ্চম তথা শেষ দফার ভোটেও৷


চতুর্থ পর্যায়ে ভোট জঙ্গলমহলেও৷ সেখানে নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না কমিশন৷ এই পর্যায়ে ৬টি লোকসভা কেন্দ্রের ১১ হাজার ৩২১টি বুথের জন্য ৩৪১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়েছে কমিশন৷ এ ছাড়াও থাকছেন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ৩১ হাজার কর্মীও৷


কমিশনের এই তত্‍পরতায় জঙ্গলমহলে বুথ-পিছু কেন্দ্রীয় বাহিনী গত বারের প্রায় দ্বিগুন হয়েছে৷ চাইলে কমিশন প্রতি বুথে দু'জন করেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করে ভোটগ্রহণ করাতে পারবে৷ তবে বাস্তবে কী হবে, তা এখনও অস্পষ্ট৷ বিশেষত, তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ নিয়ে বিরোধীদের গুচ্ছ অভিযোগের প্রেক্ষিতে৷


আপাতত ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রর জন্য ৬৯ কোম্পানি, মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য ৭৯ কোম্পানি, পুরুলিয়ার জন্য ৯১ কোম্পানি, বাঁকুড়া ও বিষ্ণপুরে ৭৪ কোম্পানি, আসানসোলে ২৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, তৃতীয় পর্যায়ের ভোটে ৯টি লোকসভা কেন্দ্রের ১৭ হাজার ৩৩০ বুথের জন্য ২৬৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল৷ সে ক্ষেত্রে বুথে এক জনের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন সম্ভব হয়নি৷ বহু জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহলের কাজে ব্যবহার করায় বুথের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করাই যায়নি৷


রাজ্যের সহকারী মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অমিতজ্যোতি রায়চৌধুরী সোমবার জনান, চতুর্থ দফায় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না৷ জঙ্গলমহলের, বিশেষ করে, ৬টি বিধানসভা এলাকায় (তিনটি ঝাড়গ্রাম ও তিনটি পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত) নিরাপত্তার কারণেই সকাল সাতটায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বিকেল চারটের মধ্যেই তা শেষ করা হবে৷ অন্যত্র অবশ্য সন্ধে ছ'টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে৷ ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলের ভোটের জন্য দু'টি হেলিকপ্টার ও দশটি স্যাটেলাইট ফোনেরও ব্যবস্থা হয়েছে৷ কারণ, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের বহু এলাকাই দুর্গম৷ এই সব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীও বেশি করে মোতায়ন করা হবে৷


তবে বুথে নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের মতামতও গুরুত্ব পাবে৷ যদিও প্রাথমিক ভাবে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং সাধারণ ও পুলিশি পর্যবেক্ষকরা আইনশৃঙ্খলার নানা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তার প্রাথমিক নকশা তৈরি করেন৷ যা রিটার্নিং অফিসার প্রার্থীদের কাছে পেশ করে মতামত নেবেন৷ তার পরেই নকশা চূড়ান্ত হবে৷


ইতিমধ্যে রাজ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম দফার ভোট অবাধ, শান্তিপূর্ণ করার দাবিতে নির্বাচন কমিশনে দরবার করল নাগরিক সমাজ৷ রবিবার অম্বিকেশ মহাপাত্র, শিলাদিত্য চৌধুরী, হাওড়ায় খুন হওয়া তৃণমূল নেতা তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত সহ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তার সঙ্গে দেখা করেন৷ তাঁদের দাবি, 'তৃতীয় দফার নির্বাচনে সাধারণ ভোটদানের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে৷ বাকি দুই দফায় মানুষ যাতে নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারে, কমিশনকে তা নিশ্চিত করতে হবে৷' সুনীলবাবু তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য কমিশন দায়বদ্ধ৷ তৃতীয় দফার নির্বাচনে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি স্বীকার করলেও সামগ্রিকভাবে সাধারণ ভোটদানের প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ সুনীলবাবু উড়িয়ে দিয়েছেন৷


পরে অম্বিকেশবাবু বলেন, 'আমরা যাঁরা আজ এসেছি, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে বর্তমান রাজ্য সরকারের হাতে আক্রান্ত অথবা সরকারের প্রতারণার শিকার৷ আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে আসিনি৷ তৃতীয় দফার ভোট দেখে আমরা আতঙ্কিত৷ আশা করেছিলাম নির্বাচন কমিশন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ভোট করতে পারবে৷ কিন্ত্ত, তা তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে৷' অন্যদিকে শিলাদিত্য চৌধুরীর দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুরে যৌথ বাহিনী দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না৷ তাঁর আশঙ্কা, ওই জেলায় ভোটে অশান্তি হতে পারে৷ এ ব্যাপারে কমিশনকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা৷

বুধবার রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বেনজির আক্রমণ শানালেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী৷ ৩০ এপ্রিল তৃতীয় দফার ভোটে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে ব্যাপক 'রিগিং ও সন্ত্রাস'-এর অভিযোগ এতদিন করছিল এ রাজ্যের বিরোধী নেতৃত্ব, রবিবার তাতেই সিলমোহর দিয়ে গেলেন মোদী৷ শুধু তাই নয়, এ বারের অভিযোগ খোদ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর মুখ থেকে আসায় ধারে ভারে তা বাম ও কংগ্রেসের যৌথ আক্রমণকেও অনেকটা পিছিয়ে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ ঘটনাচক্রে বুধবার ফের রাজ্যে প্রচারে আসবেন মোদী৷ সে দিন তাঁর উপস্থিতিতে কমিশন নির্বাচন পরিচালনায় কী ভূমিকা নেয় তার দিকে তাকিয়ে থাকবে এ রাজ্যের শাসক বিরোধী দু'পক্ষই৷

বাবরি ধ্বংসের পর লেখা লজ্জা মনে পড়ে?

মনে পড়ে সালাম আজাদের ভাঙা মঠ?

শাহরিযার কবীরের আখ্যান?


ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সালমান রুশদি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে, সেই সরকার হবে 'নিপীড়নকারী'৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলে কথা বলার স্বাধীনতাও খর্ব হবে৷

নিউইয়র্কে পিইএন ওয়ার্ল্ড ভয়েসেস ফেস্টিভ্যালের দশম বার্ষিক সম্মেলনে সালমান রুশদি এ কথা বলেন৷ তিনি বলেন, 'আমি মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ মনে হচ্ছে, সেই সরকার হবে ভয়ানক৷ এখনো ক্ষমতায় না এলেও আমরা দেখেছি সাংবাদিক ও লেখকেরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন৷'

নরেন্দ্র মোদিকে 'বিভেদ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি' ও 'কট্টর' উল্লেখ করে রুশদি বলেন, বিজেপি সরকার গঠন করলে বাক্স্বাধীনতা ও সাহিত্যকর্মের ওপর আঘাত আরও ভয়াবহ হতে পারে৷ তিনি বলেন, ভারতে গণতন্ত্রের অর্থ শুধু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই নয়, সব নাগরিকের অবাধে কথা বলার অধিকারও নিশ্চিত করা৷ বাক্স্বাধীনতা বিঘ্নিত হলে, ধর্মীয় স্বাধীনতা হুমকিগ্রস্ত হলে, সমাজের একটি বিশাল অংশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে, সেই সমাজে প্রকৃত গণতন্ত্র আছে বলা যায় না৷

কাল সকালেই ভোট৷

রামনামের রামরথের পরিণাম বাঙালি জীবনে ঘনিয়ে আসা দুর্যোগের আরেক নাম৷

নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় নির্বাচনী সমাবেশে হিন্দু অবতার রামের নাম বার বার ব্যবহার করায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) ফৈজাবাদে বেজেপি প্রার্থী লালু সিংকে নোটিস দিয়েছে।

সোমবার বিজেপির প্রধান প্রার্থী মোদির জনসভায় পটভূমিতে শোভা পায় রাম ও রাম মন্দিরের প্রতিকৃতি। এর কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে ঐ নির্বাচনী সমাবেশের রিপোর্ট চান। উত্তর প্রদেশের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা উমেনা সিনহা এ সম্পর্কে বলেন, এভাবে একটি নির্দিষ্ট জাত বা সম্প্রদায়ের ভোটারদের প্রভাবিত করার অর্থ হচ্ছে জনপ্রতিনিধি আইন ও আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা।

মোদি সোমবার অযোধ্যায় তার প্রথম নির্বাচনী সমাবেশে বলেছিলেন, এটা হচ্ছে ভগবান রামের জন্মস্থান যেখানে মানুষ বিশ্বাস করে যে, কারও জীবন চলে যেতে পারে কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা চলে না। তিনি বলেন, কংগ্রেসের 'মা-বেটা সরকার ১০ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না করার জন্য কংগ্রেসকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ফৈজাবাদের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ধর্মের নামে ভোট চেয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে সোমবার লিখিত আবেদনে মোদিকে গ্রেফতার দাবি করেছেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/হিন্দুস্তান টাইমস/পিটিআই'র।

উল্লেখ্য, অযোধ্যার জনসমাবেশে মোদি নিজে রামমন্দির নির্বাচনের বিষয় এড়িয়ে গেলেও দলীয় প্রার্থী লালু সিং ও বিনয় কাতিয়ারসহ কয়েকজন বক্তা বলেছেন, বিজেপি অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করবে। এক দিকে মন্দির-মসজিদ বিতর্কভূমি, অন্য দিকে প্রতিপক্ষের সেনাপতির দুর্গ। অযোধ্যার লাগোয়া ফৈজাবাদ আর রাহুল গান্ধীর কেন্দ্র আমেথি। উত্তরপ্রদেশে নরেন্দ্র মোদির ভোটপ্রচার ছিল সোমবার বেশ নজরকাড়া ব্যাপার। অবশ্যই আলাদা আলাদা কারণে। ফৈজাবাদে এসে মোদি ফের জড়ালেন আচরণবিধির জটে। মন্দির ইস্যুকে বি জে পি ইস্তাহারে ঠাঁই দিলেও মোদি তাঁর প্রচারে সেভাবে কখনই এই ইস্যু তোলেননি। এদিনও এড়িয়েই গেছেন। কিন্তু একাধিকবার তুলেছেন রামচন্দ্রের কথা। তার চেয়েও বড় কথা, তাঁর ভাষণমঞ্চের পশ্চাৎপটে ছিল রাম এবং প্রস্তাবিত মন্দিরের ছবি। নির্বাচন কমিশনের নজরে পড়েছে বিষয়টি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক উমেশ সিন্হা জানান, মোদির ভাষণ এবং মঞ্চে ব্যবহৃত পশ্চাৎপট নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। ভোটের প্রচারে ধর্মীয় আবেগ বা প্রতীক ব্যবহার আচরণবিধির পরিপমন্থী। কংগ্রেস বলছে, কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে সম্ভবত দ্বিতীয়বার আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পড়তে চলেছেন মোদি। আগের দফার ভোটের দিন গান্ধীনগরে ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে সংবাদ মাধ্যমকে দলের প্রতীক পদ্মচিহ্ন দেখিয়েছিলেন মোদি। কমিশন তাঁর নামে এফআইআর করার নির্দেশ দেয়। সোমবার ফৈজাবাদের সভায় মোদি বলেন, ভগবান রামের মাটি থেকে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, দেশ থেকে আমি দুর্নীতি হটাব। 'জয় শ্রীরাম' সেøাগানও ওঠে তাঁর সভায়। আমেথিতে মোদির হানা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে ক'দিন ধরেই বেশ কৌতূহল ছিল। কারণ, সচরাচর যা হয় না, তাই করলেন মোদি। গান্ধীদের খাস তালুকে, বিরুদ্ধ-শিবিরের সেনাপতি গড়ে ঢুকে পড়লেন। বুঝিয়ে দিলেন, এই নির্বাচন কতটা তিক্ত, ঝাঁজালো। বুধবার এখানে ভোট। রাহুল গান্ধীকে ধাক্কা দেয়ার জন্য মোদি নিয়েছেন প্রচারের শেষ বেলাকে। সোমবার বোন প্রিয়াঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে বিরাট রোডশো করেছেন রাহুল। মঙ্গলবার আমেথি কেন্দ্রের গৌরীগাঁওয়ে মোদির সভাতেও মন্দ ভিড় হয়নি। এবং প্রত্যাশিতভাবেই তুমুল আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধীকে। বলা উচিত, গান্ধী পরিবারকে, 'মা-বেটা'কে। ঘোষণা করলেন, ভোটে হারলে আবার চা বেচবেন! আমেথিতে বি জে পি প্রার্থী করেছে স্মৃতি ইরানিকে। মোদি বলেন, আমার ছোট বোন স্মৃতি ইরানিকে এখানে পাঠিয়েছি, রাহুল ভাইকে সমস্যায় ফেলব বলে নয়। রাহুল নিজেই সমস্যায় আছেন। স্মৃতি ইরানিকে পাঠিয়েছি আপনাদের সমস্যা কমাব বলে। মোদির বক্তব্য, বদলা নয়, তিনি এসেছেন বদলে দিতে। গত দশটি বছর নষ্ট করেছেন রাহুল। কিছুই করেননি আমেথির জন্য। এবার আমেথি থেকেই তিনি দেশ গড়ার কাজ শুরু করবেন। সারা পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে লোকে আসবে এখানকার উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করতে।

মোদি কথা দেন, ২০১৯ সালে তিনি আবার এসে বলবেন, আমেথির জন্য কি করেছেন। বি জে পি নেতার অনুযোগ, টিভি অভিনেত্রী স্মৃতিকে সংবাদ মাধ্যম গুরুত্ব দিতে চায়নি। কিন্তু এই ভুল ভেঙ্গে যাবে। মোদি বলেন, সংবাদ মাধ্যমই বিচার করে দেখুক, আমেথির দশটি গ্রামের নামও রাহুল বলতে পারবেন না। স্মৃতি ইরানি ১০০টি গ্রামের নাম বলে দেবেন। স্মৃতি ইরানি আসল ছবিটা ফাঁস করে দিয়েছেন। মানুষ জেগেছে, এবার কমিশন ঠিক করে ভোটটা করুক, বলেন মোদি। তাঁর অভিযোগ, গান্ধী পরিবার অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষকে সম্মান দিতে জানে না, অভিযোগ মোদির। সীতারাম কেশরীকে নাকি সে কারণেই অপমান করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী।

মোদি বলেন, কিছুদিন আগেও মা-বেটা আমার নাম মুখে আনতেন না। এখন আনছেন, কারণ সারা দেশ আমার নাম করছে। সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, আমাকে দেখে নাকি মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী হয়েই গেছি। দম্ভভরেই মোদি জানান, সোনিয়া ঠিকই ভেবেছেন। তাঁর দুঃখটা বুঝি। ছেলের সুরাহা করে যাবেন ভেবেছিলেন। সেটা হচ্ছে না। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, দল হারলে রাহুল গান্ধী বিরোধী আসনে বসবেন। মোদি হারলে কি করবেন? ওদের বলে দিন, আমি আবার চা বিক্রি করতে চলে যাব। গান্ধী পরিবারকে আক্রমণ করতে গিয়ে প্রয়াত রাজীব গান্ধীকেও টেনে আনেন মোদি। তিনি বলেন, ওরা (কংগ্রেস) বলছে, আমি নাকি ঔদ্ধত্যের রাজনীতি করছি। রাহুল নাকি তাঁর বাবা রাজীব গান্ধীর পথে চলছেন। রাজীব গান্ধী একবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী টি অনজাইয়াকে প্রকাশ্যে বিমানবন্দরে অপমান করেছিলেন। সেটা ঔদ্ধত্যের রাজনীতি নয়? এর কড়া জবাব দিয়েছেন সোমবার প্রিয়াঙ্কা।

নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় নির্বাচনী সমাবেশে হিন্দু অবতার রামের নাম বার বার ব্যবহার করায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) ফৈজাবাদে বেজেপি প্রার্থী লালু সিংকে নোটিস দিয়েছে।

সোমবার বিজেপির প্রধান প্রার্থী মোদির জনসভায় পটভূমিতে শোভা পায় রাম ও রাম মন্দিরের প্রতিকৃতি। এর কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে ঐ নির্বাচনী সমাবেশের রিপোর্ট চান। উত্তর প্রদেশের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা উমেনা সিনহা এ সম্পর্কে বলেন, এভাবে একটি নির্দিষ্ট জাত বা সম্প্রদায়ের ভোটারদের প্রভাবিত করার অর্থ হচ্ছে জনপ্রতিনিধি আইন ও আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা।

মোদি সোমবার অযোধ্যায় তার প্রথম নির্বাচনী সমাবেশে বলেছিলেন, এটা হচ্ছে ভগবান রামের জন্মস্থান যেখানে মানুষ বিশ্বাস করে যে, কারও জীবন চলে যেতে পারে কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা চলে না। তিনি বলেন, কংগ্রেসের 'মা-বেটা সরকার ১০ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না করার জন্য কংগ্রেসকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ফৈজাবাদের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ধর্মের নামে ভোট চেয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে সোমবার লিখিত আবেদনে মোদিকে গ্রেফতার দাবি করেছেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/হিন্দুস্তান টাইমস/পিটিআই'র।

উল্লেখ্য, অযোধ্যার জনসমাবেশে মোদি নিজে রামমন্দির নির্বাচনের বিষয় এড়িয়ে গেলেও দলীয় প্রার্থী লালু সিং ও বিনয় কাতিয়ারসহ কয়েকজন বক্তা বলেছেন, বিজেপি অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করবে। এক দিকে মন্দির-মসজিদ বিতর্কভূমি, অন্য দিকে প্রতিপক্ষের সেনাপতির দুর্গ। অযোধ্যার লাগোয়া ফৈজাবাদ আর রাহুল গান্ধীর কেন্দ্র আমেথি। উত্তরপ্রদেশে নরেন্দ্র মোদির ভোটপ্রচার ছিল সোমবার বেশ নজরকাড়া ব্যাপার। অবশ্যই আলাদা আলাদা কারণে। ফৈজাবাদে এসে মোদি ফের জড়ালেন আচরণবিধির জটে। মন্দির ইস্যুকে বি জে পি ইস্তাহারে ঠাঁই দিলেও মোদি তাঁর প্রচারে সেভাবে কখনই এই ইস্যু তোলেননি। এদিনও এড়িয়েই গেছেন। কিন্তু একাধিকবার তুলেছেন রামচন্দ্রের কথা। তার চেয়েও বড় কথা, তাঁর ভাষণমঞ্চের পশ্চাৎপটে ছিল রাম এবং প্রস্তাবিত মন্দিরের ছবি। নির্বাচন কমিশনের নজরে পড়েছে বিষয়টি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক উমেশ সিন্হা জানান, মোদির ভাষণ এবং মঞ্চে ব্যবহৃত পশ্চাৎপট নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। ভোটের প্রচারে ধর্মীয় আবেগ বা প্রতীক ব্যবহার আচরণবিধির পরিপমন্থী। কংগ্রেস বলছে, কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে সম্ভবত দ্বিতীয়বার আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পড়তে চলেছেন মোদি। আগের দফার ভোটের দিন গান্ধীনগরে ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে সংবাদ মাধ্যমকে দলের প্রতীক পদ্মচিহ্ন দেখিয়েছিলেন মোদি। কমিশন তাঁর নামে এফআইআর করার নির্দেশ দেয়। সোমবার ফৈজাবাদের সভায় মোদি বলেন, ভগবান রামের মাটি থেকে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, দেশ থেকে আমি দুর্নীতি হটাব। 'জয় শ্রীরাম' সেøাগানও ওঠে তাঁর সভায়। আমেথিতে মোদির হানা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে ক'দিন ধরেই বেশ কৌতূহল ছিল। কারণ, সচরাচর যা হয় না, তাই করলেন মোদি। গান্ধীদের খাস তালুকে, বিরুদ্ধ-শিবিরের সেনাপতি গড়ে ঢুকে পড়লেন। বুঝিয়ে দিলেন, এই নির্বাচন কতটা তিক্ত, ঝাঁজালো। বুধবার এখানে ভোট। রাহুল গান্ধীকে ধাক্কা দেয়ার জন্য মোদি নিয়েছেন প্রচারের শেষ বেলাকে। সোমবার বোন প্রিয়াঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে বিরাট রোডশো করেছেন রাহুল। মঙ্গলবার আমেথি কেন্দ্রের গৌরীগাঁওয়ে মোদির সভাতেও মন্দ ভিড় হয়নি। এবং প্রত্যাশিতভাবেই তুমুল আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধীকে। বলা উচিত, গান্ধী পরিবারকে, 'মা-বেটা'কে। ঘোষণা করলেন, ভোটে হারলে আবার চা বেচবেন! আমেথিতে বি জে পি প্রার্থী করেছে স্মৃতি ইরানিকে। মোদি বলেন, আমার ছোট বোন স্মৃতি ইরানিকে এখানে পাঠিয়েছি, রাহুল ভাইকে সমস্যায় ফেলব বলে নয়। রাহুল নিজেই সমস্যায় আছেন। স্মৃতি ইরানিকে পাঠিয়েছি আপনাদের সমস্যা কমাব বলে। মোদির বক্তব্য, বদলা নয়, তিনি এসেছেন বদলে দিতে। গত দশটি বছর নষ্ট করেছেন রাহুল। কিছুই করেননি আমেথির জন্য। এবার আমেথি থেকেই তিনি দেশ গড়ার কাজ শুরু করবেন। সারা পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে লোকে আসবে এখানকার উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করতে।

মোদি কথা দেন, ২০১৯ সালে তিনি আবার এসে বলবেন, আমেথির জন্য কি করেছেন। বি জে পি নেতার অনুযোগ, টিভি অভিনেত্রী স্মৃতিকে সংবাদ মাধ্যম গুরুত্ব দিতে চায়নি। কিন্তু এই ভুল ভেঙ্গে যাবে। মোদি বলেন, সংবাদ মাধ্যমই বিচার করে দেখুক, আমেথির দশটি গ্রামের নামও রাহুল বলতে পারবেন না। স্মৃতি ইরানি ১০০টি গ্রামের নাম বলে দেবেন। স্মৃতি ইরানি আসল ছবিটা ফাঁস করে দিয়েছেন। মানুষ জেগেছে, এবার কমিশন ঠিক করে ভোটটা করুক, বলেন মোদি। তাঁর অভিযোগ, গান্ধী পরিবার অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষকে সম্মান দিতে জানে না, অভিযোগ মোদির। সীতারাম কেশরীকে নাকি সে কারণেই অপমান করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী।

মোদি বলেন, কিছুদিন আগেও মা-বেটা আমার নাম মুখে আনতেন না। এখন আনছেন, কারণ সারা দেশ আমার নাম করছে। সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, আমাকে দেখে নাকি মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী হয়েই গেছি। দম্ভভরেই মোদি জানান, সোনিয়া ঠিকই ভেবেছেন। তাঁর দুঃখটা বুঝি। ছেলের সুরাহা করে যাবেন ভেবেছিলেন। সেটা হচ্ছে না। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, দল হারলে রাহুল গান্ধী বিরোধী আসনে বসবেন। মোদি হারলে কি করবেন? ওদের বলে দিন, আমি আবার চা বিক্রি করতে চলে যাব। গান্ধী পরিবারকে আক্রমণ করতে গিয়ে প্রয়াত রাজীব গান্ধীকেও টেনে আনেন মোদি। তিনি বলেন, ওরা (কংগ্রেস) বলছে, আমি নাকি ঔদ্ধত্যের রাজনীতি করছি। রাহুল নাকি তাঁর বাবা রাজীব গান্ধীর পথে চলছেন। রাজীব গান্ধী একবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী টি অনজাইয়াকে প্রকাশ্যে বিমানবন্দরে অপমান করেছিলেন। সেটা ঔদ্ধত্যের রাজনীতি নয়? এর কড়া জবাব দিয়েছেন সোমবার প্রিয়াঙ্কা।


বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদির রাজীব গান্ধীবিরোধী বিষোদ্গারে ভীষণ ক্ষুব্ধ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার আমেথিতে মোদির বক্তৃতার পর দিল্লী থেকে এক বিবৃতিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ওঁরা আমার 'শহীদ' বাবাকে আমেথির মাটিতে দাঁড়িয়ে অপমান করেছেন। আমেথির মানুষ কখনও ওঁদের ক্ষমা করবে না। আমেথির কর্মীরা বুথে বুথে এর জবাব দেবেন। সূত্র : পিটিআই/ হিন্দুস্তান টাইমস।

বোঝাই যাচ্ছে, রাজীব-ভাবাবেগে আমেথির হৃদয় ছোঁয়ার চেষ্টা করে মোদির প্রচারের জবাব দিলেন প্রিয়াঙ্কা। অল্প কিছু শব্দ খরচ করে। রাহুল গান্ধীকে নিজের কেন্দ্রে ধাক্কা দেয়ার উৎসাহে মোদি কিন্তু এদিন বেশ লম্বা ভাষণই দিয়েছেন। সভায় স্মৃতি ইরানির দাবি, আমেথি মোদি-ময় হয়ে আছে।

বারানসী যেতে পারেন প্রিয়াঙ্কা


বারানসীতে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর। এই বারানসীতে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নরেন্দ্র মোদি। এ নির্বাচনী কেন্দ্রে ১২ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রিয়াঙ্কার বারানসী যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা এর জবাবে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, তিনি সেখানে যেতে পারেন। প্রিয়াঙ্কা বারানসীতে নির্বাচনী প্রচার অভিযানে গেলে তা হবে মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পাল্টা উদ্যোগ। মোদি রাহুলের নির্বাচনী কেন্দ্র আমেথিতে গিয়ে অলিখিত একটি নিয়ম ভঙ্গ করেছেন এবং তা হচ্ছে, এর আগে কোন শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা অন্য দলের শীর্ষ নেতার নির্বাচনী দুর্গে প্রচার অভিযানে যাননি। বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কংগ্রেসের ভোটদুর্গ আমেথিতে গান্ধী পরিবারে বিরোধিতা করে রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে অসম্মানজনক বক্তব্য রাখার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর প্রিয়াঙ্কা পাল্টা আক্রমণ করেন মোদিকে। নিম্নস্তরের রাজনীতিতে মত্ত থাকার জন্য মোদিকে অভিযুক্ত করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমেথির জনগণ তাঁকে ক্ষমা করবেন না কখনও। তিনি বলেন, আমার বাবা রাজনীতি করেছেন জনগণের জন্য এবং তিনি শহীদ হয়েছেন। এর আগেও প্রিয়াঙ্কার বারানসী সফর নিয়ে গুঞ্জন ছিল। কিন্তু তিনি তখন তা বাতিল করে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি কেবল রায়বেরেলি ও আমেথিতে প্রচার চালাবেন।এদিকে গত বছর দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (এএপি) কাছে চরমভাবে হেরে গিয়ে বারানসীতে মোদির এক নম্বর চ্যালেঞ্জার হিসেবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আবির্ভূত হওয়ার কোন সুযোগ দিতে সম্মত নয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পর এএপি দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়।

কংগ্রেসের শীর্ষ মুসলিম নেতারা মুসলমানদের মধ্যে কেজরিওয়াল ও তার আবেদন ঠেকাতে বারানসী শহরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় অভিযান শুরু করেছেন। কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ, গোলাম নবী আজাদ, কে রহমান খান (সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী) ও জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলের মুখপাত্র নবাব মালিক কংগ্রেস প্রার্থী অজয় রায়ের পক্ষে মুসলিম ভোটারদের টানার জন্য বারানসীতে প্রচার চালাচ্ছেন। কংগ্রেস ও এএপি এখানে ৩ লাখ মুসলিম ভোটারের সমর্থন লাভের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে।




এ দিন আসানসোলের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র সমর্থনে জনসভা থেকে মোদী অভিযোগ করেন, 'অবাধ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে না৷ পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দফার ভোটে ব্যাপক রিগিং হয়েছে৷ কিন্ত্ত সব দেখেও কমিশন ব্যবস্থা নেয়নি৷ এর পিছনে আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী?' এই সঙ্গেই তিনি কমিশনকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, 'আমাদের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যে মামলা করা হল৷ কিন্ত্ত সব দেখেও আপনারা কোনও ব্যবস্থা নিলেন না৷ নির্বাচন কমিশনের কাজ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া৷ আপনাদের অনুরোধ করছি সেই দায়িত্ব আপনারা পালন করুন৷'


নরেন্দ্র মোদীর এ দিনের হুঁশিয়ারির পর দৃশ্যতই চাপ বেড়েছে নির্বাচন কমিশনের উপর৷ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনার হরিশঙ্কর ব্রহ্মের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে ভোট কি অবাধ হয়নি? আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করছি৷ মোদী কী বলেছেন তার ভিডিয়ো আমরা দেখব৷ সোমবার বিকেলে কমিশনের বক্তব্য জানানো হবে৷' রাতেই জানা গিয়েছে কমিশন মোদীর বক্তব্যের ভিডিয়ো রেকর্ডিং তলব করেছে৷ চতুর্থ দফার নির্বাচনের আগে বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীর কুমার রাকেশের নেতৃত্বে রাজ্য স্তরে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে৷


আসানসোলের সভাতেই কমিশনকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মোদী বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে কমিশন ইতিমধ্যে মামলা করেছে৷ দেখি এই বক্তব্যের জন্য কী ব্যবস্থা নেয়?' তাঁর বক্তব্য, 'আমার বিরুদ্ধে কমিশন যাতে কেস করতে পারে, এখানে তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি৷ কমিশনের বিরুদ্ধে আমি গুরুতর অভিযোগ করছি৷ কমিশনের প্রতিনিধি নিশ্চয়ই এখানে আমার ভাষণ টেপ করছেন৷ তাঁকে বলছি, তাড়াতাড়ি টেপটা কমিশনে জমা দিন৷' ৩০ এপ্রিল গান্ধীনগরে ভোট দিয়ে দলীয় প্রতীক হাতে সাংবাদিক বৈঠক করায় ইতিমধ্যেই কমিশনের নিদেরে্‌শ মোদীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ৷

মোদিকে ঠেকাতে মমতার সঙ্গেও ঐক্য হতে পারে

বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে বাম দলগুলো প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও ঐক্য গড়তে পারে৷ বিষয়টি চিন্তার বাইরে মনে হলেও এটি হতে পারে৷ কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই) এ কথা জানিয়েছে৷

সিপিআইয়ের নেতা এ বি বর্ধন গত সোমবার বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার বিরোধী নন৷ একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'বিজেপিকে দূরে রাখতে এটি করা যেতে পারে৷ আমি মনে করি, বিজেপি ১৬৫-১৭০টির বেশি আসন পাবে না৷ সব মিলিয়ে তারা ২১০ ছাড়িয়ে যেতে পারবে না৷ আর তা হলেই তারা ছিটকে পড়বে৷ আর এসব বিবেচনায় নিলে মমতার সঙ্গে আলোচনা করা যায়৷'

বাম দলের সঙ্গে মমতার বৈরিতা সর্বজনবিদিত৷ এমন বৈরী সম্পর্কের একটি দলের সঙ্গে ঐক্য প্রসঙ্গে বর্ধন বলেন, 'জোটের কেন্দ্রীয় অবস্থানে কেন মমতা থাকবেন৷ অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের নৈতিকতার জায়গাটি ভিন্ন৷ তাঁদের কেউ বিজেপিবিরোধী, আবার কেউ কংগ্রেসবিরোধী৷' টাইমস অব ইন্ডিয়া৷

বুধবার যখন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ছ'টি আসনে ভোটগ্রহণ চলবে, মোদী তখন সভা করবেন কৃষ্ণনগর, বারাসত এবং কলকাতায়৷ মহানগরীতে তাঁর সভা হবে কাঁকুরগাছির সুভাষ পার্কে৷ বস্ত্তত, তৃতীয় দফার ভোটে ব্যাপক রিগিং-ছাপ্পার অভিযোগ ওঠার পরই বিজেপি চতুর্থ দফার ভোটের দিন মোদীকে এ রাজ্যে আনার সিদ্ধান্ত নেয়৷ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর মতো কোনও নেতা এর আগে কমিশনকে এভাবে আক্রমণ শানায়নি৷ বিজেপির কৌশল, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বক্তব্যকে স্রেফ বিরোধীদের অভিযোগ বলে উড়িয়ে দিতে পারবে না কমিশন৷


কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএমও৷ এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে এক সভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, 'তৃতীয় পর্যায়ের নির্বাচনের আগে পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাক হচ্ছিল৷ কিন্ত্ত, তৃতীয় দফার নির্বাচন দেখে আমরা খুশি হইনি৷' সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, 'নির্বাচন কমিশন কি মৃত্যু মিছিল চায়? যে ভোটার স্লিপ কমিশনের দেওয়ার কথা, তা তৃণমূল কর্মীরা দিচ্ছে৷ মার খেলে প্রতিবাদ ছড়াবে৷ সুতরাং কমিশন যেন আগে থেকেই সজাগ থাকে৷'


রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটের অভিজ্ঞতার পর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে কমিশন৷ বিশেষ পর্যবেক্ষক রাকেশের নেতৃত্বেই রাজ্য স্তরে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ প্রার্থীরা তাঁদের তৈরি স্পর্শকাতর বুথের তালিকা এই কমিটির কাছে জমা দিতে পারবেন৷ কমিটি তা খতিয়ে দেখে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের তৈরি করা স্পর্শকাতর বুথের তালিকা অদলবদল করতে পারবে৷ এর ফলে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের ক্ষমতা খানিকটা খর্ব করা হল বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে৷ চতুর্থ দফার ভোটের প্রস্ত্ততি খতিয়ে দেখতে এদিন বাঁকুড়ায় গিয়েছিলেন রাকেশ৷ সেখানে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার পর তিনি বলেন, 'প্রস্ত্ততি সন্তোষজনক৷ এটাতে ফুল মার্কস দেওয়া যায়৷ তবে পারফরম্যান্সটা ভোটের দিন সন্ধ্যার পরই বলতে পারব৷'


তবে রাজ্যে তৃতীয় দফার নির্বাচনের ৪৩টি বুথের ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ রিপোর্ট চেয়ে এ বার পাল্টা চাপে পড়ল নির্বাচন কমিশন৷ জানা গিয়েছে, যে ৪৩টি বুথের রিপোর্ট কমিশন তলব করেছে, তার ৫০ শতাংশই স্পর্শকাতর ছিল না৷ ফলে সব বুথের ভিডিয়ো ফুটেজ তো দূরের কথা, ৪৩টি বুথের মধ্যে মাত্র সাতটি বুথের ক্ষেত্রে ডিজিটাল অথবা ভিডিয়ো ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে৷ যদিও কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী৷ রবিবার তিনি বলেন, '৪৩টি বুথের ভিডিয়ো ফুটেজ ও রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো আমাদের নৈতিক জয়৷' প্রসঙ্গত, তৃতীয় দফার নির্বাচনে কোনও বুথে পুনরায় ভোট নেওয়া হবে না বলে কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেও পরবর্তী সময়ে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপির অভিযোগ খতিয়ে দেখে শনিবার ৪৩টি বুথের ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় দিল্লির মুখ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তর৷


ভোটের দিন সাতটি বুথের ভিতরের সমস্ত ছবি এবং ৪৩টি বুথের সবকটির ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি, সেক্টর অফিসারের রিপোর্ট, রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্ট আজ দিল্লিতে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে৷ রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটে যে সমস্ত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে তাও কমিশনকে জানাচ্ছে রাজ্য নির্বাচন দপ্তর৷ প্রসঙ্গত, আরামবাগে তৃণমূলের যে নেত্রীর বিরুদ্ধে জোর করে ভোটারদের ভোট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ একই ভাবে বর্ধমানে ভোটের দিন এক ভোটারকে মারধরের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷


কিন্ত্ত, কেন ৪৩টি বুথের ভিডিয়ো ফুটেজ নেই? রাজ্য নির্বাচন দপ্তরের এক কর্তার জবাব, 'কমিশনের নির্দেশ মতো শুধুমাত্র স্পর্শকাতর বুথগুলির ক্ষেত্রে আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনী অথবা মাইক্রো অবজার্ভার ডিজিটাল ক্যামেরা অথবা ভিডিয়ো ক্যামেরা বা ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছিলাম৷ এই ৪৩টি বুথের মধ্যে ৫০ শতাংশের কম বুথ স্পর্শকাতর ছিল৷ তার মধ্যে সাতটির ক্ষেত্রে বুথের মধ্যে আমরা ডিজিটাল বা ভিডিয়ো ক্যামেরা রেখেছিলাম৷ বাকি স্পর্শকাতর বুথগুলির ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যবস্থা ছিল৷ তবে যে সমস্ত বুথে মাইক্রো অবজার্ভার ছিল, সেগুলির ক্ষেত্রে তাদের রিপোর্ট আমরা কমিশনকে পাঠাচ্ছি৷' আর যে সমস্ত বুথ স্পর্শকাতর নয়, সেগুলির ক্ষেত্রে সেক্টর অফিসারের রিপোর্ট নির্বাচন সদনে পাঠানো হচ্ছে৷ প্রসঙ্গত, শুক্রবার রিটার্নিং অফিসারের স্ক্রুটিনির সময় কোনও রাজনৈতিক দলের তরফেই কোনও বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়নি৷ তার পরেই কমিশন জানিয়ে দেয় কোনও বুথে পুনরায় ভোট নেওয়া হবে না৷

প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এ দিনই রাজ্যে চতুর্থ পর্যায়ের ভোট নিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন৷ প্রদীপবাবু জানান, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার তাঁদের জানিয়েছেন, তৃতীয় দফার ভোটের কিছু বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়ার সময় এখনও চলে যায়নি৷ আগামী দু'পর্বের ভোটেও কমিশন কড়া মনোভাব নিয়েই চলবে৷


প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি কলকাতায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় দল৷ নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ ও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অপসারণের দাবি জানিয়ে তাঁদের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়৷ নেতৃত্ব দেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ও প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি সৌমিক হোসেন৷

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে চতুর্থ দফা ভোটের আগে তত্পর হল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে উপনির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুত্‍‌সি জানান, কারচুপি রুখতে ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


উপনির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, এই দফায় রাজ্যে মাইক্রো অবজার্ভারদের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। তিনি জানান, পোলিং এজেন্টদের মোবাইল চেকিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে এবারের ভোটে। চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। এদিন জুত্‍‌সি জানান, নির্বাচন চলাকালীন এজেন্টদের ভয় দেখানো বা বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।


অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বুথের ভোট বাতিল করে ফের নির্বাচন হবে। অভিযোগ জানানো যাবে রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসার বা ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ অফিসারকে। এই উদ্দেশ্যেই বুথের বিভিন্ন জায়গায় সংশ্লিষ্ট অফিসারদের মোবাইল নম্বর লেখা থাকবে বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যে অশান্তিপ্রবণ বুথের তালিকা জমা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে বলা হয়েছে।


বুধবার জঙ্গলমহলের পাঁচটি কেন্দ্র: পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে নির্বাচন। একদা মাওবাদী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, বান্দোয়ান, পুরুলিয়ার বলরামপুর, বাঘমুন্ডি ও জয়পুরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জঙ্গলমহলে আকাশপথে কড়া নজরদারির জন্য বহাল থাকছে ৩টি কপ্টার। এ ছাড়া থাকছে ৮টি অ্যান্টি ল্যান্ডমাইন ভেহিকল। থাকছে ১০টি স্যাটেলাইট ফোন, ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা ও সিসিটিভি ক্যামেরা৷ জানা গিয়েছে, এই সমস্ত এলাকায় সকাল ৭টায় ভোট শুরু হলেও বিকেল ৪টেয় শেষ হবে।।তবে অন্যান্য অঞ্চলে বরাবরের মতোই বিকেল ৬টা পর্যন্ত ভোট হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।


অন্যান্য বারের মতো তিন ভাগে নয়, মাওবাদী অধ্যুষিত এই কেন্দ্রগুলির বুথগুলিকে এবার পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মাওবাদী প্লাস, মাওবাদী, অতি সংবেদনশীল, সংবেদনশীল ও সংবেদনশীল নয় বিভাগে চিহ্নিত করা হয়েছে অঞ্চলের বুথগুলি। বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ গত শনি ও রবিবার মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় বৈঠকের পর পুরনো বুথ বিন্যাস পরিবর্তন করেন। জানা গিয়েছে, অতি বাম বা মাওবাদী প্লাস, এই দুই বিভাগে মোট ১৬ জন জওয়ান প্রতি বুথের দায়িত্বে থাকবেন। মাওবাদী প্রভাবিত বুথে আটজন করে জওয়ান থাকবেন। অতি সংবেদনশীল বুথে থাকবেন চারজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। অন্য দিকে, প্রতিটি সংবেদনশীল বুথে চারজন সশস্ত্র পুলিশ ও সংবেদনশীল নয় এমন বুথে দু'জন সশস্ত্র পুলিশ থাকবেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৩৯, বাঁকুড়ায় ৭৩, পুরুলিয়ায় ৯১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশে টহল দিতে দেখা গিয়েছে কপ্টার।


অন্য দিকে, বুধবার বিহারের পঞ্চম দফা ভোট ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যবস্থা করছে কমিশন। এই দফায় রাজ্যের মোট ৭টি কেন্দ্রে ভোটে লড়ছেন ১১৮ জন প্রার্থী।।বিশেষ নজর থাকছে হাজিপুর (তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত) ও সারন কেন্দ্রের উপর। হাজিপুর থেকে ভোটে লড়ছেন এলজেপি সভাপতি রামবিলাস পাসওয়ান। সারনের হেভিওয়েট প্রার্থী লালুপ্রসাদ পত্নী, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়িদেবী। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আর এক হাই প্রোফাইল প্রার্থী, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীবপ্রসাদ রুডি। নিরাপত্তার কারণে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্ত। ১৪৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক সেনা, ৭ ইউনিট মাউন্টেড পুলিশ, ৩৬টি মোটরবোট ও বেশ কিছু সাধারণ নৌকো এবং ৩৭৫টি মোটর সাইকেল নজরদারিতে মোতায়েন করা হয়েছে।


দেশের নবম দফার লোকসভা নির্বাচনে ৭ রাজ্যের ৬৪টি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক ঝাঁক তারকা প্রার্থী। এবারের ভোটে ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীর। উত্তরপ্রদেশের আমেঠি কেন্দ্রে তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী আপ প্রার্থী কুমার বিশ্বাস। রাহুলের খুড়তুতো ভাই, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় গান্ধীর ছেলে তথা বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধী আমেঠির গা-ঘেঁষা সুলতানপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই দফায় বিশাখাপট্টনম কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ওয়াই এস বিজয়াম্মা। তিনি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ওই এস রাজশেখর রেড্ডির স্ত্রী। ছেলে জগনমোহন রেড্ডি গঠিত ওয়াই এস কংগ্রেস দলের প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ছেন বিজয়াম্মা। তাঁর মূল লড়াই অন্ধ্র প্রদেশ বিজেপির সভাপতি কে হরিবাবুর বিরুদ্ধে।


পশ্চিমবঙ্গে এই দফায় বিশেষ নজর থাকছে বাঁকুড়া কেন্দ্রের উপর। বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া এবার দশমবারের জন্য সাংসদ পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ। তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি তৃণমূল প্রার্থী বাংলার মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা, টলিউডের গ্ল্যামারাস নায়িকা মুনমুন সেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তনের জোয়ার, নাকি পোড়খাওয়া রাজনীতিকের স্ট্র্যাটেজি-- বাঁকুড়ায় শেষ হাসিটা কে হাসবে, তা জানা যাবে এদিনের ভোটেই।

নরেন্দ্র মোদিেলাকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১০০টির কম আসন পেলে দলটির নেতৃত্ব নিয়ে গান্ধী পরিবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি৷ ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাত্কারে তিনি কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন৷

গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোদি বলেন, গান্ধী পরিবারের সদস্যরা কংগ্রেসের নেতৃত্বে প্রশ্নের উর্ধ্বে থাকতে পারেন কি না, সেই প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই এখন লড়াই চলছে৷ তাঁদের লক্ষ্য এখন ১০০টি আসনে জয়, যাতে করে তাঁদের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি না হয়৷ তবে দলটি ১০০টির কম আসন পাবে, এমন আশঙ্কাই তিনি দেখতে পাচ্ছেন৷

নেতৃত্বে রাহুলের জায়গায় প্রিয়াঙ্কার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে মোদি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর কংগ্রেসই এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে৷ তবে এ রকম একটি দল গান্ধী পরিবারের বাইরে কিছু ভাবতে পারবে না, এটা অস্বাভাবিক৷

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে তাঁকে নিয়ে ভীতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মোদি বলেন, কংগ্রেস এবং অারও কয়েকটি দল ভীতি ছড়িয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে৷ তবে এসব কৌশল কাজে আসবে না৷ ভোটব্যাংকের রাজনীতির কারণেই ভারতে গত ৬০ বছরে সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়েছে৷ এখন এ ধরনের রাজনীতির দিন ফুরিয়েছে৷

বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে মোদি বলেন, পাকিস্তান যদি নিজ ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর ও সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়, তবেই তাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন সম্ভব৷ তবে এখন যদি সমস্যা সমাধানের নতুন কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়, তাহলে অতীতে কী হয়েছে, তা নিয়ে না ভেবে এগিয়ে যেতে হবে৷


বারবার মোদি আসছেন কেন? বি জে পি-র লক্ষ্য ৩


দীপঙ্কর নন্দী


কেন মোদি বাংলায় বারবার আসছেন? চারিদিকে একটাই আলোচনা৷‌ রাজ্য বি জে পি-র এক প্রভাবশালী তাত্ত্বিক নেতা বললেন, আমরা মোদিকে কয়েকবার বাংলায় আসতে অনুরোধ করেছি৷‌ তাঁকে বলেছি আপনি কয়েকটি আসনে এসে প্রচার করলে জয় নিশ্চিত৷‌ মোদি আসনগুলির নাম জানতে চান৷‌ আমরা তাঁকে জানিয়ে দিয়েছি, এও বলেছি আসানসোল, কৃষ্ণনগর, বারাসত, বসিরহাট ও শ্রীরামপুরে এলে দলের পক্ষে খুবই ভাল হবে৷‌ মোদিজি ইতিমধ্যে আসানসোল, শ্রীরামপুরে প্রচার করে গেছেন৷‌ আমরা বলেছি, শ্রীরামপুরে আমাদের দলের প্রার্থী বাপী লাহিড়ী খুব জনপ্রিয়৷‌ তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ ব্যানার্জির জনপ্রিয়তা ক্রমশই কমছে৷‌ আপনি যদি আসেন তা হলে হাওয়া বাপীর পক্ষেই যাবে৷‌ মোদিজি আমাদের কথা শুনে শ্রীরামপুরে এসে প্রচার করে গেছেন৷‌ রবিবারই আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয়র সমর্থনে তিনি প্রচার করেছেন৷‌ মোদিজিকে এও বলা হয়েছে আসানসোল জুড়ে প্রচুর কয়লা খনি আছে৷‌ বাঙালি অবাঙালি মিলেই বাস আসানসোলে৷‌ আসানসোলে আমাদের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় নিজের কেন্দ্রে প্রথম থেকেই ভালভাবে প্রচার শুরু করেছেন৷‌ মানুষের সঙ্গে মিশছেন৷‌ কোনও এলাকায় সমস্যা হলে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন৷‌ প্রচারে কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন না৷‌ বি জে পি-র ওই নেতা জানান, আমরা এ-সব লক্ষ্য করার পরই মোদিজিকে জানিয়েছিলাম যে, আপনি এলে আসানসোলে প্রচার আরও তুঙ্গে উঠবে৷‌ এও বলেছিলাম মোদিজিকে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে এলাকায় নিজেদের মধ্যে গোলমাল আছে৷‌ তাঁকে দলের একাংশই মেনে নিতে পারেননি৷‌ এই ঝগড়া প্রকাশ্যে এসে পড়েছে৷‌ মোদিজি আমাদের কথা শুনেছেন৷‌ তিনি আসানসোলে প্রচার করে গেছেন৷‌ তাঁর প্রচারে যে ভিড় হয়েছিল তাতে আমরা খুবই আশাবাদী৷‌ মোদিজি ব্যক্তিগতভাবে কৃষ্ণনগরের প্রার্থী সত্যব্রত মুখার্জিকে (জলু) চেনেন৷‌ আমরা যখন মোদিজিকে বলি, ২০০৯-এর নির্বাচনে জলুবাবু কৃষ্ণনগর থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪০ ভোট পেয়েছিলেন৷‌ সেই সময় বি জে পি-র হাওয়া ছিল না৷‌ তা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় তিনি এত ভোট পান৷‌ মোদিজিকে এবার আমরা বলেছি, জলুবাবুর এলাকায় যথেষ্ট পরিচিতি আছে৷‌ তিনি যখন মন্ত্রী ছিলেন, সেইসময় এলাকায় কাজ করেছেন৷‌ সকলের সঙ্গে মেশেন৷‌ এমনকী সংখ্যালঘুদের একাংশ জলুবাবুর দিকে রয়েছেন৷‌ আপনি যদি কৃষ্ণনগরে এসে প্রচার করেন, তা হলে দলের পক্ষে অনেক ভাল হবে৷‌ বারাসত নিয়েও মোদিজিকে বলা হয়েছে৷‌ আমরা বলেছি, প্রার্থী পি সি সরকারকে সকলেই জাদুকর হিসেবে চেনেন৷‌ তিনি যখন কলকাতা থেকে বারাসতে এলেন, সেই সময় দলের কর্মীরা খুবই খুশি হন৷‌ তাঁরা প্রবল উৎসাহ নিয়ে জাদুকরের সমর্থনে কাজে নেমে পড়েন৷‌ আমরা মনে করছি, জাদুকর পি সি সরকার এবার বারাসত থেকে জিততে পারেন৷‌ বারাসতে মুসলিম ভোটারদের একাংশ আমাদের দিকে চলে এসেছে৷‌ আপনি যদি আসেন, তা হলে তাঁর জয় নিশ্চিত হবে৷‌ বসিরহাটে রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য প্রার্থী হয়েছেন৷‌ মোদিজিকে বলা হয়েছে, বসিরহাট থেকে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামকে এবার প্রার্থী করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জঙ্গিপুরে৷‌ সি পি এম, কংগ্রেসের সংগঠন বসিরহাটে তেমন জোরালো নয়৷‌ ভোট কাটাকাটিতে জেতা যায় কিনা তার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সি পি এম৷‌ আমাদের মনে হয় না সি পি এম জিততে পারবে৷‌ আমরা মনে করি শমীক ভট্টাচার্য যেভাবে প্রচার করছেন তাতে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা আছে৷‌ তৃণমূলের প্রার্থী ইদ্রিশ আলি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন৷‌ আমরা মোদিজিকে বলেছি, বসিরহাটে আপনি এলে ভাল হবে৷‌ তাই মোদিজি বারবারই বাংলায় আসছেন৷‌ মোদিজিকে বলা হয়েছে, বাংলায় কংগ্রেস, সি পি এমের কোনও হাওয়া নেই৷‌ হাওয়া রয়েছে তৃণমূলের৷‌ এই হাওয়াকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারেন একমাত্র আপনিই৷‌ এদিকে নির্বাচনের শুরু থেকে ৬টি আসনের লক্ষ্যে নেমেছিল বি জে পি৷‌ এই আসনগুলি হল– দার্জিলিং, কৃষ্ণনগর, শ্রীরামপুর, বারাসত, বসিরহাট ও আসানসোল৷‌ বি জে পি এখন মনে করছে এর মধ্যে কৃষ্ণনগর ও আসানসোলে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে৷‌ দার্জিলিং নিয়ে বি জে পি-র এক নেতার বক্তব্য, আমরা নিশ্চিত নই৷‌ মনে হচ্ছে ৫০-৫০ হয়ে আছে৷‌ মোদিজিকে এও বলা হয়েছে সারদা নিয়ে মা-মাটি-মানুষের সরকার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা হারিয়েছে৷‌ আপনি যদি বারবারই সারদা প্রসঙ্গ আনেন তা হলে দলের পক্ষে খুবই ভাল হয়৷‌ প্রার্থীরাও মনোবল পাবেন৷‌




মমতা: মোদিকে কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী হতে দেব না


Google plus share

Facebook share

Twitter share

LinkedIn share





সোহম সেনগুপ্ত, নিরুপম সাহা: বারাসত ও বনগাঁ, ৫ মে– মোদিকে কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী হতে দেব না৷‌ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও না৷‌ সোমবার বিকেলে বেড়াচাঁপায় বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদারের সমর্থনে এক জনসভায় এ কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷‌ তিনি আরও বলেছেন, দেশের সংবিধান আছে, আইন আছে৷‌ তাই সাম্প্রদায়িক কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না৷‌ ঠিক সময়ে সব বলব৷‌ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, এই ভোটে বি জে পি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না৷‌ মোদির নাম না করে তিনি এদিনও কড়া সমালোচনা করে বলেন, যেভাবে উনি রাজ্যে এসে একসময় বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের তাড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন, নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করার জন্য কোমরে দড়ি পরিয়ে তাঁকে জেলে ঢোকাতাম৷‌ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বি জে পি-কে দেখে তিনি কখনও এন ডি এ-তে যাননি৷‌ বাজপেয়ীকে দেখেই গিয়েছিলেন৷‌ তাঁর দাবি, এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলই তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি হবে৷‌ দিল্লির নেতারা তাঁকে ভয় পান৷‌ তাই তাঁকে কিছু বলতে না পেরে এ-রাজ্যে বসবাসকারীদের তাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷‌ কিন্তু তাদের এই চেষ্টা কখনই সফল হবে না৷‌ কেননা তিনি এখানে পাহারাদারের মতো আছেন৷‌ রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাঁর৷‌ মমতা বলেন, দাঙ্গার কলঙ্কিত নেতাকে দেশের নেতা করার তোড়জোড় চলছে৷‌ সি পি এম যা বলছে, কমরেড দাঙ্গা মোদিও তা-ই বলছেন৷‌ ওঁর জন্যই আসামে দাঙ্গা ছড়িয়েছে৷‌ আসামের কেউ রাজ্যে আশ্রয় নিতে চাইলে রাজ্য তাঁকে আশ্রয় দেবে বলেও জানান মমতা ব্যানার্জি৷‌ তাঁর কথায়, যে কোনও সাংসদই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন৷‌ কাকলি ঘোষদস্তিদারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন৷‌ তাই নির্বাচনের আগে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলে তুলে ধরা ঠিক নয়৷‌ সি পি এম যখন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল, তখন কংগ্রেস-বি জে পি টাকা দিয়েছে৷‌ কিন্তু তৃণমূল সরকারে আসার পরই হাজার হাজার কোটি টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে৷‌ রাজ্য থেকে যদি ওই টাকা কেন্দ্র কেটে না নিত, তাহলে ২০ লক্ষ বেকার যুবক চাকরি পেত৷‌ রাজ্যে তা সত্ত্বেও আড়াই বছরে ৪৫টি কলেজ হয়েছে৷‌ নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে৷‌ কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হয়েছে৷‌ ধারাবাহিকভাবে যে উন্নয়নের কাজ চলছে, তা আটকানোরও চেষ্টা হচ্ছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷‌ জনসভায় উপস্হিত ছিলেন বারাসত কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ-সহ তৃণমূল নেতারা৷‌ এদিকে এর আগে এদিন দুপুরে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের সমর্থনেও বনগাঁ স্টেডিয়ামে জনসভায় বক্তব্য পেশ করেন মমতা৷‌ সেখানে তাঁর প্রধান আক্রমণের লক্ষ্য ছিল বি জে পি৷‌ মমতা বলেন, সি পি এম অপদার্থ দল৷‌ বি জে পি দাঙ্গাবাজ৷‌ আর কংগ্রেস বি জে পি-র কাছে বিকিয়ে গেছে৷‌ এই লোকসভা নির্বাচনে এই তিন দলের জামানত জব্দ করে সমস্ত বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, কুৎসার জবাব দেব৷‌ মোদিকে গুজরাটের গ্যাসবেলুন বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, গুজরাট ১০০ দিনের কাজে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে৷‌ আর আমরা এই রাজ্যে ৫৫২১ কোটি টাকা খরচ করেছি৷‌ মিডিয়ার একাংশকে কিনে নিয়েছে বি জে পি৷‌ বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে, তাই তাদের হিংসা হচ্ছে৷‌ আমরা দিল্লির ক্ষমতা দখল করব৷‌ সেই আতঙ্কে ওরা ঘন ঘন এই রাজ্যে প্রচারে আসছে৷‌ ওরা যত বেশি আসবে, তত বেশি হারবে৷‌ ১০০ দিনের কাজ, পাহাড়, জঙ্গলমহল, ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান খোলা ইত্যাদির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ মডেল৷‌ তাই ৩৪ বছর ধরে ছাত্র-যুবদের জীবন নষ্ট করে দেওয়া সি পি এমকে এই রাজ্যে কেই ফিরিয়ে আনতে পারবে না৷‌ তাই এমনভাবে বোতাম টিপুন, যাতে আমরা দিল্লিতে সরকার গড়তে পারি৷‌ ব্যাট করব এখানে, বোল্ড আউট হবে ওখানে৷‌ তিনি বলেন, বি জে পি কখনও হিন্দু, কখনও মুসলিম, কখনও শরণার্থী, কখনও উদ্বাস্তুদের এই দেশ থেকে খেদানোর কথা বলছে৷‌ এখন উদ্বাস্তু বলে কিছু নেই৷‌ সবাই ভারতীয়৷‌ সবারই ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আছে৷‌ এদের কাউকে তাড়ানোর চেষ্টা হলে আমরা রুখে দাঁড়াব৷‌ আপনারা নিশ্চিম্তে থাকুন৷‌ কোনও দাঙ্গাকারীকে ভয় পাবেন না৷‌ আমরা সঙ্গে আছি৷‌ একটি লোকও বাংলা থেকে বিতাড়িত হবে না৷‌ এটা দয়া নয়, অধিকার৷‌ বি জে পি মূর্খের দল৷‌ তাই বলছে, ভোটের পর তাড়িয়ে দেব৷‌ বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণকে পাশে নিয়ে মমতা বলেন, বড়মা বীণাপাণিদেবী চেয়েছিলেন তাঁর বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ টিকিট পান৷‌ আমরা তাঁর চাওয়াকে সম্মান দিয়েছি৷‌ তাই মতুয়াদের ভোট আমাদের দিকেই আসবে৷‌ এদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় তৃণমূল নেত্রী কৃষ্ণনগর থেকে হেলিকপ্টারের বদলে সড়ক পথে বনগাঁর উদ্দেশে রওনা দেন৷‌ রানাঘাটের কাছাকাছি আসার পর আবহাওয়া ভাল হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে হেলিকপ্টারে বনগাঁ আসেন৷‌ ২০ মিনিট মতো বক্তৃতা দেন৷‌ সেখান থেকে হেলিকপ্টারেই হাবড়ার সভায় যান৷‌ বনগাঁ এবং হাবড়ার সভায় প্রার্থী ছাড়াও উপস্হিত ছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উপেন বিশ্বাস, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, সুরজিৎ বিশ্বাস, নির্মল ঘোষ-সহ সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল, রতন ঘোষ, গোপাল শেঠ প্রমুখ৷‌

রাজ্যের চতুর্থ দফার নির্বাচন: ভোট দেবে জঙ্গলমহল ও আসানসোল

Last Updated: Tuesday, May 06, 2014, 14:30  

রাজ্যের চতুর্থ দফার নির্বাচন: ভোট দেবে জঙ্গলমহল ও আসানসোল লোকসভা নির্বাচনে বুধবার রাজ্যের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ। ভোট হবে জঙ্গলমহলের পাঁচটি আসন ও আসানসোলে।

ঝাড়গ্রাম- ঝাড়গ্রামে লড়াই মূলত দুই ডাক্তারের মধ্যে। বর্তমান সাংসদ সিপিআইএমের পুলিন বিহারি বাস্কে। তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তৃণমূলের নিউ কামার উমা সোরেন। কংগ্রেসের অনিতা হাঁসদা ও বিজেপির বিকাশ মুদিও লড়াইয়ে আছেন। দুহাজার এগারোয় ঝাড়গ্রামের সাতটি বিধানসভার চারটিতেই জিতেছিল তৃণমূল।


প্রার্থীরা-

উমা সোরেন (তৃণমূল)

পুলিন বিহারী বাস্কে (বামফ্রন্ট)

অনিতা হাঁসদা (কংগ্রেস)

বিকাশ মুদি (বিজেপি)

--------

মেদিনীপুর- মেদিনীপুরে লড়াই চতুর্মুখী। বামপ্রার্থী দুবারের সাংসদ প্রবোধ পণ্ডা। তৃণমূলের বাজি অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। ওজনদার প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপিও। দুহাজার এগারোয় এই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার চারটি ছিল বামফ্রন্টের দখলে।


প্রার্থীরা-

সন্ধ্যা রায় (তৃণমূল)

প্রবোধ পাণ্ডা (সিপিআইএম)

বিমল রাজ (কংগ্রেস)

প্রভাকর তিওয়ারি (বিজেপি

--------

পুরুলিয়া- দুবারের সাংসদ নরহরি মাহাতর থেকে পুরুলিয়া ছিনিয়ে নিতে তৃণমূল প্রার্থী করেছে মৃগাঙ্গ মাহাতোকে। লড়াই চতুর্মুখী। দুহাজার এগারোয় এই কেন্দ্রের ছটি বিধানসভাই ছিল কং-তৃণমূল জোটের দখলে।


প্রার্থীরা-

মৃগাঙ্ক মাহাতো (তৃণমূল কংগ্রেস)

নরহরি মাহাতো (ফরওয়ার্ড ব্লক)

নেপাল মাহাতো (কংগ্রেস)

বিকাশ ব্যানার্জি (বিজেপি)

---------

বাঁকুড়া- বাঁকুড়া দখলে রাখতে লড়ছেন নবারের বাম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজি সুচিত্রা কন্যা মুনমুন। বিজেপির চিকিত্সক প্রার্থী সুভাষ সরকারও যথেষ্টই ওজনদার। কংগ্রেস প্রার্থী করেছে নীলমাধব গুপ্তকে। দুহাজার এগারোয় বাঁকুড়ার সাতটি বিধানসভার চারটি ছিল তৃণমূলের দখলে।


প্রার্থীরা-

মুনমুন সেন (তৃণমূল কংগ্রেস)

বাসুদেব আচারিয়া (সিপিআইএম)

নীলমাধব গুপ্ত (কংগ্রেস)

সুভাষ সরকার (বিজেপি)

---------

বিষ্ণুপুর- বাঁকুড়া জেলার আর এক কেন্দ্র বিষ্ণুপুরে লড়াই চতুর্মুখী। সিপিআইএমের সুস্মিতা বাউড়ির বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র খান। দুহাজার এগারোয় এই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার ছটিই ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের দখলে।


প্রার্থীরা-

সৌমিত্র খান-তৃণমূল কংগ্রেস

সুস্মিতা বাউরি-সিপিআইএম

নারায়ণ চন্দ্র খান-কংগ্রেস

জয়ন্ত মণ্ডল-বিজেপি

----------

আসানসোল- আসানসোলে লড়াই তিন হেভিওয়েটের মধ্যে। বামপ্রার্থী দুবারের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। তাঁকে হারাতে শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেনকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বাজি, সঙ্গীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়। দুহাজার এগারোয় আসানসোলের অন্তর্গত পাঁচটি বিধানসভাই ছিল বামেদের দখলে।


প্রার্থীরা-

দোলা সেন-তৃণমূল কংগ্রেস

বংশগোপাল চৌধুরী-সিপিআইএম

ইন্দ্রানি মিশ্র-কংগ্রেস

বাবুল সুপ্রিয়-বিজেপি




ভোটের তাপ বাড়ছে শহরে, তবু ৯-এর আগে বাহিনী নয়


left

হাতিবাগানের পার্টি অফিসে নিগৃহীত বাম-কর্মীরা। -- শুভ্রজিত্‍‌ চন্দ্র।

এই সময়: শাসকদলের 'সন্ত্রাস' নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের উপর বিরোধী সিপিএম উত্তরোত্তর চাপ বাড়ালেও শেষ দফার ভোটের জন্য ৯ তারিখের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হচ্ছে না কলকাতায়৷ শহরের ১৯টি ওয়ার্ডে বিরোধীরা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ শুরুর দাবি করলেও বাস্তবে তা সম্ভব নয় বলেই সোমবার মানব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাম প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার সুরজিত্‍ কর পুরকায়স্থ৷ এই অবস্থায় উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় শাসকদলের 'সন্ত্রাস' বন্ধ না হলে লালবাজারের সামনে বিক্ষাভ-অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিপিএম৷ শেষ দফার নির্বাচনে 'ভোট লুঠ' হলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সিপিএম জেলা সম্পাদক তথা যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীও৷ 'অবাধ ও শান্তিপূর্ণ' ভোটের দাবিতে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনেও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা বামফ্রন্টের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও সোমবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পতকে চিঠি লিখে একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছেন৷


সিপিএম নেতাদের মনোভাবেই স্পষ্ট, আগামী ১২ তারিখ রাজ্যে শেষ দফার ভোটের আগে পুলিশ-প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ প্রবল করতে চাইছেন তাঁরা৷ রবীন দেবের নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধিদলও বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্তার সঙ্গে দেখা করেছেন৷ পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও আসানসোলে প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমানা 'সিল' করার দাবি জানিয়েছে তারা৷


শহরের অন্তত ১৯টি ওয়ার্ডে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়াল লিখতে দেওয়া হচ্ছে না, পোস্টার, ব্যানার দিতে দেওয়া হচ্ছে না, সভা করতে গেলে মণ্ডপশিল্পীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে এ দিন মানববাবুরা পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেন৷ মানববাবুর বক্তব্য, 'উত্তর কলকাতার ১৯টি ওয়ার্ডে হামলা, হুমকি দেওয়া ছাড়াও হাওড়া থেকে বাসে করে নিয়মিত বাইরের লোক ঢোকানো হচ্ছে শহরে৷ বাসের নম্বরও পুলিশ কমিশনারকে দিয়েছি৷' তবে জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা অপরাধীদের ধরার বিষয়েও কমিশনার নির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে পারেননি বলে অভিযোগ বামেদের৷


এই চাপানউতোরের মধ্যেই সকাল থেকে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাতিবাগান এবং নলিনী সরকার স্ট্রিট অঞ্চল৷ রবিবার রাত থেকেই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছিল বলে অভিযোগ৷ এ দিন সকালে পার্থ মিত্র নামে এক সিপিএম কর্মীকে মারধর করা হয়৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্যামপুকুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়৷ টিঙ্কু মিত্র নামে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন সিপিএম নেতৃত্ব৷

অধীরকে সামলাতে 'দায়িত্ব' অনুব্রতকে


adhir



এই সময়, বহরমপুর: তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতিকে একেবার বাঘের ঘরে পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বীরভূমের ভোট মিটতে এ বার অধীর-রথ থামাতে 'কেষ্ট'কেই হাতিয়ার করছেন তৃণমূল নেত্রী৷ আর সে লক্ষ্যেই শেষ দফা ভোটের আগে বহরমপুরে ঘাঁটি গাড়ছেন অনুব্রত মণ্ডল৷ তাঁর জন্য কান্দিতে একটি বেসরকারি লজ ভাড়া করা হয়েছে৷ কান্দি, বড়ঞা এবং ভরতপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তাঁকে৷ বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করবেন৷ আপাতত তিন দিন তিনি কান্দিতে থাকবেন বলে সেখানকার তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল মণ্ডল জানিয়েছেন৷

দলীয় সূত্রে খবর, বীরভূমে পারফরম্যান্স ভালো বলেই নেত্রী এ বার অনুব্রতকে বহরমপুরে পাঠাচ্ছেন৷ স্থানীয় কর্মীরা মনে করছেন, অনুব্রতকে দায়িত্ব দেওয়ায় তাঁরা নতুন করে অক্সিজেন পাবেন৷ বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি বীরভূম লাগোয়া৷ তাই কান্দি, বড়ঞা এবং ভরতপুর কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে অনুব্রতকে৷

২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে বহরমপুরে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ভোটে জিতেছিলেন অধীর চৌধুরী৷ তখন অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল কংগ্রেস৷ মমতার সঙ্গে অধীরের সম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত৷ এ বার বহরমপুর দখল করতে গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে টিকিট দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী৷ দলের অন্দরের বক্তব্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতেই বহিরাগত প্রার্থীকে বাছাই করেছেন মমতা৷ কিন্ত্ত ইন্দ্রনীলকে প্রার্থী করলেও, সে সমস্যা মেটেনি৷ বরং খোদ প্রার্থীকেই বারবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে৷ দলের জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীরও শুরুতে তাঁর বিরোধিতা করেছিলেন৷ এই অবস্থায় সব ক্ষোভ সামাল দিতে অনুব্রতকে ময়দানে হাজির করে সব দিক সামাল দিতে চাইছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷

অধীর চৌধুরী অবশ্য বিষয়টিকে কোনও গুরুত্ব দিতে নারাজ৷ তাঁর বক্তব্য, 'তৃণমূল বহরমপুরে সন্ত্রাস করতে চাইছে৷ কারণ তৃণমূল নেত্রী এই কেন্দ্রকে পাখির চোখ করেছেন৷ আগে নায়ক, নায়িকারা প্রচারে এসেছেন৷ এর পর যে মস্তান বাহিনী পাঠাবেন, জানা কথা৷ তবে তাতে কোনও কাজ হবে না৷ সন্ত্রাস হলে বহরমপুরের মানুষ তার মোকাবিলা করবে৷'


No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors